বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
︶︿︶ , ╯﹏╰
রাস্তার নিভু নিভু আলোতে আমি হাটছি।
উদ্দেশ্য জানা নেই। তবে আমার হাটার
আজ শেষ হতে চলেছে।
.
.
~ আজ আমার জীবনের ইতি হতে চলেছে।
আমি রাস্তায় বসে বসে আমার জীবনে ঘটে
যাওয়া ঘটনা গুলো ভাবতে লাগলাম। কি
হতে চেয়েচিলাম আর কি হয়ে গেলাম।
.
.
~ আমার নাম মায়া। অবশ্য কারোরই আমার
প্রতি মায়া নেই। তাই আমিই নিজের নাম
মায়া রেখে দিলাম। আমার আরেকটা নাম
আছে তা হল ঘল্টু। নামটা যে আমাকে ছোট
করার জন্য রাখা হয়েছে তা আমি পরে
বুঝতে পারছি।
.
.
~ সবার আমি ঘ্রিণার পাএ। ঘ্রিণার মূল
কারণ হচ্চে যে আমার জম্মের সময় আমার
মা মারা যায়। মায়ের মৃত্যুর জন্য সবাই
আমাকে দায়ি করে। এই জন্য কেউ আমাকে
কেউ দেখতে পারে না।
.
.
~ আমার পরিবার নাকি খুবই সুখি ছিল।
বাবা বড় ব্যাবয়ায়ি ছিল। কিন্তু আমি
জম্মের সময় মা মারা যাওয়ার পর
পরিবারের কালো ছায়া নেমে আসে।
বাবা আমাকে দুই চোখে দেখতে পারে না।
আমার একটি ভাই ও বোন আছে। তারাও
আমাকে দেখতে পারত না তবে বাবার মত
না। শুধু কথা কম বলে।
.
.
~ আমি ছোট বেলা থেকে বাবার কাছ
থেকে মার খেতে খেতে বড় হয়েছি। ছোট
বেলায় সবায় খেলত আর আমি বাড়ির সব
কাজ গুচাতে ব্যাস্ত থাকতাম। ছোটবেলায়
যেমন আমি সুখ পাইনি তেমনি বড় হতে হতে
দুঃখ পাওয়াটা যেন আরও বাড়তে লাগল।
.
.
~ যখন আমি স্কুলে ভর্তি হই দেখতাম সবার
বাবা মা আসত তাদের বাচ্চাদের নিয়ে
যেতে শুধু আমার কেউ আসত না।
.
.
~ অবশেষে স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে ভর্তি হয়
হাইস্কুলে। তারপরও বাবার অত্যাচার
কমেনি। একদিন বাবাকে বললাম স্কুলের
ড্রেস লাগবে। বাবা আমাকে কিনে দিল
না। পরে আমি একজন লোকের কাছ থেকে
স্কুলের ড্রেস ধার করে স্কুলে যায়। তা
দিয়ে পার করতে লাগলাম আমার স্কুল
জীবন।
.
.
~ আমার স্কুলে অভিভাবকদের সম্মেলন হয়।
বাবাকে বলেছিলাম যেতে বাবা না করে
দিল। কোন একটা কাজে আপু বাড়িতে
আসছিল। আপু ও ভাইয়া বাহিরে পড়াশুনা
করত তাই বাড়িতে কম আসত।
.
.
~ আমি গিয়ে আপুকে বললাম স্কুলে যাওয়ার
কথা আপু রাজি হল। সেদিন আমি অনেক
খুশি হয়েছিলাম যা বলে বোঝাতে পারব
না। আপু আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।
কিছুক্ষন পর আপু বলে হতবাগা তুই পৃথিবীতে
না আসলেও পারতি, শুধু শুধু সবার চোখের
বিষ হয়ে গেলি। আমি কিছু না বলে ঐখান
চলে যায়।
.
.
~ দেখতে দেখতে আমার SSC পরীক্ষাটাও
শেষ হয়ে যায়। ফলাফল তেমন ভাল না হলেও
মোটামুটি। কারণ ঘরের কাজ করার পর
পড়ার সময় বেশি থাকত না।
.
.
~ কলেজের ভর্তি সময় চলে এল। বাবা ভর্তি
না হতে বলল। কিন্তু ভাইয়া ভর্তি করিয়ে
দিল।
.
.
~ কলেজের প্রথম থেকে আমি খুব চুপচাপ
ছিলাম কারো সাথে তেমন কথা বলতাম
না। তাই ক্লাসের সবার চোখে ভাল হয়ে
গেলাম। এই ভাল হওয়াটা যে আমার কাল
হয়ে দাঁড়াবে আমি বাবতে পারি নাই।
.
.
~ আমার ভাল হওয়া সবাই স্বাভাবিকভাবে
নিলেও একজন তা নিতে পারে নাই। সে হল
আমার ক্লাসের সবচেয়ে সুন্দরী ও
অহংকারি মেয়ে অরণি। বড়লোকের মেয়ে
তাই টাকা দিয়ে সবাইকে কিনে নিতে
চায়। আমাকে সে তার কথামত চলতে বলে
আমি না করে দিই। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে
ওঠে। সবার সামন না করে দেওয়ায় সে
প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে ওঠে।
.
