বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

নয় নয় শূন্য তিন পার্ট ২

"সাইন্স ফিকশন" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Ridiyah Ridhi (০ পয়েন্ট)

X নিয়ম অনুযায়ী এই মানুষটির নিজে থেকে বিদায় নেবার কথা, কিন্তু রিশান সে জন্যে অপেক্ষা করল না. তাকে বিদায় জানিয়ে কব্জিতে বাঁধা যোগাযোগ মডিউলটি স্পর্শ করে তাকে অদৃশ্য করে দিল। রিশান একটি নিঃশ্বাস ফেলে হাত দিয়ে একবার মাটিকে স্পর্শ করল। আবার তাকে এই মাটির পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে। মহাকাশে ছুটে ছুটে সে তার জীবন কাটিয়ে দিয়েছে। মহাকাশচারীর জীবন বড় নিঃসঙ্গ, এক একটি অভিযান শেষ করে যখন তারা পৃথিবীতে ফিরে আসে তারা অবাক হয়ে দেখে পৃথিবীতে শতাব্দী পার হয়ে গেছে। পরিচিতেরা কেউ নেই, প্রিয়জনেরা শীতল ঘরে, ভালোবাসার মেয়েটির দেহ জরাগ্রস্ত, মুখে বার্ধক্যের বলিরেখা। শহর-নগর পাল্টে গিয়েছে অবিশ্বাস্য দ্রুততায়, মানুষের মুখের ভাষায় দুর্বোধ্য জটিলতা। শুধু যে জিনিসটি পাল্টায়নি সেটি হচ্ছে পর্বতমালা, বিশাল অরণ্য আর নীল আকাশ। রিশান আজকাল তাই ঘুরে ঘুরে ফিরে আসে এই পর্বতমালার খোঁজে, নির্জন পাহাড়ের চূড়ায় বসে খুঁজে পেতে চেষ্টা করে তার হারিয়ে যাওয়া পৃথিবীকে। শৈশব, কৈশোর আর যৌবনে যেই প্রকৃতিকে অবহেলায় দূরে সরিয়ে রেখেছে, এখন তার জন্যে বুকের ভেতর জন্ম নিচ্ছে গভীর ভালোবাসা। রিশান একটা নিঃশ্বাস ফেলে একমুঠো মাটি তুলে এনে তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। সিলিকনের এই যৌগ কী বিচিত্র রহস্যের জন্ম দিয়েছে পৃথিবীতে। প্রাণ নামে এই অবিশ্বাস্য রহস্য কি আছে আর কোথাও?হলঘরটি বিশাল, রিশান উপরের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায়, ছাদ প্রায় দেখা যায় না। বাইরে থেকে বোঝা যায় না ভেতরে এত বড় একটা ঘর গেছে। ঘরের মাঝখানে কালো গ্রানাইটের একটা টেবিল। টেবিলের চারপাশে সুদৃশ্য চেয়ার, চেয়ারের হাতলে যোগাযোগ মডিউলের জটিল মনিটর। ঘরের মাঝে এক ধরনের নরম আলো, সতেজ বাতাস। চোখ বন্ধ করলে মনে হয় বদ্ধ ঘরে নয়, বুঝি সমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। রিশান হেঁটে তার জন্যে আলাদা করে রাখা চেয়ারটিতে বসল, সাথে সাথে কানের কাছে কিছু একটা ফিসফিস করে কথা বলতে শুরু করে, মহামান্য রিশান আমার নাম কিটি, আপনাকে আমি আজকের এই সভাকক্ষ থেকে সাদর আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সবার আগে আমি আপনাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই। আপনার বাম পাশে বসেছেন নিডিয়া। নিডিয়ার পাশে যিনি বসেছেন তার নাম হান। টেবিলের অন্য পাশে বসেছেন বিটি এবং ষুন। যিনি এখনো আসেননি তিনি হচ্ছেন দলপতি লি-রয় । মহাকাশ অভিযানে তার অভিজ্ঞতা অভূতপূর্ব। লি-রয় তিন তারকার অধিকারী হয়েছেন অত্যন্ত অল্প বয়সে তিনি যেরকম দুঃসাহসী ঠিক সেরকম তার ধীশক্তি। অত্যন্ত প্রখর তার বুদ্ধিমত্তা... রিশান চেয়ারের হাতল খুঁজে যোগাযোগ মডিউলের লাল বোতামটি চেপে ধরতেই কথা বন্ধ হয়ে গেল। যন্ত্রপাতির কথা শুনতে তার ভালো লাগে না। বিশেষ করে সেই কথাবার্তায় যদি মানুষের আবেগের ভান করা হয় সেটা সে একেবারেই সহ্য করতে পারে না। রিশান ভিসুয়াল মনিটরটির দিকে এক নজর তাকিয়ে এই টেবিলের মানুষগুলোর পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিয়ে মাথা তুলে তাকাল। সবার দিকে এক নজর তাকিয়ে সে ঠিক কাউকে উদ্দেশ না করে বলল, আমি রিশান, তোমরা নিশ্চয়ই এতদিনে খবর পেয়েছ আমি তোমাদের সাথে যাচ্ছি। টেবিলেরঅন্য পাশে বসে থাক। বিটি নামের সোনালি চুলের মেয়েটি হাসার মতো ভঙ্গি করে বলল, আমরা সেটা জানি। আমরা সবাই আগ্রহ নিয়ে তোমার সাথে পরিচিত হবার জন্যে অপেক্ষা করছি। রিশান মাথা নেড়ে বলল, সেটা সত্যি হবার কথা নয়, তোমরা নিশ্চয়ই এতদিনে আমার ফাইলটি পড়ার সুযোগ পেয়েছ এবং ইতিমধ্যে জেনে গেঁছ আমি নেহায়েত সাদাসিধে কাঠখোট্টা মানুষ। টেবিলে বসে থাকা লাল চুলের ককেশীয় চেহারার মানুষটি মুখের