বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

সাজানো গোছানো সংসার(পর্ব-০৯)

"রোম্যান্টিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Sayemus Suhan (০ পয়েন্ট)

X “এতোটা পাগলামি কেনো করছো? জানোই তো আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।” “তুমি কোনো চিন্তা করোনা, আমি তোমার বিয়েতে একটুও বাঁধা দেব না। আমি সামনে থেকেই আমার প্রিয় মানুষটিকে অন্যের হাতে তুলে দিবো। তুমি এইটুকু বিশ্বাস আমার ওপর রাখতে পারো।”(মাইশা) “তুমি কি জানো? তোমাকে যতই দেখছি ততই আমি দুর্বল হয়ে পড়ছি। আমি কি সিদ্ধান্ত নিবো সেটাই বুঝতেছিনা।” “আমাকে চলে যেতে বলছো?”(মাইশা) “আমার মনে হয় এটাই ভালো হবে। তুমি চলে গেছে আমার বিয়ে করতে সমস্যা হবে না।” “ঠিক আছে, সেটাই হবে। তবে একটা শর্ত আছে, যদি সেটা মেনে নাও তাহলে আমি কালই এদেশ ছেড়ে চলে যাবো।”(মাইশা) “বলো, কি সেই শর্ত?” “আজকের রাতটা আমি তোমার বুকে ঘুমিয়ে কাটাতে চাই। শেষবারের মতো তোমার স্পর্শে আমি স্পর্শিনী হতে চাই। তোমার বউ যা চাইবে আমি সেরকম কিছুই চাচ্ছিনা। শুধুমাত্র জড়িয়ে ধরে ঘুমালেই চলবে।”(মাইশা) “আমি রাজি, এবার আমার হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দাও। সাথে বাতিটাও নিবিয়ে দিও।” আমার কথামতো মাইশা হাত-পায়ের বাঁধন খুলে তারপর বাতি নিবিয়ে একটা ছোট বাচ্চার মতো এসে আমার বুকে ঘুমিয়ে যায়। কোনো একটি কথাও আর বলেনি আমায়। দুটো কোমল হাত দিয়ে আমার শরীর শক্ত করে ধরে আছে। পাগলিদের মতো চুলগুলো এলোমেলো। একটু সাজগোজ নেই, তবুও আমার চোখে সে সৌন্দর্যময় এক আশ্চর্য প্রদীপ। আমার পুরো রুমটাই আলোকিত করে রেখেছে। আমার বুকে মুখ গুঁজে নিরিবিলি ঘুমাচ্ছে আর সেটা আমার ভেতরের হৃদপিণ্ড গুলোকে আলগা করে দিচ্ছে। চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি আমি। বালিশ দুটি পানিতে একাকার করে ফেলছি। মাইশা একটুও নড়ছে না। আমার ভীষণ ইচ্ছা হচ্ছে, প্রিয়টিকে আরও শক্তভাবে জড়িয়ে ধরার। ইচ্ছা হচ্ছে ওর চুলের মিষ্টি ঘ্রাণ নিতে, ওর সুন্দর মুখটির দিকে হাজার বার চেয়ে থাকতে। কিন্তু পারছিনা, বারবার নিজের বিবেক নিজেকে বাঁধা দিচ্ছে। এদিকে আমার বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে। আমি কিছুই করতে না পেরে মাইশার হাত সরিয়ে উঠে বাথরুমে চলে গেলাম। বুকের ভেতরের কষ্টগুলো আমি কান্নার মাধ্যম বের করতে চাইছি। যতটুকু পানি চোখে ছিল সব শেষ করে ফেললাম অথচ কষ্ট আমার শেষ হলো না। চোখও আমার সাথে বেইমানি করে। এভাবেই বাথরুম থেকে বের হয় আসলাম। মাইশা বিছানায় বসে আছে। ওর চোখে কোনো পানি নেই। ভেতরে কষ্টের মাঝে চাপা মৃদু হাসি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এমন চাহনি আমাকে আরও কষ্টময় করে তুলল। চোখ মুছে আসলেও চোখের পানি ওর সামনেই টপটপ করে পড়ছে। কোনোরকম ওর পাশে গিয়ে বসলাম৷ মাইশা একটা হাত আমার হাতের ওপর রাখল। তারপর বলল, “তোমার চোখে কান্না কি মানায়? তুমি শান্ত থাকো। দেখবে এটাই তোমার জীবনের সফলতা বয়ে আনবে। আমি শুনেছি, তোমার হবু বউ 'তুহি' মেয়েটা অনেক ভালো, অনেক কেয়ারিং, অনেক হেল্পফুল এবং সংসারের প্রতি খুবই মনোযোগী। আর মেয়েটির মন নাকি অনেক ভালো। তুমি বুঝতে পারো,তোমার জীবনে এরকম একটা মেয়ের কত দরকার? হাজারে এরকম মেয়ে একটা পাওয়া যায়। আর সেটা তোমার ভাগ্যেই লিখা, তাই তুমি পেয়ে গেলে। এতে তোমার অনেক খুশি হওয়ার কথা। বিশ্বাস করো, আমিও এতে অনেক খুশি। আমি চাই, আমার ভালোবাসার মানুষটি অনেক সুখে থাকুক। যেকোরো সাথে অনেক ভালো থাকুক।”(মাইশা) “আমাকে উপদেশ দিতে হবে না। বুঝার মতো বয়স আমার হয়েছে। চুপচাপ এসে শুয়ে পড়।” “থাক, আর ঘুমাবো না। এমনিতেই তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। তুমি ঘুমিয়ে যাও, আমি রুমে চলে যাচ্ছি।”