বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
বছর খানেক আগে ফেসবুকে তার সাথে আমার পরিচয় হয়।
মাইমুনা আরিয়ানা নাম ছিল। সে খুব ভালো গল্প লিখে।
সেই সুত্রেই আমি প্রথমে তাকে নক করি। তাকে বলি যে
"আমি আপনার লিখার বিরাট ভক্ত"। আসলেই ও খুব ভালো
লিখে। বাস্তবমুখী চিন্তাধারা নিয়ে তার সব লিখা
সাজানো।
..
এভাবে ধীরে ধীরে এটা-ওটা নিয়ে বেশ চ্যাটিং হত।
শুরুর কয়েকটা দিন ঘন্টাখানেক চ্যাটিং হলেও পরে
সারাটা দিন-রাত ওর কনভার্সেশনে চলে যেত। কি এমন
কথা হত বুঝতাম না তবুও সারাদিন এভাবেই পড়ে থাকতাম।
আমার বন্ধু-বান্ধবরা যখন জিজ্ঞেস করে আমি সারাদিন
কি এমন কথা বলি যে সিংহভাগ সময় ফেসবুকেই কাটাতে
হয়! প্রতিউত্তরে আমি বলতাম এইতো হাই হ্যালো কেমন
আছো এসব নিয়ে!
..
তারা এসব শুনে হাসতো। মনে হচ্ছিল আমি কোন
ইন্টারেস্টিং জোক্স বলছি। কিন্তু এরকমটা না। কয়েক
সেকেন্ড পর রিয়েলাইজ করলাম যে আগে যখন আমি
আমার বন্ধুদের বলতাম ওরা সারাদিন কি করে ফেসবুকে
তখন তারা বলতো হাই হ্যালো বাই বাই করি। এসব শুনে যে
কেউ তাদেরকে পাগল বলে আখ্যায়িত করবে। আমিও তার
ব্যতিক্রম ছিলাম না। তাদেরকে বকা-ঝকা দিয়ে বলতাম
এটা কোন কথা হল! এই কয়েকটা ওয়ার্ড আদান-প্রদান
করতে এতটা সময় নিতে হয়! ওরা কিছু বলতো না শুধু বলতো
সময় হলে বুঝবি বাছা!
..
ঠিক-ই আজ বুঝতে পারছি এই কয়েকটা ওয়ার্ড শুধু ওয়ার্ড
না, অনেক কিছুর ব্যাখা।
..
এভাবে চলতে চলতে আমরা অনেকটা ক্লোজ হয়ে
গেলাম। সে আমার থেকে চার-পাঁচ বছরের ছোট ছিল।
আমি যখন অনার্স শেষ বর্ষে ছিলাম সে তখন মাত্র
অনার্সে এডমিট হয়েছিল। ওর বাসাটাও আমার শহরে
ছিল না, অনেক দূরে ছিল। তাই দেখা-সাক্ষাত আর হয়নি।
..
বন্ধু হিসেবে একদিন আমি ওর ফোন নাম্বার খুজেছিলাম।
সে দিয়েছিল কিন্তু কথা বলতে পারবে না বলেছে।
কারনটা হল ওর মা ওর সাথে ঘুমান। আমিও বিষয়টাকে
সহজে মেনে নিয়েছি।
..
একটা সময় চলে আসলো যে আমি ওকে ছাড়া একমুহুর্তও
থাকতে পারিনা। খেতে বসলে মনে হয় ও আমার পাশের
চেয়ারে বসে আছে আর আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি
হাসছে। ঘুমোনোর সময় যখন এপিট থেকে ওপিট ঘুরি, তখন
তাকে আমার বেডে দেখি। আমি ধ্যাব ধ্যাব করে ওর
দিকে তাকিয়ে থাকি আর সে আমার চুল বুলিয়ে দেয়।
..
আমি ওর ভালোবাসায় এতটাই অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম যে
ওকে ছাড়া আমার জীবনে ঘটে যাওয়া পরবর্তী সময়গুলো
থাকা অসম্ভব ছিল। খাদ্য ছাড়া সাত দিন থাকা যায়।
পানি ছাড়া তিন দিন আর হাওয়া বাতাস ছাড়া একদিন
থাকা যায়। কিন্তু ওকে ছাড়া আমার একটা সেকেন্ডও
যায় না। মনে হয় যেন নষ্ট ঘড়ির কাটার মত আমিও
কোনখানে আটঁকে গিয়েছি।
..