.
~ কিছুদিন ধরে দেখতেছি অরণি আমার
পিছু
পিছু ঘুরতেছে। আমি বিষয়টা খেয়াল
করলাম। তারপর তাকে পিছনে ঘুরার কারণ
জানতে চাইলাম। অরণি বলল সে নাকি
আমার বন্ধু হবে আমি না করে দিলাম।
তারপর সে প্রতিদিন আমাকে ফলো করত
আর অনেক অনুরোধ করতে লাগল। তারপর
আমি তার অনুরোধ রাখলাম। তাকে আমি
আমার বন্ধু করে নিলাম।
.
.
~ এরপর থেকে আমাদের বন্ধুত্ব ভালোভাবে
চলতে লাগল। আমার প্রতি অরণির কেয়ার,
শাষণ, আবেগ বাড়তে লাগল। আমিও তা
উপভোগ করতে লাগলাম। আস্তে আস্তে
আমি আরণির উপর দূর্বল হয়ে পড়ি কিন্তু তা
প্রকাশ করি না।
.
.
~ একদিন অরনি নিজে এসে আমাকে তার
ভালবাসার কথা বলে। আমি না করে দিই
কারণ আমি জানি তারা খুব বড়লোক কিন্তু
অরনির জেদের কাচে আমাকে হার মানতে
হয় আমিও তাকে বলে দিই আমার
ভালবাসার কথা। অবশেষে আমাদের
ভালবাসার রেলগাড়িটা ভালোভাবে
চলতে লাগল।
.
.
~ অরনির সাথে আমার মোবাইলে কথা কম
হত। আমাদের চিঠিতে কথা হত। আমি রাত
জেগে তাকে অনেক চিঠি দিতে লাগলাম
সেও আমাকে চিঠি দিতে লাগল।
.
.
~ একদিন হঠাং অরনি বলল সে নাকি
আমাকে বিশাল সারপ্রাইজ দিবে যা আমি
কল্পনাও করতে পারব না।
.
.
~ যথারিতি ঔই দিন আমি কলেজে যাই।
সবাই কেমন করে যেন আমার দিকে
তাকাতে লাগল আমি ব্যাপারটা বুঝতে
পারি নাই। ক্লাসে যাওয়ার কিচুক্ষন পর
কলেজের অধ্যক্ষ স্যার তার রুমে ডেকে
পাঠায়।
.
.
~ আমি রুমে গিয়ে দেখি অরনি আর ওর
বাবা রুমে বসে আচে। আমি যাওয়ার পর
অরনি বলতে লাগল আমি নাকি ওকে অনেক
দিন ধরে জ্বালায়তেচি। ওকে নাকি
প্রতেকদিন ইভটিজিং করি ও প্রমাণ সরূপ
আমার দেওয়া প্রেমপত্রগুলা স্যারকে
দেখায় তখন স্যার সত্যি সত্যি বিশ্বাস
করতে লাগল আমি তাকে বিরক্ত করি
.
.
~ তারপর স্যার আমার বাবাকে আসতে বলে
আমি অনেক অনুরোধ করতে থাকি যেন
বাবাকে আসতে না হয়। আমি স্যারের
পায়ে পড়লাম কিন্তু স্যার আমার কোন
কাথা শুনে নি বাবাকে কল করে আসতে
বলে।
.
.
~ আমি অরনির পায়ে পড়ি যাতে ও ওর
অভিযোগ পিরিয়ে নেয় কিন্তু ও হাসতে
থাকে।
.
.
~ বাবা কলেজে আসে সব কথা শুনে। স্যার
অনেক কথা বলে। এও বলে দেয় আমাকে যেন
ঔই কলেজ থেকে নিয়ে যায়। বাবা আমাকে
নিয়ে স্যারের রুম থেকে বেরিয়ে আসে।
আসার সময় অরনি আমাকে বলে
প্রতিশোধটা কেমন নিলাম। আমি কিচু না
বলে তার দিকে করূন দৃষ্টিতে থাকি
কিচুক্ষন
.
.
~ অতপর বাড়িতে আসি বাবা আমাকে
একটা রুমে নিয়ে যায়। বাবা আমাকে হাত
পা দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। আমার মুখটা
কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে যাতে
আমি চিংকার করতে না পারি। তারপর শুরু
হল আমার উপর বাবার অমানষিক নির্যাতন।
আমি চিংকার করতে পারি নাই। আমার
মনে হতে লাগল প্রিতিটি মারের সাথে
আমার হৃদপিন্ডটা বন্ধ হয়ে যাচ্চিল। আমার
যতক্ষন জ্ঞান ছিল ততক্ষন বাবর মার সয্য
করতে চিলাম তারপর আমি জ্ঞান হারায়।
.
.
