বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

খুদে বাহিনীর গুহা অভিযান (২)

"উপন্যাস" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান ᴍᴅ. ɪǫʙᴀʟ ᴍᴀʜᴍᴜᴅ (০ পয়েন্ট)

X ২. ওরা চার ভাই-বোন স্কুলের ছুটিতে ক’দিনের জন্য ব্রাইটনে দাদু বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। দাদু-দাদির সাথে ওদের বাবা-মার সম্পর্ক তেমন জোরালো না। তারা দাদু বাড়িতে আসেন না। তার কারণ জানে না ওরা। তবে কুর্ট একটু বড় হওয়ায় ব্যাপারটা অল্পস্বল্প আঁচ করেছে। ওদের মাকে একটুও পছন্দ করেন না বুড়োবুড়ি, বিশেষ করে দাদি। তবে একমাত্র সন্তান হওয়ায় ওদের বাবার সাথে তারা সম্পর্ক একেবারে ছেদ করতে পারেননি। বিশেষ করে দাদুর ছোট ভাই জিম দাদু এটা হতে দেননি। বলতে গেলে তিনিই এ সম্পর্ক টিকিয়ে রেখেছেন। কারণ, ছোটবেলা থেকেই বাবাকে ভীষণ স্নেহ করেন তিনি। তার নিজের ছেলে নেই, দু’ মেয়ে। তাই কুর্টের বাবা চার্লসই তার ছেলে। মাঝে মধ্যেই লন্ডনে ওদের বাড়িতে ছুটির দিনে চলে আসেন জিম দাদু। বাবার সাথে গল্প-গুজব আর হাসি-ঠাট্টায় কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে যান। আর তিনি এলে বাবা যে কী খুশিই হন! সেই জিম দাদুই দু’ বছর আগে প্রথম ওদের বড় তিনজনকে দাদু বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে আসেন। শহরের এক প্রান্তে সাগর তীর থেকে শ’ দুয়েক গজ দূরে দাঁড়ানো দাদুর পুরনো কালের প্রাসাদের মত একতলা বাড়িটা। পাকাপোক্ত গাঁথুনির বাড়িটা চমৎকার। সারাক্ষণ সাগরের বাতাস এসে জানালা-দরজায় বন্ধুর মত পরশ বুলিয়ে যায়। মাঝে মধ্যে ঝড় বয়ে যায় এ এলাকায়। তখন সাগর ফুলে ওঠে। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় না এ বাড়ির। এমনিতে বাড়িটা সুদৃঢ়, ঝড় তাকে কাবু করতে পারে না। আর সাগরের প্রবল জোয়ারও এখানে পৌঁছতে পারে না। কারণ, সাগর রয়েছে বাড়ির পেছন দিকে। আর সাগর ও বাড়ির মধ্যে রয়েছে অনেকগুলো টিলা। সাগরের পানি যতই ফুলে উঠুক, টিলা পেরিয়ে এদিকে আসতে পারে না। সাগরে যাবার অন্য পথও আছে। কিন্তু কুর্ট বাহিনীর কাছে এই টিলা পেরিয়ে যাওয়াটাই পছন্দের। এ নিয়ে তিনবার এল ওরা। গত বছর দ্বিতীয়বার তারা এসেছিল। অবশ্য সবাই নয়। আগের দু’বার ছোট বলে ডেভকে মা ছাড়েনি। ফলে তার আসা হয়ে ওঠেনি। এ বছর সে প্রথম এসেছে দাদু বাড়িতে। বাড়িতে যতক্ষণ থাকে তারা, আর দশটি ছেলে-মেয়ের মত দাদু-দাদির বিপুল স্নেহ ওদের ওপর উপচে পড়ে না। কেমন যেন মাপা কথাবার্তা বলেন তারা। নাতি-নাতনিদের প্রতি অনাদর নেই, কিন্তু মমতা মাখা উচ্ছ্বসিত আদরও নেই। তবে ওরা এসব নিয়ে ভাবে না। প্রথম কথা, ওদের একটা দাদু বাড়ি আছে ও দাদু-দাদি আছে। এটা বিরাট ব্যাপার। দ্বিতীয় কথা, সেখানে একটু দূরেই একটা ছোট কিন্তু সুন্দর, নিরিবিলি সমুদ্র সৈকত আছে। বেশ নিরাপদও। সেখানে ওরা আশ মিটিয়ে হৈ চৈ, খেলাধুলা, ছুটোছুটি করতে পারে। ক’টা দিন কাটাতে পারে খুশি-আনন্দে। তারপর তো আবার ফিরে যাওয়া সেই স্কুল আর লেখাপড়ার একঘেয়ে পরিবেশে। সকাল সাতটা বাজতেই উঠে পড়ে সবাই। ঝটপট ব্রেকফাস্ট সেরে বেরোতে হবে। সারাদিনের প্রোগ্রাম। ভেতরে ভেতরে উত্তেজনায় টগবগ করছে সবাই। কিন্তু