অনেকদিন কেটে গেল এক অজ্ঞাত মানবীর সাথে কথা
বলতে বলতে। এখন চাই ওর ছবি। চাই ওকে আমার তৃষ্ণার্ত
চোখ দিয়ে দেখতে। তাই একদিন কথা বলার ফাঁকে আমি
ওর ছবি চেয়ে নিলাম। ও দিতে রাজি হল। ছবি আসার
আগে আমি ভাবছিলাম ও দেখতে কেমন হবে! চাঁদের মত
সুন্দর হবে তো! বা ডানা-কাটা পরীর মত অপ্সরী থাকবে
তো! নাকি কালো থাকবে! যদি চেহারাটা পছন্দ না হয়
তাহলে!! সব ভাবনাগুলো যেন একত্রে হাবু-ডুবু খাচ্ছে।
তারপর ওর ছবি দেখলাম। যেমনটা আশা করেছিলাম
তেমনটা হয় নি। অর্থাৎ আশার চেয়েও বেশি পেয়েছি।
..
তার চোখদুটো এমন ছিল যেন ওর চোখের দিকে তাকিয়ে
আমি পুরো পৃথিবী দেখতে পারি। আমার চোখে যদি
কাপড়ও বাধা হয় তবুও আমি ওর চোখ দিয়ে দেখতে
পারবো। ওর সুদীর্ঘ চুলগুলো পিছন থেকে সামনে রেখে
হাত দিয়ে ধরে রাখাটা আমার মনের মধ্যে গেঁথে
গিয়েছে। সে অনেক দূরে তবুও ওর চুলের ঘ্রান যেন আমায়
অনেক কাছে থেকে টানছে। যেন মনে হচ্ছে বর্ষাকালের
বৃষ্টির পর প্রকৃতি যেমনটা আলাদা একটা ঘ্রান নিয়ে
চারিদিক মুগ্ধ করে রাখে সেরকম। আর হাসি!! ওর হাসিটা
বোধহয় ছিল দ্বিতীয় সেই কাজ যেটা ঠোঁট দিয়ে করা
যায়। আমার রুক্ষমূর্তি প্রানটাও ওর তিলে-মাখা ঠোঁটের
হাসি দেখে গলে যায়। সর্বোপরি আমার মনিকোঠায়
যাকে স্বপ্নে এঁকে রেখেছিলাম তার-ই মত হুবহু হয়েছে।
নিজের ওপর নিজেই প্রশংসিত হচ্ছিলাম এরকম একটা
মেয়েকে পছন্দ করে।
..
অনেকদিন ধরে একটা সময় খুজছিলাম ওকে প্রপোজ
করবো বলে। কিন্তু হাতের নাগালে এরকম সময় মোটেও
পাচ্ছিলাম না। কয়েকটা দিন-ই তো গেল। কিন্তু এমন
তাড়া-হুড়ো লেগে গিয়েছে যে প্রপোজের লগ্ন পেরিয়ে
গেলে আর ওকে পাবো না।
..
কিন্তু খারাপ ভাগ্যদোষ আর কতদিন কপালে চাপড়াবে!
একদিন না একদিন তো এই ব্যথা সারবে। আর সেই ব্যথা
সারার সময়টা চলে এল। আগামীকালকে মাইমুনার
জন্মদিন। এই দিনে সে পৃথিবীতে এসেছে। দুনিয়ার আলো
দেখেছে। তাই ভাবলাম কেননা এই দিনেই তাকে আরো
আলোকিত করে দিই! কেমন হবে! শুধু পজেটিভ দিক-ই
ভাবছিলাম। নেগেটিভের এক লেশ পরিমানও এত বড়
মাথায় আসছে না। কনফিডেন্স বোধহয় এতটাই মজবুত
যতটা নেগেটিভ চিন্তা-ভাবনা দূরে রাখতে সক্ষম।
..
আমি ওকে মেসেজ দিয়ে বললাম কালকে তো তোমার
জন্মদিন, তোমার সাথে একটু কথা বলার সুযোগ পাবো কি!
সে অনেক্ষন বাদে রিপ্লাই দিল "ঠিক আছে"। তখন আমার
খুশিটা কে দেখে! আম্মু আমার পাশে ছিলেন। উনি
খেয়াল করছেন আমি মুচকি হাসছি। উনি জিজ্ঞেস
করলেন এরকম হাসছি কেন! আমি কিছু বললাম না। আম্মু
আমার দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন। আমি সেটা
খেয়াল করছি কিন্তু কোন রিসপন্স করছিনা। সন্দেহের যত
বড় তীরের আঘাত পাই না কেন, আজকে যে খুশির
কারনটা পেয়েছি সেটা অন্যসব কারনের কাছে তুচ্ছ।
..
এগারোটা বেজে ঊনষাট মিনিট, আমি মাইমুনাকে কল
দিলাম। সঙ্গে সঙ্গে রিসিভ করলো। শুরুতে পাঁচ সেকেন্ড
আমি চুপ থাকি। সেও চুপ থাকে। তারপর নিরবতা ভেঙে
বললাম হ্যাপি বার্থডে টু ইউ। সে তখনও চুপ। কিছুই বলছে
না। আমি ওকে আবার বললাম হ্যাপি বার্থডে। বরাবরের
মত সে চুপ থাকলো। আমি কিছুই বুঝলাম না তার মনে কি
চলছে! প্রপোজ তো করিনি যে হ্যা বা না এর জালের
মধ্যে ফেঁসে যাবে!
