বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ভার্সিটিতে ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে এক ছিলেকে রক্তাক্ত করায় ভাইস চ্যান্সালর মাহির বাবাকে ফোন দেয়।মাহি এখন ভাইস চ্যান্সালরের রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।অতঃপর ভাইস চ্যান্সালর মাহিকে রুমে যেতে বলে।মাহি ভাইস চ্যান্সালরের রুমে গিয়ে দেখে যে ও যাকে মেরেছে সে তো আছে তার বাড়ির গার্ডিয়ানও ভাইস চ্যান্সালরের সামনের এক চেয়ারে বসে আছে এবং তার বাবা আরেক চেয়ারে বসে আছে। ভাইস চ্যান্সালর মাহিকে দেখে কিছুটা অবাক হয়।
কিছুক্ষণ আগে,
ভার্সিটির মাঠ দিয়ে মাহি ও তার দুই ফ্রেন্ড আমির ও জলি একসাথে হাটছিল।একগাছের নিচে কিছু ছেলে বসে ছিল।আর সামনে দিয়ে একটা মেয়ে হেটে যাচ্ছিল এবং তাকে নিয়ে অপ্রীতিকর কিছু কথা বলল।যা মাহিও শুনতে পেয়েছিল।মাহি রাগ ধপ করে মাথায় উঠে গেল।
: জলি তুই একটু দাড়া...আমি আসছি।
: তুই কোথায় যাবি?
: আসছি।
মাহি দেখতে মাঠের একদিকে ছেলেরা ক্রিকেট খেলছে।মাহি সেখানে গেল।
: ভাইয়া আপনার ব্যাটটা একটু দেয়া যাবে।(মাহি অনুরোধ করে)
: কেন?
: ভাইয়া এখনই দিয়ে দিব।
: আচ্ছা নাও।
মাহি ব্যাটটা নিয়ে সোজা ওই ছেলেদের কাছে চলে গেল।কিন্তু ব্যাটটা সে পিছনে দুইহাত দিয়ে লুকিয়ে রাখল।
: আচ্ছা আপনারা কোন ইয়ারের?
: কেন?ফাইনাল ইয়ার।
: ও আচ্ছা।একটু আগে আপনাদের মধ্যে কে একজন একটা মেয়েকে কি যেন বলছিলেন?(মাহি চিন্তার সুরে)
: যেটাই বলি না কেন?তোমার কী?
: না,বলুন না।কে বলেছিলেন?
: আমি বলেছি।(পিছন থেকে)
: গুড..
মাহি কথাটা বলেই ব্যাটটা পিছনে থেকে সামনে নিয়ে এসে ইচ্ছামতো মারতে থাকল।আর বাকি দুইজন তো দৌড়ে পালিয়ে গেল।পুরো ভার্সিটি জড়ো হয়ে গেছে।
: সিনিয়র হয়ে বেশি বড় গেছিস তাই না।মেয়ে দেখলেই উল্টোপাল্টা কথা বলতে হয়।ভেবেছিস কিছুই বলবে না।আর কী যেন বললি আমার কী?এই যে দেখ আমার কী...
মাহি কিছুক্ষণ পিটানোর পর ছেড়ে দিল।তারপর যাদের কাছ থেকে ব্যাট এনেছিল তাদেরকে ব্যাট ফিরিয়ে দিয়ে চলে যেতে নিলে পিছন থেকে ছেলেটা বলে উঠল-
: এর জবাব কিন্তু তুমি পাবে...
: যা করার করুন গিয়ে আমার কিছুই যায় আসে না।হুহ..
বর্তমানে,
: তোমাকে দেখলে তো মনে হয় না তুমি কাউকে মারতে পারো?
: কেন স্যার?সালোয়ার কামিজ পড়েছি বলে অন্যায় দেখলে প্রতিবাদ করবো না।
যেই ছেলেকে মারা হয়েছে সেই ছেলের ভাই রেগে আমার দিকে তাকিয়ে বলল-
: তোমার তো সাহস কম না তুমি আমার ভাইকে মেরেছ।আবার বড় বড় কথা বলছো।
: দেখুন আপনি কিন্তু আমার মেয়েকে....
মাহির বাবা কথাটা শেষ করার আগে মাহি ওর বাবাকে থামিয়ে দিল।
: রিলাক্স বাপি।হুয়াই আর সো গেটিং হাইপার?স্যার আপনি আমার কাছ থেকে কী জানতে চান বলুন?