বাইরে তার প্রকাশ নেই। দাদু-দাদি টের পেয়ে গেলে হয়ত যেতেই দেবেন না। ওরা ডাইনিং রুমে গিয়ে দেখল টেবিলে ব্রেকফাস্ট রেডি। স্যান্ডউইচ, কেক, কর্নফ্লেক, দুধ। আর আছে আপেল, কমলালেবু, আঙুর। পরিমাণে যথেষ্ট। দাদি বললেন- : বাচ্চারা বসে পড়। তাড়াহুড়ো করবে না। ধীরে সুস্থে খাবে। খেতে খেতে দাদু-দাদির চোখ এড়িয়ে চারজনের লাঞ্চের ব্যবস্থা করে ফেলল কুর্ট আর ন্যান্সি। একটা থলে সাথে নিয়ে এসেছে সে। দ্রুতই ভরে ফেলল সেটা। চারজনের লাঞ্চ ভালো মতই হয়ে যাবে। এখন যেভাবেই হোক ন্যান্সির রুম পর্যন্ত তা নিয়ে যেতে হবে। সে সুযোগটাও এসে গেল। দাদি কী কাজে যেন কিচেনে গেলেন। তার পিছু পিছু গেলেন দাদুও। সে ফাঁকে ন্যান্সি চোখের পলকে হালকা খাবারের থলেটা তার রুমে রেখে এল। এখন পর্যন্ত সব ঠিকই আছে। ব্রেকফাস্ট সেরে সবাই গিয়ে বসল ন্যান্সির রুমে। চটপট বেরিয়ে যেতে হবে। কিন্তু কথা উঠল, যদি কোনো কারণে তারা লাঞ্চে বাড়িতে না ফেরে তাহলে ঝামেলা হয়ে যাবে। দাদি ভীষণ কড়া মহিলা। নিয়মের এদিক ওদিক করা তার একেবারেই পছন্দ নয়। তাদের সাথে দাদুর আচরণ বরং অনেক নরম। কিন্তু সারাক্ষণ তিনি দাদির সাথেই থাকেন, তার কাছ ছাড়া হন না। তাই নাতি-নাতনিদের সাথে আলাদাভাবে মিশে নৈকট্য গড়ে তোলার সময় হয় না তার। তবে ওরা তার একমাত্র সন্তানের ছেলে মেয়ে, তারই রক্ত। তাই ওদের দিকে খেয়াল ঠিকই আছে তার। আসলে ছেলের বউ প্যাটির সাথে কেন যেন বনিবনা হল না শাশুড়ি এলিজাবেথের। অবস্থাটা এমন যে তার সাথে দেখা বা কথাও বলেন না এলিজাবেথ। আর প্যাটিও তেমনই। শাশুড়িকে আপন করার কোনো চেষ্টাই করেন না। এতে খুব যে একটা সমস্যা হয়েছে তা নয়, কিন্তু নাতি-নাতনিগুলোকে সব সময় বা বেশিরভাগ সময় কাছে না পাওয়ার একটা কষ্ট আছে তাদের। ওরা বেড়াতে এসে খুশি মত ঘুরে বেড়াচ্ছে, খেলছে। তারা কিছু বলেন না। তবে খেয়াল রাখেন যেন কোনো সমস্যার মুখে না পড়ে। তাদের জানা নেই যে ওরা এখন সাগর তীরে পাহাড়ি গুহাগুলোতে যাচ্ছে। বিশেষ করে দাদু যদি জানতেন তাহলে বাচ্চাদেরকে গুহাগুলোর দিকে যেতে দিতেন না। কারণ, আবছাভাবে তার কানে এসেছে যে সম্প্রতি কিছু খারাপ ধরনের লোকজন গুহাগুলোতে যাওয়া-আসা করছে। হয়ত বা পুলিশের চোখ এড়িয়ে সেখানে কোনো অবৈধ কাজ-কারবার করে তারা। সেটা মাদক পাচারও হতে পারে। এ সব কাজে জড়িতরা খুবই বাজে লোক। তারা পারে না এমন কাজ নেই। আটটা বেজে গেছে। ওরা ঘর থেকে বের হবে, এমন সময় ডোর বেল বেজে উঠল। কে না কে এসেছে, তা দেখা ওদের ব্যাপার নয়। কিন্তু প্রায় সাথে সাথেই দাদু দরজা খুলে দিলেন। তার ঘরের পাশে বলেই হয়ত। বসার ঘরে ঢুকলেন জিম দাদু। পর মুহূর্তেই হাঁক শোনা যায় তার- : কই কুর্ট, ন্যান্সি তোমরা কোথায়। থমকে যায় সবাই। কুর্ট বলে- : সেরেছে। জিম দাদু এসে গেছেন। এ বেলায় আর যাওয়া হলো না তাহলে। ঠিক আছে, লাঞ্চের পরই না হয় বেরিয়ে যাব আমরা। এখন সব কিছু রেখে তার কাছে যাই চল। তিনি ডাকছেন। জিম দাদু ওদের খুব ভালোবাসেন। ওরাও ভালোবাসে তাকে। সবাই গিয়ে তার কাছে বসতেই আড্ডা জমে ওঠে। চলবে...


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১৯৫ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now