বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
মাত্র দু দিন আগেই বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে তাদের। নতুন বউয়ের হাতে লাগানো মেহেদীর রঙ এখনো শুকায়নি।
বউকে নিয়ে ঢাকায় পৌঁছানোর আগেই এক্সিডেন্ট করে কবরের মাটিতে চিরতরে ঘুমিয়ে গেছে শামিম।
রোড এক্সিডেন্টে স্বামীকে হারানো উনার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী মিম মারাত্মক আহত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে হসপিটালের বেডে শুয়ে।
বউভাতের অনুষ্ঠানে জ্বালানোর জন্য আনা বেঁচে যাওয়া কাঠের টুকরা গুলি এখনো পরে আছে বাড়ির পাশেই।
অথচ যাদের জন্য ছিলো এত আয়োজন। দু দিনের ব্যবধানে পৃথিবী ছেড়েই চলে গেলো তাদেরই একজন।
অপরজন এখনো কাতরাচ্ছে অসহ্য যন্ত্রনায়।
কত এক্সিডেন্ট এর খবরই তো পাই। তাদের সবাই অচেনা।
তাই কষ্ট লাগলেও সেসব ঘটনা অন্তত হৃদয় টা ছিন্নভিন্ন করে না।
কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন এই দূর্ঘটনার খবর শুনলাম। বুক কেঁপে উঠে সাথে সাথেই।
স্পট ডেটে মারা যাওয়া মানুষটা যে আমার নানা বাড়ি থেকে ৩ মিনিটের দূরত্বের এক বাড়ির সন্তান।
যিনি আমার এলাকা সম্পর্কের মামা হোন।
ছোট থেকেই চট্টগ্রামে থাকার সুবাদে দাদাবাড়ি, নানাবাড়িতে খুব বেশী আসার সুযোগ হয় না বলে উনার সাথে গভীর সম্পর্ক ছিলো না যদিও,
তবে বার কয়েক দেখা হয়েছিলো বেঁচে থাকতে।
কথা হয়েছিলো অল্পবিস্তর।
সদা হাসিমুখে থাকা মানুষটার হঠাৎ মৃত্যুর খবর কেড়ে নিয়েছিলো আমার মুখের হাসি।
কারণ! দু দিন আগেই যে উনার বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে।
এমন মৃত্যু বড্ড বেশীই যন্ত্রনার।
রাত ৮ টায় যখন উনার বাড়িতে গিয়ে পৌঁছালাম।
তখন কেবলই লাশবাহী এম্বুল্যান্স সাইরেন বাজিয়ে ছুটে আসছিলো।
অপেক্ষমান মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছিলো দু দিন আগেই বর সেজে বিয়ের পিড়িতে বসা ছেলেটার লাশ হয়ে ফিরে আসার দৃশ্য দেখতে।
সেই দৃশ্য এতটাই করুণ। খুব কাছ থেকে দেখছিলাম বলে আমার চোখের জল গড়িয়ে পড়ছিলো অজান্তেই।
একজন মা তার সন্তানকে জীবনের সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে বড় করে তোলেন।
সেই মায়ের কাছে সন্তানের মৃতদেহ দেখার চেয়ে ভয়ংকর কিছু হয় না।
অথচ এমন কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখিই হতে হলো মৃত শামিমের মা"কে।
এ্যাম্বুল্যান্স থেকে শামিমের রক্তাক্ত দেহ নামিয়ে যখন খাটিয়াতে করে মায়ের কাছে নেয়া হলো!
হাসিমুখে নতুন বউকে সাথে করে মায়ের থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকার পথে রওনা দেয়া সেই সন্তানকে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে দেখে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে দেয় মা।
পাগলের মত সন্তানের মুখে চুমু খেতে খেতে বলছিলেন, ও ময়না পাখি, ও আমার কলিজার টুকরা !
ও বাজান!
তুই কথা বল বাবা। একটু তাকা আমার দিকে। এই দ্যাখ আমি তোর মা!
