বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

নূরে আইলিন

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মারিয়াম নবনী (০ পয়েন্ট)

X ~ মারিয়াম নবনী - পর্ব ০১ তুরস্কের ছোট্ট একটি গ্রাম। সবুজে শ্যামলে সজীব। প্রাণবন্ত, প্রাণোচ্ছল গ্রামটিতে মাত্র কয়েকটি বসত বাড়ি। ভীষণ সুন্দর একটি বাড়ি আছে গ্রামটির শেষ প্রান্তে। শহরের মুসাফির এই বাড়িটির সম্মুখে না এসে গমন করতে পারে না। কাঠের তৈরি দোতালা বাড়ি। চারিদিকে ফুলে ফুলে ভর্তি। পাশ ঘেঁষেই বয়ে চলেছে খরস্রোতা নদী৷ চকচকে পানিতে মাছগুলো পরিস্কার দেখা গেলেও, ধরা কিন্তু বেশ কঠিন। কি বলো রমিজ? জি ভাইজান। অনেক চালাক মাছগুলো। শুনলাম তুমি নাকি শহরে যাবে? হ ভাই। এইখানে তেমন কাজ-কর্ম নাই। আসলে শহরেই বড় হইছি ত, এইখানে খাপ খাওয়াতে পারি না। হ তা ঠিক। তবে আমার কেন যেন এই শহর ছাড়তে মন চায় না। ভাবি মেয়েটাকে তোমার মতন শহর থেকে উচ্চশিক্ষিত বানাব। তাহলে ত এখনই সময়। শহরে চল আমার সাথে। এখানে ত স্কুলও নাই। একটা কাজ করো তুমি আমার মেয়ের জন্য কিছু বই নিয়ে আসো। ও শিখতে থাকুক, ততদিনে আমি মনটাকে স্থির করি। কি বল ভাই? পড়াবে কে? আমি ত আর আসব না৷ আর বেয়াজিদ মাস্টার ও ত শুনলাম শহরে ফিরে যাবে। কেন আমি পড়াব। হতভম্ব চেয়ে রইল রমিজ। খানিক বাদে হাসি হাসি মুখে মাথা হেলিয়ে বলল, কি যে বল ভাই। তুমি.... আমি একজন হার্ট সার্জন। রমিজ ভূত দেখার মত চমকে উঠল। চোখে মুখে বিস্ময়ের ছাপ স্পষ্ট৷ আগে ত বলনি? বলার দরকার হয়নি। আজও ছিল না। কিছুক্ষণ পর মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলল, তুমি তাহলে এই গ্রামে পড়ে আছো কেন? আব্বুউউউ ইব্রাহিম পেছনে ফিরে হাসি মুখে তাকিয়ে রইল ঠিক দৃষ্টি বরাবর আগত মিস্টি মেয়েটির দিকে। ছোট্ট একটা পুতুল। পড়নে লাল লম্বা ফ্রক। মাথায় সাদা পাথুরের লেসওয়ালা লাল হিজাব। অস্ফুটস্বরে বেরিয়ে এল মাশাআল্লাহ। মেয়েটি একেবারে ইব্রাহিমের কাছে এসে কোমরে হাত বেঁধে দাঁড়াল। মাশাআল্লাহ! আমার পরীটা। হাঁটু গেড়ে বসে পড়ল ইব্রাহিম। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ আপনার সাথে আমার কথা নেই। মুখ ফুলিয়ে বলল, কেন? কেন? আমার চাঁদের পরী নারাজ হয়ে আছেন নাকি? জ্বী আব্বু জান। কি হয়েছে আয়পেরি? আপনি বলেছিলেন আজ আমায় ঘুরতে নিয়ে যাবেন। ইব্রাহিম মাথায় হাত দিয়ে মুখটা কাঁদো কাঁদো করে বলল, ক্ষমা করে দেন আয়পেরি। আব্বু জান ভুলে গিয়েছেন। তবে কাল ইনশাআল্লাহ ঘুরতে নিয়ে যাবেন। উহুম উহুম, এই যে আমিও আছি এখানে। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। কেমন আছেন চাচা? ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ । আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি চাঁদের পরী। কপাল কুঁচকে রাগি ভঙ্গিমায় বলল, চাঁদের পরী নয় আয়পেরি। একই ত হল। আয়পেরির বাংলা অর্থ চাঁদের পরী। কিন্তু আমি ত চাই চাঁদের পরী শুধু আব্বু জানই ডাকবেন। মুখটা কাঁদো কাঁদো করে। আচ্ছা আয়পেরি। আমি তাহলে নূরে আইলিন বলে ডাকব। গালে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ ভেবে আয়পেরি বলল, এটা কার নাম... এটা একটা রাজকন্যার নাম। তাহলে আমিও রাজকন্যা হুররে... খুশীতে চিকচিক করছে আয়পেরির