বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

এক ছাতায় দুজন হাটলেই প্রেম হয় হয় না

"সত্য ঘটনা" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Mohammad Shahzaman (০ পয়েন্ট)

X শুভ পরের দিন সকালে লজিং বাড়ির দুজনকে পড়ালো। সকাল আট ঘটিকায় কলেজের জন্য যাত্রা করল। কলেজ যেহেতু ৪/৫কিলোমিটার দূরে তাই অনেক আগেই হেটে রওয়ানা। কলেজে গিয়ে নতুন ক্লাসে নতুন এক উদ্ভুত অনুভূতি মনে হলো। ভয় আবার ঠিক ভয় নয়, আনন্দ আবার পুরোপুরি আনন্দিত নয় এইরূপ অনুভূতি নিয়ে কলেজের ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে। পরিচয় হচ্ছে নতুন চতুন বন্ধুদের সাথে। প্রথম দিন কলেজে আসার সময় পরিচয় হয়েছিল সংকর দেবনাথের সাথে। আজও সংকর দেবনাথ এসেছে। এখানে বন্ধুত্ব হলো জিয়া, সাকিল, হাসিনা, নারগিছ, মাহবুবা, প্রীতিলতা প্রভৃতির সাথে। এখানের সবাই বন্ধুসুলভ। কলেজের স্যারেরাও বন্ধু সুলভ। শুভর থাকা ও খাওয়ার খোঁজ খবর নিলেন। বাংলা ও ইংরেজি ক্লাসে ছাত্র/ছাত্রী অনেক প্রায় একশতের উপরে। কিন্তু শুভদের গ্রুপে মানে বিজ্ঞান বিভাগে ছাত্র সংখ্যা খুবই কম। বিজ্ঞান বিভাগের শায়েস্তার রোল হলো এক আর শুভর রোল হলো চার। এসএসসি পরীক্ষার মার্কের উপর ভিত্তি করে রোল নাম্বার দিয়েছে; তারমানে শুভর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের বেশি মার্ক শায়েস্তার। শুভ ক্লাস শেষ করে বিকেল তিনটার দিকে বাসায় গেলেন। কলেজ থেকে শুভর লজিং বাড়িতে এসে একটু ক্লান্তি বোধ আসে। লজিংবাড়ির পাশেই আবুল খায়েরের সাথে পরিচয় হয়। আবুল খায়ের শুভর ক্লাসেই পরে তবে মানবিক বিভাগে। আবুল খায়ের সাথে গ্রাম ঘুরে ভাল লাগলো শুভর। এখানকার লোকদের কৃষি এবং তাঁত হলো প্রধান পেশা। মানুষগুলো সহজ-সরল। সবাই শুভকে স্যার হিসবে সম্মোধন করে এবং সম্মান করে। কলেজের পড়ে, কলেজে যাওয়া-আসা এবং লজিং ছাত্র পড়ানো শুভ খাপ খাওয়াতে পারছে না। কলেজে অন্যদের মত পড়ায় তেমন পারছে না। বিশেষ করে শায়েস্তা,খুদিস্তা, সানা প্রভৃতির সাথে পড়ায় পারছে না। শুভর চিন্তা ভাবনায় আসলো শুভ কলেজের কাছাকছি আসতে হবে তাহলে আসা যাওয়ার সময় কমে যাবে এবং পড়ায় সময় বাড়িয়ে দেওয়া যাবে। শুভ এই ব্যাপারের ক্লাসমেটদের সাথে আলাপ করলো। সাকিল ও জিয়া শুভর সবচয়ে কাছের বন্ধু। তাদের সাথেও আলাপ করে সমাধান পেলো না। কলেজের কমিটির একজনকে দূরত্ব ও পড়ালেখার বিস্তারিত জানাল। তিনি আশস্ত করলেন যে,লজিং স্থান পরিবর্তন করে দিবেন। কয়েকমাস যাওয়ার পর শুভ কলেজের কাছেই একটি লজিং পেল। শুভ কলেজের কাছাকাছি আসাতে কলেজের লিখা-পড়ায় অগ্রগতি হচ্ছে। কারণ কলেজের কাছাকাছি হওয়ায় অন্যদের কাছ থেকে নোট আনা-নেওয়া সহজ হয়েছে এবং পড়ায় সময়ও পাওয়া