সে লাইন কেটে দিল।
..
সম্ভবত আধ-ঘন্টার পর মেসেজ দিল ধন্যবাদ তোমাকে।
জবাবে আমি তাকে বললাম তুমি কোন কথা বললে না
কেন! আজ কি তোমার জন্মদিন নয়? সে তখন বললো আম্মু
হঠাৎ চলে আসছিলেন তাই কথা বলতে পারিনি। এটা
শুনার পর আমি স্বস্তিকর একটা নিশ্বাস ফেললাম।
এতক্ষন ধরে শুধু ভাবছিলাম সে কি রাগ করেছে কল
দেওয়ার জন্য! নাকি আমার গলার স্বর মোটা থাকায়
কথাগুলো কর্কশভাবে শুনতে পেল! নাকি অন্য কিছু!
যাক এখন তো বুঝলাম এসব কিছুইনা।
..
সেই রাতে আস্তে আস্তে কথার চলে-বলে ওকে মনের
কথাটা বলে ফেললাম। এতদিন ধরে একটা বিষ বুকের
মধ্যে পুষে রেখেছিলাম। আজ সব ছেড়ে দিলাম। দেখি
বিষ মধু হয় কি না?
..
হ্যা, শেষে বিষটা মধু হল। অনেক ধমক-হুমকি শুনে এক্সেপ্ট
করলো। ও বলে আমি এত লেইট করলাম কেন এটা বলতে! ও
নাকি অনেক আগ থেকেই এটা শুনার জন্য হু-হতাশায়
কাটাচ্ছিল।
..
সব মেয়েরাই প্রথমে প্রথমে এমন একটা ভাব মুখে আনে
যে তারা কিছুই বুঝে না এসব প্রপোজালের। শেষে ঠিক-ই
বলে আমি তোমাকে অনেক আগে ভালোবেসেছি কিন্তু
তোমার মুখ থেকে শুনার অপেক্ষা করছিলাম। জানিনা
ওর মধ্যে কোন ধরনের শয়তানি ঘুরপাক খাচ্ছিল তবুও এতে
আমি মাত্রার অধিকতর খুশি হয়েছি।
..
এর পরে যা সব ঘটলো সব মনে হল স্বপ্ন। সকালটা আগের
অন্যসব সকালের মত হয় না, মিষ্টি মধুর এক ঝাঁক
রোদ্দরের আলোতে সকালের আবির্ভাব হয় যখন ঘুম থেকে
উঠেই দেখি মাইমুনার গুড মর্নিং মেসেজ। সে সময় মনে হয়
সে আমার দুনিয়া আর পুরো দুনিয়াটা আমার। সকাল
বিকাল রাত সব সময় ওর শাষনে চলতাম। কিছু একটা ভুল
করলে এমন ধমক দিত যে আমার দাদীর আম্মুর দাদীর নাম
মনে পড়তো। বিয়ের বয়সও হয়ে গিয়েছে তবুও ওর
আদরার্থক আচরনের কাছে আমি নিতান্ত একটা বাচ্চা
ছিলাম।
..
বিয়ের বয়সের কথা ভাবতে সময় হঠাৎ মাথায় আসলো
কেননা ওকে কিছুদিনের মধ্যে বিয়ে করে ফেলি। আমি
তো তাকে ভালোবাসি আর সেও আমাকে। আশা করি
ফ্যামিলি থেকে কারোর কোন প্রব্লেম হবে না। যেহেতু
আম্মু অনেকদিন ধরে আমার বিয়ের শানাই বাজানোর
জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন সেহেতু উনাকে গোটা
বিষয়টা আগে খুলে বলি।
..
যেটা ভেবেছিলাম সেটাই হল। আম্মু রাজি হয়েছেন।
উনাকে মেয়ের ছবি দেখিয়েছি। উনি দেখার সাথেই
সাথেই আমার গাল টেনে বললেন আমার ছেলের পছন্দের
গুণ আছে দেখছি। আমি সামান্য লজ্জায় মুখ নিচু করলাম।
..
নিজের রুমে এসে আমি ওকে মেসেজ দিয়ে ঘটনাটা
বললাম। সে কেমন জানি একটা ভাব ধরলো। পরে বললো
তুমি আগে এসে আমার আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলো।
উনারা যদি রাজি হয় তাহলে ঠিক আছে। আর না হলে
তো,,,,,,,
..
আমি তাকে হাসিমুখে বললাম ওসব নিয়ে তুমি একদম
চিন্তা করো না। আমি ওদের ঠিক মানিয়ে নিবো।
..
এক সপ্তাহ পর আমি ওর বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে
রওনা দিলাম। সে তার বাসার ঠিকানা আমাকে
দিয়েছে। আমি যথারীতি তার বাসায় গিয়ে পৌছলাম।
আমার মন সেই কবে থেকে উত্তাল করে দিচ্ছিল ওকে
সামনা-সামনি দেখতে। এখন বাসায় চলে আসছি তবুও যেন
অপেক্ষায় অবসান হচ্ছে না।
..
