বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
রাসূলুল্লাহ (সা.) চল্লিশ বছর বয়সে নবুওয়াতপ্রাপ্ত হন। এরপর মহান আল্লাহর নির্দেশে গোপনে তিন বছর মানুষকে ধর্মের দিকে দাওয়াত দিতে থাকেন। তিন বছর পর তিনি প্রকাশ্যে নিজের আত্মীয়-স্বজন ও মক্কাবাসীকে ধর্মের পথে দাওয়াত দেন। রাসূলের গোত্র বনু হাশিমের মধ্য থেকে তাঁর চাচা আবু লাহাব তাঁর বিরোধিতা করতে থাকে। আর মক্কার নেতৃস্থানীয় কুরাইশরা সকলে রাসূলের সাথে শত্রুতা শুরু করে।
এর মধ্যে রাসূলের পুত্রসন্তানরা মারা গেলে কাফির-মুশরিকরা রাসূলকে নিয়ে ঠাট্টা করতে থাকে। আস ইবনে ওয়ায়েল রাসূলকে ‘আবতার’ (লেজকাটা) বা নির্বংশ বলে গালি দেয়। সে বলত,‘আরে মুহাম্মাদের তো কোন পুত্রসন্তান নেই,সে মরে গেলে তার নাম নেয়ার মতো ও কেউ থাকবে না।’ রাসূলুল্লাহ্ (সা.) এ কথায় খুব কষ্ট পেতেন। মহান আল্লাহ্ তাঁর এ কষ্ট দূর করার জন্য যে অমূল্য নেয়ামত তাঁকে দান করেন তিনিই হলেন হযরত ফাতিমা (রা.)। এর প্রেক্ষিতেই পবিত্র কুরআনের সূরা কাওসার নাযিল হয়।
নামঃ ফাতেমা, সিদ্দীকা, মুবারিকাহ্, তাহিরাহ্, যাকিয়্যাহ্, রাযিয়্যাহ্, মারযিয়্যাহ্, মুহাদ্দিসাহ্ এবং যাহরা।১
ডাক নামঃ উম্মুল হাসান, উম্মুল হুসাইন, উম্মুল মুহ্সিন, উম্মুল আয়েম্মা এবং উম্মে আবিহা।২
উপাধিঃ হযরত ফাতিমার সবচেয়ে প্রসিদ্ধ উপাধি হল যাহরা,যাকিয়াহ,বাতুল ও রাযিয়া। চারিত্রিক বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের কারণে তিনি আরও কিছু উপাধিতে ভূষিত হন। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলঃ সিদ্দীকা, কুবরা, মুবারিকাহ্, আযরা, তাহিরা এবং সাইয়্যেদাতুন নিসা।৩
পিতাঃ ইসলামের মহা সম্মানিত রাসূল (সা.) হযরত মুহাম্মাদ ইবনে আবদুল্লাহ্ (সা.)।
মাতাঃ ইসলাম গ্রহণকারী সর্বপ্রথম নারী, আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর সর্বপ্রথম স্ত্রী খাদীজাতুল কুবরা।
জন্মঃ আরবি জমাদিউসসানী মাসের বিশ তারিখে রোজ শুক্রবার,মহানবী (সা.)-এর নবুওয়াত লাভের পঞ্চম বৎসরে,মক্কার প্রস্তরময় পর্বতের পাদদেশে,কা’বার সন্নিকটে,ওহী নাযিলের গৃহে,যে গৃহের অঙ্গন মহানবী (সা.)-এর খোদাপ্রেমিক মুখের পবিত্র ছটায় আলোকিত হতো,যে গৃহকে ফেরেশতারা ভাল করে চিনতো এবং সেখানে প্রতিনিয়ত আসা যাওয়া করতো,যেখানে সকাল সন্ধ্যায় রাসূলে খোদার নামাজের গুঞ্জরন প্রতিধ্বনিত হতো এবং গভীর রাত্রিতে তাঁর তিলাওয়াতের আধ্যাত্মিক ধ্বনিতে জমিনের সাথে আসমানের সংযোগ স্থাপিত হতো,ইয়াতিমদের আশার কেন্দ্র,নিঃস্ব মানুষের সাহায্যকারী,বন্দী ও নিপীড়িতদের আশ্রয়স্থল,সেই গৃহে পয়গম্বর (সা.) ও হযরত খাদিজার গৃহে একটি কন্যা জন্মগ্রহণ করে। ।৪
সন্তানঃ ইমাম হাসান মুজতাবা,ইমাম হুসাইন সাইয়্যেদুশ শুহাদা,জয়নাব আল কুবরা,উম্মে কুলসুম,মুহ্সিন (তাঁর গর্ভেই মারা যায়)।৫
