বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
হেডলাইটের আলো দেখে আড়ালে সরে যায় ইরিনা । পুলিশ বা র্যাবের গাড়ির সামনে পড়া চলবে না ।
আজ সারা রাতেও শিকার পায়নি ও । পেটে অসম্ভব ক্ষুধা । অলরেডী সাড়ে এগারটা বাজে । রাত বারোটার মধ্যে কাওকে না পাওয়া গেলে বিপদ হয়ে যাবে । মনিপুর এলাকাটার রাস্তাঘাট যথেষ্ট বিভ্রান্তিকর বলেই যা ভরসা ।
ভাগ্যটা মনে হয় ততটা খারাপ না ইরিনার জন্য । গাছের নীচে সিগারেট টানতে দেখা যায় এক তরুণকে ।
হাতে আলতো করে আরেকবার স্প্রে করে ইরিনা । ইটস শো টাইম ।
‘এক্সকিউজ মি ।’ চার হাতের মধ্যে এসে মুখ খোলে ও, এটাকে ও বলে ‘ডিসট্র্যাকশন স্টেপ’ । ‘চব্বিশ নম্বর বাসাটা কোন দিকে বলতে পারেন?’
সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকায় ছেলেটা । ‘সম্ভবতঃ ডানদিকের রাস্তা ধরে গেলে পাবেন ।’
‘নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না?’ হাত নাড়ে ইরিনা হতাশার ভঙ্গীতে । ‘ইনফিল্ট্রেশন স্টেপ’ ।
‘সরি আপু, আমি এখানে থাকি না । আন্টির বাসায় এসেছিলাম । আপনাকে একটু খুঁজে নিতে হবে’ বলতে বলতেই টলে ওঠে তরুণ ।
পড়ে যাওয়ার আগেই ধরে ফেলে ওকে ইরিনা । আলতো করে গলায় দাঁত বসিয়ে দেয় । দাঁতের নীচে গরম প্রবাহিত রক্ত ওর ক্ষিধেটা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় । পাগলের মত রক্ত খেয়ে চলে ও । হাল্কা ধাক্কা দেয় ছেলেটা । কিন্তু ক্লোরোফর্মের প্রভাবে শক্তি বলতে কিছু অবশিষ্ট নেই তখন তার । আরও জোরে ওকে চেপে ধরে বুক ভরে টান দেয় ইরিনা । বেশি সময় নেওয়া যাবে না । কেউ চলে আসলে বিপদ ।
পেট কিছুটা ভরতেই ছেড়ে দেয় ছেলেটাকে । কাটা কলাগাছের মত মাটিতে পড়ে যায় সে অসহায়ের মত ।
ইরিনা শখের ভ্যাম্পায়ার । প্রথমে ওর মাথায় যখন আইডিয়াটা আসে – তখন ভেবেছিল রক্তের মত জঘন্য জিনিস তার কিছুতেই সহ্য হবে না । কিন্তু প্রথম শিকারকে ধরার পর সম্পূর্ণ ধারণাটাই ভুল বলে প্রমাণিত হল । মানুষের রক্ত খাবার হিসেবে ততটা খারাপ নয় – যতটা লাগে দেখতে । নোনতা-মিষ্টি একটা স্বাদ ।
কিন্তু শিকারের সংখ্যা দশকের ঘরে পৌঁছতে পৌঁছতে নেশা ধরে যায় । মানুষের শরীরের প্রবাহিত রক্ত ছাড়া কিছুতেই স্বাদ পায় না ইরিনা । ফিরে আসতে যে ইচ্ছে হয়নি তার – তেমনটাও নয় । কিন্তু একবার মানুষের রক্তের নেশা ধরে গেলে ছাড়ার সাধ্য কি আর থাকে ? হেরোইনের নেশার চেয়েও ভয়ংকর এ নেশা ।
শিকার থেকে দ্রুত রক্ত খেয়ে কেটে পড়ার জন্য নিজেই শিকার-পদ্ধতির কিছু নিয়মকানুন বের করেছে । এতে ধরা পড়ার সম্ভাবনা যেমন কমে – পুরো ব্যাপারটা অতি অল্প সময়ে ঘটিয়ে ফেলাটাও হয় সহজ ।
প্রথমত হাতের আঙ্গুলে ক্লোরোফর্ম স্প্রে করে নেয় ও । তবে ভুলেও এই হাত নিজের নাকের সামনে আনা চলবে না । কথার ছলে একবার জায়গা মত হাত নিয়ে গেলেই কাজ হয়ে যায় । দ্বিতীয়ত, মুখের চারটি চোখা দাঁতের মাথায় বিশেষভাবে বসিয়ে নিয়েছে ও সুহ্ম চারটি পিন । অতি সহজে ফুটো করে ফেলা যায় ধমনী । তৃতীয়তঃ নিজেকে আকর্ষণীয় করে সাজিয়ে বের হতে হয় । ছেলেদের অন্যমনস্ক করে ফেলাটা সহজ এভাবে, যার অর্থ – নাকে ক্লোরোফর্ম ধরার মত দূরত্বে আসা সহজ ।
এবং অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে ধরার পড়ার ক্ষেত্রগুলো আইডেন্টিফাই করাটা সহজ হয়ে গেছে । প্রথমে ও রোজ রাত দশটায় বের হত । হাঁটত স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিকের মত । তবে একদিন বিপত্তি ঘটেই গেল।
গত তিনদিন কোন শিকার পায়নি তখন ইরিনা । রাজ্যের ক্ষিধে পেটে । পৌনে বারোটায় পুলিশের গাড়িটাকে পাত্তা না দেওয়ার ফলাফল হাতেনাতেই পেয়ে যায় ইরিনা ।
ঘ্যাচ করে ব্রেক কষে লাফিয়ে নামে অফিসার । পেছনে বসে থাকে চার কনস্টেবল ।
‘কোথায় যাওয়া হচ্ছে?’ জলদগম্ভীর কন্ঠে বলে মোটাসোটা পুলিশ অফিসার ।
‘নান অফ ইয়োর বিজনেস ।’ ক্ষুধার চোটে মেজাজ ঠিক রাখা সম্ভব হয় না ইরিনার পক্ষে ।
‘স্মার্ট মাল, অ্যাঁ?’ তরল কন্ঠে বলে পুলিশ । ‘এলাকায় নতুন মনে হচ্ছে । কার হয়ে কাজ কর ?’