~ জ্ঞান আসার পর দেখি আমার সারা
শরিরে ব্যাথা আর সিগারেটের পুড়া দাগ
তারপর বুঝলাম শরিরে ছেঁকা দিয়েচে।আমি
বিছানা থেকে উঠতে পারচি না। সাত দিন
আমি বিচানায় চিলাম সাত দিন পর আমি
আস্তে আস্তে উঠতে লাগলাম। শরির দূর্বল
তারপরও বাহিরে যেতে লাগলাম
.
.
~ সাতদিন পর আমি কলেজে আসলাম কেমনকলেজে আসলাম কেমন
যেন লাগতেচে আমি ক্লাসে ঢুকলাম।
অরনির সামনে গেলাম আর তার কাচে
জানতে লাগলাম আমার অপরাধ কি।
.
.
~ তখন সে বলল ঐদিন আমি সবার সামনে
তাকে বন্ধু না সে এমন প্রতিশোধ নিলো।
তখন আমি বললাম আমাদের ভালবাসা।
তখন ও বলল তুমি বাবলা কেমনে তোমার মত
ছেলের সাথে আমি প্রেম করব সব আমার
অভিনয় চিল। আমি কিছু না বলে চলে
আসতে চিলাম তখনই স্যারের সামনে পড়ে
যায়। তখন স্যার যা নয় তা বলে অপমান
করতে থাকে। পরিশেষে স্যার বলল আমার
বাবা মা নাকি আমাকে ঠিক মত শিক্ষা
দেয় নাই দিলে আমি আর ক্লাসে আসতাম
না
.
.
~ তখন আমি স্যারকে বললাম আমি একটা
কথা বলে এই খান থেকে চলে যাব তখন
স্যার বলল বলতে। তখন আমি আমার গায়ের
শার্টটা খুলে পেলি আর তখন আমার শরিরে
বাবার দেওয়া সব আগাত দেখা যাইতে ছিল
মারের দাগ ছেঁকার দাগ। সবাই আমার
দিকে তাকিয়ে ছিল কেউ কিছু বলতে
পারেনি।
.
.
~ স্যার আমার মাথায় হাত রেখে বলল কে
মারচে এমন করে। আমি কিচু বলতে পারি
নাই। শুধু বললাম আমার নিয়তি।
.
.
~ আমি ঐখান থেকে চলে আসি। এখন আমি
রাস্তায় বসে আছি। বাড়ি যেতে হবে
অনেক রাত হয়ে গেছে। আজ ভাই বোন
বাড়িতে আসছে। সবাই খুব খুশি শুধু আমি
না।
.
.
~ বাড়িতে ডুকতে আপুর সাথে দেখা আপু
বলল কিরে এত রাতে কই ছিলি। আমি কিছু
বললাম না চলে যেতে লাগলাম। আপু আমার
হাত ধরে বলে মায়া কেমন আছিস। আমি
কিছু বললাম না শুধু আপুর দিকে তাকিয়ে
থাকলাম। কারন আপু আগে কখনও আমার
হাত ধরেনি আর নামও ধরে ডাকেনি।
.
.
~ আমি বললাম হতবাগার কপালে ভাল
থাকাটা লিখা নেই আপু। তুমি ঠিকই বলচ
আমার মত হতবাগার পৃথিবীতে আসা উচিত
হয় নাই। ঐই বলে আমি চলে আসলাম আসার
সময় দেখলাম আপুর চোখে পানি।
.
.
~ আমি রুমে চলে আসলাম তারপর দরজা বন্ধ
করলাম। দড়িটা ঠিকমত দেখে নিলাম
ঠিকমত আচে কিনা,ঠিক মতত বাঁধা হয়েছে
কিনা। একটু পরে আমি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ
করব সময়টাও ঠিক করে রেখেছি ১২.০১
মিনিটে। ১২.০১ মিনিটে ফাঁসি দেওয়ার
কারণ আমার মা মারা যায় ১২.০১ মিনিটে
আর আমার জম্ম সময় ও ১২.০১ মিনিটে। তাই
আজ আমার মৃত্যুর সময়ও ১২.০১ মিনিটে।
.
.
~ এখন সময় ১২.০১ মিনিট। আমার যাওয়ার
সময় হয়ে গেছে বিদায়।।।।।। বিদায় এই
নিষ্ঠুর পৃথিবী বিদায়।।।।
.
.
~ সকালে যখন দেখবে আমি দরজা
খুলতেছিনা তখন আমার দরজা ভাঙা হবে
ততক্ষণে আমি চলে যাব অনেক দূরে। ও হা
আমার টেবিলে একটি চিঠি লিখা আছে যা
আমি মৃত্যুর আগে লিখেছিলাম।
.
.
~~~~~ তাতে লিখা সবাই আমাকে মায়ের
মৃত্যুর জন্য দায়ি করে কিন্তু কেউ চিন্তা
করে নাই যে আমার মায়ের শেষ চিহ্ন
চিলাম আমি। তাই আমি মায়ের কাচে চলে
গেলাম। এখন সবাই সুখি হও...
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...