যায় বেশি। বন্ধুদের সাথে আড্ডাও দেওয়া যায়। জুলাই মাস। আকশ এই ভাল আবার এই মেঘের ঘনঘটা অবস্থা। কলেজ ছুটি হলো আর বৃষ্টিও শুরু হলো। শুভ তোঁ ছাতা আনে নাই। যারা ছাতা এনেছে তারা একে একে চলে যাচ্ছে যার যার বাড়িতে। শুভ অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে রইল কিন্তু বৃষ্টি থামলো না। অবশেষে বৃষ্টিতে কলেজ থেকে বের হলেন। ভিজে ভিজে হাটছিল শুভ। একটু হাটার পরই চোখ পড়ল নারগিছের । শুভকে বৃষ্টিতে ভেজা দেখে নারগিছ ছাতা নিয়ে শুভর কাছে এলো এবং হাত ধরে ছাতার নিচে নিয়ে আসল। নারগিছ শুভর চেয়ে লম্বা এবং শক্তিশালী। তাই হ্যাঁ না কিছুই বলতে পারলো না শুভ। শুভ বলল, “যদি তোমার ভাইয়েরা আমাকে দেখে তাহলে ঠাং ভাঙবে; আমাকে ভিজেই যেতে দাও”। নারগিছ জানাল তার ভাইয়েরা কিছুই বলবে না। নারগিছ বলল, “আমি তোঁ আর তোয়ার সাথে প্রেম করছি না, শুধু বৃষ্টি কারণে আমার ছাতার নিকট তোমাকে এনেছি , এতে দোষের কিছু নাই।“ এক ছাতায় দুজন হাটলেই প্রেম হয় হয় না। শুভ তারপরেও ভাবে এই গ্রামেই কেউ যদি দেখে তাহলে কি ভাববে? শুভ ভাবছে আর কামিনী রায়ের কবিতা মনে করার চেষ্টা করেছে--- করিতে পারি না কাজ সদা ভয় সদা লাজ সংশয়ে সংকল্প সদা টলে,- পাছে লোকে কিছু বলে। আড়ালে আড়ালে থাকি নীরবে আপনা ঢাকি, সম্মুখে চরণ নাহি চলে পাছে লোকে কিছু বলে। হৃদয়ে বুদবুদ মত উঠে শুভ্র চিন্তা কত, মিশে যায় হৃদয়ের তলে, পাছে লোকে কিছু বলে। কাঁদে প্রাণ যবে আঁখি সযতনে শুষ্ক রাখি;- নিরমল নয়নের জলে, পাছে লোকে কিছু বলে। একটি স্নেহের কথা প্রশমিতে পারে ব্যথা,- চলে যাই উপেক্ষার ছলে, পাছে লোকে কিছু বলে। শুভর বাসার কাছাকাছি আসায় নারগিছ বলল, “এবার বাকী জায়গায়টুকু একটু ভিজে যাও;আমি বাড়ি যাই।“ নারগিছদের বাড়ি একটু দূরেই তবে তারা স্থানীয়। শুভ ও নারগিছ একই ক্লাসে পড়ে কিন্তু প্রেমিক প্রেমিকা নয়; তবুও যদি আমানের মত মিথা ওজুহাতে খারাপ ব্যবহার করে। শুভর মনে পড়ে গেল স্কুল জীবনের কথা। প্রেম না করেও প্রেমের ওজুহাতে হালকা পাতলা মাইর খেতে হয়েছে। এখানো যদি নারগিছের ভাইয়ের আমানের মত আচরণ করে? নারগিছকে চরম সাহসী মনে হলো। তাই শুভ মনে মনে নারগিছের জন্য দোয়া করল। রাতে শুভ মার কাছে চিঠি লিখলো। শ্রদ্ধেয় আম্মাজান, আমার সালাম নিবেন। আমি আল্লাহর রহমত ভাল আছি। কলেজে এসে থাকা ও খাওয়ার সুব্যবস্থা হয়েছে তাই চিন্তার কোন কারণ নেই। আমি এখন আগের চেয়ে বেশি পড়ি। আমি কলেজের কাছাকাছি একটি বারিতে লজিং থাকি লজিং বাড়ির মালিক খুবই ভাল। আমার জন্য কোন চিন্তা ভাবনা করবা না । শুধু দোয়া করবে। ইতি স্নেহের শুভ


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪২৫ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now