‘আমি কারও হয়ে কাজ করি না ।’ ভাববাচ্য থেকে পুলিশ অফিসারের সরাসরি ‘তুমি’-এ নেমে যাওয়া দেখে পরিস্থিতি আঁচ করে কিছুটা ।
‘বাহ ! তা – এ লাইনে নতুন বলেই বুঝতে পার নি, সুন্দরী । আমাদের রাস্তায় ব্যাবসা করবা ভাল কথা । কিন্তু রাস্তা যে আমরা পরিষ্কার রাখছি – সেটা কিন্তু ফ্রিতে না । দিনে কত করে দিচ্ছ সেটা ক্লিয়ার কর এখানে নাহয় থানার দরজা খোলায় আছে । গাড়িতে ওঠো ।’
বিষয়টা স্পষ্ট হয় ইরিনার কাছে । পতিতা বলে তাকে সন্দেহ করা হয়েছে । ঘাবড়ায় না ও মোটেও । মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে চোখ টিপ দেয়, ‘দেনা-পাওনার হিসেবটা কি এদের সামনে না করলেই নয়?’ ইঙ্গিতে গাড়িতে বসে থাকা কন্সটেবলদের দিকে দেখায় ও।
ইরিনার চোখের দিকে তাকিয়ে ঢোক গেলে পুলিশ অফিসার । এরকম সুন্দরীকে এ লাইনে আসার উদাহরণ কমই দেখেছে সে ।
‘তোমরা আরেক রাউন্ড দিয়ে এসে আমাকে এখান থেকে উঠিয়ে নিও ।’ হাতের ইশারায় ড্রাইভারকে কেটে পড়তে বলে অফিসার।
রাতের অন্ধকারে মিশে যায় ইরিনা আর অফিসার ।
আড়াল পেয়েই শিকারের গলা লক্ষ্য করে ঝাঁপিয়ে পড়ে ইরিনা । ক্লোরোফর্ম ব্যাবহারের কথা মাথায় থাকে না আর ।
তিনদিনের ক্ষিধে পেটে পাগলের মত রক্তও টেনে চলে । মিনিট পাঁচেক পর রক্ত আর আসে না মুখে ।
তবুও টানে ইরিনা ।
পায় না কিছুই ।
পালস চেক করে থমকে যায় । নেই ।
শিকারের রক্ত খেয়ে একেবারে মেরে ফেলার ঘটনা সেটাই প্রথম ছিল ।
এরপর থেকে আরও সতর্ক হয়ে যায় ইরিনা । প্রতিদিন একটা শিকার লাগবেই ওর । নাহলে তিনদিন পর কাওকে ধরলে জান বের করে ফেলবে !
গত কয়েক মাস ধরে শুধু রক্তের ওপরই বেঁচে আছে ও । চেষ্টা করে দেখেছে সলিড কিছু খাওয়ার ।
পেটে আর সহ্য হয় না । বমি হয়ে বের হয়ে যায় সব ।
আজ রাতে প্রথম শিকার পেলেও পেটের ক্ষিধে মেটেনি ইরিনার ।
আরেকটা শিকার পেলেই আজকের মত খাবারের চিন্তা দূর করে ফেলতে পারবে ও ।
দূরে আরেক বাড়ি সংলগ্ন কংক্রিটের বসার জায়গায় বসে থাকতে দেখে আরেক তরুণকে ।
এই বয়েসী ছেলেগুলো শিকার হিসেবে খুবই ভাল হয় । সহজেই সৌন্দর্য্যের ফাঁদে ফেলা যায় এদের ।
কাছাকাছি দাঁড়িয়ে গলায় কিছুটা বিস্ময় তুলে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় ইরিনা, ‘আরে ! আরিফ! তুমি এখানে কি করছ ?’
ডিসট্র্যাকশন ।
‘সরি আপনি ভুল করছেন ।’ ভ্যাবাচেকা খেয়ে উঠে দাঁড়ায় তরুণ । ‘আমার নাম আরিফ না ।’
‘সরি । এখন বুঝতে পারছি ।’ দুঃখপ্রকাশ করে ইরিনাও । ‘বসে থাকা আপনাকে আমার এক বন্ধুর মতই লাগছিল ।’
‘ইটস ওকে ।’ অপ্রস্তুত হাসি দিয়ে মাথা চুলকায় ছেলেটা । ইনফিলট্রেশন ।
মাথা ঘুরে ওঠে ইরিনার । কিন্তু ও পড়ে যাওয়ার আগেই ওকে ধরে ফেলে তরুণ ।
আলতো করে দাঁত বসিয়ে দেয় ইরিনার গলায় ।
পেটে তার তিনদিনের জমে থাকা ক্ষিধে ...
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Mofizul
Golpobuzz ৪ বছর, ৩ মাস পুর্বেরোমান আহমেদ
User ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বেNamika
User ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বে