বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
“এই যে আসেন!” কঠিন অথচ কৌতুক মেশানো গলায় ডাক এলো পেছন থেকে।
ঘুরে তাকালাম, বিক্রেতা দুই হাতে কী সব একত্রে মাখাচ্ছেন আর হাঁক দিচ্ছেন, “এই যে আসেন, বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোঙ্গা ভইরা বাড়ি লিয়া যায়! ধনী-গরিব ছবায় খায়, মজা পাইয়া লিয়া যায়! দাদায় খায়, দাদি তৃপ্তি পায়!”
বুট, মুরগি, ডিম, কিমা, গিলা, কলিজা, মগজ, ঘি, চিড়াসহ অসংখ্য পদ দিয়ে তৈরি হয় ‘বড় বাপের পোলায় খায়’ নামের এই অদ্ভুত ইফতার আইটেম; তবে স্বাদের তুলনায় শখের ক্রেতাই বেশি।
সবচেয়ে বড় কথা, পুরনো ঢাকায় মুড়ি মাখানোকে ‘মুড়ি ভর্তা’ বলে আর তার বাণিজ্যিক, আধুনিক সংস্করণ হল এই ‘বড় বাপের পোলায় খায়’!
রমজান মাস এলেই চক বাজারে একদিন ঢুঁ দিতাম। মনে হত সব ইফতারি সামগ্রী কিনে ফেলি। কিন্তু তাই কি আর হয়? ঘুরে-ফিরে দেখা আর দু’একটা জিনিস কিনে নেয়া, দাম আর সামর্থ্য-এর পাল্লা সমান নয় বলে।
পুরনো ঢাকায় যাদের চিনি, বা যাদের আপ্যায়ন পেয়েছি, তাদের কাছে জেনেছি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা আসল রান্না আর ঐতিহ্যকে নষ্ট করে দিয়েছে। এর মধ্যেও টিকে আছে পুরনো আমানিয়া হোটেল, বোম্বে কনফেকশনারি, আনন্দ কনফেকশনারি, নূরানী কোল্ড ড্রিঙ্কস, নিয়াজের জিলাপি, শাহ্ সাহেব এর খাসির বিরিয়ানি (এটি খাওয়া হয়নি)। বাকিরা অনেকেই সময়, দাম আর মানের সাথে আপোষ করতে পারেননি বলে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। পুরনো ঢাকার আসল ইফতারি হলো বাখরখানি, চাপাতি, নান রুটি, কাকচা, কুলিচা, নানখাতাই, শিক কাবাব, সুতি কাবাব, হান্ডি কাবাব, মাছ ও মাংসের কোফতা, শামী ও টিকা কাবাব, শাহী পরাটা, শাহী হালিম, জিলাপি, বোগদাদী রুটি, শবরাতি রুটি, মোরগ কাবাব, দই বড়া, ফিরনি, ফালুদা, বাদামের শরবত ও নানারকম ফল।
পুনশ্চঃ পুরনো ঢাকায় দোকান দিলেই তা পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার হয়ে যায় না। মুরুব্বি গোছের একজন শিখিয়েছিলেন, “বাপজান, আতকা মানুছের পেট থিকা পড়লেই মানুছ হয় না রে!”
লেখক: লুব্ধক (১৯৮৮-১৯৯৪)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now