বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

একটি বিড়ালের যত কথা

"শিক্ষণীয় গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান সাফায়েত হোসেন (০ পয়েন্ট)

X 'ম্যাও' আমি একটি বিড়াল।এখন আমি নিজেকে বিড়াল পরিচয়ের সাথে আরেকটি পরিচয় দিতে পারি।আমি এখন একজন মা।কয়েকদিন আগে তিনটা বাচ্চা হয়েছে আমার।মানুষের মধ্যে যেমন মা আছে আর তারা মা কে ভালোবাসে তেমনি আমিও তিনটা বিড়াল ছানার মা।মা এর মধ্যে কখনো কোনো তফাত হয় না।মানুষ ছাড়াও অন্যান্য সকল প্রাণীও মা হয়।আর সেই প্রাণিগুলো তাদের সন্তানকে ভালোবাসে তাদের খেয়াল রাখে ঠিক যেমন মানুষরা করে।আজ আমি এক বিড়াল মা হয়ে পুরোপুরি খুশি হতে পারি নি।কারণ আমার ছানারা আমার দুধ ভালো করে খেতে পারছে না।এইজন্য আমি খুশি নেই।আমি নিজে ভালো করে খেতে পাই না তাই আমার শরীরে দুধ ভালো করে হয় না তাই আমার ছানারা পেটপুরে আমার দুধ খেতে পাচ্ছে না।তাছাড়া মানুষরা আমাকে তাদের বাড়িতে দেখলে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়।আমাকে একটু মাছের কাটা বা তাদের এটো খাবার কিছুই খেতে দেয় না।অনেক মানুষ ভাবে বিড়াল তো অনেক শান্তিপ্রিয় প্রাণী।আবার অনেক লোকজন বিড়াল পালে।তারা বিড়াল কে অনেক আদর যত্নে রাখে তাই বিড়াল অনেক ভালো আছে অন্যান্য প্রাণীর থেকে।কিন্তু হে মানুষ যদি মেনেও নেই তোমদের কথা যে আমাদের বিড়ালের মধ্যে অনেক কে মানুষ পালে কিন্তু রাস্তার অলগলি তে থাকা বিড়ালের অবস্থা খুব করুণ ভাবে কাটে।হয়তো আমাদের বিড়াল জাতির কয়েকজনের ভাগ্য খুব ভালো হয় তারা আরাম আয়েশে থাকে মানুষের সাথে কিন্তু আমাদের মত রাস্তার বিড়ালের দিকে কেউ তাকায় না।কেউ যত্ন করে না।আবার আমাদের দেখলে লাঠি নিয়ে মারতে আসে।যেমন আমি থাকি একটি শহরের দুইটা বড় বাড়ির গলির মাঝখানে।আমার তিনটা ছানা কে নিয়ে আমি থাকি এবং তাদের দুধ খাওয়াই।আর প্রতিদিন আমাদের দিকে একটা মেয়ে তাকিয়ে থাকে।মেয়েটি আমার বাচ্চাদের দিকে মায়া নিয়ে তাকিয়ে থাকে।মেয়েটির বাসা আমি যে দুই বাড়ির মাঝখানে যেই গলি তে থাকি ওই দুই বাড়ির মধ্যে একটাতে।মেয়েটার এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখলে আমার অনেক ভালো লাগে।আর মেয়েটি শুধু তাকায় থাকে না মাঝেমধ্যে মাছের কাটা ফেলে দেয়।যাক কেউ তো আছে যে আমাদের মতো বিড়াল দের পছন্দ করে।তো মেয়েটির দেওয়া খাবার খেয়ে আমি একটু শক্তি পাই।আমার ছানারাও আমার দুধ খেতে পায় ভালোভাবে।কিন্তু আফসোস মেয়েটির দেওয়া ওই খাবারে হয় না আমার।তাই বাইরে যেতেই হয় আরো খাবারের সন্ধানে।মেয়েটিও প্রতিদিন দেয় না খাবার।আর আমার ছানাদের জন্য আমায় যে প্রতিদিন বেশি বেশি খাবার খেতে হবে।যাতে তাদের দুধ এর অভাব না পড়ে।আবার এত সব সমস্যার মধ্যে অন্য বাড়ির একটা ছেলে এসে শুধু বিরক্ত করে আমায় আর আমার ছানাদের।