বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
“শর্তটা হলো, আমি কেমন? সেটা আপনাকে এখনই বলতে হবে।” (তুহি)
“জোর করে আদায় করতে চাও?”
“বলেন না প্লিজ।” (তুহি)
“শীঘ্রই বিয়ের প্রস্তাব পেয়ে যাবে ইনশাল্লাহ! এবার বুঝতে পারছো?”
“Explain করে বলুন, আমি বুঝিনি!”(তুহি)
“আমার পাশে মা-বাবা আর পিচ্ছি শয়তানটা আছে, explain কেমনে করবো?”
“ফোনে তো কথা বলছি না, টাইপ করে লেখবেন, উনারা বুঝবেন কেমনে?”(তুহি)
“নাহ, টাইপ করতে আমার আবেগ চলে আসে। যদি আবেগ প্রকাশ করতে বুঝে ফেলেন তাহলে তো সমস্যা!”
“এটা কেমন কথা!”(তুহি)
“যেরকমই কথা হোক নাম্বারটা দাও।”
তারপর তুহির নাম্বারটা নিয়ে আসলাম। শিমু যাতে না বুঝে সেই জন্য একটা ছেলের নাম দিয়ে সেভ করলাম। এদিকে আমরা বাসায় এসে গেছি। মা-বাবাকে ডাক দিলাম। শিমুকেও ঘুম থেকে জাগিয়ে দিলাম। সবাই খুব টায়ার্ড ছিলাম। যার-যার রুমে চলে যাই। ধপাস করে বিছানার মধ্যে শুয়ে পড়লাম।
রাত তখন ১০ টা বাজে।
মা ডাক দিলেন আমায়। ডিনার করতে হবে৷ ঘুম থেকে ওঠে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং টেবিলে চললাম। সবাই থাকলেও শিমু এখনও আসেনি। আমাকেই গিয়ে আনতে হবে। গেলাম ওর রুমে। দেখি বসে বসে কাঁদছে! দৌড়ে পাশে বসলাম,
“কি হইছে বোন আমার কাঁদছিস কেনো?”
“উহু, উহু, উহু.....(শিমু)
“বোন আমার, কি হইছে বল? কাঁদছিস কেন? কেউ কি বকা দিছে?”
“না।”
“তাহলে কাঁদিস কেনো?”
“আমার কপাল পুড়ে গেছে!”(শিমু)
“কি আজেবাজে বকছিস? কপাল পুড়বে কেন? আমি তো তোর কপাল ঠিক জায়গায় দেখতেছি।”
“কপাল মানে এই কপাল না!”(শিমু)
“তাহলে কোন কপালের কথা বলিস?”
“বুঝোস না কেন? আমার আইসক্রিমটা ফ্রিজে রাখছিলাম, কিন্তু ফ্রিজের সুইচ বন্ধ ছিল খেয়াল করি নাই। এখন দেখি আমার আইসক্রিম নাই, আছে শুধু পানি। এখন আমি কি করবোরে ভাইয়া! আমার যে আইসক্রিম খাইতে মন চাচ্ছে। উহু উহু উহু...(শিমু)
“ওহ, এইকথা! এইজন্য কি কাঁন্না লাগে? একটু পর অনেকগুলো আইসক্রিম এনে দিবো। কোনো চিন্তা করিস না। এখন চল ডিনার করবি। কান্না করে চোখ দুটো কেমন ফুলিয়ে দিসোছ।”
“সত্যি এনে দিবে?”(শিমু)
“হ্যা দিবো, এবার বাতরুমে যা ফ্রেশ হয়ে আয়।”
“পারবোনা, তুমি আসো আমার সাথে!”(শিমু)
“তুই পারোসটা কি তাহলে?”
“তোমাকে জ্বালানো ছাড়া আর কিছুই পারিনা।”(শিমু)
“হইছো এতো পন্ডিতি কথা না বলে চল ওয়াসরুমে। এতো বড় হয়ে গেছোস নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে পারলিনা। এখনও সবকিছুই আমাকে করে দিতে হয়। আমাকে খাইয়ে দিতে হবে! মুখ ধুয়ে দিতে হবে! ঘুম পাড়িয়ে দিতে হবে!আরো কত কি? আচ্ছা কবে দায়িত্ব কি এটা বুঝতে পারবি?”
“কখনও না, আমার দায়িত্ব বুঝার দরকার নাই। এভাবেই ভালো আছি।”(শিমু)
“তোর সাথে কথায় পারবোনা, চল এখন।”
শিমুকে নিয়ে ওয়াসরুমে চলে গেলাম। ফ্রেস করে দিয়ে তাকে নিয়ে চলে আসলাম ডাইনিং টেবিলে। পেট ক্ষিধায় চোঁ-চোঁ করছে। শিমুকে পাশে বসিয়ে খেতে লাগলাম। দুই ভাইবোন পাশাপাশি বসে খাচ্ছি, তাও এক প্লেটে! এর চাইতে ভালো দৃশ্য হতে পারেনা। প্রাণ ভরে খাবার খেলাম। কি শান্তি লাগছে! এখন শিমুকে ঘুম পাড়িয়ে আমার ময়না পাখিটার সাথে কথা বলতে হবে। শিমুকে নিয়ে ওর রুমে গেলাম।
“এবার শুয়ে পড়, আমার খুব ঘুম পাচ্ছে। ঘুমাতে যাবো।”
“কিহ, ঘুমাবো কেন? আমার আইসক্রিম কই? আইসক্রিম না খেলে আমি ঘুমাবো না।”(শিমু)
“সোনা বোন আমার, ঘুমাই যা। আমার খুব মাথা ব্যাথা করছে। আমি কাল সকালে পাঁচটা আইসক্রিম কিনে দিবো।”
“তুই ঘুমা যা, আমার লাগবেনা কিছু।”(শিমু)
“রাগ করস কেন? বললাম তো কাল সকালে দিবো।”
“আমি রাগ করসি না।”(শিমু)
“তাহলে ঘুমাই যা।”
“আমি ঘুমাবো না।”(শিমু)
“তাহলে কি করবি?”
