বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
১৮ সেপ্টেম্বর -২০২০
শিক্ষার্থীরা অনলাইনের ক্লাস বা টিভির ক্লাস ঠিকমত দেখছে কি না বা পড়ছে কিনা তা বুঝতে পারছি না। নবম, দশম শ্রেণির জন্য ইমো ও ফেসবুক গ্রু খুলেছি কিন্তু আশানুরূপ ফলাফল পাইনি। সহকর্মীদের সাথে গ্রুপে আলাপ করছি এই করোনাকালীন কী করা যায়? বিদ্যালয়য় কবে খুলবে নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। প্রধান শিক্ষকের নিকট বললাম, স্যার আমাদেরকে হোম ভিজিটে পাঠান, ছাত্রদের একটু খোঁজ খবর আনি। এই অবস্থা থাকলে তো আমরা ছাত্রদের ভুলে যাবো, ছাত্ররাও আমাদেরকে ভুলে যাবে, রাস্তায় সালামও দিবে না। আমি স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি তাই স্যার আমার কথাটি একটু আমলে নিয়েছেন । প্রধান শিক্ষক মো. মোখলেছুর রহমান স্যার সকল শিক্ষককে হোম ভিজিটের জন্য বলেছেন।
প্রধান শিক্ষক স্যার বলার পর স্থানীয় শিক্ষক স্থানীয় আশে পাশের দু একটি গ্রামে হোম ভিজিট করেছে। আমি আর নাজমুল ইসলাম স্যার ঐচারচর গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরে শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিলাম। অভিভাবকের কথায় স্কুল খোলা না থাকার কারণে ছেলেমেয়ে লেখা পড়া করে না। ঐচারচর গ্রামের মো. দেলোয়ার স্যারও আমাদেরকে সময় দিলেন। সকাল থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত ঐচারচর গ্রামের শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নিলাম। দুপুরে বাতাকান্দি বাজার সাহাবুদ্দীনের হোটেল খেয়ে সুমন মাহমুদ স্যারকে সঙ্গে নিয়ে হোমনা উপজেলার মহিষমারি গ্রামে গেলাম।
মহিষমারী গ্রামে এসে আমাদের একজন সাবেক ছাত্রকে নিয়ে সারা গ্রাম ঘুরলাম আর শিক্ষার্থীর খোঁজ খবর নিলাম। এই গ্রামের ছাত্রদের অবস্থা যা জানলাম তা হলো তাঁরা পাবজি আর ফ্রি-ফায়ার অনলাইন গেইমে আসক্ত। কয়েকজন মা জানাল তাঁরা অসহায়। ছেলেকে একটু বেশি শাসন করলে উঠা ঘরের সব কিছু ভাংচুর করে। আমি এই প্রথম এই গেইমের নাম জানলাম। আমাদের সাথে থাকা ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করলাম, এরা অনলাইন সুযোগ পাই কিভাবে? ছাত্রটি জানাল গ্রামের ওয়াইফাইয়ের ব্যবস্থা আছে। মাসে মাত্র ৫০০টাকা বিল। অভিভাবকদের মধ্যে পিতা বিদেশ থাকে আর মা তেমন শাসন করতে পারে না তাই মোবাইল ও মোবাইলে নেটের অসুবিধা হয়না। এই গ্রামের অনেক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিতাস অনলাইন স্কুলে এবং সূচনা টিভিতে আমার ক্লাস সম্প্রচার হয়; তোমরা কে কোন ক্লাসটি দেখেছ? দু একজন জানাল স্যার শুনেছি আপনি টিভিতে ক্লাস করান কিন্তু আমরা দেখিনি। তিতাস অনলাইন স্কুলে মাঝে মধ্যে দেখি। আমি বুঝতে পারলাম এরা আমাদের কষ্টার্জিত ক্লাস দেখে না। কিছু মেয়ে শিক্ষার্থী লেখা পড়া করে। বাবার মোবাইলের মাধ্যমে আমাদের ক্লাস ডাউনলোড করে দেখেছে জানাল। আমি আর সুমন স্যার মহিষমারি গ্রামে ঘুরে ঘুরে চিন্তায় পড়ে গেলাম। এই গেইম যদি বন্ধ না হয় তাহলে তো জাতির অনেক ক্ষতি হবে। স্কুল খুলা থাকলে গেইমে অতট সময় দিতে পারবে না। পড়া বা বাড়ির কাজে ব্যস্ত থাকতে হবে। কিন্তু এখন কি করা যায়?
রাতে আমি বাড়ি এসেই আমার ফেসবুক লাইভে এসে সরকারের প্রতি আহবান জানাল, “পাবজি এবং ফ্রি ফায়ার গেইম বন্ধ করুন” ।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now