বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা) - প্রথম পর্ব

"ইসলামিক" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান আরাফাত হোসেন (০ পয়েন্ট)

X খালিদ বিন ওলীদ - রাঃ পর্ব-১ ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দ, ৮ম হিজরি। আরব মরুর বুক চিরে মুসাফির চলেছেন একাকী। মক্কা ও মদীনার মধ্যবতী বিশাল মরু অঞ্চলটি খুবই ভয়ঙ্কর। যে কোন মুহূর্তে বিপদের সম্ভাবনা। একে তো মরুভূমির স্বাভাবিক রুক্ষতা তার উপর আবার লুটেরাদের কবলে পড়ে সর্বস্ব খোয়াবার আশঙ্কা। এ জন্য একাকী সফর করতে কেউ সাহস করত না। লোকেরা দল বেঁধে এ পথে যাতায়াত করত। কিন্তু এ মুসাফির কিছুটা ব্যতিক্রম। তিনি একাকী চলছেন উন্নত জাতের ক্ষিপ্ৰ গতির অশ্বগৃষ্ঠে। অশ্বের জিনের সাথে তার বর্মটি বাঁধা। কটিদেশে ঝুলানাে তরবারি, হাতে বর্শা । প্ৰাচীনকালে পুরুষেরা দৈহিক দিক দিয়ে উচু-লম্বা, প্রশস্ত বুক এবং ভারী শরীর বিশিষ্ট ছিল। এ নিঃসঙ্গ পুরুষ মুসাফিরও তাদের মতই। তবে তাঁর অশ্বগৃষ্ঠে বসার ভঙ্গিই বলছিল, তিনি একজন বীর যোদ্ধা। কোন সাধারণ ব্যক্তি নন। লুটেরার হামলা করতে পারে এমন কোন আশঙ্কাই তাঁর চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল না। তাঁর মধ্যে এতটুকু ভীতিও ছিল না যে, তাঁর ঘোড়াটি লুট হয়ে যেতে পারে আর তাঁকে পায়ে হেঁটেই অবশিষ্ট পথ অতিক্রম করতে হবে। তাঁর চেহারাতে একটি অস্বাভাবিক অবস্থা উঠানামা করছিল। তিনি ছিলেন চিন্তাযুক্ত। মনে হয়। অতীতের স্মৃতি আওড়িয়ে ফিরছিলেন অথবা কিছু স্মৃতি ভুলে যাবার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন। ইতোমধ্যে মুসাফির একটি পাহাড়ের পাদদেশে এসে পৌঁছান। তাঁকে বহনকারী অশ্বটি পাহাড় বেয়ে উপরে উঠতে থাকে। একটু অগ্রসর হয়ে আবার সমতল পথ শুরু হয়। এখানে এসে আরোহী আচমকা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরেন এবং ঘোড়া পশ্চাৎমুখী করেন। অশ্বগৃষ্ঠে বসেই তিনি পেছনে ফিরে তাকান। পেছনে ফেলে আসা মক্কা দেখাই ছিল তাঁর উদেশ্য। কিন্তু মক্কা দেখা যায় না। অনেক পূর্বেই দূরের মেঘের আড়ালে সে নিজেকে আড়াল করে ফেলেছিল । “আবু সুলাইমান। পেছনে ফিরো না। মক্কার কথা একদম ভুলে যাও। তুমিতো একজন বীর যোদ্ধা। নিজেকে দু’ভাগে কেটে ভাগ করে দিও না। তোমার সিদ্ধান্তের উপর অটল থাক। তোমার অভীষ্ট লক্ষ্য এখন মদীনা।” এ ধরনের আওয়াজ যেন তার কর্ণকুহরে ভেসে আসতে থাকে বারবার। তিনি মক্কার দিক থেকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে নেন। অশ্বকে মদীনামুখী করেন। যথা নিয়মে অশ্বের বাগে হালকা ঝাঁকি দেন। অশ্বটিও