সোফার রুমে গিয়ে বসলাম। খেয়াল করলাম কয়েকটা
বাচ্চা ছেলে-মেয়েরা পাশের রুম থেকে উঁকি দিয়ে
আমাকে দেখছে। আমি হাসলাম। এর আগে অনেক
দেখেছি কোন বাড়িতে নতুন কোন অতিতি আসলে
বাচ্চারা একটু আগ্রহ নিয়ে তাদেরকে দেখে। কি জন্য
দেখে তা আজও বুঝে উঠতে পারিনাই। আর ওরা যে
আমাকে দেখছে আমার মনে হচ্ছে মাইমুনা বোধহয়
ওদেরকে পাঠিয়েছে আমাকে দেখে আসার জন্য।
বিষয়টা ভাবতেই কেমন আনন্দময় অনুভব করলাম।
..
বাড়িটা বেশ বড়। তার চেয়েও বড় তাদের মন। আমার যত্ন-
আত্মিতে কোন কমতি ছিল না। মনে হচ্ছে পাকা কথা
বলার আগেই আমি তাদের বাড়ির জ্বামাই হয়ে গেছি।
..
ওর আব্বু আম্মু এসে আমার বায়োডাটা জানতে চাইলো।
স্বাভাবিকভাবে যে কোন বাবা-মাই ওদের মেয়েকে
কারোর হাতে তুলে দেওয়ার আগে গোয়েন্দার মত
প্রশ্নমালা প্রস্তুত করে থাকেন। আমার ক্ষেত্রেও তার
কোন ব্যতিক্রম হয়নি।
..
নিজের প্রশংসা তো আর নিজে করা যায় না তবুও এটা
জোর গলায় বলতে পারি আমি ২৪ ক্যারেটের খাঁটি
সোনা। আমার মধ্যে এমন কোন বাজে অভ্যাস নেই যে
ওরা রাজি না হওয়ার কোন কারন দেখাবে।
..
অত:পর শেষে তারা আমায় গ্রহন করলো। মেয়েকে আমার
সামনে আনার জন্য ডাকা হল। আমার তখন বুকে ধুক-ধুকানি
হচ্ছিল। আমি মাইমুনাকে আগে দেখেছি ও ভিষন সুন্দরী
কিন্তু এখন কেন যে অদ্ভুত একটা ভয় মাথায় চড়কিপাক
খাচ্ছে বুঝতে পারছি না।
..
আস্তে আস্তে পাশের রুমের পর্দার আড়াল সরিয়ে
মাইমুনা আমার চোখের সামনে আসলো। ছবিতে যেরকম
তারচেয়েও বেশি সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে। আমি ওকে
দেখতে দেখতে উঠে দাড়ালাম। আমার চোখ শুধু ওর
দিকেই তাকিয়ে আছে। আমি আর সে বাদে পুরো
পৃথিবীটা যেন থমকে গেছে। সব কিছু কেমন জানি স্লো-
মুডে চলছিল। তার আর আমার দুরুত্ব প্রায় বিশ ফিট হবে
তবুও ওর নিশ্বাস যেন আমার ঘাড় থেকে শুনা যাচ্ছে। সে
মাথাটা তুলে হাসলো। ব্যস! আমি তো প্রায় মারা
গেলাম। এরকম হাসিতে তো আমি মরুভুমিতে পানি
ছাড়াও বাকি জীবন চালিয়ে যেত পারবো। এককথায়
মনোমুগ্ধকর এক রমনী সে।
..
কিছুক্ষন সে তার চেহারা দর্শন করিয়ে আবার পর্দার
ভিড়ে চলে গেল আর আমার মনটায় ঝড়-সুনামি তুলে গেল।
..
এতক্ষন ফ্লাসব্যাকে ছিলাম। এখন কারেন্ট সিচুয়েশন
নিয়ে বলবো।
..
আমার আর ওর একান্ত কথা বলার জন্য আলাদা একটা রুম
দেওয়া হল। আমি সেখানে গিয়ে তাকে বসা দেখতে
পেলাম। আমার পা ঠক-ঠক করে কাঁপছে ঠিক মাঘ মাসের
শীতের মত। আমি ওর উল্টো পাশের সোফায় বসলাম।
আমি তার দিকে তাকাচ্ছি আর সেও। সিনটা বেশ
রোমাঞ্চকর।
..
কিভাবে কথা বলা শুরু করবো মাথায় আসছিলো না। তাই
গলা দিয়ে একটু হুম হুম করলাম। সে শুনেও না শুনার ভান
ধরলো। অবিরত ফোন টিপেই যাচ্ছে। কয়েক সেকেন্ড পর
আমার দিকে তাকালো। ওর ফোনটা ইশারায় দেখালো।
আমি বুঝতে পারলাম সে আমার ফোনের কথা বলছে।
আমি পকেট থেকে ফোন বের করলাম। স্ক্রিনে ওর
মেসেজ শো করছে "গলায় কি কাঁটা আটকে গেছে যে হুম
হুম করছো!"