খোঁচা খোঁচা দাড়ি অন্যমনস্কভাবে চুলকাতে চুলকাতে বলল, আমার নাম হান, কাঠখোট্টা মানুষদের যদি প্রতিযোগিতা হয় আমি মোটামুটি নিশ্চিত তোমাকে দশ পয়েন্টে হারিয়ে দেব। বিটি নামের সোনালি চুলের মেয়েটি শব্দ করে হেসে বলল, রিশান, হান একটুও বাড়িয়ে বলছে না। বিনয় জাতীয় মানবিক গুণাবলী খুব করে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে হান বিটির দিকে ঘুরে তাকিয়ে বলল, আমরা একটা মহাকাশ অভিযানে যাচ্ছি, ধর্ম প্রচারে তো যাচ্ছি না, মানবিক গুণাবলীর বিকাশ যদি না ঘটে তোমার খুব আপত্তি আছে? বিটি দুই হাত সামনে তুলে বলল, কিচ্ছু আপত্তি নেই। রিশান হান এবং বিটির কথোপকথন খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিল এবং দুজন একটু থামতেই গলার স্বরে একটু গুরুত্ব ফুটিয়ে বলল, তোমরা কী বলবে জানি না, আমি কিন্তু এই অভিযানটিতে এরই মাঝে একটা বিশেষত্ব লক্ষ করতে শুরু করেছি। টেবিলে বসে থাকা চারজনই রিশানের দিকে ঘুরে তাকাল। পাশে বসে থাকা কোমল চেহারার মেয়েটি বলল, তুমি কী বিশেষত্ব খুঁজে পেয়েছ? আমি আগে যেসব মহাকাশ অভিযানে গিয়েছি সেখানে সব সময় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের মানুষকে একসাথে পাঠানো হতো। কেউ পদার্থবিজ্ঞানী, কেউ জীববিজ্ঞানী, কেউ ইঞ্জিনিয়ার নিডিয়া নামের কোমল চেহারার মেয়েটি রিশানকে বাধা দিয়ে বলল, কিন্তু তথা তো আজকাল আর মানুষের মস্তিষ্কে পাঠানো হয় না সে জন্যে শক্তিশালী কপোট্র", কম্পিউটার, রোবট, ডাটাবেস এসব রয়েছে। এখন মানুষকে পাঠানো হয় তার মানবিক দায়িত্বের জন্যে তুমি সেটা ঠিকই বলেছ নিডিয়া। রিশান মাথা নেড়ে বলল, আমিও ঠিকএকই কথা বলছি। মহাকাশ অভিযানে মানুষের দায়িত্ব হয় মানবিক। দলটি এমনভাবে তৈরি করা হয় যেন কেউ খুব কঠোর, কেউ অবিশ্বাস্য সুশৃঙ্খল, কেউ আশ্চর্য রকমের কোমল, কেউবা খেয়ালি। দেখা গেছে, দীর্ঘকাল একসাথে কাজ করার জন্যে এরকম ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের মানুষের একটি দল খুব চমৎকারভাবে কাজ করে। আমি নিজে একাধিকবার এরকম অভিযানে গিয়েছি, অসম্ভব দুঃসহ সব অভিযান কিন্তু আমরা কখনো ভেঙে পড়িনি, তার একটি মাত্র কারণ আমরা ছিলাম ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রের মানুষ। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার কী জান? কী? আমাদের এই দলটিতে আমরা সবাই মোটামুটি একই ধরনের মানুষ। নিডিয়া ভুরু কুঁচকে বলল, সেটি কী ধরনের? আমরা সবাই মোটামুটি কঠোর প্রকৃতির মানুষ আমি তোমাদের সবার ফাইল দেখেছি, তোমরা সবাই কোনো না কোনো অভিযানে অত্যন্ত কঠোর পরিবেশেম্পড়েছ এবং সবচেয়ে বড় কথা সেই সব পরিবেশে খুব কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছ। কেউ কোন কথা বলল না কিন্তু সবাই স্থির দৃষ্টিতে রিশানের দিকে তাকিয়ে রইল। রিশান খানিকক্ষণ তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, সেইসব কঠোর সিদ্ধান্ত সময় সময় ছিল নিষ্ঠুর, অমানবিক। আমি নিশ্চিত তোমরা সেইসব কথা ভুলে থাকতে চাও। হান মুখের খোঁচা খোঁচা দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে বলল, তুমি কী বলতে চাও রিশান? তুমি জান আমি কী বলতে চাই। তবু তোমার মুখে শুনি । আমার ধারণা, মহাকাশ অভিযানের কেন্দ্রীয় দফতর ইচ্ছে করে এরকম একটি দল তৈরি করেছে। আমাদের ব্যবহার করে তারা খুব একটি নিষ্ঠুর কাজ করাবে। ষুন এতক্ষণ সবার কথা শুনে যাচ্ছিল, এই প্রথম সে মুখ খুলল, শান্ত চোখে রিশানের দিকে তাকিয়ে বলল, আমার মনে হয় তোমার সন্দেহ অমূলক। আমাদের অভিযানটি পঞ্চম মাত্রার অভিযান। মানুষের ব্যবহার উপযোগী একটা আবাসস্থল খুঁজে বের করা যার প্রধান উদ্দেশ্য। এর ভেতরে নিষ্ঠুরতার কোনো ব্যাপার নেই। রিশান খানিকক্ষণ ঘুনের মুখের দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলল, আমি


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩০৩ জন


এ জাতীয় গল্প

→ নয় নয় শূন্য তিন পার্ট ১

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now