বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন
বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

গল্পঃ এক রাতের গল্প।

"ভৌতিক গল্প " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান RaNa jojo (০ পয়েন্ট)

X রাতেরবেলা রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে বাসায় ফিরছিলাম। হাটতে হাটতে হঠাৎই পায়ের মধ্যে কিছু একটি বাজলো। ফোনের আঁলো ফেলে দেখলাম একটা বইয়ের মতো দেখা যাচ্ছে। হাতে তোলার পর বুঝলাম -- এটা বইনা একটি ডাইরী ছিলো। ভাবলাম কারো ডাইরী হয়তো তার অজান্তেই এখানে পড়ে গিয়েছে। অতঃপর ডাইরী টা আর ফেললাম নাহহ, হাতে বাঝিয়ে নিয়ে বাসায় চলে এলাম। অতঃপর রাতের খাওয়াদাওয়া শেষে ভাবলাম ডাইরীটা একটু পড়ে দেখি। এখন প্রায় রাত ১১ টা। একবার ভাবলাম কারো ব্যক্তিগত গত কিছু পড়া ঠিক না। কিন্তু পরবর্তীতে বেশী সংকোচ বোধ না করে ডাইরীটা খুললাম --- দেখতে পেলাম ডাইরীর প্রথম পাতায় লেখাঃ মৃত্যুর তিরিশ দিন। লাইনটা দেখে মাথায় কিছু ঢুকলো নাহহ। ভাবলাম পড়েই দেখি কি লেখা আছে! অতঃপর পড়তে শুরু করলাম। আমার নাম ( কথা)। প্রথম লাইটা পড়ে বুঝলাম ডাইরীটা কোনো মেয়ের। যাইহোক কন্টিনিউ করিঃ আমার নাম কথা। ডাক্তারী নিয়ে পড়াশোনা করতাম। এখন করি না মানে সুযোগ নেই কারণ ৩৯ তিন হলো বন্ধ ঘরে আটকা পড়ে আছি। কি বুঝলেন নাতো। তাহলে প্রথম থেকেই শুরু করি। আমিই পরিবারের একমাত্র মেয়ে, সারাক্ষণ অনেক হাসিঠাট্টা নিয়ে মেতে থাকতাম। পরিবারের সবাই বলতো তাদের ঘরে নাকি একটি পরীর জন্ম হয়েছে। কথাটা শুনে খুব লজ্জা পেতাম মনে মনে। কিন্তু সেই সুখ আর বেশীদিন সইলো না কপালে। এক মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করতাম। তো একদিন পরিচয় হলো একটি ছেলের সঙ্গে। নামটা আপনাদের অজানাই থাক। তো ধিরে ধিরে তার সঙ্গে আলাপ হলো, বন্ধুত্ব হলো। বন্ধুত্বটা গিয়ে একসময় ভালোবাসার রূপ ধারণ করলো। আর করবেই না বা কেনো। একটি ছেলে আর মেয়ে প্রতিনিয়ত একসঙ্গে সময় কাটালে - ভালোবাসা টা আপনাআপনি তৈরি হয়ে যায়। তো সম্পর্কের প্রায় ৩ মাস পেরিয়ে গেলো। হঠাৎ করেই আমার ভালোবাসার মানুষটি পাল্টে যেতে শুরু করলো, ভিষণ করে আমাকে শারীরিক সম্পর্কে জারানোর জন্যে চাপ দিতে লাগলো। আমি অনেক করে ওকে বুঝালাম যে আমরা তো বিয়ে করবোই। তাহলে বিয়ের আগেই এগুলোর কি দরকার। কিন্তু সে মানতে নারাজ। আমি তাকে বুঝাতে পারতাম না যে বিয়ের আগে এগুলো হারাম। কিন্তু সে এমন খারাপ আচরণ করতো বলে বুঝাতে পারবো নাহহ। কিন্তু আমি তাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসতাম। আমি মানা করার ফলে একপর্যায়ে যে যোগাযোগ করাই বন্ধ করে দিলো। আমি প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলাম তার সঙ্গে কথা বলতে না পেরে। অনেক যোগাযোগ করার ট্রাই করতাম -- কিন্তু কিছুতেই সে কথা বলতো নাহহ। তো এভাবে প্রায় একমাস পেরিয়ে গেলো। হঠাৎ করেই একদিন সেই প্রিয় নাম্বারটা থেকে কল আসলো। আমি তো খুশীতে আত্মহারা প্রায়। তাড়াতাড়ি করে কল রিসিভ করে কথা বলতে চাইলাম -- কলে সে বললো তার সঙ্গে দেখা করতে। সে একটা এড্রেস ও দিয়ে দিলো আমাকে। কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি