বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ভুত মক্কেল

"ভূতুড়ে অভিজ্ঞতা" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মোহাম্মদ আরাফাত রহমান রাজু (০ পয়েন্ট)

X ব্যারিস্টার বিমল সেন। একজন সুদক্ষ উকিল। আজ পর্যন্ত সে যত মামলা নিয়েছে সবগুলো জিতেছে। আদালত থেকে ফেরার সময় তার সহকারি বলল, স্যার আপনার জন্য ভালো একটি বাড়ি পেয়েছি, অনেক কম দামে। ব্যারিস্টার বিমলঃ বাহ.... দারুন কাজ করেছো চলো বাড়িটি দেখে আসি। সহকারিঃ চলুন স্যার! [তারা গাড়িতে উঠে বাড়িটির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলো] ব্যারিস্টার বিমলঃ ওয়াও... এত কম দামে এত সুন্দর বাড়ি। সহকারিঃ স্যার চলুন! আগে কেয়ারটেকার এর সাথে কথা বলিনি। ব্যারিস্টার বিমলঃ নিশ্চয়ই কেরটেকারের সাথে কথা বলি নেই। কোথায় তোমার কেয়ারটেকার? [কেয়ারটেকার আসলো] কেয়ারটেকারঃ স্যার আপনার কথা আমি অনেক শুনেছি, আজকের আপনাকে দেখলাম। খুব ভালো লাগলো, আপনি ভালো আছেন স্যার? ব্যারিস্টার বিমলঃ হ্যাঁ বেশ ভালো আছি।চলুন আগে আমরা বাড়ির ভিতর টা দেখে আসি। কেয়ারটেকারঃ হ্যাঁ চলুন। [তারা সবাই বাড়িটির ভেতরে প্রবেশ করল] ব্যারিস্টার বিমলঃ আমি ভাবতেই পারিনি এত কম দামে এত সুন্দর একটি বাড়ি। সত্যিই অসাধারণ বাড়িটি, আমার খুবই ভালো লেগেছে, আমি কাল থেকে বাড়িতে উঠবো। [বিমল পরের দিন সকালবেলা বাড়িটিতে উঠলো] সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সবই স্বাভাবিক ছিল কিন্তু যখন রাত আটটা বাজবে তখনই শুরু হলো ভয়ংকর কান্ড। ব্যারিস্টার বিমলঃ সকাল থেকে বেশ খাটনি হয়েছে একটু বিশ্রাম করে নেই। চেয়ারে বসে একটু ঘুমিয়ে নিই। যখনই ঘড়ির কাটায় রাত আটটা। তখনই কে যেন বিমলকে ডাক দিল। ব্যারিস্টার সাহেব ও ব্যারিস্টার সাহেব আমি এদিকে, এদিকে তাকান। ব্যারিস্টার বিমলঃ কে, কে ওখানে? এত রাতে আপনি কি করছেন? আপনি জানেন না কারো ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা ঘোর অন্যায়। আমি চাইলে আপনাকে মামলা দিতে পারি। আমি অন্য কারো ঘরে প্রবেশ করিনি তো। এটা আমার ঘর আর আমি হলাম রাজবল্লভ! ব্যারিস্টার বিমলঃ তা হয়তো আগে ছিল এখন এটা আমার বাড়ি আমি এটা কিনেছি। রাজ বল্লভঃ আমি তো এ বাড়িটি বিক্রি করিনি তাহলে এটা আপনার হলো কিভাবে? [এই বলে রাজবল্লভ ওখান থেকে অদৃশ্য হয়ে যায়] ব্যারিস্টার বিমলঃ ভারী অদ্ভুত তো লোকটা এই আসলো আবার এই চলে গেল। দেখতেই পেলাম না। যা হোক,একটু বিশ্রাম করো নি অনেক রাত হয়েছে। [পরের দিন সন্ধ্যা বেলায়] রাজবল্লভঃ ব্যারিস্টার মশাই ও ব্যারিস্টার মশায় ঘুমিয়ে পড়লেন নাকি, তাড়াতাড়ি উঠুন আমি এসেছি। ব্যারিস্টার বিমলঃ ও রাজাবল্লভ মশাই আপনি এসেছেন। কিন্তু আপনি কোথা থেকে আসলেন? ঘরের দরজা বন্ধ করা। রাজবল্লভঃ আপনি এখনো বুঝতে পারলেন না।আমি মানুষ নয় আমি ভূত। ব্যারিস্টার বিমলঃ হা..হা..হা.. আপনি ভালো মজা করতে পারেন। হাসালেন আমাকে। রাজবল্লভ:এটা মজা নয়।আমি সত্যিই ভুত। [এই বলে রাজবল্লভ আবার অদৃশ্য হয়ে গেল তার চোখের সামনে। এবং কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে আসলো] রাজবল্লভঃ ব্যারিস্টার মশাই এখন বিশ্বাস হয়েছে? ব্যারিস্টার বিমলঃ হ্যাঁ হয়েছে। রাজবল্লভঃ তাহলে কাজের কথায় আসি।