বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

লক্ষী ছেলে

"জীবনের গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Suborna Akhter Zhumur (০ পয়েন্ট)

X সকাল থেকেই নাজমা বেগমের শরীর ভীষন অসুস্থ লাগছে। আগে থেকেই শরীরে অসুখ লেগেই আছে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঘরের বাইরে যান না তিনি। রাস্তার ভিড়, ধুলোবালি, যানবাহনের প্যাঁ-পু শব্দ কিছুই সহ্য হয়না তার।ছোটবেলা থেকেই গাড়িতে উঠলেই কেন যেন মাথা ঘুরতো। বমির অভ্যাসও ছিল। হঠাৎ করেই ঘড়ির দিকে চোখ গেলো তার। বারোটা বেজে গেছে!! রান্নাঘরের দিকে র‍ওনা হলেন তিনি। বাসায় কেউ নেই। স্বামী সেই সকাল আটটায় অফিসে চলে গেছেন। তার চাকরি আর দুই বছর আছে। এমন কাজ পাগল! অবসরের পর কিভাবে তার দিন কাটবে কে জানে। ছোট ছেলে ইউনিভার্সিটিতে গেছে। সেই ভোর সাতটায়।প্রাইভেটে ভরতি হয়েছে। অনেক টাকার ব্যাপার - স্যাপার। ওর বাবা প্রথমে রাজিই ছিল না। এতো টাকার জোগাড় হবে কি করে ভেবে। এই নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে অনেক রাগারাগি, ঝগড়াঝাঁটি হয়েছিল। পরে বড় ছেলেই সমস্যাটা মিউচুয়াল করে। বড় ছেলে থাকে আমেরিকায়। সেখানেই পড়াশোনা করে, অনেক টাকা স্কলারশিপ পায়।সেই টাকা থেকেই নাকি সে তার ছোটভাইয়ের জন্য পাঠাবে। কি রান্না করবেন কিছুক্ষণ ভাবলেন তিনি। তারপর মসুরের ডাল ভেজালেন। হঠাৎ কলিংবেলের শব্দ শোনা গেল। বুয়া এসেছে। বুয়াকে বললেন, "শোনা, তরকারী কাটার দরকার নেই। শরীর ভালো লাগছেনা। শুধু ডিম আর ডাল রান্না করবো। তুমি কিছু পেয়াজ আর আলু কুচিয়ে রাখো"। বুয়াকে কি করতে হবে বুঝিয়ে দিয়ে তিনি সোফায় বসলেন। সব রেডি হলে রান্না বসিয়ে দেবেন। শীতটা একটু বেশিই লাগছে। কার্ডিগানটা বের করার জন্য আলমারির দিকে এগিয়ে গেলেন তিনি। অনেক পুরনো কার্ডিগান। বিয়ের পরে কেনা। এখন একটু ছোট হয় তবুও, পড়ে আরাম পান।হঠাৎ ছবির-Album এর দিকে চোখ পড়লো তার। কতো স্মৃতি জমে আছে ওখানে! এইতো বড় খোকা, যখন একমাস বয়স।ওর বাবার কোলে। আরেকটা ছবি তোলা হয়েছে যখন খোকা সাইকেল চালাচ্ছিল। খুব মা পাগল ছিল বড় ছেলেটা। নাজমা বেগম যেখানেই যেত আচল ধরে ধরে তার সংগে যেত। এক মুহূর্তও চোখের আড়াল হতে দিত না। এরপর একদিন ভালো পড়াশোনার জন্য বোর্ডিং স্কুলে চলে গেল। তারপর থেকেই বদলে গেল। এমন লাজুক হলো, কাছেই আর ঘেষে না। আগে সব কথা বলতো এখন কিছুই বলতে চায়না। বুয়ার কাটাকুটি করা শেষ। তিনি রান্নাঘরে গেলেন রান্না করতে। সব কাজ শেষ করে দুটো নাগাদ টিভির দেখতে বসলেন তিনি, স্বামী অফিস থেকে ফিরলে একসাথে খাবার খাবেন। আজ নাকি ভালোবাসা দিবস। টিভিতে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলছে। ছোট ছেলেটা যা পাগল হয়েছে! সকালে যাবার আগে গম্ভীর গলায় বললো, "মা,তোমাকে ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা। আমার ভালোবাসার মানুষ একমাত্র তুমি। তোমাকে ছাড়া আমি বাচবো না।" কাল খবরটা জানার পর থেকেই ছোট ছেলেটার মুখের হাসি যেন উধাও হয়ে গেছে। এতো হাসিখুশি ছেলেটা যেন পাথরে পরিনত হয়েছে। নাজমা বেগম বুঝতে পারেন ছেলেটার বুকের ভেতর পাহাড় সমান কষ্ট জমে আছে। তবুও আজকে ছোট ছেলেটার মুখে কথাগুলো শুনে নাজমা বেগমের সে কি হাসি! বড় ছেলেটা এমন করে বলে না কখনো। তবে ছেলে বড়টাই বেশি লক্ষী। ওর ভালোবাসা গোপন থাকে, প্রকাশ করতে পারেনা। বড় ছেলের ফোন করার সময় হয়ে গেছে। রোজ এই সময়ে ফোন করে। নাজমা বেগম ভাবছেন, সব শোনার পরে আজ কি বড় ছেলে তাকে মুখ ফুটে কিছু বলবে? ফোন বেজে উঠলো। নাজমা বেগম মনটাকে শক্ত করে নিলেন। সত্যিটা তাকে বলতেই হবে, আবেগপ্রবণ হলে চলবে না।ফোন রিসিভ করলেন তিনি। ছেলে বললো, "হ্যালো আম্মু, কেমন আছো তুমি? কাল ডাক্তার দেখিয়ে যে টেস্টগুলো করিয়েছো সেগুলোর সেগুলোর রেজাল্ট কি দিয়েছে?" নাজমা বেগম বললেন, "হ্যা, বাবা দিয়েছে। টেস্টগুলোর রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বলেছে আমার দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে।" কথাটা শুনে ছেলে নিশ্চুপ হয়ে গেল। ফোনের লাইনে কেমন কড়কড় শব্দ হতে থাকলো। নাজমা বেগম ব্যাকুল হয়ে বললেন, "হ্যালো, আমার কথা শুনতে পাচ্ছ বাবা?" ছেলের কন্ঠ ভেসে এল, "হ্যা আম্মু শুনছি( গলা ধরে এসেছে তার কান্নায়)। নাজমা বেগম বুঝতে পেরে বললেন, "বাবা-মা কি কারো চিরকাল বেচে থাকে খোকা? তুমি চিন্তা কোরোনা। মন দিয়ে পড়াশোনা করে যাও। আমি আছি। অত সহজে মরবো না।তোমার বিয়েটা দেখে যেতে চাই।" ততোক্ষণে পাগল ছেলেটার বুক কান্নার স্রোতে ভেসে যাচ্ছে। হাউমাউ করে কাঁদতে থাকে।আর বলতে থাকে," মা, আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি। তোমাকে ছেড়ে বাচবো না। আমাকে ফেলে যেওনা।" নাজমা বিজয়ীর হাসি হাসেন। চোখের কোণ বেয়ে অশ্রুও নেমে এলো তার।কারণ,আজ তার লাজুক ছেলে তাকে মুখ ফুটে বলেছে যে, সে তাকে ভালবাসে। মনকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে বললেন, "তোর বিল উঠছে তো। ফোন রেখে দে বাবা।" **"যায়না বলা কিছু কথা গোপন থেকে যায় থাকেনা কভু কোনো খাদ মায়ের মমতায় হয়নি কিছুই সৃষ্টি ধরায় মায়ের সমতুল্য মা নামের রত্নটি তাই সর্বদাই অমূল্য।"** SUBORNA AKHTER ZHUMUR