ট্রেনিংপ্ৰাপ্ত। প্রভুর ইশারা পাওয়া মাত্রই সে বিদ্যুৎগতিতে ছুটতে আরম্ভ করে। মুসাফিরের বয়স ৪৩। কিন্তু বয়সের তুলনায় তাকে বেশ যুবক দেখাচ্ছিল। তাঁর পুত্রের নাম “সুলায়মান, বাবার নাম “ওলীদ”। তবে খালিদ বিন ওলীদের চেয়ে “আবু সুলাইমান ডাকটা তার নিকট বেশী প্রিয় ছিল। তাঁর জানা ছিল না যে, ইতিহাস তাঁকে "খালিদ বিন ওলীদ' নামে মনে রাখবে এবং এই নামটি ইসলামের গৌরব গাঁথা অনুপ্রেরণার উৎসে রূপান্তরিত হবে। তখনো তিনি মুসলমান হননি। ইতোমধ্যে ছোট-খাটাে হামলাসহ উহুদ এবং খন্দকের দুটি বড় যুদ্ধে তিনি মুসলমানদের বিরুদ্ধে অন্ত্র ধারণ করেছেন। যুদ্ধ করেছেন বীরবিক্রমে। অপূর্ব রণকৌশলে। ৬১০ খ্রিষ্টাব্দে যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর সর্বপ্রথম ওহী নাযিল হয় তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২৪ বছর। দুরন্ত ডানপিটে এক যুবক। যৌবনের আভা সমগ্র দেহে প্ৰতিভাত। তখনই তিনি নিজ গোত্র বনু মাখযুমের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন। কুরাইশের অন্যান্য সম্রান্ত গোত্রসমূহের মধ্যে বনু মাখযুম অন্যতম ছিল। কুরাইশদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা এই গোত্রের উপরই ন্যস্ত ছিল। কুরাইশরা হযরত খালিদের পিতা ওলীদের কথা মেনে চলতো। ২৪ বছর বয়সেই খালিদ স্বীয় যোগ্যতা ও দক্ষতা বলে বাবার মত কুরাইশ জাতির শ্রদ্ধা ও আস্থা হাসিল করেন। কিন্তু এই বিরাট সামাজিক মর্যাদা ও সম্মানের প্রতি ক্ৰক্ষেপ না করে বরং তা চিরতরে বিসর্জন দিয়ে খালিদ আজ মদীনার পানে ছুটে চলছেন। দীর্ঘ পথ অতিক্রম কালে কখনাে তাঁর মনে হত, একটি অদৃশ্য শক্তি যেন পশ্চাৎ থেকে তাকে টেনে ধরছে। যখন এই শক্তির উপস্থিতি তাঁর অনুভূত হত তখন তিনি ঘাড় ফিরিয়ে পশ্চাতে তাকাতেন। কিন্তু তৎক্ষণাৎ যেন আরেকটি আওয়াজ তিনি শুনতে পেতেন, “খালিদ। পশ্চাতে নয়, সম্মুখে তাকাও । মনে রেখো, যদিও তুমি ওলীদের পুত্র কিন্তু এখন সে মৃত। এখন তুমি সুলাইমানের পিতা। আর সে বেঁচে আছে।” তার স্মৃতিতে দুটি নাম ভেসে উঠে। ১. মুহাম্মদ (স); যিনি এক নতুন মতাদর্শের সূচনা করেছেন। ২. ওলীদ; যে একদিকে তাঁর পিতা এবং অপরদিকে মুহাম্মদ (স) ও তাঁর নব আদর্শের কট্টর দুশমন ছিল। পিতা এই বৈরিতা খালিদের এর দায়িত্বে অর্পণ করে মারা যায়। খালিদের ঘোড়াটি দূরে পানির কূপ দেখে সেদিকে যেতে থাকে। তিনি ঘোড়ার গমন পথে দৃষ্টি দিয়ে জায়গাটি পর্যবেক্ষণ করেন। বৃত্তকায় একটি এলাকায় কিছু খেজুর গাছ আর বিক্ষিপ্ত কতক সরু কাণ্ড তাঁর নজরে পড়ে। সব মিলিয়ে এটি একটি ছোট ঝোপ ছিল ঘোড়ার গতি ছিল সেদিকেই। খৰ্জ্জুর বাগানে পৌঁছে খালিদ ঘোড়া