বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

আরব্য_বেদুঈন,,পর্ব: ৫

"মজার গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান ফারিহা তাসনিম ঐশী (০ পয়েন্ট)

X #আরব্য_বেদুঈন #পর্ব_০৫ দুম! দুম! দুম! গুলির লড়াই চলছে, আমাদের মত একদল যাযাবর বেদুইন আমাদের দলটাকে আক্রমন করেছে, ভোরের দিকে। বালির পাহাড়ের আড়াল থেকে ধেয়ে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে বুলেট। আমার দলের তিনজন গুরুতর জখম হয়েছে। দলটার লড়াইয়ের তালিম যে খুব একটা নেই তা ওদের গুলি ছোঁড়ার বহর দেখেই বোঝা যাচ্ছে। বালির পাহাড়টা আমাদের ছাউনির থেকে বেশ দূরে। ওদের কাছে যে বন্দুক আছে সেই বন্দুকের রেঞ্জের বাইরে। তবুও মুর্খ গুলো গুলি ছুড়ে কার্তুজ নষ্ট করে চলেছে। সোলেমানকে ইশারা করলাম ঘুর পথে ওদের পেছনে গিয়ে ওদের ওপর আক্রমণ করতে। ও দশজন তুখোড় বন্দুকবাজ নিয়ে অনেকটা ঘুরে ওদের নজর এড়িয়ে রওনা দিলো। আমি এদিক থেকে মর্টার দেগে ওদের আমাদের সঙ্গে গুলি যুদ্ধে ব‍্যাস্ত রাখলাম। ওরা এগোবার সাহস পেলো না। আবার পিছিয়েও গেল না। অপেক্ষা করতে লাগলো, কখন আমাদের গুলি শেষ হয়। কিন্তু উপরওয়ালার অশেষ কৃপা আমার সঙ্গে আছে। তাই তো শেখের হত‍্যার পরেই জয়নালের সঙ্গে সওদাটাও হয়ে গেল। এখন আমার অস্ত্রের ভাঁড়ার অফুরন্ত। যুদ্ধ তারাই জেতে, যাদের মগজে বুদ্ধি আর কলিজায় সাহস আছে। আবদুল্লাহ সহ আমার সব লোকদের ইশারা করলাম গুলি চালানো বন্ধ করতে। দূরবীনে চোখ লাগালাম। সোলেমান পৌছে গেছে ওদের পেছনে। এখনই মোক্ষম সময়। সাদা পতাকা উড়িয়ে দিলাম। সাদা পতাকা শান্তির প্রতিক। মানে আমি যুদ্ধ চাই না। সন্ধি চাই। বশ‍্যতা স্বীকার করছি শত্রুপক্ষের। একটা উত্তেজনা লক্ষ করলাম শত্রু দলের মধ‍্যে। আনন্দের উত্তেজনা। ওরা নাচছে। আনন্দ করছে। নাচতে নাচতে বেরিয়ে আসছে বালির আড়াল থেকে। আর তার পরেই গর্জে উঠলো সোলেমানদের বন্দুক গুলো‌। গুড়ুম! গুড়ুম! গুড়ুম! অতর্কিত আক্রমণে ওরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সোনেমানদের গুলি ওদের শুইয়ে দিচ্ছে মৃত্যু সজ্জায়। তীর বেগে আমাদের আরবী ঘোড়াগুলো ছুটে গেল বালির পাহাড়ের পেছনে। আমি নিজে দশজন ঘোড়সওয়ারকে সঙ্গে নিয়ে আক্রমণ করলাম ওদের। পেছনে মেয়েদের নিয়ে তাঁবু আগলে বসে রইলো আমার বাকি দশজন বিশ্বস্ত যোদ্ধা। দু দিক দিয়ে আক্রমনে দিশেহারা হয়ে ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লো দলটা। হাতিয়ার ফেলে দৌড় লাগালো কয়েকজন বোকার মত। বোকাই বটে, হদ্দ বোকা। এটা শহর বা জঙ্গল নয় যে লুকিয়ে বাঁচবে, এটা উষর মরুভূমি। এখানে হয় যুদ্ধ করে যাও মৃত্যুর আগের মূহুর্ত পর্যন্ত নয় বশ‍্যতা স্বীকার করে দাসত্ব মেনে নাও। এছাড়া এখানে তৃতীয় কোনো রাস্তা খোলা নেই।