..
মেসেজটা দেখে হাসলাম। আমি এখন ওর সামনে বসে
আছি আর সে ভার্চুয়ালে!!
আমি ওকে বললাম তুমি মেসেজ দিচ্ছো কেন! সরাসরি
কথা বলো...
সে আবার মেসেজ দিয়ে বললো সে কথা বলতে পারবে
না।
আমি আশ্চর্যদায়ক ভাবে ওর দিকে তাকালাম। ঘটনা কি
গুনাক্ষরেও বুঝতে পারছি না। আমি উঠে গিয়ে ওর পাশে
বসলাম। তাকে বললাম তুমি আমার ওপর রাগ করেছো
নাকি! সে মাথা নাড়িয়ে না বললো। আমি তাকে আবার
জিজ্ঞেস করলাম তাহলে কথা বলছো না কেন! জবাবে
সে এমনি ভংগি দেখালো। তার হাত ধরে বললাম কি
হয়েছে বলো আমাকে! আমাকে কি তোমার পছন্দ হয়নি..?
সে আরেকটা হাত আমার হাতের ওপর রেখে হ্যাসূচক
জবাব দিল।
আমি তাকে আবার বললাম তাহলে চুপ করে আছো কেন!
কথা বলো আমার সাথে!
..
এর পরে যা সব দেখলাম তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত
ছিলাম না। সে কথা বলতে পারে না। বোবার মত হাব-ভব
দেখালো। গলা থেকে চিকন স্বরের আওয়াজ বের হচ্ছিল।
কেমন জানি পুকুরে ডোবা পাঁতিহাসের মত আওয়াজ।
..
আমি ততক্ষনাৎ দাড়িয়ে পড়লাম। সে আস্তে আস্তে
আমার দিকে তাকিয়ে দাড়ালো। তার হাত আমার হাত
থেকে ছাড়িয়ে নিলাম। সে আমাকে গভীরভাবে দেখছে।
আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না আমার সাথে এটা কি
হল! যদি স্বপ্ন হত তাহলে ভালোই হত কিন্তু এ যে স্বপ্ন
নয়।
..
আমি ওর থেকে পিছু হটছি আর সে এগুচ্ছে। তাকে
থামাবো কিভাবে বুঝার কোন উপায় পাচ্ছিলাম না। সে
হাত মুখ ইশারা করে চিকন স্বরের আওয়াজ বের করে
বুঝাতে চাচ্ছে আমার কি হয়েছে!
আমার মুখ থেকে কোন কথা বের হচ্ছে না। ওর অবস্থা
দেখে আমিও কেমন বোবা হয়ে গেলাম। সে তড়িগড়ি
ফোন হাতে নিয়ে আমাকে মেসেজ দিল,
"আমি তোমার মত কথা বলতে পারিনা সেজন্য কি হাত
ছেড়ে দিয়েছো"!
আমার তখন নিশ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছে। বুকে অদ্ভুত
একটা ব্যথা অনুভব করছি। আমার ঠোট দুটো কাঁপছে। কিন্তু
কিছু বলতে পারছি না।
.
আমি ওর প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে বেরিয়ে গেলাম।
সারাটা রাস্তা আমার চোখে পানি ছিল। আমি কেমন
ভালোবাসায় নিজেকে জড়ালাম আন্দাজা লাগাতে
পারছি না।
..
সম্পর্কের সাড়ে আট মাস পর জানতে পারলাম আমি
যাকে ভালোবাসি সে কথা বলতে পারে না, বোবা।
এতদিন পর এরকম একটা সংবাদ জানা যে কারোর জন্য
কাল হয়ে দাড়াবে। আমার সাথেও এরকম হল। প্রতিবন্ধী
মেয়েকে ভালোবাসা আমার জন্য জায়েজ ছিল না।
কিন্তু জানার আগে এতটাই ভালোবেসেছিলাম যে এখন
জেনেও ছাড়তে পারছি না আবার ফেলতেও পারছিনা।
..
কথায় আছে হাতি কাঁদায় পড়লে ইঁদুরও লাথি মারে।
এখানে হাতি আমি আর ভাগ্য ইঁদুর। এখন বুঝুন আমি কি
করুণ অবস্থার সম্মুখীন হতে চলেছি।
..
কিন্তু এরকমটা তো হওয়ার কথা ছিল না। তাহলে কেন
এরকম হল! আগে যদি এই বিপদের কথা জানতাম তাহলে
মেয়েটাকে নক-ই করতাম না। কিন্তু কথায় আছে না, নরম
মাটিতে কচলাতে আরাম, এই আরামের সুযোগ আজ
পোহাতে হচ্ছি।
..