যে সেই এড্রেস টাই আমার মৃত্যুর ঘর হয়ে দাড়াবে। তো আমি ভালোবাসার মানুষকে দেখার জন্যে তার পরের দিন সেই এড্রেস অনুয়ায়ী চলে গেলাম। গিয়ে দেখতে পেলাম । ওহহ শিট -- ডাইরীটাতে আর কিছু লেখা নেই। ডাইরীটা পড়তে পড়তে অনেকটা গভীরে চলে গিয়েছিলাম। কিন্তু এখন কি হবে এর পরে তো আর কিছু লেখা নেই। কি হলো তারপর, কিভাবে জানবো এখন?? এগুলো ভাবছিলাম, -- কিন্তু আচমকাই একটা মেয়েলী কন্ঠ আমার কানে এসে বাজলো। --- ডাইরীটা পুরো লেখার সময় পাইনি, তার আগেই দেহ থেকে আত্মা আলাদা হয়ে গিয়েছে। আমি-- কে, কে কথা বললো?? অতঃপর আমি ল্যাম লাইটের আঁলোয় দেখতে পেলাম-- আমার খাটের এক কোণে একটি মেয়ে বসে রয়েছে। আমি ভিষণ চমকে গেলাম - আমার রুমে মেয়ে আসবে কিভাবে। অতঃপর আমি ভয় না পেয়ে জিজ্ঞেস করলামঃ আমি-- কে আপনি? আমার রুমের ভেতরে আপনি কিভাবে এলেন?? মেয়েটি-- আপনি এতক্ষণ যার অসমাপ্ত ডাইরীটি পড়ছিলেন, আমিই সেই মেয়ে। আমি-- মানে। আপনি কিভাবে আসবেন এখানে। আমার মাথা কাজ করছে নাহ! মেয়েটি-- দেখুন ভয় পাবেন নাহ। আমি একটি আত্মা মাত্র। আমি--- হোয়াট আত্মা। মেয়েটি-- হুমম, আপনি ভয় পাবেন নাহহ৷ আমি আপনার কোনো ক্ষতি করবো নাহহ। আমি-- আমি এসব আত্মা টাত্মা বিশ্বাস করিনা। আপনি মিথ্যে বলছেন! হঠাৎ করেই মেয়েটি উধাও হয়ে গিয়ে আবার আমার আরো কাছে এসে দৃশ্যমান হলো। আমি চমকে গিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম নাহহ যে পৃথিবীতে আত্মা বলেও কিছু রয়েছে। আমি যথাক্রমে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছিলাম। হঠাৎ করেই মেয়েটি আবার বলে উঠলোঃ মেয়েটি-- আপনি সময় নষ্ট করছেন কেনো?? আপনি বসুন পরের কাহিনি আমি নিজেই আপনাকে শোনাই। অতঃপর আমি আবার আমার নিজের জায়গায় বসে পরলাম। মেয়েটি বলতে শুরু করলো-- আমি সেখানে গিয়ে দেখতে পেলাম- জায়গা টা ভিষণ শুনশান। একটা বড় বাংলো ছাড়া আর কোনো বাসা নেই আশেপাশে। তবুও আমি বেশী চিন্তা না করে গিয়ে বাংলোর কলিং বেলটা বাজালাম। সাথে সাথেই আমার ভালোবাসার মানুষটি দরজা খুলে দিলো। আমি তাকে দেখে খুশীতে জরিয়ে ধরলাম। অতঃপর সে আমাকে হাসি মুখে ভেতরে ডেকে নিয়ে গেলোঃ কিন্তু আমি ভেতরে ঢোকা মাত্র দেখতে পেলাম আরো চারজন ছেলে ভেতরে বসে বসে ড্রিংক করছে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম এগুলো কি? ও বললো আরে তেমন কিছুনা আমার ফ্রেন্ড তুমি ভেতরে এসো প্রবলেম নেই। ছেলেগুলোকে দেখে আমার বেশ ভয় হচ্ছিলো। অনেক লোভী দৃষ্টিতে আমার শরীরের দিকে তাকিয়ে ছিলো। তবুও আমি চুপচাপ বসে পড়লাম-- একসময় আমার ভালোবাসার মানুষটি এসে আমাকে ছুঁতে শুরু করলো। সবার সামনেই নোংরামি করতে শুরু করলো -- হঠাৎ করেই মেয়েটি বলা থামিয়ে দিলোঃ আমি এতটাই গভীর ভাবে শুনছিলাম যে মেয়েটি আত্মা নাকি মানুষ সেটা আমার খেয়াল ছিলোনা। আমি-- থেমে গেলেন যে?? মেয়েটি-- নাহহ বলছি। অতঃপর আমি আর সহ্য করতে না পেরে ওর গালে একটি থাপ্পড় লাগিয়ে দিলাম। ওমনি সে আমার ওপর হিংস্র পশুর মতো আক্রমণ শুরু করলো। একে একে আমার শরীর থেকে সব কিছু খুলে ফেলছিলো। আমি কিছুতেই তার শক্তির সঙ্গে পেরে উঠছিলাম নাহ। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হলো নাহহ -- শুধু সে নাহ। একের পর এক পাঁচ জনের কাছে ধর্ষণের শিকার হলাম। আমি পুরো পাথর হয়ে গিয়েছিলাম। একটু কথাও আসছিলো নাহহ আমার। শুধু চোখ বেয়ে টপটপ করে পানি ঝরছিলো। পরে সে বললো সে নাকি আমাকে নাহ। আমার শরীরকে ভালোবেসে ছিলো। কথাটা শোনার পর একদম মরে গিয়েছিলাম। বাঁচার ইচ্ছে কি সেটা একদম মনে ছিলোনা আমার। কিন্তু তারপর ও তার পায়ে ধরে বললাম আমাকে ছেড়ে দিতে কিন্তু আমাকে ছাড়লো নাহহ তারা। একের পর এক দিন রেখে আমার শরীর টাকে খুবলে খেতে লাগলো জানোয়ার গুলো। প্রায় ২৯ দিন এর মাথায় এসে আর সহ্য করতে পারলাম নাহহ। ডাইরীতে অর্ধেক ঘটনা এই জন্যেই লিখেছিলাম। যার হাতেই ডাইরীটা পড়ুক, পুরো ঘটনা আমি নিজে তাকে শোনাবো। তখন নিজের শরীরের প্রতিও একদম ঘৃণা ধরে গিয়েছিলো। ওই নরপশু দের শরীরের ছোঁয়া আমার শরীরে রয়েছে। এই শরীরে আমি আর থাকতে চাইনা। অতঃপর ৩০ দিনের মাথায় আর ভাবলাম নাহহ। ফ্যানের সঙ্গে নিজের ওড়না পেচিয়ে ঝুলে পড়লাম আজীবনের মতো। মেয়েটার ঘটনাগুলো শুনে কখন যে নিজের চোখ ভিজিয়ে ফেলেছি সেটা নিজেও বুঝতে পারিনি। অতঃপর মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলামঃ আমি-- এখন তো আপনি মৃত। পরে ওদের আর কিছু করেন নি?? মেয়েটি-- আমি নিজেই আপনার কাছে একটি সাহায্য চাইতাম। আমি-- কি সাহায্য বলুন?? মেয়েটি-- আমি আপানকে ওই এড্রেস টি দিয়ে দিচ্ছি। ওখানে মোট ছয়টি লাঁশ আছে। একটি আমার বাকিগুলো ওই নরপশু দের, দয়া করে পুলিশে আর আমার বাসায় জানিয়ে দিবেন। আমার বাসার ঠিকানাও দিয়ে যাচ্ছি আপনাকে। আমি-- এতক্ষণ অনেক কষ্ট লাগছিলো কিন্তু এখন শুনে ভালো লাগছে যে - আপনি ওই নরপশুদের উপযুক্ত শাস্তি দিয়েছেন। মেয়েটি কিছু বলতে যাবে। হঠাৎ করেই ফজরের আযান দিয়ে দিলো। অতঃপর মেয়েটি বললোঃ মেয়েটি-- আমার যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে। দয়া করে আমার এতটুকু সাহায্য করে দিবেন। আর চাইলে ডাইরীটা আপনার কাছেই রেখে দিন। ভালো থাকবেন আর কোনোদিন দেখা হবেনা। আমি-- আপনিও ভালো থাকুন পরপারে। বিদায়। অতঃপর একটি সুন্দর হাসি দিয়ে আচমকাই মেয়েটি হাওয়ার সাথে মিলিয়ে গেলো। আমার হার্টবিট বেড়ে গিয়েছিলো। আমি কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইলাম আর ভাবতে লাগলাম। মেয়েদের শরীরটাই কি সবকিছু। ভালো কি শুধু শরীকেই বাসা যায়, মনকে বাসা যায়না? ভালোবাসা যদি শরীর দিয়েই হয় তবে নিষিদ্ধ করা হোক সেই ভালোবাসা। আর বসে রইলাম নাহহ। যাই কথা মানে মেয়েটাকে দেওয়া কথা তো আমার রাখতে হবে। অতঃপর ডাইরীটা সযত্নে রেখে দিলাম নিজের কাছে। এই রাতটি আমার জীবনের একটি মূল্যবান রাত হয়ে থাকবে আজীবন। (THE END). (মোরালঃ কারো শরীরকে নয় পারলে তার মনটিকে ভালোবাসুন। কারণ আজীবন শরীর এক থাকবে নাহহ। কিন্তু মন চিরকাল একরকমই থেকে যাবে) বি:দ্রঃ- লেখার মাঝে কোনো ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকলে সকলেই ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন- ধন্যবাদ। writter:Rana (jojo)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২১০২০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now