শাহাদাত : মহানবী (সা.) ইন্তেকালের পর বিভিন্ন রকম দুঃখ-কষ্ট হযরত ফাতেমার অন্তরে প্রচন্ড চাপ সৃষ্টি করেছিল এবং বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ তাঁর জীবনটাকে তিক্ত ও অসহ্য করে তুলেছিল। তিনি তাঁর সম্মানিত পিতাকে অত্যন্ত ভালবাসতেন এবং কখনো তাঁর বিচ্ছেদকে সহ্য করতে পারতেন না। একদিকে তাঁর জন্যে পিতার বিয়োগ ব্যথা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ছিল। অপরদিকে আমিরুল মুমিনীনের খেলাফতের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীদের আচরণ হযরত ফাতিমা আয যাহরার রুহ্ ও দেহে সাংঘাতিক ক্ষতের সৃষ্টি করে।
আর এ মুছিবত ও দুঃখ কষ্ট ছাড়াও অন্যান্য ব্যথা বেদনা তাঁকে জর্জরিত করেছিল -যার অবতারণা থেকে এখানে বিরত থাকছি- এসকল কারণেই।
হযরত ফাতেমা (রা.) পিতার ইন্তেকালের পর সর্বদা ক্রন্দনরত ও শোকার্ত ছিলেন। তিনি কখনো তাঁর পিতার কবর যিয়ারতে গিয়ে অনেক কাঁদতেন।৬ আবার কখনো শহীদদের কবরের পার্শ্বে গিয়ে আহাযারী করতেন।৭ আর নিজ গৃহে কান্না ও শোক পালন ব্যতীত অন্য কিছুই করতেন না। তাঁর ক্রন্দন ও রোনাজারীর ব্যাপারে মদীনাবাসীরা প্রতিবাদ করলে আমিরুল মুমিনীন আলী (রা) তাঁর জন্যে ‘জান্নাতুল বাকী’ কবরস্থানের এক প্রান্তে একটি ছোট্ট ঘর তৈরী করে দেন যা পরবর্তীতে ‘বাইতুল আহ্যান’ বা ‘শোকের ঘর’ নামে আখ্যায়িত হয়েছে। হযরত যাহরা (রা.) প্রতিদিন সকালে হাসানাইন তথা ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনকে সাথে নিয়ে সেখানে চলে যেতেন আর রাত পর্যন্ত কবরগুলোর পাশে কান্নাকাটি করতেন। রাত্রি হলেই আমিরুল মুমিনীন আলী (রা.) তাঁকে কবরস্থান থেকে বাড়িতে নিয়ে আসতেন। আর এ কাজ তাঁর অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।৮ রাসূল (সা.)-এর সাথে বিচ্ছেদে হযরত যাহরার ব্যথা বেদনা ও দুঃখ কষ্ট এত মাত্রায় বৃদ্ধি পায় যে নবী (সা.)-এর যে কোন স্মৃতিই তাঁকে কান্নায় জর্জরিত ও অস্থির করে তুলতো। হযরত রাসূল (সা.)-এর মুয়াযযিন হযরত বেলাল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে,নবী (সা.)-এর তিরোনের পর আর কোনদিন কারো জন্যে আযান বলবেন না। একদিন হযরত যাহরা (রা.) বললেন : “আমার পিতার মুয়াযযিনের কণ্ঠে আযান শুনতে মন চায়”। এ সংবাদ হযরত বেলালের কর্ণগোচর হলে তিনি তড়িৎগতিতে এসে হযরত ফাতেমার সামনে আযান দিতে দাঁড়িয়ে যান। যখন হযরত বেলালের কণ্ঠে আল্লাহু আকবারের ধ্বনি উচ্চারিত হলো তখন হযরত ফাতেমা চোখে আর কান্না ধরে রাখতে পারলেন না। আর যখন হযরত বেলালের আযান ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্’-তে পৌঁছায় তখন হযরত ফাতেমা যাহরা (রা.) উচ্চৈঃস্বরে চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। উপস্থিত লোকজন হযরত বেলালকে বললেন : “থামুন! রাসূলের কন্যা মারা যাচ্ছেন।” তারা মনে করেছিলেন যে,হযরত ফাতেমা ইহলোক ত্যাগ করেছেন। হযরত বেলাল আযান অসম্পূর্ণ রেখে ক্ষান্ত হলেন। যখন হযরত ফাতেমার চৈতন্য ফিরে আসলো তখন হযরত বেলালকে আযান সম্পূর্ণ করার জন্যে বললেন। কিন্তু হযরত বেলাল তাঁর খেদমতে আরজ করলেন : “হে নারীদের নেত্রী! আমার আযানের ধ্বনি শ্রবনের ফলে আপনার প্রাণনাশের আশংকা করছি।”৯