যাইহোক, এখন এসব ভেবে-চিন্তে লাভ নেই। ভুল যখন
করেই ফেলেছি তাহলে সেটা শুধরাতে হবে। নইলে আরো
ভুল বাড়বে। যদি এখনই সেটা সমাধান না করি তাহলে
একদিন না একদিন সেই ভুলের মধ্যেই চাপা পড়ে যাবো।
আর সেটা মারাত্বক বিপদ ডেকে আনবে।
..
মাঝরাতে বাসায় ফিরলাম। আম্মু দরজা খুলে দিলেন।
উনি বারবার জিজ্ঞেস করছেন বউমা দেখতে কেমন!
বিয়ের সব পাকা কথা সেরে আসছিস তো? কি রে কিছু
বলছিস না কেন!
..
কোন মুখে আমি কিভাবে বলবো যে মেয়েকে তুমি
তোমার বউমা বানাতে চাচ্ছো সে বউমা বোবা, কথা
বলতে পারে না, প্রতিবন্ধি মেয়ে সে!
..
আমি আম্মুর কোন কথার জবাব না দিয়ে নিজের রুমে চলে
গেলাম। ফোনে চার্জ ছিল না তাই চার্জে লাগিয়ে
সারাটা দিনের কথা ভাবছি। গতকাল রাতে আমি কি
খুশি ছিলাম আমার স্বপ্নের মানুষের সাথে শুভদৃষ্টি হবে,
আলিঙ্গন হবে, শ্রুতিমধুরতা কথা হবে!
কিন্তু কিছুই হল না। উল্টো সব স্বপ্ন বিপদ হয়ে দাড়ালো।
..
ফোন চার্জে রেখে অন করতেই মাইমুনার সাতাশটা কল
আর একশ চারটা মেসেজ স্ক্রিনে ভাসলো। এত কল আর
মেসেজের ঘোরে আমি আতঁকে গেলাম। এমনিতেই মন
খারাপ আর তারওপর ওর কল মেসেজ! বিরক্তিপ্রকাশক
একটা শব্দ মনে মনে বললাম। ফোন আবার অফ করে ঘুমিয়ে
পড়লাম।
..
ঘুম থেকে উঠে দেখি মাইমুনা আমার সামনে বসা। আমি
ভয়ে লাফ দিয়ে উঠলাম। সে এখানে কিভাবে এল! আর
বাসা চিনলো কিভাবে!
পাশে আম্মুকে দেখতে পাই। আম্মুকে বললাম সে এখানে
কিভাবে এল! আম্মু কিছু না বলেই অন্য রুমে চলে গেলেন।
আম্মুর মুখ দেখে বুঝা যাচ্ছিল উনি রাগ করেছেন। কিন্তু
কি করবো এখন! সব বিপদের ঝান্ডা তো এই মেয়েটা। এই
মেয়েটাই আম্মুর মন খারাপ করিয়েছে। প্রথমত আমাকে
ধোকা দিয়েছে আর এখন আম্মুকে কষ্ট দিচ্ছে।
..
বিছানা থেকে নেমে ওর হাত ধরে টেনে বাইরে বের করে
দিলাম। তাকে সতর্ক করে দিলাম আর যেন আমার আশে-
পাশে না থাকে আর আমাকে মুক্তি দেয়।
..
কিন্তু সে যায় নি। দরজায় অবিরত কড়াঘাত করছে। আমি
বিরক্ত হয়ে গেলাম। ইচ্ছে করছিল দরজা খুলে ওকে ঘরের
সামনের কুয়োতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিই। কিন্তু এসব
করার কোন খেয়াল মাথায় আনলাম না।
..
ফ্রেশ হয়ে ফোন হাতে নিলাম। দেখলাম সে মেসেজ
দিয়েছে। ফোনটা যেই ফেলতে যাবো তখন হঠাৎ মনে
একটু দয়া আসলো। কি মেসেজ দিয়েছে সেটা একবার
পড়ে নিই।
..
