বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

অন্ধকার যুগ ফিরে আসুক আবার

"শিক্ষণীয় গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মফিজুল (০ পয়েন্ট)

X অন্ধকার যুগ ফিরে আসুক আবার" শায়েখ গুগল কে যদি জিজ্ঞেস করেন অন্ধকার যুগ কোন সময় কে বলা হয় শায়েখ গুগল উত্তর দিবে ৫ম খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৫শ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সময় কাল কে অন্ধকার যুগ বলা হয়। এই অন্ধকার যুগ বা ডার্ক এজেস নামটা দিয়েছিলো ইতালিয়ান স্কলার ফ্রান্সেস্কো পেট্রারচ। ইতিহাস বিমুখ মুসলিমদের জানার কথা নয় এই অন্ধকার যুগ ছিলো আদতে সোনালী যুগ। ইসলামের জয়জয়াকার ছিলো সেজন্য বলছি না বরং ইসলামের জয়জয়াকার ছাড়াও এ সময়ে দর্শন শাস্ত্র ও বিজ্ঞান শাস্ত্রের যে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধন হয়েছিলো তা মানব ইতিহাসে আর কোন সময়ে দেখা যায় নি সেকথা মূর্খ ও কানা স্কলার ব্যাতিত সবাই একবাক্যে স্বীকার নিবে। বিজ্ঞানের এমন কোন শাখা প্রশাখা নেই যেগুলো নিয়ে এই অন্ধকার যুগে কাজ হয় নি। পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, চিকিৎসা বিজ্ঞান,মনোবিজ্ঞান, জীব বিজ্ঞান, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, গণিত শাস্ত্র থেকে শুরু করে এমন কোন শাস্ত্র নেই যেগুলোর উপরে কাজ হয় নি এই অন্ধকার যুগে। এই কাজ গুলোর সিংহভাগ সম্পাদিত হয়েছিলো মুসলিম গবেষকদের মাধ্যমে। আজকে যদি কোন মুসলিম তরুন কে জিজ্ঞেস করেন পাচজন দার্শনিক এর নাম বলার জন্য ঝড়ের বেগে সে উত্তর দিবে সক্রেটিস, প্লেটো, এরিস্টটল, টলেমি, পিথাগোরাস ইত্যাদি ইত্যাদি। এবার তাকে জিজ্ঞেস করুন ৫ জন মুসলিম দার্শনিক এর নাম বলো তো পেটে বোম মারলেও ৩ জনের নাম বলতে পারবে কিনা সন্দেহ আছে। অথচ যে দার্শনিকদের নাম সবসময় ঠোটের আগায় নিয়ে ঘুরছে এদের কাজের সাথে সারা বিশ্বের পরিচয় কিন্তু ঘটিয়েছে মুসলিম দার্শনিকগণ সেই অন্ধকার যুগে বসে তাদের নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে। এই লিখার মূল উদ্দেশ্য হলো অন্ধকার যুগের (সোনালী যুগ) সেরা চারজন দার্শনিক এর সাথে মুসলিম তরুণদের পরিচয় ঘটিয়ে দেয়া যাতে করা তারা মুসলিম দার্শনিকদের কাজ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয় এবং তারা আমাদের জন্য যে বিশাল জ্ঞানের সমুদ্র রেখে গিয়েছেন সেখান হতে কিছুটা হলেও জ্ঞান আহরণ করে। প্রত্যেক মুসলিম তরুনের উচিৎ তাদের কাজ সম্পর্কে জানা। আবু নাসের মোহাম্মাদ আল ফারাবী ( ৮৭২-৯৫১)ঃ- আল ফারাবী কে অনেকেই চিনেন গণিতবিদ হিসেবে তবে দার্শনিক হিসেবে হয়ত খুব মানুষ তাকে চিনবে। অথচ আল ফারাবীর সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি রাজনৈতিক দর্শন নিয়ে লিখেছেন। আরবি তে আল ফারাবীর উপাধী হলো "আল মুয়াল্লিম আস সানি" বা দ্বিতীয় শিক্ষক, প্রথম হলো এরিস্টটল অর্থাৎ এরিস্টটল এর পরে সবচেয়ে প্রভাবশালী দার্শনিক হলেন আল ফারাবী। তার লিখা বই "আরা আহল আল মাদিনা আল ফাযিলা" রাস্ট্রবিজ্ঞানের সকল শিক্ষার্থীর এক বার হলেও পড়া উচিৎ। এই বইটিকে ইংরেজিতে বলা হয় "The Views of the people the virtuous city" তিনি সর্ব প্রথম মুসলিম দার্শনিক যিনি ইসলামের মধ্যে কিভাবে গণতান্ত্রিক রাজ্য প্রতিষ্ঠা করা যায় সেটা নিয়ে লিখেছেন অনেকটা প্লেটোর রিপাব্লিক এরমত যেখানে রাস্ট্র চলবে এর জনগণের সুখ শান্তি রক্ষার উদ্দেশ্যে এবং রাষ্ট্র