অবশেষে হযরত ফাতেমা (রা)-এর অসহনীয় মর্মপীড়া এবং তাঁর উপর আরোপিত দুঃখ-কষ্ট তাঁকে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শয্যাশায়ী করে ফেললো। পরিশেষে এ আঘাত ও দুঃখ-কষ্টের কারণে একাদশ হিজরীর জামাদিউল উলার তের তারিখে,কারো মতে জামাদিউসসানী মাসের তৃতীয় দিনে অর্থাৎ হযরত নবী করীমের তিরোধানের মাত্র পঁচাত্তর অথবা পঁচানব্বই দিনের ব্যবধানে তিনি চিরদিনের জন্যে এ নশ্বর পৃথিবী থেকে বিদায় গ্রহণ করেন। তিনি তাঁর শাহাদাতের মাধ্যমে তাঁর অনুসারীদের অন্তরসমূহকে চিরদিনের জন্যে শোকের সাগরে ভাসিয়ে গেছেন।১০
মাজারঃ রাজনৈতিক এবং তাঁর অসিয়তের কারণে অন্ধকার রাত্রে গোপনে আমিরুল মু’মিনীন তাঁর দাফনকার্য সম্পন্ন করেন। আজ অবধি তাঁর পবিত্র কবরের চিহ্ন উদঘাটিত হয় নি।১১
পবিত্র কুরআনে হযরত ফাতিমার মর্যাদা
পবিত্র কুরআনের অনেক আয়াতে হযরত ফাতিমার মর্যাদার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হল।
ক. সূরা আহযাবের নিম্নোক্ত আয়াতে হযরত ফাতিমাকে নিষ্পাপ বলে ঘোষণা করা হয়েছে :
إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرً
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পোষ্য উমার ইবনে আবু সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,উম্মে সালামা (রা.)-এর ঘরে নবী (সা.)-এর ওপর এ আয়াত নাযিল হয় (অনুবাদ) : হে নবী-পরিবার! আল্লাহ তো চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে। তখন নবী (সা.) ফাতিমা,হাসান ও হুসাইনকে ডাকেন এবং তাদেরকে একখানা চাদরে ঢেকে নেন। আলী তাঁর পেছনে ছিলেন। তিনি তাঁকেও চাদরে ঢেকে নেন। অতঃপর বলেন : হে আল্লাহ! এরা আমার আহলে বাইত। অতএব,তুমি তাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করে দাও এবং তাদেরকে উত্তমরূপে পবিত্র কর। তখন উম্মে সালামা বলেন,হে আল্লাহর রাসূল! আমিও কি তাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বলেন,তুমি স্বস্থানে আছ এবং তুমি কল্যাণের মধ্যেই আছ।১২
একই রকম হাদীস হযরত আয়েশা হতেও বর্ণিত হয়েছে।১৩
খ. সূরা আলে ইমরানের ৬১ নম্বর আয়াত অনুযায়ী (আয়াতে মোবাহিলায়) হযরত ফাতিমাকে রাসূললাহ (সা.) তাঁর নবুওয়াতের সত্যতার সাক্ষী করেছেন। পবিত্র কুরআনের সেই আয়াতটি হল :
فَمَنْ حَاجَّكَ فِيهِ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنْفُسَنَا وَأَنْفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَلْ لَعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ
‘অতঃপর তোমার নিকট যখন জ্ঞান (কুরআন) এসে গেছে,এরপরও যদি কেউ (খ্রিস্টান) তোমার সাথে তার (ঈসার) সম্বন্ধে তর্ক-বিতর্ক করে,তবে বল,‘(ময়দানে) এস,আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের,আমাদের নারীদের এবং তোমাদের নারীদের,এবং আমাদের সত্তাদের এবং তোমাদের সত্তাদের;’ অতঃপর সকলে মিলে (আল্লাহর দরবারে) নিবেদন করি এবং মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষণ করি।’