“আমি এখানে বসে সারারাত জেগে জেগে কাঁদবো। আর বলবো, আমার ভাইটা অনেক মিথ্যুক। আমার সাথে শুধু শুধু চালাকি করে।”
“সব সময় ইমোশনালী ব্ল্যাকমেল করিস না। চুপ করে বসে থাক, আসছি আমি।”
আমি জানি, আইসক্রিম না খেলে ও ঘুমাবে না। বাধ্য হয়েই আমাকে যেতে হবে। শিমুর রুম থেকে বের হয়ে নিজের রুমে গিয়ে মানিব্যাগ পকেটে নিয়ে বের হলাম বাজারের উদ্দেশ্যে। বাজার বেশি দূরে নয়। হেঁটে হেঁটেই যাচ্ছি। অনেক বাতাস আসছে। ঝড় হওয়ার পূর্ব আলামত! তাড়াতাড়ি হেঁটে বাজারে গেলাম। প্রায় সব দোকানপাট বন্ধ। যেগুলো খোলা রয়েছে একটাতেও আইসক্রিম নেই। বোনটিকে আইসক্রিম দিতে পারবোনা তাই একরাশ কষ্ট নিয়ে ফিরে আসছিলাম। হঠাৎ পাশের গলিতে দেখলাম একটা দোকান খোলা আছে। শেষ আশা নিয়ে গেলাম ওই দোকানে। ভাগ্য ভালো একটা আইসক্রিম পেয়ে যাই। আইসক্রিমের টাকা দিয়ে বের হলাম। চারিদিকে ঝড় শুরু হয় ঝড় বৃষ্টি! আচমকা ঝিলিকের সাথে আগুন ধাধানো বজ্রপাত! ভীষণ ভয় লাগছে, তারপরও হাটা শুরু করে দিলাম৷ আমি বাসায় না গেলে সবাই চিন্তা করবে। খুব দ্রুততার সাথে হাঁটছি। সামনে, পেছনে, ডানে, বায়ে একের পর এক গাছ ভেঙ্গে পড়ছে! আল্লাহর কাছে প্রাথর্না করে সামনের দিকে চললাম। বাড়ীর পাশে চলে আসলে দৌড় দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করি। দরজার পাশ থেকে শুনতে পেলাম, আমার ডলফিন বোনটি কাঁদছে! ভেজা শরীর নিয়ে দৌড়ে শিমুর রুমে চলে গেলাম। শিমুর সাথে মা ও কাঁদছেন! বাবা শিমুর বিছানায় মাথা নিচু করে বসে আছেন। রুমে ডুকতেই শিমু আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। মা ও এসে জড়িয়ে ধরলেন আমায়৷ বাবা দাঁড়িয়ে লম্বা হাফ ছাড়লেন। আমি কিছুই বুঝলাম না। বজ্রপাতের আওয়াজ শুনলে শিমু ভয় পায় জানি কিন্তু মা-বাবা এতোটা হতাশাগ্রস্ত কেনো? জিজ্ঞাসা করলাম,
“কি হইছে মা, কাঁদছো কেনো?”
“তুই এই ঝড়বৃষ্টির মাঝে বাহিরে গেলি কেন?”(বাবা)
“শিমুর জন্য আইসক্রিম আনতে গেছিলাম।”
“আমি আইসক্রিম চাইছিলাম বলে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে যাইতে হবে নাকি? যদি আমার ভাইটার কিছু হয়ে যেত।”(শিমু)
“এই নে আইসক্রিম। খেয়ে শুয়ে পড়।”
“লাগবোনা আমার আইসক্রিম।”(শিমু)
“রাজ, শিমুকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে তুই ঘুমিয়ে যা। এই রাজের মা, চলো।”(বাবা)
বাবা-মা চলে গেলেন। আমি শিমুকে বুঝিয়ে আইসক্রিম খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে তারপর চলে আসলাম রুমে। নিজের কাপড় চেঞ্জ করে শুয়ে ফোন দিলাম তুহিকে,
“হ্যালো”
ওপাশ থেকে কোনো কথা আসলো না। আবার বললাম,
“হ্যালো”
হালকা অভিমানসহ একটা কথা বেশে আসলো,
“কেমন আছেন?”
তুহির কণ্ঠটা অনেক মিষ্টি, চিনতে আমার ভুল হয়নি।
“ভালো আছি, তুমি?”
“আপনি তো আমাকে ভালো থাকতে দেন নি।এতোক্ষণ অস্থিরতার মধ্যে রাখলেন! পুরো হাঁপিয়ে গেছি।”(তুহি)
“কিভাবে অস্থির করে রাখলাম?”
“বা রে, ফোন নাম্বার কখন দিলাম আর ফোন আসলো কখন?”(তুহি)
“একটু ব্যস্ত ছিলাম তো তাই।”
“গার্লফ্রেন্ডের সাথে ছিলেন মনে হয়?”(তুহি)
“কি....?”
(চলবে)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
বকুল রায়
Golpobuzz ৪ বছর, ১১ মাস পুর্বেRehnuma Ahmed
Golpobuzz ৫ বছর পুর্বেSayemus Suhan
Golpobuzz ৫ বছর পুর্বেEshrat Jahan
Golpobuzz ৫ বছর পুর্বে