(মাইশা) “বেশি কথা বললে একদম মেরে ফেলবো। বলছি এখানে ঘুমাতে হবে, সুতরাং ঘুমাতেই হবে।” “একটু পর ফজরের আজান হয়ে যাবে৷ খালু আর খালা যদি দেখে ফেলেন আমি তোমার রুমে! তাহলে কি ভাববেন, বুঝতে পারছো?”(মাইশা) “যা, ভাবার ভাববেন। এখন যা বলছি সেটাই করো।” মাইশা আমার কথা শুনলোনা। আমার দিকে চেয়ে দাড়িয়ে থাকলো। টান মেরে জোর করে আমার কাছে শুয়ালাম। নির্বিক পাখিটি আমার কাজে কোনো বাঁধা দিচ্ছে না। খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে সুন্দর পুষ্প ভরা ঐ মুখটির দিকে শেষবারের মতো চেয়ে রইলাম। পারিবারিক বন্ধনে আটকা পড়ে হয়তো কখনও আমার প্রিয়টিকে নিজের করে পাবোনা। তাই আজকে শেষ বারের মতো দেখে মনের পিপাসা কিছু দুর করি। আঁকড়ে ধরে রইলাম দুজন দুজনকে। চারদিকে আজানের ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। মাইশা আমার কাছ থেকে ছাড় পাওয়ার জন্য জড়াজড়ি করতে লাগলো। আমার ছাড়তে ইচ্ছে হচ্ছে না। শেষমেষ বাধ্য হয়ে ছেড়ে দিলাম। মাইশা একপলক আমার দিকে চেয়ে রুমের বাইরে চলে গেল। আমার বুকটাও চিন করে উঠল। লম্বা এক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বালিশে কাত হয়ে শুয়ে পড়লাম। আজ আর ঘুম হয়নি। এই সময়ে এসে শরীরটা কেমন ছেড়ে দিসে। চোখ দুটিতে ঘুম ছাড়া আর কোনো কিছুই জমা নেই। বুঝতেই পারিনি, আমি চলে যাই নিদ্রায়। মোবাইলে এলার্ম দেয়া ছিল, ঠিক ৯ টার সময়। চোখ দুটো ঘুমের মাঝে ডুবে আছে আর অন্যদিকে এলার্ম বাজছে। গভীর ঘুমের মাঝেও আমাকে ঘুম থেকে ওঠতে হলো। শিমুকে কলেজে পৌছে দিতে হবে। ঘুম ঘুম চোখে বাথরুমে ফ্রেস হতে গেলাম। চোখ দুটো লাল হয়ে আছে! মনে হচ্ছে এখনই খসে পড়বে। চোখে ভালো করে পানি মেরে চোখের জ্বালা কিছুটা কমালাম। নাস্তা করতে বসলাম না, তাহলে শিমুর দেরি হয়ে যাবে। একগ্লাস পানি খেয়ে শিমুকে সাথে নিয়ে তার কলেজের দিকে চললাম। ফোন আসলো। চেয়ে দেখলাম তুহির ফোন। “আপনি এখন কোথায়? আমি কিন্তু বাসা থেকে এইমাত্র বের হচ্ছি। তাড়াতাড়ি চলে আসবেন।” তুহি বলল। “ঠিক আছে” বলে আমি ফোন কেটে দিলাম। তুহির সাথে দেখা করার কথা আমি প্রায় ভুলেই গেছিলাম। যাইহোক, শিমুকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে আমি চললাম, তুহির সাথে দেখা করার উদ্দেশ্যে। আমার শরীরটা একদম ক্লান্ত লাগছে। চোখ দুটি যন্ত্রণায় ম্যাজ-ম্যাজ করছে। আমি কোনোভাবে গাড়ী চালিয়ে তুহির কাছে পৌঁছালাম। তুহিকে দেখলাম অনন্য এক রুপবতীর আদলে। আলগা থেকেই অনেকটা বেশিই সুন্দর লাগছে। গাড়ীটা পার্কিং করে তুহিকে নিয়ে ডুকলাম একটা রেস্টুরেন্টে। নাস্তা করে আসিনি, আমার খুব ক্ষিধে লাগছে। সামনাসামনি বসে দুজন নাস্তা করতে লাগলাম। যদিও তুহি অনেকটা লজ্জা পাচ্ছে, আর একটু একটু খাচ্ছে। এদিকে আমার খাওয়া দেখে হাসছেও। “আচ্ছা, আপনার চোখ দুটো এতো লাল কেনো? রাতে ঘুমান নাই নাকি?” খাওয়ার ফাঁকে আমাকে জিজ্ঞেস করে। আমি বললাম, “এমনি কাল রাতে ঘুমাতে পারিনি।” তারপর আবার তুহি বলল, “বাসর ঘরের আগেই যদি ঘুমাতে না পারেন আর চোখ এরকম লাল হয়! তাহলে বাসরের দিন কি হবে?” (চলবে)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১২৯৫ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • বকুল রায়
    Golpobuzz ৪ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    নাইস

  • Jobayer
    User ৪ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    খুব ভালো। অপেক্ষা রইলো পরের পর্বের জন্য।

  • Rehnuma Ahmed
    Golpobuzz ৪ বছর, ১১ মাস পুর্বে
    Hmm. Waiting for next part.