ঘটনাটি এরূপ : নাজরান থেকে আগত খ্রিস্টান প্রতিনিধি দলের সাথে যখন মোবাহিলা (পারস্পরিক অভিশাপ বর্ষণ) করার জন্য মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সা.)- কে নির্দেশ দিয়েছিলেন তখন তিনি হযরত ফাতিমা,হযরত আলী,ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইনকে সাথে নিয়ে উন্মুক্ত প্রান্তরে উপস্থিত হয়েছিলেন। কুরআনে বর্ণিত পুত্রদের স্থানে তিনি নিজের দুই নাতি ইমাম হাসান ও হুসাইনকে,নারীদের স্থানে নিজ কন্যা হযরত ফাতিমাকে এবং ‘সত্তা’ বলে গণ্যদের স্থানে হযরত আলীকে নিলেন এবং দো‘আ করলেন,‘হে আল্লাহ! প্রত্যেক নবীর আহলে বাইত থাকে,এরা আমার আহলে বাইত। এদের সকল দোষ-ত্রুটি হতে মুক্ত ও পাক-পবিত্র রেখ।’ তিনি এভাবে ময়দানে পৌঁছলে খ্রিস্টানদের নেতা আকব তা দেখে বলল,‘আল্লাহর কসম,আমি এমন নূরানী চেহারা দেখছি যে,যদি এ পাহাড়কে নিজ স্থান হতে সরে যেতে বলেন,তবে অবশ্যই সরে যাবে। সুতরাং মুবাহিলা হতে হাত গুটিয়ে নেওয়াই কল্যাণকর,অন্যথায় কিয়ামত অবধি খ্রিস্টানদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না।’ পরিশেষে তারা জিযিয়া কর দিতে সম্মত হল।১৪ এভাবে হযরত ফাতিমা তাঁর পিতার নবুওয়াতের সপক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করলেন।
গ. সূরা দাহরে হযরত ফাতিমা ও তাঁর পরিবারের প্রশংসা করা হয়েছে এভাবে :
وَيُطْعِمُونَ الطَّعَامَ عَلَى حُبِّهِ مِسْكِينًا وَيَتِيمًا وَأَسِيرًا (8) إِنَّمَا نُطْعِمُكُمْ لِوَجْهِ اللَّهِ لَا نُرِيدُ مِنْكُمْ جَزَاءً وَلَا شُكُورًا (9) إِنَّا نَخَافُ مِنْ رَبِّنَا يَوْمًا عَبُوسًا قَمْطَرِيرًا (10) فَوَقَاهُمُ اللَّهُ شَرَّ ذَلِكَ الْيَوْمِ وَلَقَّاهُمْ نَضْرَةً وَسُرُورًا (11) وَجَزَاهُمْ بِمَا صَبَرُوا جَنَّةً وَحَرِيرًا
‘তারা তাঁর (আল্লাহর) ভালবাসায় অভাবগ্রস্ত,অনাথ ও বন্দীকে আহার্য দান করে। এবং বলে,‘কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে আমরা তোমাদেরকে আহার প্রদান করি,আমরা তোমাদের নিকট হতে প্রতিদান চাই না,কৃতজ্ঞতাও নয়,আমরা আশংকা করি আমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে এক ভীতিপ্রদ দিনের,সেদিন মুখমণ্ডল বিকৃত ও বিবর্ণ হয়ে যাবে’; পরিণামে আল্লাহ তাদের সেদিনের কঠিন পরিস্থিতি হতে রক্ষা করবেন এবং তাদের দান করবেন উৎফুলতা ও আনন্দ। আর ধৈর্যশীলতার প্রতিদানস্বরূপ তাদের প্রদান করবেন জান্নাত ও রেশমী বস্ত্র।’
এ ঘটনা প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেন : একদিন ইমাম হাসান ও হুসাইন পীড়িত হয়ে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর সাহাবীদের নিয়ে তাঁদের দেখতে গেলেন এবং তাঁদের রোগমুক্তির জন্য হযরত আলীকে রোযা মানত করতে বললেন। হযরত আলী ও ফাতিমা রোযার মানত করলেন। তাঁদের রোগমুক্তির পর হযরত ফাতিমা তাঁর পরিজন নিয়ে রোযা রাখা শুরু করলেন। তাঁরা পরপর তিনদিন রোযা রাখার নিয়্যত করেছিলেন। প্রথম দিন হযরত ফাতিমা ইফতারের জন্য পাঁচটি রুটি তৈরি করলেন। যখন তাঁরা ইফতারের জন্য খাবার নিয়ে বসেছেন সে সময়ে একজন মিসকিন এসে খাবার চাইল। তাঁরা তাঁদের খাবারের পুরোটাই সেই মিসকিনকে দিয়ে দিলেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে একইভাবে ইফতারের সময় যথাক্রমে একজন ইয়াতিম ও একজন বন্দী তাঁদের কাছে খাবার চাইল। তাঁরা পরপর এ তিনদিনই কেবল পানি দিয়ে ইফতার করলেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতেই সূরা দাহর বা ইনসান নাযিল হয়।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now