বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

❤️❤️হুজুর হুজুরনী (৭ম এবং শেষ পর্ব)❤️❤️

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান ★ রোদেলা রিদা ‎★ (০ পয়েন্ট)

X ইশিতাঃ আমাকে শুদ্ধ করে কুরআন পড়া শিখাবা? --শিখামু,কিন্তু বিনা বেতনে শিখাইতাম না!" বলে মুচকি হাসে আবদুল্লাহ! -ওকে! কত বেতন দিতে হবে তোমায় বলো! আমি দেবো! -উহুঁ! আমি টাকা নেবোনা! অন্য কিছু চাই! -তাহলে কি নিবা? অবাক কন্ঠ ইশিতার। --প্রতিদিন ফজরে জাগিয়ে দিবে আমায়। --ওকে আমার স্বামী! দিবোনে যদি তাতে তুমি খুশি হও" বলে আবদুল্লাহর নাক টেনে দিলো ইশিতা।দুজনের মুখেই মুচকি হাসি। কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো নিষ্পলক একে অন্যের দিকে। -এ্যই হুজুর! কি দেখছো অমন করে! --আমার বউকে দেখছি! -ঢং! নতুন করে দেখার কি আছে? --তোমাকে যত দেখি ততই মুগ্ধ হই!বিয়ের আগে ও পরে প্রেমের পার্থক্য যে এখানেই! --সে আবার কেমন? -শোনো, বিয়ের আগে যারা প্রেম করে তাদের আকর্ষণ ও ভালোবাসা দিন দিন হ্রাস পায়..আর বিয়ের পরের হালাল প্রেম ভালোবাসা দিন দিন শুধু বৃদ্ধিই পায়।আর স্বামী স্ত্রী যদি পরস্পর প্রেম ভালোবাসার নজরে তাকায় তো আল্লাহ্ পাকও তাদের রহমতের দৃষ্টিতে দেখেন। --তাই! আলহামদুলিল্লাহ! --হুম! যারা বিয়ের আগে অবৈধ প্রেম ভালোবাসায় জড়ায় তারা যদি জানতো বিয়ের পরে স্ত্রীর সাথে হালাল প্রেম ভালোবাসা কত মধুর ও প্রশান্তিময় তাহলে তারা বিয়ে করে বউয়ের সাথেই প্রেম করতো। --এই জন্যেই তো হালাল প্রেম করার জন্য এই হুজুরকে আমি বিয়ে করছি " বলে আবদুল্লাহর নাক টেনে দিলো ইশিতা। খাটে মুখোমুখি বসে আবদুল্লাহ ইশিতার হাত দুখানা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললোঃ প্রিয়তমা! এ রাতটা আমাদের বাসররাতও বলতে পারো।কারন আমাদের বাসায় তোমার এই প্রথম আগমন।আজ পরিপূর্ণভাবে তুমি সংসারলাইফে প্রবেশ করেছো, তাই তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে। ইশিতাঃ তুমি আমার স্বামী, আর স্বামীর কথা পালন করা স্ত্রীর জন্য অবশ্য কর্তব্য। বলো, আমি তোমার সব কথা শুনবো,ইন শা আল্লাহ্! আবদুল্লাহঃ আলহামদুলিল্লাহ! খুশি হলাম,তাহলে শোনো, এতদিন তুমি ছিলে একটা বাড়ির মেয়ে আর আজ থেকে তুমি একটা বাড়ির বউ, একজনের স্ত্রী। আজ থেকে তোমার জীবন কাঠামো অন্যরকম ভাবে শুরু করতে হবে। তোমার হাতে তুলে দেয়া হল একটা সংসারের চাবিকাঠি। আজ থেকে তোমার অনেক দায়িত্ব। তুমি ভয় পেও না। এই সংসার যুদ্ধে তুমি একা নও, আমি আছি তোমার পাশে। আমরা দুজনে মিলে গড়ে তুলব একটি সুন্দর সুখি পরিবার।" ইশিতা মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছে আর উপলব্ধি করছে স্বামীর প্রতিটি কথা। আবদুল্লাহ একটু থেমে আবার বলা শুরু