বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
অলিন সমিত দুই ভাই। অলিন বড়ো সমিত ছোটোবললো, ‘চাঁদ মামা, কেমন আছো?’ চাঁদ মিষ্টি করে হাসলো। এর মানে, ভালো আছি।
পদ্য তখন বলতে শুরু করলো :আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা।। একদিন হলো কী, দুই ভাই খুব দুষ্টুমি করতে লাগলো। দুষ্টুমি মানে কাগজ ছেঁড়া। অলিন একটা খাতা ছিঁড়ে তো সমিত একটা পত্রিকা ছিঁড়ে।
আম্মু বললেন, ‘অলিন সমিত, দুষ্টুমি কোরো না।’
সমিত বললো, ‘আম্মু দুষ্টুমি করছি না তো! কাগজ ছিঁড়ছি।’
বলেই সে একটা আস্ত খাতা ফ্যারফ্যার করে ছিঁড়ে ফেললো।
ওটা ছিলো আম্মুর হিসেবের খাতা। রোজ কতো টাকা জমা, কতো টাকা খরচ হচ্ছে, আম্মু সেটা ওই খাতায় লিখে রাখেন। সেই খাতাটা কিনা অলিন ছিঁড়ে ফেললো!
আম্মু ভীষণ রেগে গেলেন। বললেন, ‘এই ভূত, তুমি কোথায় আছো, চলে এসো, অলিনকে ধরে নিয়ে যাও, ওকে নিয়ে আমি আর পারি না।’
যেই কথা, সেই কাজ। বাসার পাশেই ছিলো একটা ভূত। তার নাম লম্বু ভূত। ভীষণ লম্বা এই ভূতটা। একটা বাড়ির ছাদে এক পা, অন্য একটা বাড়ির ছাদে আরেক পা রেখে ভূতটা দাঁড়াতো। তারপর নিজের শরীরটা ইচ্ছেমতো লম্বা করতে পারতো।
লম্বু ভূত অলিনদের ঘরে চলে এলো। আম্মুকে বললো, ‘খালাম্মা, চিন্তা করবেন না। আমি এখুনি অলিনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছি।’
আম্মু কিছু বুঝে ওঠার আগেই লম্বু ভূতটা অলিনকে ধরে কাঁধে তুলে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো।
আম্মু আর সমিত বারান্দায় গিয়ে দেখে ভূতটা সামনের বাসার ছাদে উঠেছে। তারপর এই ছাদে এক পা, অন্য ছাদে আরেক পা রেখে সে লম্বা হতে শুরু করেছে।
ধবধবে শাদা, বকের মতো লম্বা হয়ে গেলো ভূতটা।লম্বা হতে হতে তার হাত গিয়ে পৌঁছালো চাঁদে। তারপর অলিনকে ধরে চাঁদের গায়ে বসিয়ে রাখলো সে।
সমিত তাই দেখে কাঁদতে লাগলো, ‘আমিও চাঁদে যাবো। ও ভূত সাহেব, আমাকেও চাঁদে নিয়ে যান।’
ভূতটা তখন তার বিশাল ডান হাতটা নামিয়ে সমিতকেও তুলে নিলো। এক ঝটকায় ওকে রেখে দিলো সোজা চাঁদের বুকে।
তারপর ভূতটা অদৃশ্য হয়ে গেলো। ভূতটাকে আর কোথাও খুঁজেই পাওয়া গেলো না।
এদিকে চাঁদের দেশে অলিন আর সমিত প্রথম প্রথম খুব লাফালাফি হাসাহাসি করতে লাগলো।কী মজা! এখানে যতো খুশি দুষ্টুমি করা যাবে। আম্মু মোটেই রাগ করতে পারবেন না।
খানিক পর তাদের হুঁশ হলো। কতো আর লাফালাফি করা যায়! এখন তো বাসায় ফেরা দরকার। কিন্তু তারা ফিরবে কী করে! তাদের খুব আম্মুর কথা মনে হলো। সমিত বললো, ‘ভাইয়া, চলো আম্মুর কাছে যাই। আম্মু নিশ্চয় এতক্ষণে খুব কান্নাকাটি শুরু করেছে।’
অলিন বললো, ‘যাবো তো ঠিক। কিন্তু যাই কী করে? লম্বু ভূতটাকে তো আর কোথাও দেখছি না।’
তখন ওরা দুজন কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলো :
ভূত ভাই ভূত
কোথায় গেলে ধুত
তোমার ব্যাপারটা অদ্ভুত
ভূত ভায়া লক্ষ্মী
বুঝছো না এই শোক কি?
ফেললে খেয়ে চোখ কি?
আম্মু একা বাসাতে
ছেলে দুটোর আশাতে
কাঁদছে করুণ সুরে
আমার দুটো লক্ষ্মী ছেলে
মায়ের কান্না শুনতে পেলে
থাকতে পারি দূরে!