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৬২১ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • Suborna Akhter Zhumur
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    Thanks For Your Comment And Rating.

  • ******(:Cute Princess :)*******
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    অনেক ভাল হয়েছে আপ্পি

  • Suborna Akhter Zhumur
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    Thanks.

  • অনয়
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    nice

  • Suborna Akhter Zhumur
    User ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ।

  • তাহিয়া জান্নাত মীম
    Guest ৬ বছর, ১ মাস পুর্বে
    ভালো

  • Suborna Akhter Zhumur
    User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বে
    Thanks.

  • Rana
    User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বে
    nc

  • পাতালপুরীর রাক্ষস
    Guest ৬ বছর, ২ মাস পুর্বে
    Wc Robot

  • Suborna Akhter Zhumur
    User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বে
    Thanks.

  • পাতালপুরীর রাক্ষস
    Guest ৬ বছর, ২ মাস পুর্বে
    Very Nice Robot

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    Thanks.

  • AR
    Guest ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    Nice story ,apu.

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    Thanks for your compliment

  • md jahidul islam
    Guest ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    awesome story... তোমার গল্পটা অনেক সুন্দর হয়ছে। আরো কিছু গল্প লিখে পাঠিয়ে দিও।

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    Thanks.

  • সাইমন জাফরি
    Admin ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    খুব ভাল...

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    হ্যা, কেন?

  • সাদ আহমেদ
    Golpobuzz ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    গল্পটা কি আপনার নিজের লেখা??

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    পড়েছি আর আপনার কিছু বলার থাকলে বার্তায় বলুন। কারন, আমি চাইনা এইভাবে আমার পয়েন্ট বাড়ুক।

  • শাকিম ঊদ্দীন
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    আপনি আমার লেখা পড়েছেন নাকি?

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    আপনিও তো অনেক ভালোই লেখেন।

  • শাকিম ঊদ্দীন
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    আপনার গল্পগুলো যথেষ্ট ভালো। আপনার গল্পে সামাজিকতা ফুটে আসে। আমি আপনার গল্প পড়ি আর ভাবি, এমনটাও যদি লিখতে পারতাম...!

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমার গল্প হয়ত কারো তেমন পছন্দ হয়না তাই আমার গল্পগুলোতে তেমন বেশি কমেন্ট নেই।

  • শাকিম ঊদ্দীন
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    আছে হয়তো, কিন্তু চোখে পড়ে না। যাদের গল্প খুব ভালো হবে, টপ পজিশনে তাদের থাকা উচিৎ। তাহলেই আমরা ভালো লেখকের ভালো ভালো গল্পগুলো পড়তে পারবো। কিন্তু, পয়েন্টের লোভে পড়া লোভীদের জন্য জিজে'র যা অবস্থা....

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    আমার তো মনে হয় জিজেতে এর চেয়েও অনেক অনেক ভালো গল্প আছে।

  • শাকিম ঊদ্দীন
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদতো আপনার প্রাপ্য, আপু। আপনি আমাদের এতো ভালো ভালো গল্প উপহার দিচ্ছেন....

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    আপনাকেও ধন্যবাদ।

  • শাকিম ঊদ্দীন
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    সত্যিই অসাধারণ..

  • suborna akhter zhumur
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    ধন্যবাদ আপু।

  • Dristi Afroz
    User ৬ বছর, ৩ মাস পুর্বে
    অসাধারণ একটা গল্প...... খুব ভালো লাগলো...