মেসেঞ্জারে ঢুকে ওর মেসেজ অপেন করলাম।
মেসেজটা ছিল এরকম;
"আমার জন্মের পর আমি এতটা অবাক হইনি যতটা অবাক
হয়েছেন আমার মা-বাবা। ডেলিভারীর পর আমি কান্না
করিনি তাই ডাক্তার প্রথমেই আমাকে মৃত ঘোষনা করে
দিল। আমার মা বাবা এতে ভেঙে পড়েন। তখন কার জানি
নজরে পড়লো আমি নাকি তাকাচ্ছি কিন্তু কোন শব্দ
করছি না। তারপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানা গেল
আমি নাকি বোবা সন্তান। এতে আমার বাবা মা কেউ
কারোর ওপর দোষারোপ করছেন না। কিন্তু সমাজের মানুষ
অনবরত কোঁচা দিতে লাগলো। আমি নাকি মরেও ভূত হয়ে
ফিরে এসেছি। তাই ছোটবেলা থেকেই পাড়ায় আমার
নাম পড়েছিল অলক্ষী।
সমাজের সাথে আস্তে আস্তে বড় হলাম। সবকিছু প্রায়
বদলে গেল কিন্তু কারোর অভিশাপ মোছে যায়নি।
আমাকে হেনস্তা করার কোন উপায় তারা বাঁচিয়ে
রাখেনি। তবুও আমি কিভাবে জানি বেঁচে আছি। হয়ত
মা-বাবার আশীর্বাদে।
স্কুল কলেজেও হয়ত আমার কোন দাম থাকতো না যদি না
আমি সব বছর ফার্স্টক্লাস পেতাম।
এভাবে আমি বড় হলাম। ফেসবুকে টুক-টাক লিখার
মাধ্যমেই তোমার সাথে আমার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে
আমি তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম কিন্তু
প্রকৃতির লীলাখেলায় আমি সেটা প্রকাশ করতে
পারিনি।
তারপর তুমি আমাকে ভালোবাসার জানান দিলে।
বিশ্বাস করো সেদিন আমি অনেক কষ্ট করেছিলাম শুধু মুখ
থেকে হ্যা শব্দটা বের করতে কিন্তু পারিনি।
আস্তে আস্তে আমাদের ভালোবাসা আরো গাঢ় হয়। আমি
মনে প্রানে মেনে নিয়েছিলাম যে তুমি আমাকে
নিরবতার সব বাধাকে অতিক্রম করাবে। তাই তোমাকে
বাসায় আনিয়েছি বিয়ের কথা বলতে।
কিন্তু শেষে তুমি আমার নিরবতাকেই ঢালস্বরূপ গলায়
বিঁধে দিলে।
বিশ্বাস করো শান আমি তোমার এরকম আচরন আশা
করিনি। আমি মানতেও পারছিলাম না তুমি পুরো দুনিয়ার
মত নিষ্টুর হবে! তাই এখানে তোমার কাছে ছুটে এলাম।
কিন্তু তুমি আবারও আমাকে ফিরিয়ে দিলে। তবুও তোমার
ওপর আমার কোন অভিযোগ নেই। আর অভিযোগ দিয়ে কি-
ই বা হবে! আমি কি আমার গলার আওয়াজ ফিরে পাবো!
নাহ! পাবো নাহ।
তারচেয়ে বরং আমি তোমার আশা পূরণ করি। তোমাকে
মুক্তি দিয়ে দিই।
আমি সবাইকে আগে থেকেই বলে দিবো আমার মৃত্যুতে
তোমার কোন দায় নেই। শুধু আমি চাই তুমি ভালো থেকো,
সুখে থেকো"।
..
____________ ইতি,
তোমার মাইমুনা।
..
মেসেজটা পড়ে আমার চোখ জলে ভরে গেল। বুঝতে
পারছি না আমার চোখ জলে ডুবছে নাকি অন্যকিছুতে।
নিজের ভুলের জন্য নিজেকে অনেকভাবে স্বান্ত্বনা
দিলাম।
..
যেই আমি বাইরে বের হবো তখন কুয়োতে কিছু পড়ার শব্দ
শুনতে পেলাম। আমি ভয় পেয়ে গেলাম মাইমুনা পড়ে গেল
না তো! সে মেসেজে লিখেই দিয়েছে সে মারা যাবে।
তার তো আবার কাজে কথায় মিল থাকে।
..
আমি তড়িগড়ি দরজা খুলে কুয়োর সামনে গেলাম। কিন্তু
বেশি দেরী করে ফেলেছি। সে লাফ দিয়ে দিয়েছে।
আমি চিৎকার করে ওকে ডাকছি মাইমুনা! মাইমুনা তুমি
ফিরে এসো। আমি তোমাকে বিয়ে করবো। সত্যি বলছি
আমি তোমাকে বিয়ে করবো। শুধু তুমি একটাবার ফিরে
এসো। একটিবার প্লিজ!!!
..
আমি চিৎকার করে কাঁদতে লাগলাম। আকাশ-পাতাল সব
এক করে দিচ্ছি ওকে ডাকতে ডাকতে। কিন্তু সে ফিরে
আসছে না।
..
আম্মু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন আর বলছেন কি
হয়েছে! এভাবে চেঁচাচ্ছিস কেন! আমি আম্মুকে বললাম
মাইমুনা কুয়োতে ঝাপ দিয়েছে আমার ওপর অভিমান
করে। তাকে বাঁচাও আম্মু তাকে বাঁচাও।
..
আম্মু ধমক দিয়ে বললেন কি আবোল-তাবোল বকছিস!
মাইমুনা এখানে কখন এল! আর কখন ঝাঁপ দিল!
আমি চোখ খুলে নিজেকে বিছানায় আবিষ্কার করলাম।
আমি কোন কুয়োর ধারে-কাছেই নেই। পাশে আম্মু বসে
আছেন। তারমানে আমি এতক্ষন স্বপ্ন দেখছিলাম!
..