অথচ মা জানে, তার ছেলে আর কখনোই তাকে মা বলে ডাকবে না।
কখনোই চোখ মেলে তাকাবে না। তবুও মায়ের অবুঝ মন যে মানছিলো না।
সন্তানের লাশ বুকে নিয়ে মায়ের আহাজারি তে সবার মত আমার চোখ দিয়েও টপটপ করে পানি ঝড়ছিলো।
ওই মা"কে কি বলে সান্তনা দিতাম! পাশে দাঁড়িয়ে চুপচাপ দেখে যাওয়া ছাড়া কিছুই করার ছিলো না আমার।
আহ! মৃত্যু! কত ভয়ংকর। এক সেকেন্ডেই জীবনের সব আলো নিভিয়ে দেয়।
শামিম আর মিম দম্পতি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলো পরিবারের সম্মতিতেই।
জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার চিয়ারীগ্রাম নিবাসী ২৮ বছরের শামিম প্যারা মেডিকেল কোর্স কমপ্লিট করে ঢাকার এক সরকারি হসপিটালে হেলথ এসিস্ট্যান্ট হিসাবে কর্মরত ছিলো।
পরিবারের দুই ভাইয়ের মাঝে তিনিই ছিলেন বড় সন্তান।
উনার স্ত্রী ২৫ বছর বয়সী মিম আক্তার, জামালপুর জেলার শরিষাবাড়ি থানার আরামনগর ইউনিয়ন ধানাটা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে।
জামালপুর জাহিদা সফির মহিলা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ঢাকায় পড়াশোনা করছিলেন। উনার গ্রাজুয়েশন প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে ছিলো।
দূর্ঘটনা যেভাবে ঘটে....
বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে মাইক্রো তে করে বাড়ি থেকে ঢাকার পথে রওনা দিয়েছিলো গতকাল রাতে।
সেটি আজ ভোররাতে মির্জাপুরের জামুর্কী ইউনিয়নের পাকুল্যা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে মারাত্মক দুর্ঘটনার শিকার হয়।
ওই স্থানে গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে ঢাকাগামী একটি কাভার্ডভ্যান বিকল হয়ে পড়ে। সড়কের ওপরেই কাভার্ডভ্যানটি থেমে ছিল। ভোররাতে ঢাকা অভিমুখে রওনা দেয়া মাইক্রোবাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কাভার্ডভ্যানের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়।
মাইক্রো তে থাকা ৪ জনের ৩ জনই সাথে সাথে মারা যায়।
ঘটনাস্থলেই নিহত হোন মাইক্রোবাস চালক হাসান মিয়া (২৮)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সাংনুরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
ড্রাইভারের সহকারী নিহত অপরজন হলেন একই উপজেলার তুলাবাড়ি গ্রামের সালাম মিয়ার ছেলে ইমন মিয়া (২৫)
এবং তৃতীয়জন হলেন সদ্য বিবাহিত ২৮ বছর বয়সী গোলাম মাওলা শামীম।
শামীমের স্ত্রী মীম আক্তার"কে গুরুতর আহত অবস্থায় মির্জাপুরের কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রথম ছবিতে স্বামীর সাথে স্ত্রী মিমের হাসৌজ্বল ছবি।
এখন মেয়েটা মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে বেঁচে থাকার জন্য।
শামীমের লাশ ধোঁয়ানোর জন্য যখন নেয়া হয়!
এলাকার মুরুব্বীদের কথা রাখতে জীবনে প্রথমবারের মত আমি লাশ ধোঁয়ানোর কাজে যুক্ত হই।
বিশ্বাস করেন! যখন শামীমের শরীর থেকে কাপড় খোলা হচ্ছিলো!
আমার কলিজা মোচড় দিয়ে উঠছিলো।
কি বিভৎস অবস্থা, বলে বুঝানো যাবে না।
মৃত্যুকে আমি কখনোই ভয় পাইনি যেমন।
মৃত লাশ দেখেও আমার ভয় করে না।
আজ থেকে কয়েক বছর আগেই একটা লাশ নামিয়েছিলাম কবরে। আমার একটুও ভয় পায়নি।
কিন্তু লাশ ধোঁয়ানোর অভিজ্ঞতা এই প্রথম।
গলার রগ কেটে গিয়েছিলো আঘাত লেগে।
থুতনির নিচে ফাকা হয়ে ছিলো পুরোটায়।
টপটপ করে রক্ত পড়ছিলো।
বুকে পেটে কাচের টুকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো।
হাতে পায়ে বিভিন্ন জায়গায় রক্ত জমাট বেধে কালো হয়ে ছিলো আঘাত লেগে।
শরীর ফুলে গিয়েছিলো অনেকটা।
লাশের শরীর থেকে বিকট একটা গন্ধ বের হচ্ছিলো।
নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আসার উপক্রম হচ্ছিলো লাশ ধোঁয়ানোর কাজে যুক্ত থাকা আমি সহ ৩ জনের।
সবচেয়ে বেশী খারাপ লাগছিলো যখন লাশের কোমরের কাপড় সড়ানো হয়।
এতক্ষণ ধরে সবার চোখের আড়ালেই ছিলো দৃশ্য টা।
কোমরের বাম পাজরের হাড় ভেঙে বেড়িয়ে এসছিলো ভেতর থেকে।
ঝুলে ছিলো নিচের দিকে।
মাংস থেতলে গিয়েছিলো একেবারে পিছন সাইটে।
সেই দৃশ্য টা কেবল আমরা ৪ জনই দেখেছিলাম।
কয়েক ঘন্টা আগেও জীবিত থাকা মানুষটার দেহ হিম শীতল হয়েছিলো। ধুতে গিয়ে যতবারই ছুঁয়েছি তাকে৷ আত্মা কেঁপেছে আমার ততবারই।
উফ আল্লাহ! তখন পৃথিবীর সবকিছু আমার কাছে তুচ্ছ মনে হচ্ছিলো।
কেউ যদি এসে তখন বলতো! পৃথিবীর সব সম্পদ তোমার!