চালাবে সবচেয়ে জ্ঞানীরা প্লেটো যাদের কে বলেছেন "এনলাইটেন্ড ফিলোসফার"। আল ফারাবী শুধু আমাদেরকে আলোকিতই করে না বরং চিন্তা নিয়েও চিন্তা করতে শিখায়। আল-গাযযালী (১০৫৮-১১১১) আল গাযযালী বোধ হয় লিস্টের সবচেয়ে পরিচিত নাম তবে দারশিনিক হিসেবে নয় বরং ইসলামের একজন বড় ইমাম বা স্কলার হিসেবে তিনি আমাদের মাঝে পরিচিত। অথচ আল গাযযালী ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী দারশিনিক। আল গাযযালীর আগে দর্শন ও ধর্ম ছিলো একে অপরের চক্ষুশুল। এমন কি ইসলামের মত প্রোগ্রেসিভ ধর্মেও দার্শনিকদের দেখা হতো বাকা চোখে। আল গাযযালী হলেন সেই ব্যাক্তি যিনি ধর্ম ও দর্শন কে এক রেখায় আনার দূরহ কর্ম সম্পাদন করে দেখিয়েছেন। প্রত্যেক জ্ঞান পিপাষুর উচিৎ আল গাযযালির লিখা "ইহিয়া উলুম আদ দিন" বা "The revival of the religious sciences" বইটি মৃত্যুর আগে একবার হলেও পড়া। প্রত্যেক মুস্লিম বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীর একবার হলেও তার "কিতাব আল মুনকিয মিন আদ দালাল" বা "Deliverance from Error" পড়া উচিৎ। এই বইটিতে শায়েখ তার স্পিরিচুয়াল ও ইন্টেলেকচুয়াল যুদ্ধের কথা তুলে ধরেছেন তুলে ধরেছেন তার সত্যের অনুসন্ধানের ইতিকথা। এই বইটা নিজেই একটা শিল্পের ইউনিভার্স। ইবন রুশদ (১১২৬-১১৯৮) ইবনে রুশদ পশ্চিম বিশ্বে পরিচিত আভি রুশ নামে। আজকের পশ্চিম বিশ্বের সকল দারশনিকদের গুরু হলেন ইবনে রুশদ। ইবনে রুশদ যে শুধু একজন ্দারশনিক ছিলেন তা কিন্তু নয় তিনি একই সাথে ইসলামিক ইমাম, চিকিৎসক, ও ফকীহ ছিলেন। মালেকি মাজহাবের দ্বিতীয় ইমাম হিসেবে তাকে গণ্য করা হয়। ইবনে রুশদ তার আল হাসল আল মাকাল বা The Decisive Treatise বইতে দর্শন, বিজ্ঞান ও ধর্ম কিভাবে একই সূত্রে গাঁথা যায় সে বিষয়ে লিখেছেন। আল গাযযালী ছিলেন এরিস্টোটলিয়ান দর্শনের বিরোধী কিন্তু ইবনে রুশদ ছিলেন এরিস্টটলিয়ান দর্শনের পক্ষের লোক। আল গাযযালীর লিখা তাহাফাত আল ফালাসিফা (Incoherence of Philosophy) কে খন্ডন করার জন্য ইবনে রুশদ লিখেন তাহাফাত আল তাহাফাত (Incoherence of incoherence)। তাদের দুজনের এই দুই ক্লাসিক প্রকাশ করে ইসলামিক দারশনিকদের জ্ঞান ছিলো কত গভীর এবং তাদের দুজনের এই বিতর্ক আজো দর্শন শাস্ত্রের অন্যতম জ্ঞান গভীর বিতর্ক হিসেবে নিজের স্থান ধরে রেখেছে। ইবনে আরাবী (১১৬৫-১২৪০) ইবনে আরাবি বোধহয় তালিকার সবচেয়ে অতুলনীয় ব্যাক্তিত্ব। তিনি আল ফারাবী বা ইবনে রুশদ মতো যুক্তিবিদ দার্শনিক ছিলেন না। তাকে ব্যাখ্যা করা সবচেয়ে কঠিন কেও কেও বলেছেন অব্যাক্তনীয়। তিনি একাধারে ছিলেন আধ্যাত্বিক ব্যাক্তিত্ব ও দার্শনিক। তিনি বোধহয় সরবপ্রথম মুসলিম দার্শনিক যিনি নারীর অধিকার নিয়ে লিখেছেন। সৃষ্টির রহস্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে তার লিখা গুলো অসাধারণ। তাকে গোড়া মুসলিমরা দেখতে পারে না কারণ তাকে বোঝা তাদের সাধ্যের বাইরে এজন্য তার লিখা অনেকেই পড়তে চায় না, কিন্তু একবার যখন তার লেখা পড়ে এবং বুঝে সে আর গোঁড়া মুসলিম থাকে না। আপনি মুসলিম জ্ঞান পিপাসা আছে আপনার মাঝে কিন্তু আল ফারাবি এর লিখা পড়েন নাই তাহলে আপনি অনেক কিচ্ছু সম্পর্কে অজ্ঞাত, তাই আজই আশ শায়েখ আল আকবার এর লিখা গুলো পড়া শুরু করেন। পরিশেষে এতটুকু বলব অন্ধকার যুগ ও অন্ধকার যুগের দারশনিকগণ আবার ফিরে আসুক তাহলে যদি অস্থির এ পৃথিবী আবার স্থির হয়, জ্ঞানের, দর্শনের সেই সোনালী যুগ আবার ফিরে আসে। -RYSUL ISLAM MAHMOOD