এমনকি ওহ লাঠি নিয়ে মারতে আসে আমাকে আর আমার ছানাদের।আমার ছোট্ট ছোট্ট ছানাদের ও লাঠি দিয়ে মারার চেষ্টা করে।এটা দেখে ওই মেয়েটি ছেলেটাকে মানা করে দেয় যে আমাদের মাড়তে না।কিন্তু ছেলেটি তাও এসে আমাদের বিরক্ত করে এবং মারার চেষ্টা করে।আমিতো ছেলেটার কখনো কোনো ক্ষতি করি নি বা তার বাসাতেও তো থাকছি না তাইলে কেন যে আমার আর আমার ছানাদের মাড়তে আসে বুঝতে পারি না।আর আমি একা একটা বিড়াল তাও যত টুকু সম্ভব আমার ছানাদের রক্ষা করার চেষ্টা করি।এই জন্য আমার গায়ে অনেক লাঠির মার পড়ছে।কিন্তু তাও আমার সকল কষ্ট দূর হয়ে যায় আমার ছানাদের মিষ্টি মুখ গুলো দেখে।আজ যদি আমার সঙ্গি ছেলে বিড়ালটি যার জন্য আমি মা হয়েছি সে যদি থাকতো তাইলে হয়তো আমি অনেক ভালোভাবে আমার ছানাদের দেখভাল করতে পারতাম।কিন্তু খাবারের খোজে গিয়ে আমার সঙ্গি বিড়ালটিকে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়তে হয়েছে।যেই বাড়িতে খাবারের খোজে গেছিলো আমার সঙ্গি বিড়ালটি সেই বাড়ির লোকজন তাকে বিশ মিশ্রিত খাবার দিয়ে মেরে ফেলেছে।তাকে খুজতে গিয়ে তার নিথর মৃত দেহটি আমি সেই বাড়ির পাশের একটি ছোট খালে পড়ে থাকতে দেখেছি।সেটা দেখে ম্যাও ম্যাও বলে কান্না করেছি আমি।কিন্তু আমার কান্না কেউ শুনে নি বা শুনলেও কেনো কেউ এগিয়ে আসবে কারণ আমি যে একটি বিড়াল।আমার জন্য কেনোই বা মানুষ ভাববে।তাইতো আজ আমার পুরুষ সঙ্গিকে কে হারিয়ে একলা আমি আমার ছানাদের খেয়াল রেখে যাচ্ছি।আর ওই ছেলেটির ভয়ে আমার ছানাদের রেখে কোথাও যেতে ইচ্ছা করে না কিন্তু খাবারের খোজে আমায় বেড় হতেই হয়।আমি না খেলে যে আমার ছানারা যে দুধ পাবে না সেই জন্য আমায় যেতে হয়।খাবারের খোজে যাওয়ার আগে আমি আমার ছানাদের নিরাপদ কোনো জায়গায় লুকিয়ে রাখি।যাতে কেউ আমার ছানাদের ক্ষতি করতে না পারে।তারপর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরি অনেক মানুষের বাসায় যাই কিন্তু কেউ আমাকে খাবার দেয় না।আরো আমাকে দেখলে লাঠি নিয়ে মারতে এগিয়ে আসে।কিন্তু আমি তো বেশিকিছু চাই না।চাই একটু মাছের কাটা।চাই একটু মানুষের ফেলে দেওয়া খাবার।কিন্তু আমি তেমন কিছুই পাই না খেতে।শুধু আমি না এভাবেই অবহেলা করা হয় আমার মতো আরো কতো যে বিড়াল তার কোনো হিসেব নেই।তাই আমরা বিড়ালরা বাধ্য হয়ে মানুষের বাড়িতে মাছ চুড়ি করে খাই।আবার কখনো কখনো তাদের বাসায় থাকা দুধও চুরি করে খেয়ে নেই আমরা।এতে বাড়ির মালিক আমাদের মারতে আসে।কিন্তু তারা কি ভেবে দেখে না কেন আমরা চুড়ি করি?ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে পারি না বলেই আমরা চুরি করি মানুষের খাবার।আমাদের মতো না খেয়ে থাকলে তাদের কেমন লাগবে সেটা কি তারা ভাবে?আজ মানুষরা আমাদের খেতে দেয় না।তারা একটু মাছের কাটা দিলেও আমরা খুশি।কিন্তু তারা কিছুই দেয় না আমাদের।তাইতো বাধ্য হয়েই আমরা বিড়ালরা খাবার চুরি করি।