করে। - প্রিয়তমা আমার! এ বাড়ির সবার সাথে তোমাকে মিলে মিশে চলাফেরা করতে হবে.. ছোট বড় সবার সাথে বিশেষ করে আমার মা বাবার সাথে তোমাকে ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। এমন সম্পর্ক গড়ে তুলবে যাতে সবাই তোমাকে এ বাড়ির বউ মনে না করে এ বাড়ির মেয়ে মনে করে। তোমার ভালবাসার মায়াজাল দিয়ে ধরে রাখবে সবাইকে। দেখবে তোমার জীবন খুব সহজ হয়ে যাবে। প্রিয়তমা আমার! আমরা শুধুই ভাল স্বামী স্ত্রী হব না, আমরা খুব ভাল বন্ধুও হব। সুখে দু:খে দুজন দুজনার সাথী হবো।শেয়ার করবো।সংসার জীবনে অনেক রাগ অভিমান হতে পারে তাই বলে আমরা ভুল বুঝে একে অপরকে ছেড়ে দুরে চলে যাব না। বিশ্বাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যাব। অল্প রাগ, হালকা অভিমান, একটু জগড়া, খুনসুটি হতেই পারে। তবে এর পরিমাণ হবে তরকারিতে পরিমিত লবনের মতই। আবদুল্লাহ একটু থেমে আবার বলতে লাগলোঃআমার বাবা মা এখন যথেষ্ট বয়স্ক। তারা বয়সের কারনে হয়তো একটু রাগারাগি করতে পারে। তখন তুমি তাদের সামনে মাথা নত রেখে নরম স্বরে কথা বলবা।কখনো কখনো তোমার মুখটা বন্ধ রাখতে হবে। গর্বিত মাথাটা নত করতে হবে এবং স্বীকার করে নিতে হবে যে তুমি ভুল। এর অর্থ এই নয় যে তুমি পরাজিত, এর অর্থ তুমি পরিণত এবং শেষ বেলায় জয়ের হাসিটা হাসার জন্য ত্যাগ স্বীকারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”যদি তুমি তাদের রাগের সময় ভাল ব্যবহার কর তাহলে তারা আর কখনই তোমার সাথে রাগবে না। যদি তুমি আব্বু আম্মুকে মন থেকে ভালবাসো তাহলে তারা তোমাকে অনেক দু’আ করবে যা অমুল্য। তোমাকে রান্না করতে হবে। সময়ে আমিও হেল্প করবো তোমাকে। আমার ছোট বোনটাকে তোমার আপন বোন মনে করেই আদর করবে। স্নেহ ভালোবাসা দিবে।কখনও হিংসা করবেনা।স্নেহ ভালবাসা দিয়ে সব জয় করা যায়, হিংসা দিয়ে নয়। আরেকটি কথা, একটা মেয়ের কাছে স্বামীর সুখের চেয়ে বড় কিছু নেই। এমন কিছু করবে যেন এই ঘর টাকে দুনিয়ার জান্নাত মনে হয়। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বা। তুমি সুন্দরী হতে পারো কিন্তু সেটা সবাইকে দেখানোর জন্য নয়। তাই বাইরে সংযত হয়ে পর্দা করে চলাফেরা করবে। এবার তোমার কিছু বলার থাকলে বল। আবদুল্লাহ মাথা উঠিয়ে ইশিতার দিকে তাকিয়ে দেখে ইশিতা কাঁদছে। আবদুল্লাহ ইশিতার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো - কাঁদছ কেন? ইশিতা স্বামীর হাত দুখানা মুঠোয় পুরে নিলো।