ও ভাই ভূত রাগটি ভুলুন আমাদেরকে কোলে তুলুন
বাসায় পৌঁছে দিন
দুষ্টুমি আর করবো না
মায়ের খাতা ধরবো না
আর তো কোনো দিন।
এদিকে আম্মু দুই ছেলের শোকে কী যে কান্নাকাটি করতে লাগলেন! বললেন, ‘ভূত, ও লম্বু ভূত সাহেব, প্লিজ আমার ছেলে দুটোকে ফিরিয়ে দিন। প্লিজ! ওরা যতোই কাগজ ছিঁড়ুক, খাতা ছিঁড়ুক,ওদের আর বকবো না।’
কিন্তু ভূত তো তখন আর ধারেকাছে কোথাও নেই। সে চলে গেছে সমুদ্রের নিচে। ওখানে সে চিত হয়ে শুয়ে ঘুমুচ্ছে।
অলিন সমিতের খুব খিদে লেগে গেছে। খিদের চোটে পেটের ব্যথায় এই বুঝি ওরা জ্ঞান হারায়।
আর ছেলে দুটোর জন্যে কাঁদতে কাঁদতে আম্মু বুঝি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
তখন আম্মু এলেন পদ্য সোনার কাছে। পদ্য একটা ছোট্ট মেয়ে।একদম ছোটো। কেবল কথা বলা শিখছে।
আম্মু বললেন, ‘পদ্য, ভারি সমস্যায় পড়েছি। অলিন সমিত ওই চাঁদে আটকে আছে। ওদের ফিরিয়ে আনি কী করে, বলো তো!’
পদ্য সব শুনলো, তারপর বললো, ‘ঠিক আছে দেখি চেষ্টা করে।’
শুনে বাসার, বড়োরা সবাই হাসলো। বললো, ‘বড়ো মানুষরা কেউ কোনো কাজে আসছে না। আর একটা পুঁচকে মেয়ে নাকি অলিন সমিতকে ফিরিয়ে আনবে!’
এদিকে অলিন সমিতের আব্বু থানায় খবর দিয়েছেন। পুলিশও এসে গেছে। কিন্তু পুলিশ কী করবে? পুলিশ তো আর চাঁদে যেতে পারবে না। নয়ন মামা আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে ফোন করার চেষ্টা করতে লাগলেন। চাঁদে একটা রকেট পাঠানো দরকার। রকেটে করে অলিন সমিত ফিরে আসবে।
পদ্য কিন্তু এসব কিছুই করলো না। সে বললো, ‘আমাকে কোলে করে ছাদে নিয়ে যাও।’
হ্যাঁ, তাকে ছাদে নিয়ে যাওয়া হলো।
তাকে ঘিরে ধরেছে পুলিশ। আর বাড়ির বড়ো বড়ো লোকজন। পদ্য বললো, ‘তোমরা একটু দূরে দাঁড়াও তো।’ সবাই পদ্যর কাছ থেকে দূরে সরে গেলো।
পদ্য তখন তাকালো চাঁদের দিকে।বললো, ‘চাঁদ মামা, কেমন আছো?’ চাঁদ মিষ্টি করে হাসলো। এর মানে, ভালো আছি।
পদ্য তখন বলতে শুরু করলো :
আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যা।
ধান ভানলে কুঁড়ো দেবো
মাছ কুটলে মুড়ো দেবো
কালো গাইয়ের দুধ দেবো
দুধ খাওয়ার বাটি দেবো
তোকে ঘুঙুর দেবো পায়
তুই খুকুর কাছে আয়।
অমন করে ডাকলে চাঁদ মামা কি আর না এসে পারেন?
পদ্যর কপালে একটা টিপ দেবার জন্যে চাঁদ মামা চলে এলেন পদ্যর কাছে। আর পদ্য অমনি এক হাতে অলিনকে,আরেক হাত দিয়ে সমিতকে টেনে নামালো।
টিপ দেওয়া হয়ে গেলে চাঁদ আবার গেলো আকাশে। আর ছাদে সবাই দেখলো, অলিন সমিত ফিরে এসেছে। তারা সবাই হৈহৈ করে উঠলো খুশিতে।
অলিন সমিত বললো, ‘থ্যাংক ইউ পদ্য, থ্যাংক ইউ ছোটোবোন, তুমি আমাদের ফিরিয়ে এনেছো।’
তারপর আম্মুকে বললো, ‘আম্মু, আমরা আর দুষ্টুমি করবো না। একটুও না।’
আম্মু অলিন সমিতকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন।
আর সবাই পদ্যকে যে কতো আদর করলো!
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
হৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেরামিশা নূর রাওহা
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেLutfun Nahar (Sabira)
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেLutfun Nahar (Sabira)
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেমোঃ আনিছুর রহমান
Golpobuzz ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেহৃদয়
GJ Writer ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেউমর মোকতার
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেউমর মোকতার
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেমোঃ আনিছুর রহমান
Golpobuzz ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেরামিশা নূর রাওহা
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেLutfun Nahar (Sabira)
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেLutfun Nahar (Sabira)
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেরামিশা নূর রাওহা
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেউমর মোকতার
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেরামিশা নূর রাওহা
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেউমর মোকতার
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেরামিশা নূর রাওহা
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেLutfun Nahar (Sabira)
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেরামিশা নূর রাওহা
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেউমর মোকতার
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বেরামিশা নূর রাওহা
User ৩ বছর, ৭ মাস পুর্বে