বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

মর্মচারী ঘুণ (Part-1)

"রহস্য" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Suborna Akhter Zhumur (০ পয়েন্ট)

X চাঁদনিরাত। চাঁদের আলো জানালার কাঁচ ভেদ করে সারা ঘরে আলো -আধারীর সৃষ্টি করেছে। মাঝরাত। সময় দুটো-আড়াইটা হবে হয়তো! হঠাৎ করে মল্লিকার ঘুম ভেঙে যায়। প্রচন্ড পানির তৃষ্ণা অনুভব করে। হাত বাড়িয়ে বেড সাইড সুইচটা অন করতে গিয়ে কিছুতেই সুইচ খুলে পেলোনা মল্লিকা। অগত্যা, বালিশের কাছে হাত বাড়িয়ে ফোনটা খুঁজতে থাকে। ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালিয়ে অন্তত ডাইনিং-এ যাওয়া যাবে। কিন্তু, কিছুতেই ফোনটা খুঁজে পেলোনা। চরম বিরক্তি লাগছে তার। অন্ধকারটা কিছুটা চোখ সয়ে এসেছে। চাঁদের আলো রুমের ভেতর ততোটা না এলেও আবছা আবছা সবকিছুই দেখা যায়। অনেকটা ভোর হওয়ার আগ মুহূর্তে যেমনটা থাকে, তেমনি। কোনোকিছুই না পেয়ে মল্লিকা এবার চাঁদের আবছা আলোয় ভর করেই পানি খেতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। বড্ড ভুল হয়ে গেছে। বেডসাইড টেবিলের ওপর একটা পানির জগ রাখা উচিৎ ছিলো। অবশ্য, বুঝবেই বা কীভাবে যে, মাঝরাতে এভাবে এতোটা পানির তৃষ্ণা লাগবে আজ! কারণ, কোনোদিনই তো মাঝরাতে পানি খাওয়ার অভ্যাস নেই মল্লিকার। যাইহোক, এখন থেকে অন্তত এক মগ পানি এনে রাখতে হবে। আনমনে এসব ভাবতে ভাবতে মল্লিকা বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। হুট করে বিছানার দিকে দৃষ্টি যায় মল্লিকার। বিছানায় অনীকের পাশে ওটা কে শুয়ে আছে! তার মানে কী মেয়েটা এতোক্ষণ অনীক আর ওর মাঝখানে শুয়েছিলো! নাকি মাঝরাতে মল্লিকার দৃষ্টিবিভ্রম হচ্ছে? ভালো করে চোখে মেলে খুঁটিয়ে খুঁটিতে দেখতে শুরু করে মেয়েটাকে। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পানির পিপাসা এতোক্ষণে উবে গেছে। মেয়েটার পড়নে টকটকে লাল রঙ্গা বেনারসি। মেয়েটা অনীকের দিকে পাশ ফিরে অনীককে জড়িয়ে শুয়ে আছে। পাশ ফিরে আছে বলে মল্লিকা কিছুতেই মেয়েটার মুখ দেখতে পাচ্ছেনা। তবে, মেয়েটা বেশ সুন্দরী। হাত-পা, পিঠ এসব যেটুকু দেখা যাচ্ছে, তাতেই বোঝা যায়। মল্লিকার হাত-পা, সারা শরীর যেন অসাড় হয়ে গেছে। তবুও, কোনোরকমে জোর করে নিজেকে টেনে নিয়ে গেলো বিছানা অব্দি। হাত বাড়িয়ে মেয়েটাকে ছুঁতে চাইছে মল্লিকা। কিন্তু, আতঙ্ক তাকে এমনভাবে গ্রাস করেছে যে তার হাত প্রচন্ড কাঁপছে। তবুও, শরীরের সমস্ত শক্তি এক করে কাঁপা কাঁপা হাতে মেয়েটার হাত স্পর্শ করে মল্লিকা। মুহূর্তেই ছিটকে সরে আসে ভয়ে। এতোটাও ঠান্ডা, হিমশীতল কারো শরীর হতে পারে! মনে হচ্ছে যেন, বরফের টুকরো ছুয়েঁছে সে এইমাত্র। চিৎকার করে অনীককে ডাকতে চাইছে। কিন্তু, গলা দিয়ে একফোঁটা শব্দও বের হচ্ছেনা। হাত-পা অবশ হয়ে গেছে, গলা শুকিয়ে কাঠ। ভয়ে চোখ বন্ধ করে এসি রুমে থেকেও দরদর করে ঘামছে মল্লিকা। হঠাৎ অনুভব করে, মেয়েটা তার কানের কাছে মুখ এনে ঠান্ডা নিঃশ্বাস ছেড়ে বলছে, "বড্ড ঘুম পাচ্ছে আমার। অনেকদিন হলো ভালো করে ঘুমাইনা। কতোবছর পর আজ অনীককে জড়িয়ে ঘুমাচ্ছি। অনেক শান্তি লাগছে। আজকে আমি মন ভরে ঘুমাবো। ডিস্টার্ব কোরোনা প্লীজ! " হতভম্ব হয়ে মল্লিকা