বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

টিপু সুলতান

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান zami (০ পয়েন্ট)

X মহীশুরের সিংহ, টিপু সুলতানের রকেট ক্ষেপণাস্ত্র পাল্টে দিয়েছিল পৃথিবীর ইতিহাস (২) ব্রিটিশ-মহীশুর যুদ্ধে টিপু সুলতানের রকেট বাহিনী ব্রিটিশদের সবচেয়ে বড় ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছিল। আকাশে নীলাভ আলোর ছটা দেখলেই ব্রিটিশরা বুঝতে পারত আসছে রকেটের ঝাঁক। আচমকা এগুলো আঘাত হানত ব্রিটিশদের ডেরায়, কখনো সামনে থেকে কখনো পেছন থেকে। রকেট এর সাথে সংযুক্ত বাঁশের ফলা ক্ষত বিক্ষত করে যেতো ব্রিটিশ সৈন্যদের। রকেটের আঘাতে মৃত্যুও ছিল খুব স্বাভাবিক ব্যাপার। তৃতীয় অ্যাংলো-মহীশুর যুদ্ধে রকেট হামলার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনার একটি ছিল কর্নেল নক্স এর উপর হামলা। ১৭৯২ সালের ছয় ফেব্রুয়ারি কর্নেল নক্স তার দলবল নিয়ে উত্তর থেকে কাবেরী নদীর দিকে এগোচ্ছিলেন। সেরিঙ্গাপটমের কাছে এসে তিনি রকেট হামলার শিকার হন। সেসময় টিপু সুলতানের রকেট-সৈনিকদের ১২০ জন এবং ১৩১ জন সদস্য সম্বলিত দুটি দল ছিল মাত্র। কিন্তু এ যুদ্ধের সময়ই রকেট সৈনিকদের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৫,০০০ জনে। সেসময় দুধরনের রকেট ছিল, কিছু রকেট শূন্যেই বিস্ফোরিত হতো। আর কিছু ছিল গ্রাউন্ড রকেট, যেগুলো একবার মাটিতে আঘাত করে আবার উপরে উঠে যেতো এভাবে সর্পিলাকার গতিতে এগোতে থাকত যতক্ষণ না এর শক্তি নিঃশেষ হয়। এ যুদ্ধের পরবর্তীতে টিপু সুলতান তার অসামান্য রণকুশলতার সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্তটি স্থাপন করেছিলেন, ইংরেজদের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের সাথে মিত্রতার হাত বাড়িয়ে। তার সমর্থনে ফ্রান্সের রিপাবলিকান অফিসাররা মিলে গঠন করেন জ্যাকোবিয়ান ক্লাব, মহীশুর। জানা যায় জ্যাকোবিয়ান ক্লাব যখন টিপু সুলতানের কাছে একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলো সেসময় গান স্যালুটের অংশ হিসেবে ওড়ানো হয় পাঁচশ রকেট। এ থেকে বোঝা যায় উৎসব উপলক্ষে রকেট ওড়ানোর প্রচলন ছিল মহীশুরেও। তবে চতুর্থ অ্যাংলো-মহীশুর যুদ্ধে এ সকল রকেট তার চূড়ান্ত বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে। এসময়ে ব্রিটিশ কর্নেল ওয়েলসলীও একবার রকেট হামলায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওয়েলসলী পরবর্তীতে ওয়াটারলু যুদ্ধের নায়ক ও লর্ড অফ ওয়েলিংটন হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। সেসময় সুলতানাপুত গ্রামের কাছে একটি উঁচু টিলা ছিল যার আড়াল নিয়ে রকেট-সৈনিকরা তাদের হামলা চালাত। তাদের শায়েস্তা করার জন্য কর্নেল ওয়েলসলীকে নিযুক্ত করা হয়। ১৭৯৯ সালের ৫ই এপ্রিল রাতের অন্ধকারে সেনাবাহিনী নিয়ে টিলার দিকে এগোতে শুরু করেন কর্নেল ওয়েলসলী। আচমকা রাতের আঁধারের বুক চিরে আকাশে দেখা দেয় নীলাভ আলো, চারদিক থেকে গর্জে উঠে মহীশুর বাহিনীর রকেট লঞ্চার ও বন্দুক। শক্ত প্রতিরোধের সামনে টিকতে পারেনি ব্রিটিশ সৈন্যদল। বিক্ষিপ্ত হয়ে যায় তারা, অনেকে সৈন্য হতাহত হয় এবং গ্রেফতারও হয় অনেকে। কর্নেল ওয়েলসলী বাধ্য হন পিছু হটতে। এ ঘটনা ওয়েলসলীর উপর অনেক প্রভাব বিস্তার করেছিল। পরবর্তী জীবনেও তিনি সেরিঙ্গাপটমের এ ঘটনার উল্লেখ করতেন বারবার। অ্যাংলো-মহীশুর গোটা যুদ্ধেই টিপুর রকেট বাহিনী জন্ম দিয়েছে এমন আরো অনেক বীরত্বগাঁথার। কিন্তু ভাগ্য সাথে না থাকায় এবং প্রতিবেশী রাজ্যের অসহযোগিতায় হারতে হয় সুলতানকে। ১৭৯৯ সালে তুরুখানাল্লির যুদ্ধে নিহত হন টিপু সুলতান। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি লড়ে গেছেন সত্যিকারের বীরের মতো। আত্মসমর্পণ না করে তিনি বেছে নিয়েছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদি মৃত্যুকেই। সার্থক করেছেন তার সেই বিখ্যাত উক্তিকে “শিয়ালের মতো শত বছর বেঁচে থাকার চেয়ে সিংহের ন্যায় একদিনের জীবন উত্তম” এ যুদ্ধে মহীশুরের হারের পর ব্রিটিশরা হাতে পেয়ে যায় প্রায় ৭০০ রকেট এবং ৯০০ রকেটের অভ্যন্তরীণ যন্ত্রাংশ। টিপুর এ রকেট নিয়ে ইংরেজদের কৌতূহলের অন্ত ছিল না। এ রকেটগুলোকে উইলিয়াম কনগ্রেভ ইংল্যান্ডে নিয়ে যান। রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিঙের মাধ্যমে এর কৌশল আয়ত্ত করে তারা। পরবর্তীতে আরো গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবন করেন কনগ্রেভ রকেট। যার উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে আজকের আধুনিকতম রকেট এবং কৃত্রিম উপগ্রহ নিক্ষেপণ ব্যবস্থা। টিপু সুলতানের কৌশল আয়ত্ত করে তৈরি করা এসব রকেট সর্বপ্রথম ব্যবহার করেছিল তার ফরাসি মিত্র নেপোলিয়নের বিরুদ্ধেই। একমাত্র মুসলিম বিদ্বেষের কারনে, ভারতবর্ষের উন্নত রকেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইউরোপ সমৃদ্ধ করেছে নিজেদের, অথচ খোদ ভারতেই এর অন্তত দেড়শ বছর পর পর্যন্ত রকেট-বিদ্যা আর আলোর মুখ দেখেনি।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩৭৭ জন


এ জাতীয় গল্প

→ টিপু সুলতান ১

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • M.H.H.RONI
    Golpobuzz ৪ বছর, ২ মাস পুর্বে
    ঠিক।।খুবই সুন্দর হয়েছে।