তবুও আমার একটুও লোভ জাগতো না।
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মেয়েটা এসে যদি প্রেম নিবেদন করতো! আমার বিন্দুমাত্র আগ্রহ জন্মাতো না।
চোখের সামনে নিথর হয়ে পরে থাকা দেহটা যে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিলো ভয়ংকর সুন্দর মৃত্যু কথা।
বিশ্বাস করেন! মৃত্যুর চেয়ে সত্য আর কিছু নেই। হয় না।
লাশ ধোঁয়ানো শেষ করার পর আমার শরীরের দিকে একবার তাকিয়ে দেখি, ঘামে ভিজে একাকার হয়ে গেছে গায়ে থাকা পাঞ্জাবী।
শরীরের সবগুলি পশম দাঁড়িয়ে গেছে।
আমার চোখে তখন কেবল ভাসছিলো মৃত্যুর কাল্পনিক দৃশ্য।
যে মৃত্যু বয়স দেখে না। ধর্ম চিনে না। সাদা কালো রঙ বোঝে না। রুপ যৌবনের অহংকার কে মূল্য দেয় না।
সরকারি চাকরি কিংবা বিসিএস ক্যাডার! কাউকেই পরোয়া করে না।
যে মৃত্যু কেড়ে নেয় মায়ের কোলের দুধের শিশুকেও।
আজকেই যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো শামীম।
মাইক্রো তে থাকা ৪ জনের ভেতর কেবল বেঁচে গেছে শামীমের স্ত্রী মিম আক্তার।
কিভাবে বাঁচলো, জ্ঞান থাকা অবস্থায় সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন পুলিশের কাছে।
যদিও এই বেঁচে থাকা মৃত্যুর চেয়েও কষ্টের।
ক্লান্ত শরীর নিয়ে স্বামীর কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়েছিলো মিম।
এক্সিডেন্ট এর ফলে গাড়িটা যখন দুমড়ে মুচড়ে যায়...
তখন মিম শুয়ে থাকার কারণে মাথায় আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা পেলেও ধাক্কা লাগার ফলে গাড়ির ভিতরে সিটের নিচের অংশে ঢুকে যায়।
সেখানেই ভেঙে কয়েক টুকরা হয়ে যায় তার মেরুদণ্ডের হাড়।
ছিড়ে যায় একটি কান।
ভেঙে যায় বাম হাত। আঘাত লাগে শরীরের বিভিন্ন স্থানে।
তবুও তিনি প্রাণে বেঁচে যান হায়াত অবশিষ্ট থাকার ফলে।
উনি এখনো শঙ্কামুক্ত নন। হসপিটালের বেডে শারীরিক যন্ত্রনার সাথে সাথে বুকফাটা আর্তনাদ ও বেড়িয়ে আসছে দুদিন আগেই বিয়ের পিড়িতে বসা স্বামীর মৃত্যুর খবরে।
প্রাণে বেঁচে গেলেও আমৃত্যু এই কষ্ট উনাকে শান্তিতে ঘুমাতে দিবে না এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
বুকভরা হাহাকার কেড়ে নিবে প্রাণে বেঁচে যাওয়ার আনন্দটাকে।
আজীবন পিড়া দিয়ে যাবে এই ভয়ংকর দূর্ঘটনায় প্রাণপ্রিয় স্বামীকে চিরতরে হারানোর বেদনা।
এমন বেঁচে থাকাটা যেন প্রতি মুহুর্তে অনূভব করাবে মৃত্যু যন্ত্রনা।
শামীমকে যখন কবরে নামানো হচ্ছিলো! রাতের আঁধারে জানাযায় অংশ নেয়া শত শত মানুষের চোখে মুখে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো শোকের ছাঁয়া।
উনার বাবা তার ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায়।
ছোট ভাই হাউমাউ করে কাঁদছিলো।
কি যে শোকাবহ পরিবেশ তৈরী হয়েছিলো তখন!