: তুমি ওকে কেন মেরেছো?আর ও তো তোমার সিনিয়র?আর জানো না সিনিয়রদের গায়ে হাত তুলতে নেই?
: স্যার আমাকে একটা কথা বলুন তো।আপনার সামনে দিয়ে যদি আপনার মেয়ে কেউ যদি অপ্রীতিকর কথা বলে তখন আপনি কী সব চুপচাপ মেনে নিবেন?এই প্রশ্নটা আমি আপনাকে একা না যিনি আপনার কাজে কমপ্লেইন নিয়ে এসেছে তাকেও জিজ্ঞেস করছি।
: অবশ্যই না আমি তাকে একটা উচিত শিক্ষা দিতাম।
: আর আপনি মিস্টার?
ছেলেটির ভাই কিছু বললো না।ছেলেটির ভাই একবার ছেলেটির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো।ছেলেটি মাথা নিচু করে ফেলল।
: তাহলে স্যার আমার তো মনে হয় না ওনাকে মেরে আমি ভুল কিছু করেছি।কারন ওনি আমার সামনে একটা মেয়েকে নিয়ে খারাপ কথা বলবে আর আমি চুপচাপ মেনে নিব।এইটা কখনো সম্ভব নয়।তাই আমি মেরেছি।হ্যাঁ ওনি আমার সিনিয়র বটে তার মানে এই নয় যে ওনার সাত খুন মাফ হয়ে যাবে।এখন আপনি যা ভালো মনে করবেন তাই করুন।আমার কোনো আপত্তি নেই।
এতক্ষন স্যার সহ ওই রুমে যারা ছিল তারা সবাই মেয়েটির কথা নির্বাক ভাবে শুনে গেল। ছেলের ভাই কথাটা বিশ্বাস করলো না।কারন তার ধারনা তার ভাই অনেক ভদ্র।
: তোমার কাছে কী কোনো প্রুভ আছে?
: অবশ্যই আছে।ওয়েট...
মাহি ইরাকে ডাক দিল যার সাথে ওরা খারাপ ব্যবহার করেছে।ইরা সব খুলে বলল।
: এবার আর কোনো প্রুভ লাগবে আমার মেয়ের বিরুদ্ধে?
: আমি কী বলব?অপরাধটা যেখানে আমার ভাইয়ের সেখানে আমার আর কী বলার আছে?
আবির ওর ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলল।
তারপর ভাইস চ্যান্সালর মাহির দিকে তাকিয়ে বলল-
: তাহলে তুমিই বলো ওকে কী শাস্তি দেওয়া যায়?
: স্যার আমি যা শাস্তি দেয়ার ওনাকে তখনই দিয়ে দিয়েছি।নতুন করে ওনাকে আর কোনো শাস্তি দেয়ার ইচ্ছা নেই।
: তুমি কী বলো আবির?
: স্যার আমার আর কিছু বলার নেই।কারন দোষটা আমার ভাইয়ের।আর আমি তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।
আবির হাতজোর করে ক্ষমা চাইল।মাহি কিছুটা অবাক হলেও চুপ রইল।
: তোমাদের এতো বড় বিজনেস।তোমার বাবা এতো ভালো মানুষ।তোমার ফ্যামিলিও এতো ভালো।তাই আমি এবারের মতো তোমার ভাইকে ক্ষমা করে দিলাম।আশা করি ও আর এমন কাজ করবে না।
আবির স্যারকে ধন্যবাদ জানিয়ে আবির ওর ভাইয়ের কাছে গিয়ে রাগী কন্ঠে বলল-
: বাসায় চলো।
: কিন্তু ভাইয়া...
: আর একটাও কথা নয়।
সবাই ভাইস চ্যান্সালরের রুম থেকে বেরিয়ে যে যার মতো চলে যেতে নিলে ভাইস চ্যান্সালর মাহিকে থাকতে বলে।
: আই এম প্রাউড অফ ইউ।ভালো থেকো।ইউ আর ভেরি লাকি মি: হাসান।আপনার এমন একটা মেয়ে আছে।
: থ্যাংক ইউ স্যার।চলো মাহি।
: চলো বাপি।আসি স্যার।
মাহি বের হয়ে ওর বাবাকে দাঁড়াতে বলে এবং আবিরকে পিছন থেকে ডাক দেয়।
: এক্সকিউজ মি....একটা কথা বলতে পারি?