সারাটা শরীর আমার ঘেমে গিয়েছে। এত ভয়ানক স্বপ্ন
আমি কোনদিনও দেখিনি। পুরো ঘটনাটা আমি আম্মুকে
খুলে বললাম। আম্মু আমার কথা শুনে একটুও বিচলিত হননি।
উল্টো বললেন, "তোর পছন্দে কোন ভুল নেই বাবা, বরং
ঠিক-ই আছে। মেয়েটা প্রতিবন্ধী বলতে নেই, আল্লাহ
ওকে আলাদাভাবে বানিয়েছেন। শুধু পার্থক্য হল আমরা
আর তার মধ্যে একটু ব্যবধান। তাই বলে কি আল্লাহর
অসামান্য সৃষ্টিকে তাচ্ছিল্য করবো! নাহ! সেটা মোটেও
হবে না"।
..
আমি আম্মুর কথা শুনে অবাক হলাম। আমার মধ্যে আর
কোন হিংসা জমে থাকলো না। আম্মু আবার বললেন,
"আগেই বলেছিলাম মেয়েটা এই বাড়ির বউ হবে তারমানে
হবেই। তুই ঝটপট রেডি হয়ে নে, আমি আজই তোদের বিয়ের
তারিখ ঠিক করে আসবো"।
..
ঘন্টাখানেকের মধ্যে আমি আর আম্মু মাইমুনার বাড়িতে
যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়লাম। আমি ভাবতে লাগলাম
সে বা তার আব্বু আম্মু যদি জিজ্ঞেস করেন কাল হঠাৎ
করে কাউকে না জানিয়ে চলে গেলাম কেন তাহলে কি
উত্তর দিবো!
আমি আম্মুর দিকে তাকালাম। আম্মুও আমার দিকে
তাকিয়ে হাসছেন। আমি চুপ থাকলাম। তারা যা-ই
জিজ্ঞাসা করুক না কেন আম্মু সব সামাল দিবেন। আমি
শুধু মাইমুনাকে সামলাবো।
..
ওর বাড়িতে পৌছার পর আম্মুকে বসার রুমে বসিয়ে আমি
মাইমুনার রুমে চলে গেলাম। গিয়ে দেখি সে জানালার
বাইরে আপন দৃষ্টিতে মনোরম দৃশ্য উপভোগ করছে আর
কাঁদছে। আমি আস্তে আস্তে ওর কাছে গিয়ে পিছন
থেকে জড়িয়ে ধরলাম। সে ভয়ে আঁতকে উঠে। মুহুর্তের
মধ্যেই সে নিজেকে ছাড়াবার চেষ্টা করে কিন্তু
আমাকে দেখার সাথে সাথেই মুর্তি হয়ে গেল। আমি ওর
চোখের দিকে তাকালাম। বোধহয় সারাটা কেঁদে কেঁদে
কাটিয়েছে। যে চোখে কাজলরেখা ছিল সেই চোখে
জলের পর্বতমালা। আমি ওর চোখের নিচ থেকে জল মুখে
ওর কপালে চুম্বনের দৃশ্য এঁকে দিলাম। সে ততক্ষনেও বুঝে
উঠতে পারেনি আমি কি করছি! আমি ওর আতংকিত
চেহারা দেখে অট্টহাসিতে ভেঙে পড়লাম।
..
তার রাগ অল্প অল্প কমেছে কিন্তু পুরোটা না। সে আমার
দিকে রাগান্বিত হয়ে তাকাচ্ছে। আমি একটু বুঝতে
পারলাম যে সে আমাকে জিজ্ঞেস করতে চাচ্ছে কাল
চলে গেলাম কেন আর মেসেজের উত্তর দিইনি কেন! আমি
ওর কপালে আরেকটা চুমু দিয়ে বললাম আজকে যেন
সারপ্রাইজ দিতে পারি সেজন্য। শুনার সাথে সাথে সে
আমাকে মারতে লাগলো। আমিও তার আলতো ঘুষিগুলো
উপভোগ করছি।
তার চেহারায় আজকে আমাকে পাওয়ার খুশির আমেজ
ফুটছে না, বরং দুনিয়াতে সে কোন কিছুর একা
মোকাবিলা করতে হবে না সেই জন্য খুশি হচ্ছে।
..
আম্মুর কথাই ঠিক। ও প্রতিবন্ধী না, আল্লাহর কুদরত। সে
আমার বিপদ হয়ে না, আমার বিপদ কাটানোর জন্যই
এসেছে।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
আজব মেয়ে (Dhruba)
User ৪ বছর, ৫ মাস পুর্বেRJ Raj
Golpobuzz ৬ বছর, ২ মাস পুর্বেইভা আহমেদ *আব্বুর রাজকন্যা *
User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বেDristi Afroz
User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বেSopno neel Risha
User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বেকষ্ট নামের বাঁগিচা [Rupchan]
Golpobuzz ৬ বছর, ২ মাস পুর্বেLamiya Akther
User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বেSopno neel Risha
User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বে