সেটা লিখে বুঝানো সম্ভব নয়।
খোদার কসম।
দুনিয়ার সব কিছু আমার কাছে অর্থহীন মনে হচ্ছিলো তখন।
বিলাসবহুল বাড়ি । ব্র্যান্ডের গাড়ি। অঢেল টাকা পয়সা, জমিজমা সব ফেলে মাত্র সাড়ে ৩ হাত কবরই হয় মানুষের শেষ ঠিকানা।
সরকারি চাকরির কথা শুনলেই মানুষ সোনার হরিণ পাওয়ার মত আনন্দিত হয়।
অথচ সরকারি চাকরি শামীমের ও ছিলো।
কিন্তু মৃত্যুর সাথেই সাথেই সব হিসাব পাল্টে গেলো।
শেষ সম্বল হিসাবে কেবল শস্তা কাফনের কাপড় আর মাটির বিছানাই জুটলো।
অথচ দুনিয়ার লোভে পড়ে আমরা ভুলে যাই মৃত্যুর কথা,
রুপ যৌবনের জৌলুশে ভুলে যাই পরকালের কথা।
টাকা, ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে ভুলে যায় পৃথিবীর জীবন ক্ষনস্থায়ী।
রাগ দেখাই, অহংকার করি, অন্যদের হিংসা করি।
মারামারি হানাহানি কাটাকাটি খুন খারাবি কোনটাই বাদ রাখি না।
অন্যের সম্পদ লুট করা কিংবা অন্যকে কষ্ট দিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ি।
ভুলে যাই এই স্বার্থপর পৃথিবী কখনোই কারো একার সম্পত্তি ছিলো না।
কখনো হবেও না।
আমরা ভুলে যাই সেই আল্লাহর হুকুম। আদেশ নিষেধ।
কেয়ার করি না হালাল হারামের।
অবাধ্য হই বারবার সেই স্রষ্টার। যার দয়াতেই পেয়েছি আমাদের জীবন।
নামাজ পড়ি না ব্যস্ততার অজুহাতে।
অথচ মৃত্যু কোন অজুহাতই মানে না।
রোজা, হজ, যাকাত সহ আল্লাহর হুকুম কে এড়িয়ে যাই।
ফলাফল কি হবে এসব অবাধ্যতার সেটা বেমালুম ভুলে যাই।
ইয়া আল্লাহ! আমরা পাপী। ইচ্ছায় অনিচ্ছায় জেনে না জেনে কতশত ভুল করি।
আমরা তোমারই বান্দা। তোমার কাছেই ক্ষমা চেয়ে ফিরে আসি।
আমাদের তুমি ক্ষমা করে দাও প্রভু।
শামীমের মা আমৃত্যু সন্তান হারানোর যন্ত্রনা বয়ে বেড়াবে।
মিম তার স্বামী হারানোর বেদনা আমৃত্যু চাইলেও ভুলতে পারবে না।
শামিমের সাথে প্রাণ হারানো বি_বাড়িয়ার মানুষদুটির পরিবার ও আহাজারি করবে।
আমার মনে পড়ে গেলো ফিলিস্তিনের মুসলিমদের কথা।
সন্ত্রাসীরা প্রতিদিনই কোন না কোন মায়ের কোল খালি করছে।
চোখের সামনে একটা লাশ দেখেই মনের ভেতর উলট পালট হয়ে যাচ্ছে৷ তারা কিভাবে এত লাশের বোঝা কাধে নিয়েও আল্লাহু আকবার বলে লড়াই করে।
আহারে মৃত্যু। রঙীন জীবন কত দ্রুত বিষাদে বদলে দেয়।
কবর দেয়া শেষ করে যখন ফিরছিলাম।
শরীরের সব শক্তি হারিয়ে ফেলছিলাম যেন।
পা আগাচ্ছিলো না সামনে।
নিস্তেজ হয়ে গিয়েছিলাম।
মাথা ঘুরছিলো।
মনে হচ্ছিলো রাস্তায় পড়ে যাবো।
আমার টালমাটাল অবস্থা দেখে নানা আমাকে শক্ত করে ধরে বাড়িতে নিয়ে এলো।
কর্পূরের গন্ধ শরীরে লেগেছিলো তখনো।
গোসল শেষ করে লিখতে বসলাম।
চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি পড়ছিলো।
ভাবনাজুড়ে কেবল মৃত্যুই ঘুরছে আমার।
রাতে খাইনি। জলজ্যান্ত লাশ ছুঁয়ে এসে গলা দিয়ে খাবার কি আর নামবে আমার!
আমার নাকে যে ভাসছে কেবল মৃত্যুর ঘ্রাণ।
মৃত্যুকে তো খাওয়া যায় না।
শামীমের মা, তার স্ত্রী"র মত কত রাত আমিও ঘুমাতে পারবো না জানি না।
বিঃদ্রঃ ঘটনা টি দুইদিন আগের
সংগৃহীত
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now