থেকে নেমে মাথার পাগড়ী খুলে কুপের কাছে হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন। অঞ্জলি ভরে পানি মাথায় দেন। দু’চার ঝাপটা নাকে-মুখেও দেন। তৃষ্ণার্তা ঘোড়াটিও তৃপ্ত হয়ে পানি পান করে। খালিদ ও ঝর্ণা থেকে পানি পান করেন। তারপর অশ্বগৃষ্ঠ থেকে গদি নামিয়ে রাখেন। গদির সাথে বাঁধা ক্ষুদ্র কার্পেটটি খুলে একটি বড় বৃক্ষ তলে বিছিয়ে তার উপর শুয়ে পড়েন। তিনি ক্লান্ত শরীরে একটু ঘুমাতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু পারলেন না। অতীতের মুহূর্তগুলো একের পর এক তার স্মৃতিতে উপস্থিত হতে থাকে। কেবল চোেখই বন্ধ করে রইলেন। ঘুম এলোনা একটুও। সাত বছর পূর্বের একটি ঘটনা তাঁর স্মৃতির পটে ভেসে উঠে। তার গোত্রের লোকেরা মুহাম্মদ (স)-কে হত্যা করার নীলনক্সা এঁকেছিল। এ পরিকল্পনা প্রণয়নে অগ্রণী ভূমিকা তার পিতার। ৬২২ খিষ্টাব্দ এক গভীর রজনী। কুরাইশরা আল্লাহর রাসূল (স)-কে ঘুমন্ত আবস্থায় হত্যার জন্য কিছু লোক নিয়োগ করে। এ সময় তাঁর বয়স ২৭। তিনিও রাসূল হত্যার ষড়যন্ত্রে শরীক ছিলেন বটে কিন্তু হত্যাকারীদের মধ্যে ছিলেন না। সুদীর্ঘ সাত বছর পূর্বের বিগত রজনীটির কথা গতকালের রাতের ন্যায় তার মনে জেগে আছে। তিনি এ হত্যাকাণ্ডের প্রতি এক দিক থেকে সন্তষ্ট থাকলেও অপর দিক থেকে ছিলেন অত্যন্ত নাখোশ। সন্তষ্টির কারণ হচ্ছে তারই গোত্রের এক ব্যক্তি তাদের ধর্মবিশ্বাস, মূর্তিপূজাকে অসার আখ্যা দিয়ে নিজেকে আল্লাহর নবী বলে দাবী করে আরব সমাজের দুশমনে পরিণত হয়েছে। এরূপ দুশমনের হত্যায় কে না খুশী হয়? পক্ষান্তরে নাখোশের কারণ হলো, তিনি প্ৰকাশ্য ঘোষণা দিয়ে দুশমনকে সামনা-সামনি হত্যায় বিশ্বাসী ছিলেন। এভাবে গুপ্তহত্যা ছিল তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির সম্পূর্ণ বিরোধী। তবুও তিনি এর বিরোধিতা করলেন না। গুপ্ত হত্যাকারীরা যে রাতে রাসূল (স)-এর বাসভবনে হানা দেয়। সে রাতে তিনি সেখানে ছিলেন না। ছিল না ঘরের আসবাবপত্র কিছুই। কুরাইশ নেতৃবৃন্দ ঘাতকদের পাঠিয়ে এ আশায় গভীর ঘুমে হারিয়ে যায় যে, আগামীকাল ভোরের প্রথম শিরোনাম হবে মূর্তিপূজার সমালোচক ও নতুন ধর্মমতের প্রবর্তক নিহত। কিন্তু পরের ভোর তাদের জন্য কোন সুসংবাদ বয়ে আনল না। তিক্ত হলেও এক মহা দুঃসংবাদ তাদের হজম করতে হলো। হতাশা ছড়িয়ে পড়ে। সমগ্র মক্কায়, চরমভাবে ব্যর্থ হয় তাদের ভয়ানক ষড়যন্ত্র। পেছনের মানুষ তাদের ব্যৰ্থতার


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩৭৪ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • imran akbar
    Guest ৬ বছর, ৬ মাস পুর্বে
    thanks