তারপর গালে ঠেকিয়ে অশ্রু মাখা কন্ঠে স্বামীকে বললোঃ আপনি আমার উপর বিশ্বাস রাখবেন। আমার পাশে থাকবেন। ভালবাসা দিয়ে সুখ দু:খে বুকে আগলে রাখবেন। আজ থেকে এই সংসারের দায়িত্ব আমার। নিজের মনের মত সাজিয়ে আপন করে নেয়ার চেষ্টা করবো এই সংসারকে আমি। আপনার ভালবাসায়, আল্লাহর রহমতে এবং সবার দোয়াতে এই সংসারকে সবসময় সুখি রাখতে চেষ্টা করব। ইন শা আল্লাহ্! জীবনে কাউকে বলিনি আজ বলছি “আমি আপনাকে খুব খুব ভালবাসি" ” আমার জীবনে শ্রেষ্ঠ উপহার আপনার মত স্বামী পাওয়া। আবদুল্লাহঃ আমিও তোমাকে অনেক ভালবাসি জান!" আমি তো অনেক কিছুই বললাম। তোমারও তো কিছু কথা থাকতে পারে। বলো সোনা। ইশিতা বলতে লাগলো এবার। --"আমাকে খুব ভালবাসতে হবে।কখনও অবহেলা করতে পারবেন না। আপনার বুকে ঠাই দিবেন। আমি ভুল করলে আদর সোহাগ দিয়ে ভুল সংশোধন করে দিবেন। আমাকে কুরআন শিখাবেন, দ্বীন শিখাবেন। আমাকে পর্দা করতে,দ্বীনের উপর চলতে সহযোগিতা করবেন। নামাজ না পড়ে ঘুমিয়ে গেলে মুখে পানি ছিটিয়ে দিবেন। আমি রাগ করলে আমার মনটা বুঝার চেষ্টা করবেন। আদর, ভালোবাসা দিয়ে রাগ ভাঙাবেন। আপনার কাছ থেকে আমি বেশি কিছু চাই না ,আমার ছোট ছোট আবদার গুলা পুরন করলেই আমি খুব খুশি হব। আপনার ক্লান্ত মুখের ঘাম আমার শাড়ির আচল দিয়ে মুছতে দিবেন, তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরবেন , চাঁদনী রাতে ছাদে গিয়ে আমাকে কুরআন - হাদীসের বাণী শুনাবেন। মাঝে মাঝে আমাকে নিয়ে বেড়াতে নিয়ে যাবেন নদীর তীরে। হাতে হাত রেখে হাটতে হবে নদীর কিনারে। আর বেশি কিছু বলতে চাইনা বাকিটা আপনার ভালবাসা দিয়ে বুঝে নিবেন। আমি আপনার সব কিছুতেই বিরাজ করতে চাই, আমি শুধু আপনার হবো, আপনি শুধু আমার হবেন।"এই পর্যন্ত বলে ইশিতা থামলো। আবদুল্লাহঃ আমি আমার কল্পনাতে আমার স্বপ্নে আমার মনের মাঝে যে রকম মনের মানুষ সাজিয়ে রেখেছিলাম, তুমি সেই আমার স্বপ্নের রাজকুমারি, আমার বাহুডোরে বুকের মাঝে সারাজীবন শুধু তুমি রবে।। ইশিতাঃ আপনি আমার সেই স্বপ্নের পুরুষ। যাকে নিয়ে আমি স্বপ্ন সাজিয়েছি। আপনার খেদমতে নিজেকে সঁপে দিয়ে আমার এই নারী জীবন স্বার্থক করতে চাই, আপনার পদতলে আমার জান্নাত খুঁজে নিতে চাই।। আবদুল্লাহ ইশিতার কপালে ভালোবাসার চুম্বন একে দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিল। রচিত হলো একটি সুখি পরিবারের পবিত্র ভালবাসা।" ........সমাপ্ত......... {শিক্ষাঃ দুজনের পারস্পরিক ভালবাসার জন্য স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের চেয়ে উত্তম সম্পর্ক আর হতে পারেনা । আর এই পবিত্র সম্পর্কের মাঝে যে মজা ও প্রশান্তি তা দুনিয়ার আর কোন সম্পর্কের মাঝে নেই । তাই ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপন করতে চাইলে বিয়ে করুন , তারপর আপনার ভালবাসার মানুষটির সাথে প্রেম করুন। আপনিও খুশি , আল্লাহ ও খুশি । }gjgjgj (পরিশেষে ভুলত্রুটি ক্ষমার নজরে দেখবেন) Collected grin


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১৯৬২ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now