নির্ভুল নিশানায় ছুটে গেল এক একটা বল্লম। যারা আমার যোদ্ধাদের পেশি শক্তির এক্তিয়ারের মধ‍্যে রয়েছে, তাদের জন‍্য বুলেট খরচা করার মত বেহিসেবি লোক আমার দলে কমই আছে। ওরা রক্তাক্ত অবস্থায় আছড়ে পড়তে লাগলো বালির ওপর। আকাশে সূর্য তেজ বাড়াচ্ছে। বালি ক্রমশ তেতে উঠছে সেই তেজে। মাথার ওপরে চক্কর কাটছে, রক্তের গন্ধ পাওয়া শকুনের দল। দূরে, অনেক দূরে মরু শৃগালের পাল অপেক্ষায় বসে। ওদের দলপতিকে ঘিরে রেখেছে দুটো অনুগত অনুচর। ওদের হাতে বন্দুক নেই, শুধুই তরবারি। হা হা করে আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে চিৎকার করে উঠলাম, এখনো যুদ্ধের ইচ্ছে যায় নি? আমরা আরবি ঘোড়ায় সওয়ার, তোমরা বালির ওপর দাঁড়িয়ে, আমরা বিশ জন। তোমরা মাত্র তিন জন। আমাদের হাতে বন্দুক। তোমাদের হাতে তলোয়ার। কী লড়বে আমাদের সঙ্গে? - যুদ্ধ করে হত‍্যা করো আমাদের! চিৎকার করে বলে উঠলো ওদের দলপতি। আমরা দাসত্ব মানবো না! - হাঃ হাঃ হাঃ দাসত্ব মানবো না! তাকিয়ে দ‍্যাখ! তোর দলের লোকগুলোর কি হাল হয়েছে! মৃত্যু যন্ত্রনায় কাৎরাচ্ছে সবগুলো, একটু পরেই নেমে আসবে ঐ আসমানের শকুনের দল। ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবে জিসম থেকে নাড়ি ভুঁড়ি কলিজা! এখনো দাঁড়িয়ে আছিস, হাতিয়ার ধরতে পারছিস! বান্দা হয়ে যা! আমার বান্দা। খেতে পাবি। আমার দলে থাকবি। আমার হয়ে হাতিয়ার ধরবি। ভালো কাজ করলে মাঝে মাঝে ইনাম পাবি। - নাঃ। যদি মরদের বাচ্চা হও। তাহলে নেমে এসো ঘোড়া থেকে! ফেলে দাও বন্দুক! লড়ো আমার সঙ্গে তলোয়ার নিয়ে। - আচ্ছা! ভালো কথা বললাম! কানে নিলি না! মরতে চাস! সোলেমান, আবদুল্লাহ ওর সঙ্গী দুটোকে বাঁধ দড়ি দিয়ে। সঙ্গে সঙ্গে দুটো দড়ির ফাঁস উড়ে গেল লোক দুটোর দিকে , পলক ফেলার আগেই দড়ির ফাঁসের হ‍্যাঁচকা টানে লোক দুটো বালির ওপর পড়ে গেল। আমার লোকরা ওদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে শরীর থেকে জামা কাপড় খুলে নিয়ে ওদের বেঁধে ফেললো। - এবার? হুঙ্কার ছাড়লাম আমি! দেবো লোকগুলোর চামড়া চিরে বালি ছিটিয়ে? বলো? দলপতির এতোটুকুও ঝাঁঝ কমলো না, কর্কশ স্বরে চিৎকার করে বলল, আমি মরতে ভয় পাই না! আমার বুকের দিকে তরোয়াল তাক করে বললো ঐখানে যে কলিজাটা আছে, ওটা আমিও খুবলে আনতে পারি! কে এ? এতো বড়ো স্পর্ধা! সব সঙ্গী শেষ হয়ে গেছে, তার পরেও আমাকে একক যুদ্ধে আহ্বান করছে। মাথায় কাপড় ঢাকা মুখে কাপড় ঢাকা, ঢিলাঢালা পাঠান স‍্যুট পরেছে। সোলেমান বললো, সর্দার, ওর কথায় ফাঁসবেন না, ও জানে ও মরেছে, ও আপনাকে জখম করে মরতে চায়। সে সুযোগ ওকে দেবেন না। আদেশ দিন। ওকে দড়ির এক প‍্যাঁচে উল্টো লটকে দিই। - সাবাস! এই না হলে আমার ডান হাত। গলা নামিয়ে বল্লাম, তবে এখন না। আগে ও আমায় জখম করুক। তারপর... লাফিয়ে নামলাম ঘোড়া থেকে সোলেমান মাথা নাড়লো, যেন দলপতি ওর একটা কথাও শোনে না। বন্দুকটা ছেড়ে হাতে তুলে নিলাম তরবারি। চোখে চোখ রেখে ঘুরছি দুজনেই, কেউ কাউকে আক্রমণ করিনি, সুযোগ খুঁজছি