আমার একটা মামলা রয়েছে যে মামলাটা আপনি লড়বেন। আপনি চিন্তা করবেন না আপনার উপযুক্ত পারিশ্রমিক আপনি পাবেন। ব্যারিস্টার বিমলঃ তা হয়তো লড়বো তবে আপনার মামলা টা কী? রাজবল্লভঃ আপনি আজ এই বাড়িতে থাকেন। একসময় এই বাড়িতে আমি থাকতাম। আমার এক ছোট ভাই ছিল, সে আমার বাড়িটাকে বেঁচে একটি হোটেল বানাতে চাইতো। কিন্তু আমি তাকে কখনো দিতাম না সে আমাকে অনেক জোর করেছে আমার কাছ থেকে দলিল নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমি দলিল লুকিয়ে রাখি। ব্যারিস্টার বিমলঃ তারপর! রাজবল্লভঃ খুব ঘুরতে যাওয়া পছন্দ ছিল আমার, তাই আমি সেই দিন বিকাল বেলা গাড়ি নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। অনেকদূর গেলাম হঠাৎ দেখলাম গাড়ির ব্রেক কাজ করছে না। তখনই গাড়ি নিয়ে আমি নদীতে পড়ে গেলাম সঙ্গে সঙ্গে আমি মারা গেলাম। ব্যারিস্টার বিমলঃ তাহলে এক্সিডেন্ট এখানে আমি করবো কি আপনি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। রাজবল্লভঃ না এটা এক্সিডেন্ট নয়।এটা একটা চক্রান্ত। আমি মারা গিয়ে ভূত হয়ে ওর কাছে এসেছি। এবং দেখলাম ও বলতে লাগলো, আমি আমার ভাইকে মেরে ফেলেছি গাড়ির ব্রেক কেটে। তখন আমি বুঝতে পারলাম আমাকে মেরেছে আমার ভাই। ব্যারিস্টার বিমলঃ আপনি তাকে শাস্তি দিতে পারেন আপনি একজন ভূত। রাজবল্লভঃ আমি যদি ওকে শাস্তি দিতে পারতাম। তাহলে কি আপনার কাছে আসতাম। আমি অন্য ভুতের মতো যাদু করতে পারিনা। ব্যারিস্টার বিমলঃ ঠিক আছে আপনার মামলা টা তাহলে আমি কালকের আদালতে তুলব দেখি আদালত কি বলে। রাজবল্লভঃ ঠিক আছে ব্যারিস্টার মশাই তাহলে আমি আজকের মত যাই কালকে আবার দেখা হবে এই সময়। [এই বলে রাজবল্লভ আবার অদৃশ্য হয়ে চলে যায়] বিমল হাসতে হাসতে বলতে লাগল অবশেষে ভূত মক্কেল ও পেলাম। পরের দিন রাতে..... রাজবল্লভঃ ও ব্যারিস্টার মশাই আদালতে কি আমার মামলাটা নিয়েছে? ব্যারিস্টার বিমলঃ হ্যাঁ আদালতে আপনার মামলাটা গ্রহণ করেছে আগামীকাল সকাল ১১ টার সময় মামলা শুরু হবে।আর আপনাকে আদালতে যেতে হবে। রাজবল্লভঃ তা কি করে হয় আমি তো ভূত। ব্যারিস্টার বিমলঃ আমি যা যা বলবো আপনি ঠিক তাই তাই করবেন। তাহলেই কিন্তু আপনার মামলা টা আমি জিতবো। রাজবল্লভঃ বলুন তাহলে শুনি। ব্যারিস্টার বিমলঃ আপনি আদালতে গিয়ে বলবেন যে, আপনি গাড়ি নিয়ে পানিতে পড়ে যাবার পরে, আপনি ভাসতে-ভাসতে একটি এলাকায় গিয়ে পৌঁছান। এবং সেখানকার লোক আপনাকে সুস্থ করে তোলে। এবং আপনি কয়েক বছর ধরে গা-ঢাকা দিয়ে থেকেছেন। রাজবল্লভঃ বাহ সুন্দর বুদ্ধি তো আপনার। [পরেরদিন আদালতে] [ব্যারিস্টার বিমল রাজবল্লভের ছোট ভাইয মিঃ হ্যারির সাথে কথা বলছে] মিস্টার হ্যারিঃ জর্জ সাহেব ১৫ বছর আগের ঘটনা এখন উঠিয়ে কি লাভ হবে। আমার বড় ভাই গাড়ি এক্সিডেন্টে মারা গেছে সেটা সবাই জানে পুলিশ রিপোর্ট লেখা রয়েছে। ব্যারিস্টার বিমলঃ সে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছে তা আমরাও জানি।কিন্তু সে মারা গেছে না তাকে মারা হয়েছে সেটা কিন্তু এখন পর্যন্ত কেউ জানেনা। মিঃ হ্যারিঃ জর্জ সাহেব সে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা গেছে তার গাড়ির ব্রেকফেল হয়েছে তাই। ব্যারিস্টার বিমলঃ আপনি কি করে জানলেন যে তার গাড়ির ব্রেকফেল হয়েছে? আমি তো ব্রেক ফেলের কথা বলিনি। মিঃহ্যারিঃ পুলিশ রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে আমার ভাইয়ের গাড়িতে ব্রেক ফেল হয়েছে। সে মারা গেছে। ব্যারিস্টার বিমলঃ না মিঃহ্যারি সে এখনো মারা যায়নি সে এখনো জীবিত রয়েছে। [এই বলে বিমল রাজবল্লভ কে আদালতে ডাকল।এবং রাজবল্লভ কে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল রাজবল্লভ বিমলের কথামতো আদালতে সবকিছু বলল এবং আদালত হ্যারিকে ফাঁসির হুকুম শুনানো] ঐদিন রাতে...... রাজবল্লভঃ ব্যারিস্টার মশাই আমি বলেছিলাম না আপনাকে আমি উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেবো‌ আমার উপযুক্ত পারিশ্রমিক হচ্ছে আমার এই বাড়িটা আজ থেকে আপনার জন্য।আপনি আমাকে সত্যি ন্যায় বিচার পাইয়ে দিলেন আমি চলে যাচ্ছি। লেখকঃ মুহাম্মদ আরাফাত রহমান রাজু (ভুত মক্কেল)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৩৭ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now