: বলুন।
: পুরোপুরি কিছু না জেনে কখনো কোনো কিছু করতে যাবেন না।আগে ভালো করে যাচাই করে নিবেন দোষটা কার তারপর না হয় বিবেচনা করবেন কে দোষী?আর আপনাকে বলছি মিঃ সিনিয়র কারন আমি তো আপনার নাম জানি না।অপরকে সম্মান করতে শিখুন তাহলে নিজেও সম্মান পাবেন এবং আপনার ফ্যামিলিও মান-সম্মানের সাথে থাকবে।চলো বাপি।
মাহি ওর বাবার সাথে গাড়িতে গিয়ে বসল।মাহির বাবা ওর মাথায় হাত দিয়ে বলল-
: এতোকিছু বলার কি দরকার ছিলো?
: দরকার ছিল বাপি তুমি বুঝবে না।চলো এখন বাসায় চলো।অনেক ক্ষুধা পেয়েছে।বাসায় চলো।
মাহির বাবা ড্রাইভারকে গাড়ি স্টার্ট দিতে বলল।আর তখনই ওর বাবার ফোনে মাহির মা ফোন দিল।
: হ্যালো..মিলা।বলো কী বলবে?
: কী হলো তোমার মেয়েকে বের করে দিয়েছে?নাকি....
: বাসায় এসে কথা বলি।
মাহির বাবা ফোনটা রেখে দিল।
: আচ্ছা বাপি, মামনি কী জানে যে তুমি এসেছো?
: হুমম...জানে।কারন প্রথমে তোর মার ফোনেই ফোনটা এসেছিল।
: তাহলে চলো বাইরে কোথাও খেয়ে নেই।বাসায় আজকে ঘূর্ণিঝড় হবে।
: আমি তো আছি।
: বাপি তুমি থাকা না থাকা এক ব্যাপার।কারন তুমি মার সামনে গেলে ভিজা বিড়াল হয়ে যাও।হি...হি....
: মাহি...
অপরদিকে আবিরসহ ওর ভাই বাসায় চলে এসেছে।আবির পুরো রেগে বাসায় ঢুকেছে।পিছন পিছন ওর ভাইও ঢুকেছে।আবিরের মা আর ওর চাচি কিচেন থেকে আসে।
: কী হলো আবির?তুমি রেগে আছো কেন?আর মিশু তোমার এই অবস্থা কেন?
: কি হলো?চুপ করে আছিস কেন?বলতে পারছিস না। এই পর্যন্ত আমি কারো সামনে হাতজোর করিনি।আজ তোর জন্য আমাকে কতটা নিচে নামতে হলো।
: আহা কী হয়েছে বলবে তোমরা?
: কী হয়েছে আবির?
আবির তারপর সব ঘটনা খুলে বলল।সবাই তো অবাক।আবিরের মা বলে উঠল-
: মিশু তোমার ভাই যা বলছে তা কী সত্যি?কী হলো মাথা নিচু করে আছো কেন?ছি: তুমি শেষ পর্যন্ত...
আবির ওর মাকে থামিয়ে বলল-
: এই পর্যন্ত কারো সাহস হয়নি আমার সাথে এভাবে কথা বলার।আর ওই মেয়ে শুধুমাত্র তোর জন্য আমাকে এতগুলো বলে যাওয়ার সুযাগ পেয়েছে।
: ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করে দাও।আমি আর এমন করব না।আমার ভুল হয়ে গেছে।
মিশু আবিরের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইল।তখনই আবিরের ফোনে অফিস থেকে একটা কল এলো।আবির মিশুকে উঠিয়ে বলল-
: যা গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নে।মা আমি বাইরে যাচ্ছি আমার একটা কাজ আছে।
আবিরের মা আর কোনো কথা বাড়ালো না।কারন তার ছেলের রাগ মারাত্মক রকমের।তাই সবাই আবির কমবেশি ভয় পায়।আবিরের চাচি বলে উঠল-
: দেখেছো ভাবি আবির কী রকমের রেগে ছিল?
: দেখেছি আয়শা।তুমি তো আবিরকে চিনোই ওর আজকে ইগো হার্ট হয়েছে।আর তাও..(আবিরের মা মিশুর দিকে তাকিয়ে)তুমি এখনো দাঁড়িয়ে আছো কেন?যাও উপরে যাও।যা হওয়ার তো হয়ে গেছে।যাও।
ওইদিকে মাহি আর মাহির বাবার বাসায় পৌঁছে গেছে।মাহির মা....
#চলবে.......
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...