বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে নামাজ পড়ে নেয় মল্লিকা। নামাজ পড়েই ব্রেকফাস্ট রেডি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সে। আটটার দিকে বাসা থেকে অফিসের জন্য বের হবে অনীক। এর আগেই ব্রেকফাস্ট রেডি করতে হবে। ব্রেকফাস্ট তৈরী করে ডাইনিং-এ খাবার সাজিয়ে অনীককে ডাকতে যায় মল্লিকা। কিন্তু, রুমে তো অনীক নেই! আশেপাশেও কোথাও অনীককে দেখা যাচ্ছেনা। কোথায় গেলো অনীক? এইসময় তো অনীক অফিসের জন্য রেডি হয়। দেরী হয়ে যাবে তো অফিসে যেতে! বরাবর তো বড্ড তাড়া থাকে এসময় ওর। হুট করে মনে পড়ে যায়, আজকে তো শুক্রবার। অফিস তো নেই। এজন্যই, সাহেবের আজকে কোনো তাড়া নেই। নইলে তো এতোক্ষণে ব্রেকফাস্ট দেয়ার জন্য মল্লিকাকে ডাকাডাকি শুরু করে দিতো। কিন্তু, গেলো কোথায় সে? মর্নিং ওয়াকে গেলো নাকি? আনমনে এসব ভাবতে ভাবতে অনীককে খুঁজতে থাকে মল্লিকা। খুঁজতে খুঁজতে বাগানে এসে থমকে দাঁড়ায় সে। বাগানের গন্ধরাজ গাছটার দিকে অপলক একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে অনীক। কৌতুহলী হয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায় মল্লিকা। কী এতো দেখছে অনীক, এতোটা মনযোগ দিয়ে? একটা গন্ধরাজ গাছকে এভাবে দেখার কী আছে!
মল্লিকার উপস্থিতি টের পেয়ে একবার ওর দিকে তাকায় অনীক। পরমুহূর্তেই চোখ সরিয়ে নিয়ে বললো, "দেখেছো মল্লিকা, গন্ধরাজ গাছটায় আজকে ফুল ফুটেছে।" অনীকের কথা শুনে অবাক হয়ে ভালো করে এবার গাছটার দিকে তাকায় মল্লিকা। সত্যিই একটা গন্ধরাজ ফুল ফুটেছে। বেশ মিষ্টি সুগন্ধ ভেসে আসছে ফুলটা থেকে। মল্লিকাকে অবাক হতে দেখে অনীক বলতে শুরু করে, "অবাক হচ্ছো মল্লিকা, এতোগুলো বছর পর এই গাছটাতে ফুল ফুটতে দেখে? আমিও অবাক হয়েছিলাম। আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম, এই গাছে কোনোদিনও ফুল ফুটবেনা। ভাবছিলাম, কয়েকদিনের মধ্যেই এটাকে কেটে ফেলবো। জানো, খুব যত্ন করে গাছটা নিজ হাতে লাগিয়েছিলো মিলি। ওর গাছপালা লাগানোর খুব শখ ছিলো। গাছগাছালি লাগিয়ে চারপাশ ভরিয়ে ফেলছিলো। তাই, এই গাছটা লাগানোর সময় ওকে আমি বারণ করেছিলাম, কিছুটা বকেছিলাম। মিলি তখন অভিমান করে বলেছিলো, 'দেখো অনীক, এই গাছটাতে যখন ফুল ফুটবে তখন তোমার আমায় মনে পড়বে। আমি না থাকলেও এই গন্ধরাজ ফুলের ঘ্রাণে তুমি আমার শরীরের ঘ্রাণ পাবে, আমার অস্তিত্ব টের পাবে।' সেদিন ওর না থাকার কথাটা বলাতে আমি ওর ওপর প্রচন্ড রাগ করেছিলাম। রাগ করে দুইদিন ওর সাথে ঠিকভাবে কথাও বলিনি। পরে অদ্ভুত সব কান্ড করে মিলি আমার রাগ ভাঙ্গিয়েছিলো। আর আজ দেখো, সত্যিই মিলি আমার পাশে নেই। অদ্ভুত হলেও সত্য, ঐ ফুলটার মাঝে আমি মিলির অস্তিত্ব টের পাচ্ছি, মিলির শরীরের ঘ্রাণ পাচ্ছি।"
অনীকের কথা শুনে রাতের আতঙ্কটা মল্লিকার আবারো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সত্যিই কী মিলি ফিরে এসেছে? তবে কী মিলির অশরীরী আত্না ওদের আশেপাশেই অবস্থান করছে? যদিও এসব কুসংস্কারে মল্লিকার কখনোই বিশ্বাস ছিলোনা। কিন্তু, গতকাল রাত থেকে যা যা ঘটছে তাতে তো সবটাই কাকতালীয় বলে ধরে নেয়া যাচ্ছেনা। কিছু তো একটা গরমিল আছেই! নইলে, প্রায় দশ-বারো বছর পর আজকেই কেন এই গাছে ফুল ফুটলো? যেখানে গতকাল মাঝরাতেই মিলিকে দেখেছে সে। রাতের সেই ঘটনার কিছুদিন আগে কিংবা পরে ফুটলে এসব নিয়ে একদমই মাথা ঘামাতোনা মল্লিকা। কী চায় মিলি? কেন ফিরে এসেছে? মিলি কী তবে প্রতিশোধ নিতে এসেছে মল্লিকার ওপর? ও কী জানতে পেরে গেছে সবকিছু? মৃত্যুর পর আত্নারা নিশ্চয়ই সবকিছুই জেনে যায়। মিলি তাহলে সবকিছু জেনেশুনেই এসেছে বোধহয়। তবে কী মল্লিকার এতোদিনের তিলে তিলে গড়ে তোলা সাজানো সবকিছু তছনছ হয়ে যাবে এবার? মিলি কী মল্লিকাকে শেষ করে দিয়ে নিজের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেবে? নাকি, মল্লিকার ভালোমানুষির মুখোশের আড়ালে থাকা চরম কুৎসিত রুপটা প্রকাশ্যে টেনে আনবে? ঠিক কোনটা করবে মিলি? কিছুতেই ভেবে পাচ্ছেনা মল্লিকা।
চলবে....??
Suborna Akhter Zhumur
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now