চোখ মেলে তাকায় মেয়েটার দিকে। কিন্তু, এবারেও মুখটা দেখতে পেলোনা। লম্বা কালো চুলের আড়ালে মেয়েটার মুখটা ঢাকা পড়ে আছে। মেয়েটা ততোক্ষণে আবারো অনীককে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে শুয়েছে। হঠাৎ আশঙ্কায় বুকটা ধ্বক করে ওঠে মল্লিকার। মেয়েটার কন্ঠ একদম অবিকল মিলির মতো। এটা কী করে সম্ভব! মিলি তো চলে গেছে অনেকগুলো বছর হলো। কিন্তু, কন্ঠটা তো সত্যিই মিলির। মল্লিকার শ্রবণশক্তি এতোটাও নষ্ট হয়নি যে, মিলির কন্ঠ চিনতে সে ভুল করবে। তাহলে, কী সত্যিই মিলি ফিরে এসেছে! নাহ! এসব কী ভাবছে মল্লিকা! সাইন্স নিয়ে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করে আজকের যুগে এসব ভাবাটা রীতিমতো হাস্যকর। কিন্তু, চোখের সামনে যা দেখতে পাচ্ছে, সেটা কীভাবে অস্বীকার করবে সে! এই যে মেয়েটা অনীককে এত্তো জোরে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে, অনীক কী কিচ্ছু টের পাচ্ছেনা? কেন টের পাচ্ছেনা অনীক? তাহলে কী মিলি অনীককে কিছু করে রেখেছে? বশটশ করে ফেলেনি তো! এসব সাতপাঁচ হাজারটা কথা ভাবতে ভাবতে ভয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে মলিকা। চোখ খুলে কী দেখতে পাবে, সেই শঙ্কায় চোখ খোলেনা সে। কিছুক্ষণ পর ফজরের আযান শুনতে পায় মল্লিকা। এবার সাহস করে বিছানার দিকে তাকায় সে। ততোক্ষণে অনীকও ঘুম থেকে ঊঠে গেছে। হাসিমুখে "গুড মর্নিং" উইশ করে মল্লিকাকে। চারদিকে চোখ বুলিয়ে মিলির কোনো অস্তিত্ব পায়না মল্লিকা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মল্লিকা। "ওসব কিচ্ছুনা। সবই আমার মনের ভুল কিংবা হ্যালুসিনেশন থেকে হয়েছে। কী ছেলেমানুষি ভাবনাটাই না ভেবেছিলাম! মিলি আসবে কোত্থেকে! এতো বছরে তো মিলির অস্থিমজ্জা সবকিছু মাটিতে মিশে গেছে। কিন্তু, সত্যিই কী সবটাই হ্যালুসিনেশন? নাকি অবচেতনে আমার মনে অপরাধবোধ জাগছে? আর সেই অপরাধবোধের ফলস্বরুপ রাতের সেই হ্যালুসিনেশন? ধুর! কীসের অপরাধ! কোনো অপরাধ করিনি আমি। জীবন তো একটাই। তাই এই জীবনেই আমি অনীককে নিজের করে নিতে যা যা করার প্রয়োজন হয়েছে, তাই করেছি। প্রেমে আর যুদ্ধে সবই সম্ভব।" আনমনে এসব ভাবতে ভাবতে ঠোটেঁর কোণে বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে মল্লিকার। মল্লিকার এই আনমনা মুচকি হাসি চোখ এড়ায়না অনীকের। দু হাতে মল্লিকাকে নিজের কাছে টেনে জিজ্ঞেস করে, "আজকে সূর্য কোন দিকে উঠেছে বলো তো? নিশ্চয়ই উল্টো দিকে উঠেছে। নইলে তো এতো সকালে মহারাণীর ঘুম কখনোই ভাঙ্গেনা। তা কী ভেবে মহারাণী মিটিমিটি করে হাসছে শুনি? আমাকে কী শোনানো যাবে? নাকি এটা টপসিক্রেট?" অনীকের কথায় উত্তর না দিয়ে মুচকি হেসে অনীককে পাশ কাটিয়ে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে চলে যায় মল্লিকা। ওয়াশরুমের দরজা লক করে ভাবতে থাকে মল্লিকা, কালকে রাতের ঘটনাটা অনীককে বলাটা কী উচিৎ হবে? নাহ! কেঁচো খুড়তে যদি কেউটে বেরিয়ে আসে! রিক্স কিছুতেই নেয়া যাবেনা। এতোদিনের সাজানো সবকিছু ওলটপালট হয়ে যেতে পারে। চলবে....?? Suborna Akhter Zhumur


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১০৬৮ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now