আর এই জন্য মানুষের হাতের লাঠির মার খেতে হয়ে আমাদের।কিন্তু আমরা প্রতিবাদ করতে পারি না। পারি না অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে কারণ আমরা যে বিড়াল।এখন দুনিয়া এমন হয়ে গেছে যে আমাদের তো খেয়ে বেচে থাকার কোনো অধিকার নেই সব অধিকার তো শুধু মানুষের আছে।তাই মানুষ আমাদের খাবার তো দেয় না উল্টে পারলে আরো মেরে তারায়।তাও পরিস্থিতি মেনে নিয়ে এভাবেই লাঠির আঘাত বা কখনো চুরি করেই খাবার খাই আমি।আর এখন যে আমার তিনটা ছোট ছানা আছে তাদের জন্য আমাকে খেতেই হবে ভালো করে।নইলে তারা আমার দুধ না খেতে পেয়ে যে মারা যাবে।যাই হোক মানুষের তাড়ানি ও লাঠির আঘাত নিয়ে আমার ছানাদের কাছে যখন ফিরে আসি তখন তাদের মুখ দেখে সকল কষ্ট যন্ত্রণা দূর হয়ে যায় আমার।তাদের দুধ খাওয়াতে পারি এতেই আমি অনেক শান্তি পাই।আমার ছানাদের বড় হওয়া তারা নিজেরা তাদের নিজের খাবার সংগ্রহ করার ক্ষমতা অর্জন না করা পর্যন্ত তাদের আমি রক্ষা করে যেতে চাই।কিন্তু আমি কি ততদিন বেচে থাকতে পারবো তো?নাকি আমার সঙ্গির মতো না জানি আমিও কোনোদিন মানুষের দেওয়া বিষ মিশ্রিত খাবার খেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়বো।তাও যতদিনই আমি বেচে আছি আমার ছানাদের আমি দেখে রাখবো তাদের রক্ষা করে যাবো।কারণ আমি যে একজন মা।যদিও আমি বিড়াল তাতে কি মা তো মা ই হয় 'ম্যাও'।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৫৬ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • MH2 (Mysterious Some one)
    GJ Writer ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    কথা আপু,আপনি যেকোনো একটা কথা লিখুন,তারপর মন্তব্য করুন,লেখাটায় ক্লিক করুন,তাহলে কমেন্ট হয়ে যাবে

  • PiNk fAirY {sHiKhA}
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    gjgjgjgjgj

  • J.D
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    hi

  • Mr.Mahin
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    Very Good

  • safaet hossen
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদwave

  • MH2 (Mysterious Some one)
    GJ Writer ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    কথাগুলো সত্য।তবে আমি গ্রামে থাকি,গ্রামে কুকুর বিড়ালের খাদ্যের ততো সমস্যা হয় না, তবে গল্পে যেমনটা বলা হয়েছে তা তো হয়ই, মারধোর তো হয় ই।অনেক ভালো লাগল গল্পটি gjgjgj

  • Mehedi Hasan Prova
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    Hmmmmmmmgjgj

  • safaet hossen
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    স্বাগতমgj

  • SIAM The Deadman☠
    User ৩ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    : weepweep একটা প্রানীর কথা ফুটিয়ে তোলার জন্য ধন্যবাদgj