বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
★★★ বাদশা একদিন বনে শিকার করতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ বনে তার নজরে পড়ল একটি জংলী স্ত্রীলোক ঝোপের আড়ালে একটি সন্তান প্রসব করে তখনই শিশুটিকে পরিধেয় বস্ত্রের ঝোলার মধ্যে বেঁধে পিঠে ফেলে নিয়ে চলে গেল সেখান থেকে।
বাদশা এতে আশ্চর্য হয়ে মনে মনে ভাবলেন, আমার অন্তঃপুরের মহিলারা প্রসবের সময় ব্যথার যে ভান করেন, সে আসলে মিথ্যে? প্রসবব্যথা যদি সত্যিই এত কষ্টের হত, তাহলে এই শ্রমজীবী বন্য মেয়েটিও তো সে যন্ত্রণা অনুভব করত? এই জংলী মেয়েটি এমনি অনায়াসে এমন সস্তান প্রসব করতে পারত না। এরপর থেকে বাদশা অন্তঃপুরের মহিলাদের, এমনকী বেগমদেরও গর্ভাবস্থায় কোনও তত্ত্বাবধান করতেন না। এতে বেগম আর বাদশাজাদীদের নতুন আর এক যন্ত্রণায় পড়তে হলো। যত কষ্টই হোক বাদশা সেদিকে লক্ষ রাখতেন না।
শেষ পর্যন্ত তারা বীরবলের কাছে এক বাদীকে পাঠালেন এ বিষয়ে তার সাহায্য প্রার্থনা করে। বীরবল সব শুনলেন এবং তার তখন মনে পড়ল সেই শিকার করতে যাওয়ার কথা।
বীরবল বাঁদীকে বলে দিলেন,‘ভাবনার কিছু নেই, এ বিষয়ে আমার যা করার তা করব। বেগমদের নির্ভাবনায় থাকতে বলবে।’
বাদশার প্রাসাদের বাগানে অনেক রকম শৌখিন ফুল ফুটত। বাদশার আদেশে এক দক্ষ মালী নিয়মিত জল দিয়ে পরিচর্যা করত সেই সব ফুলগাছের। ফুলগাছও বেশ সুন্দর হয়েছিল।
বীরবল একদিন মালীকে টবে জল দিতে নিষেধ করলেন। দুদিন জল না পেয়েই ফুলগাছগুলো সব শুকিয়ে যেতে লাগল। বাদশা এজন্য মালীকে ডেকে তিরস্কার করলেই সে বলল, আমার কোনও কসুর নেই হুজুর, বীরবলসাহেব আমাকে বাগানে জল দিতে নিষেধ করেছেন। সেজন্য আমি দুদিন ধরে জল দিইনি হুজুর।’
বাদশা বীরবলকে ডেকে বললেন, তুমি নাকি মালীকে টবের ফুলগাছে জল দিতে নিষেধ করেছ? তার জবাব দাও! দেখতে পাচ্ছ, জল না পেয়ে গাছগুলো সব কেমন হয়ে গেছে।’
বীরবল বললেন,‘হ্যাঁ হুজুর। আমিই মালীকে জল দিতে নিষেধ করেছিলাম।’
‘কেন?’
বীরবল বললেন,‘জঙ্গলের গাছগুলোতে কে জল দেয় হুজুর? কিন্তু জঙ্গলের গাছ কি বাঁচে না, না বাড়ে না না দেখতে খারাপ লাগে?’
বাদশা বললেন,‘জঙ্গলের গাছ আর বাদশার বাড়ির বাগানের ফুলগাছ এক হল? তাই যদি হবে তাহলে জলের অভাবে টবের গাছগুলি এমন শুকিয়ে যেত না! তোমার এ অন্যায় কোনওমতে বরদাস্ত করা যায় না।
বীরবল বললেন,‘তাই যদি হয় হুজুর, তাহলে জংলী স্ত্রীলোক আর বাদশার অন্তঃপুরের স্ত্রীলোকও কি এক হয়? শ্রমশীলা জংলী নারীর প্রসববেদনা হয় না, বা সামান্য হয় বলে কি আজন্ম সুখভোগিনী বেগমদের ও কি প্রসববেদনা হবে না? এর কি কোনও উত্তর আছে আছে আপনার কাছে। আপনার মতে আমি যদি কোন ভুল কাজ করে থাকি তাহলে আপনি আমাকে শাস্তি দিতে পারেন হুজুর”
বাদশা এবার নিজের ভুল বুঝতে পেরে গর্ভবতী অন্তঃপুরস্থ মহিলাদের বিশেষ তত্ত্বাবধানের রীতি পুনঃপ্রবর্তন করলেন। তিনি সেদিন থেকে আবার আগের মতোই তাদের সব দেখভাল করতে লাগলেন।
বীরবলও তখন মা জননীদের আশীর্বাদ কুড়োলেন!
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now