চোখ, মুখ। রমিজ চল আমার সাথে, একসাথে নাস্তা করি। না ভাই, বাসায় মা অপেক্ষা করছে তুমি যাও। আম্মি জান আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়ালাইকুমুস সালামা ওয়া রহমাতুল্লাহ। আপনার আব্বু জান কোথায় আয়পেরি? কেউ একজন এসেছেন তার সাথে কথা বলছেন। ওও, তাহলে আপনি দাদুকে ডেকে নিয়ে আসুন আব্বু জান আসলে একসাথে নাস্তা করব ঠিকআছে। মেয়ের মাথায় বুলিয়ে বললেন আলারা। কি হচ্ছে এখানে? আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। কোথায় ছিলেন? কে এসেছিল? ওয়ালাইকুমুস সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। এই ত এখানেই ছিলাম। কেউ একজন এসেছিল। কেউ একজনটা কে? ইব্রাহিম রুমের দিকে যেতেই নিয়েছিল ঠিক তখনই পেছন থেকে প্রশ্ন ছুড়ল আলারা৷ ইব্রাহিম হাসি মুখে পেছনে ফিরে বলল, আপনি আজকাল আমায় সন্দেহ করছেন নয় কি? আপনি ভুল বুঝতেছেন। সঠিকটা কি বলুন? অনেকটা কাছাকাছি এসে দাঁড়াল ইব্রাহিম। ভয়ে তটস্থ হয়ে পড়ল আলারা। মুহুর্তেই ব্যাথায় কুকিয়ে উঠল। আঁখিপল্লবের অশ্রুকণা গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়তে লাগল। চোখ বন্ধ করে শক্ত করে রাখল নিজেকে। জবান হতে টু শব্দও বের করল না। এমনকি ছাড়া পাবার জন্যও একটুও চেষ্টা করল না। কাঁচা হলুদ দেহের বর্ণ। মিশমিশে কালো চুল৷ টানা টানা নেত্র পল্লব। অনিন্দ্য রুপবতী, যার থেকে চোখ ফিরানো দায়। ইব্রাহিম দাঁতে দাঁত চেপে বলল, নিজের কাজে মগ্ন থাকুন। স্ত্রীর মর্যাদা কখনই পাবেন না আপনি। আপনি আমার সন্তানের হত্যাকারী। আপনার স্থান ঘৃণার তালিকায়। ইব্রাহিম.... গলাধরা কন্ঠে কান্না বিজড়িত অবস্থায় উচ্চারণ করল। করুণ চোখে চেয়ে রইল ইব্রাহিমের দিকে। ইব্রাহিমের মনে মায়া জন্মাল কি না ঠিক জানা নেই। তবে চুলের বাঁধন আরো শক্ত করে ধরল। ডান হাত মুচড়ে নিল পিছনে। তবুও টু শব্দ করল না আলারা। উপরের পটির দাঁত দিয়ে নীচের ঠোঁট জোড়া কামড়ে কষ্ট নিবারণের অব্যার্থ প্রায়াস চালাল। আয়পেরি তার দাদুর সাথে কথা বলতে বলতে এদিকেই আসছে বুঝতে পেরে, সাথে ইব্রাহিম ছেড়ে দিল আলারাকে। সবাই খেলেও হাত গুটিয়ে বসে রইল আলারা। আব্রাহাম বুঝতে পারল কিছুটা। দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল বুক চিরে। সংসারটা কেমন মরে গেছে। আয়পেরিরও যদি সেদিন কিছু হয়ে যেত? আৎকে উঠলেন তিনি৷ হয়ত এ ঘরটা মৃত্যুপুরীই হত। নাস্তা শেষে আয়পেরি গেল দোতালার একটি রুমে৷ আয়পেরির রুম এটা। এখানেই বিশাল খাটে আয়পেরি, ইব্রাহিম, আলারা ঘুমায়। এটা আয়পেরি জানলেও সত্য ত এটাই আয়পেরি ঘুমুতেই আলারা নীচে বিছানা করে ঘুমিয়ে পরে। কখন বা নির্ঘুম রাত কাটায়। বড়সড় ঘরটা বেশ সুন্দর করে সাজানো। বেলকুনিতে দাঁড়ালে ঠান্ডা আবহাওয়ায় মন জুড়িয়ে যায়। দিগন্ত জুড়ে নীল আকাশ। যেন রঙ শিল্পীর রঙ তুলিতে আঁকা পট। সবুজে শ্যামলে ভরপুর।পূর্ণ যৌবনা খরস্রোতা নদী। মন ভাল করার অকৃত্রিম সৌন্দর্যমন্ডিড প্রকৃতি। সবচেয়ে আকর্ষণীয় রাতের দৃশ্য। নদীর তটে একটা গাছে জোনাকির ঝিকিমিকি। চাঁদ রাতে নদীর জলে রুপালী কিরণ। যুগ যুগান্তর দেখলেও মন ভরে না। আয়পেরি জ্বী আম্মিজান


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২০৯৬৬ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now