বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
মক্কার ঐতিহ্যবাহী ও শ্রেষ্ঠ বংশ কোয়ায়েশের একটি শাখা ধনে-জনে শিক্ষা দীক্ষায় ও মানে-গৌরবে তৎকালে খুবই প্রসিদ্ধ ছিল। ধর্ম পালন, ন্যায়-নীতি ও সততার আশ্রয় অবলম্বন ঐ কোরায়েশ শাখাটির বৈশিষ্ট্য ছিল। বংশের প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে ইসলামোত্তর যুগে ও তাহারা প্রধানতঃ ব্যবসা-বাণিজ্য দ্বারাই অর্থোপার্জন করিতেন। একবার ঐ কোরায়েশ শাখাটির বেশ কিছু পরিবার তাহাদের জন্মভূমি মক্কা ছাড়িয়া হেজাজের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে ইয়ামেন প্রদেশে চলিয়া গেল এবং সেখানেই বসবাস আরম্ভ করিল। যাহারা মক্কা হইতে ইয়ামেনে চলিয়া আসিল, তাহাদের মধ্যে শায়খ মাহমুদ ছিলেন এক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি। তিনি কিছুদিন ইয়ামেনে অনস্থান করিবার পর তাঁহার পরিবার-পরিজন ও কতিপয় নিকটাত্নীয়সহ সেখানে হইতে তুরস্ক চলিয়া যান এবং তথাকার কুনিয়া নামক একটি ক্ষুদ্র শহরে গিয়া বসতি স্থাপন করেন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে,শায়খ মাহমুদ যখন ইয়ামেন ইয়ামেন হইতে তুরস্ক গমন করিয়াছিলেন তখন তিনি যদিও বিবাহিত ব্যক্তি ছিলেন, কিন্তু তাঁহার কোন সন্তান-সন্ততি ছিল না। তিনি নিজে যেমন মক্কার অভিজাত কোরায়েশ বংশোদ্ভূত ছিলেন, তেমনি তিনি বিবাহ ও করিয়াছিলেন কোরায়েশ বংশীয়া এক শরীফ মহিলাকে। এই মহিলা নানাগুণে বিভূষিতা ছিলেন। সততা, সত্যবাদিতা, নম্ৰতা, পবিত্রতা প্রভৃতি গুণে তিনি তৎকালীন কোরায়েশ মহিলাদের মধ্যে ছিলেন বৈশিষ্ট্যের অধিকারিণী। সর্বোপরি অত্যন্ত বুদ্ধিমতী মহিলা বলিয়া তাঁহার যথেষ্ট খ্যাতি ছিল।
শায়খ মাহমুদ নিজে ছিলেন উক্তাঞ্চলের তৎকালীন শ্রেষ্ঠ গুণী ব্যক্তিদের একজন। সে যুগে তথায় যোগ্য আলেম এবং উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি বলিতে যাহা বুঝা যাইত তাহাই ছিলেন তিনি। ধর্মীয় শিক্ষায় তিনি নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন। তাহা ইসলামের প্রতি তাঁহার গভীর অনুরাগ ছিল। ধর্মীয় বিধি-নিষেধসমূহ মনে-প্রাণে পালন করিতেন তিনি। শরীয়ত ও মা'রেফাতে তাঁহার সমান দক্ষতাহযরত শাহ জালাল ও হযরত শাহ পরান (রহঃ) ছিল। একদিকে তিনি এতগুলি গুণ ও যোগ্যতার অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও আর একটি বিশেষ দিকেও তাঁহার সবিশেষ খ্যাতি ছিল।
সে যুগে বিভিন্ন মুসলিম রাজ্য ও এলাকাগুলির সীমান্ত এলাকায় বিধর্মীদের সহিত কোথাও বা সর্বাত্নক যুদ্ধ এবং কোথায় ও বা খণ্ড যুদ্ধলাগিয়াই ছিল। তবু সে সময় ইসলাম ধর্মের প্রচার কার্য সর্বস্থানেই কম-বেশী জারী ছিল। শায়খ মাহমুদ নিজেকে ইসলাম প্রচার কার্যে একনিষ্ঠভাবে নিয়োজিত করিয়াছিলেন। আর এই কার্যব্যাপদেশে বিভিন্ন সময় তাঁহাকে ধর্মীয়যুদ্ধে লিপ্ত হইতে হইয়াছিল। যুদ্ধের ময়দানে তিনি সবসময়ই অদ্ভুত বীরত্ব প্রদর্শন করিতেন। ঈমানের জোশে বলীয়ান মাহমুদ শত্রু পক্ষের জন্য ভীতির কারণ ছিলেন। এ কারণে প্রায় সর্বক্ষেত্রেই তিনি প্রতিপক্ষের সাথে জয়লাভ করিতেন। এই সুবাদে তিনি সমকালীন মুসলমানগণের নিকট অতিশয় ভক্তি ও শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন।
শায়খ মাহমুদ অন্যান্যভাবে ও ইসলামের সেবামূলক কাজে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। মুসলমানদের সমাজ সেবায় তিনি পুরাপুরিভাবে আত্মনিয়োগ করিয়াছিলেন। মুসলমানদের মধ্যে ধর্মবিরোধী কাজ বা কোনরূপ কুরীতি-নীতি দেখিলেই তিনি সাহসিকতার সাথে তাহা বন্ধ করিতে ঝাঁপাইয়া পড়িতেন এবং উদ্দেশ্য সাধন না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টায় বিরত হইতেন না। তাঁহার এই ধরনের ক্রিয়া-কলাপ দেখিয়া সমাজের মুসলিমগণ তাঁহাকে নিজেদের শ্রেষ্ঠ নেতার আসনে বসাইয়াছিলেন, কিন্তু তিনি নিজের জন্য কোন সম্মানিত পদ বা গৌরবে আসনের প্রত্যাশী ছিলেন। না। সমাজের উচ্চ মর্যাদাশীল লোকদের অপেক্ষা সাধারণ শ্রেণীর লোকদের সঙ্গেই তাঁহার বেশী উঠাবসা ছিল। আর ইহারই সুযোগে সাধারণ স্তরের লোকগণকে পাক্কা ঈমানদার এবং খাঁটি ধর্মপ্রাণ রূপে গড়িয়া তুলিয়াছিলেন।
হযরত শাহ্ জালাল (রহঃ)-এর জন্ম
পূর্বেই উল্লেখ করিয়াছি, শায়খ মাহমুদ (রহঃ) ইয়ামেন হইতে যখন সস্ত্রীক তুরস্কের কুনিয়া নামক ছোট শহরে আসিয়া বসবাস আরম্ভ করেন তখন ও পর্যন্ত তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। বিবাহের পরে দীর্ঘদিন এইভাবে কোন সন্তান-সন্ততি লাভ না করায় শায়খ মাহমুদ দম্পতি পারিবারিক জীবনে সত্যিই একটি অভাব অনুভব করিতেছিলেন। তাহারা এতদিনে কোন সন্তান-সন্ততি লাভ না করিয়া সত্যিকারভাবেই খুরই অসুখী ছিলেন। এজন্য তাঁহারা স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই অন্ততঃ একটি সন্তান লাভের জন্য আল্লাহর দরবারে নিয়তই প্রার্থনা করিতেন।
লেখক : আল আমিন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now