দুজনেই, সময় গড়াচ্ছে, ধৈর্য্য হারিয়ে তরোয়াল চালালো আমার প্রতিপক্ষ। সরে গেলাম বিদ‍্যুৎবেগে শক্তি আছে ছেলেটার। তবে আমার ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কিন্তু অন‍্য কথা বলছে। কি বলছে? সেটা বলবো পরে, এখন আমার আক্রমণ করার পালা, কিন্তু না, আমার উদ্দেশ্য অন‍্য। কি উদ্দেশ্য? বলবো সেটাও পরে! আবার আক্রমণ ধেয়ে এলো আমার ওপর আবারো আমি সরে গিয়ে ঢুকে পড়লাম শত্রুর শরীরের ভেতর... বালিতে পা পিছলে গেছে ওর, আমি বাঁ হাত দিয়ে ওর জামাটা খামচে ধরলাম, চড়চড় করে আমার হাতে ছিঁড়ে এলো ওর জামার অংশটা। আর সঙ্গে সঙ্গে আমার মনের সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেলাম। জামার ছেঁড়া অংশ দিয়ে দেখা যাচ্ছে আমার প্রতিপক্ষের একটি স্তন। ও পুরুষ নয় !!! ও একটা মেয়ে!!! - থামো! তোমাকে আমার দলে সম্মানের সঙ্গে জায়গা দেবো। চিৎকার করে বললাম ওকে। - বিশ্বাস করি না। হত‍্যা করো আমায়! - বিশ্বাস করো! ভুলে যেও না, লড়লে তুমি মরবেই। হাত মেলাও। সেটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। - তলোয়ার ধরো। আমাকে শিখিও না। নিজের মাথা বাঁচাও! হুঙ্কার ছেড়ে এগিয়ে এলো মেয়েটা, আমার কথা না শুনলে আমার ভেতরের পশুটা জেগে ওঠে। মেহের আমাকে প্রেমের পাঠ শেখাচ্ছিলো, আর এই বেত্তমীজ় বুজদিল মেয়েটা আমাকে বিশ্বাস না করে, আমার ভেতরের পশুটাকে জাগিয়ে দিলো। শুরু হলো আমার তলোয়ারের খেলা। বিন্দুমাত্র রক্তপাত না ঘটিয়ে আমার তলোয়ার মেয়েটার শরীর থেকে সরিয়ে দিল সব কাপড়। একটা সুতোও থাকলো না মেয়েটার শরীরে! কার তলোয়ারকে চ‍্যালেঞ্জ করছে মেয়েটা? আমার মত একজন কে, যে ওর পুরো দলটাকে বালিতে শুইয়ে দিয়েছে একটু আগে। নগ্ন দেহটা চোখ বন্ধ করে পড়ে আছে।অপেক্ষা করছে, বার বার ধর্ষণের। আর তারপর নৃশংস হত‍্যার। আমার দলের লোকরা ইতিমধ্যেই লুঠ করেছে ওর দলের যথাসর্বস‍্য। মেয়েটা অপেক্ষা করে আছে। এখনো আমার দলের কেউ ওকে ছোঁয় নি। এখানেও ওকে হারিয়ে দেবো আমি। ও ভাবছে ওর শেষ পরিনতি, আর আমি ওর শরীরে বালি উড়িয়ে তলোয়ার খাপে গুঁজে ঘোড়ায় লাফিয়ে উঠে ফিরে চললাম আমার তাঁবুর দিকে। আর কি আশ্চর্য! হাতে একটা আলোয়ান নিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে দৌড়ে যাচ্ছে মেহের, আর ওর পেছন পেছন আমার দলের মেয়েগুলো। মেহের আলোয়ালটা জড়িয়ে দেয় নগ্ন মেয়েটার শরীরে। অবাক বিশ্ময়ে চোখ মেলে মেয়েটা। নরম সুরে মেহের বলে ভয় পেও না। তোমার কিচ্ছু হবে না। মেয়েটা এদিক ওদিক তাকায়। চারিদিকে শুধু ওর পরিচিত লোকের লাশের স্তুপ। - কেন জেদ ধরে ছিলে বোন? প্রশ্ন করে মেহের। মেয়েটার ঠোঁট কাঁপতে থাকে। মেহের সস্নেহে বলে, তোমার নাম কি? অঝোরে কেঁদে ফেলে মেয়েটা। চলবে....


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১১৬ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now