বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

অন্য ভুবন (৯)

"রহস্য" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান TARiN (০ পয়েন্ট)

X অন্য ভুবন – মিসির আলি ০৯. অমিতা অমিতা অবাক হয়ে বলল, আরে মামা, তুমি। মিসির আলি বললেন, চিনতে পারছিস রে বেটি? কী আশ্চর্য মামা, তোমাকে চিনিব না! তোমাকে নিয়ে কত গল্প করি মানুষের সাথে। তিনি হাসলেন। অমিতা বলল, বিনা কারণে তুমি আমার কাছে আস নি। ভূমি সেই মানুষই না! কি জন্যে এসেছ বল। এখনি বলব? না, এখন না। আমি স্কুলে যাচ্ছি। আজ আর ক্লাস নেব না, ছুটি নিয়ে চলে আসব। তুমি ততক্ষণে গোসলটোসল করে বিশ্রাম নাও। আমার ঘর-সংসার দেখ! ঘন-ঘন চা খাওয়ার অভ্যাস এখনো আছে? হুঁ, আছে। কাজের ছেলেটাকে বলে যাচ্ছি, সে প্রতি পনের মিনিট পরপর চা দেবে। তোর ছেলেপুলে কই? অমিতা ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল, আমার ছেলেপুলে নেই মামা, হবেও না কোনো দিন। তুমি তো খোঁজখবর রাখ না, কাজেই কিছু জান না। যদি জানতে, তাহলে আর …… সে কথা শেষ করল না। মিসির আলি লক্ষ করলেন, মেয়েটির গলা ভারি হয়ে এসেছে। কত রকম দুঃখ-কষ্ট মানুষের থাকে। তাঁর মন খারাপ হয়ে গেল। তোর বর কোথায়? ও টুরে গেছে—চৌদ্দগ্রামে। সন্ধ্যাবেলায় ফিরবে। তুমি কি থাকবে সন্ধ্যা পর্যন্ত? না, আমার একটা জরুরি কাজ আছে। তা তো থাকবেই। তোমাকে যে আমি কত ভালবাসি মামা, অথচ তুমি– অমিতার গলা আবার ভারি হয়ে গেল। এই মেয়েটার মনটা অসম্ভব নরম। মিসির আলি গোসল সেরে ঘুরে-ঘুরে অমিতার ঘর-সংসার দেখলেন। বিরাট দোতলা বাড়ি। প্রতিটি ঘর চমৎকার করে সাজানো। লাইব্রেরি-ঘরটি দেখে তাঁর মন ভরে গেল। বই বই আর বই। তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগে। কাজের ছেলেটির নাম চেরাগ মিয়া। সে সত্যি-সত্যি পনের মিনিট পরপর চা নিয়ে আসে। দু। কাপ চা খেয়ে মিসির আলি ধমক দিলেন আর লাগবে না। দরকার হলে আমি চাইব। লাভ হল না। পনের মিনিট পর আবার সে এক কাপ চা নিয়ে এল। দুপুরে খেতে বসে অমিতার সঙ্গে তিনি গাছের সঙ্গে কথা বলার প্রসঙ্গটা তুললেন। অমিতা অবাক হয়ে বলল, এইটি জানবার জন্যে তুমি এসেছ আমার কাছে? হুঁ। তুমি কি পাগল হয়ে গেলে নাকি মামা? পাগলরাই শুধু এইসব তুচ্ছ ব্যাপার নিয়ে ছোটাছুটি করে। পাগল হই আর যা-ই হই, যা জানতে চাচ্ছি সেটা বল! তুই যে ছোটবেলায় গাছের সঙ্গে কথা বলতি, সেটা মনে আছে? হ্যাঁ, আছে। আচ্ছা, গাছ কি তোর সঙ্গে কথা বলত? অমিতা হাসিমুখে বলল, গাছ আমার সঙ্গে কথা বলবে কি? গাছ আবার কথা কলা শিখল কবে? তার মানে, গাছের কোনো কথা তুই শুনতে পেতি না? কীভাবে শুনব মামা? তুমি শুনতে পাও? এইসব ছোটবেলার খেয়াল। এটা নিয়ে তুমি মাথা ঘামোচ্ছ কেন? এমনি। উঁহু। এমনি—এমনি মাথা ঘামাবার মানুষ তুমি না। নিশ্চয়ই কিছু-একটা আছে, যা তুমি আমাকে বলতে চাচ্ছি না। ও কি মামা, তোমার কি খাওয়া হয়ে গেল? হ্যাঁ। অসম্ভব। এগার পদ রান্না করেছি। তুমি খেয়েছ মাত্র পাঁচ পদ। এখনো ছটা পদ বাকি আছে। মরে যাঘ অমিতা। মরে যাও আর যাই কর– খেতে হবে। জোর করে আমি মুখে তুলে খাইয়ে দেব। আমাকে তুমি চেন না মামা। মিসির আলি হাসলেন। অমিতা গম্ভীর মুখে বসে আছে। তার ভাবভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে, সে সত্যি-সত্যি জোর করে মুখে তুলে দেবে। মিসির আলি মৃদু স্বরে বললেন, গাছ তাহলে তোর সঙ্গে কোনো কথা বলত না? অমিতা বিরক্ত স্বরে বলল, না। গাছ আমার সঙ্গে কেন কথা বলবে বল তো? আমি কি গাছ? ভালো করে তাকিয়ে দেখ তো আমার দিকে, আমাকে কি গাছ বলে মনে হয়? মিসির আলি কিছু বললেন না। তাকিয়ে রইলেন মেয়েটির দিকে। তাঁর এই ভাগনিটি তার সুন্দর। দেবীর মতো মুখ ঘন কালো তরল চোখ। মুখের ভাবটি বড় স্নিগ্ধ। অমিতা বলল, মামা, তুমি মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর করবার জন্যে ছোটাছুটি কর, অথচ তোমার আশেপাশে যারা আছে, তাদের কথা কিছুই ভাব না। ভাবি না কে বলল? না, ভাব না। ভাবলে এই ছ বছরে একবার হলেও আসতে আমার কাছে। মিসির আলি দেখলেন, অমিতার চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পড়ছে। তিনি একটি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললেন। মেয়েগুলি এত নরম স্বভাবের হয় কেন, এই নিয়ে অন্যমনস্কভাবে তিনি খানিকক্ষণ ভাবলেন। একটি মেয়ের ডিএনএ এবং একটি পুরুষের ডিএনএ-র মধ্যে তফাৎ কী, তাঁর জানতে ইচ্ছে হল। পড়াশোনা করতে হবে, প্রচুর পড়াশোনা। জীবন এত ছোট, অথচ কত কি আছে জানার।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২১০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now