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৫০০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • মটু,সমচা খাও আর শুরু করে দাও
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    কিন্তু দুঃখের ব্যাপার কোপারনিকাস নিজেই ধর্মগুরু ছিল তাহলে নাস্তিক বিজ্ঞানীরা কোপার্নিকাসকে এত সম্মানের সাথে দেখে কেন,এটাই বুঝলাম না!কোপার্নিকাস তো ধর্মে বিশ্বাসী চিলেন আর ধর্মে বিশ্বাসীরা তো নাস্তিকদের কাছে মূর্খ।

  • মোহাম্মদ মফিজুল হোসেন
    Golpobuzz ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    ☺ ☺ ☺ আমি তো পিচ্চি তাই এতকিছু জানিনা ☺ ☺ ☺

  • Mehedi Hasan Prova
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    স্বাগতম।gjgj

  • Mehedi Hasan Prova
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    gjgjgj এদের সবার সম্পর্কে কিছু কিছু জানি। তাদের কোন বই যদিও পড়িনি। একমাত্র ইমাম গাজ্জালীর একটা বই পড়েছি।☺️

  • মোহাম্মদ মফিজুল হোসেন
    Golpobuzz ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    বাহwowwowwow সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ gjgj

  • Mehedi Hasan Prova
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    একটা কথা বাকি ছিল। মধ্যযুগের ইউরোপিয়ানদের জ্ঞান শিখিয়েছিলেন ঐ মুসলিমরাই। ইউরোপ তখন ধর্মান্ধ খ্রিস্টান ধর্মগুরুদের অধীনে ছিল। যারা জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চাকে বাঁকা চোখে দেখত। যার জন্য কোপার্নিকাস, গ্যালিলিওর মতো বিজ্ঞানীদের শাস্তি ভোগ করতে হয়েছে। এর ফলাফল এখনকার বিজ্ঞানীদের মধ্যে দেখা যায়। যেমন নাস্তিকতা। অনেক বিজ্ঞানীরা ধর্ম ও ধর্মগুরুদের অবহেলার দৃষ্টিতে দেখে থাকে। কারণ ঐ মধ্যযুগের ধর্মীয় গোঁড়ামী। যদিও সব বিজ্ঞানীরাই নাস্তিক নন।

  • মটু,সমচা খাও আর শুরু করে দাও
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    শায়েখ গুগলgj

  • M.H.H.RONI
    Golpobuzz ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    ভালো পোস্ট।কিন্তুু আমি তো ঐ চারজন সম্পর্কে আগেই পড়ে ফেলেছিgj হুমম সবচেয়ে ব্যখ্যা করা কঠিন ইবনে আরাবিকে। যিনি সুফি সম্রাট নামে সর্বাধিক পরিচিত। তার অসংখ্য বই আজও মানুষের ধরা ছোয়ার বাইরে।তার দার্শনিক চিন্তাধারা এতই উচ্চস্তরের ছিল যে সাধারন কোন ব্যক্তি তার বই পড়লে কিছুই বুঝবে না। তিনি সর্বশ্বের বাদের প্রবক্তা। অর্থাৎ স্রষ্টা সর্বএই। কথিত আছে তিনি একবার নবী সা.কে স্বপ্নে দেখেন। তিনি তার সারাটা জীবন অতিবাহিত করেছেন সুফিবাদ, দর্শনতও্বে। তার ধ্যান ধারনা অনেকে বুঝতে না পারায় তাকে কাফের ফতোয়া দেয়।যাইহোক ভালো লাগল খুবgj gj