বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ডায়রি

"রহস্য" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান arman hossain (০ পয়েন্ট)

X এলাকার অনেক মানুষ এসে জড়ো হয়েছে বাড়িটার সামনে। আজ বাড়িটা ভাঙ্গা হবে। একটা কনস্ট্রাকশন কোম্পানি বাড়িটা কিনে নিয়েছে। এটাকে ভেঙ্গে নতুন করে তৈরি করবে তারা। বাড়িটা রাস্তার পাশেই অবস্থিত। সেই হিসেবে খুব কম টাকায় বাড়িটা বিক্রি করেছে বাড়ির মালিক। শ্রমিকরা সবাই রেডি, ক্রেন চালকও রেডি। শুধু এখন কোম্পানি মালিকের আদেশের অপেক্ষায় আছে সবাই। কিন্তু মালিক এখনো আসেনি। সবাই অপেক্ষার প্রহর গুনছে। হঠাৎ মালিক এলো এবং খুব হন্তদন্ত হয়েই এলো। সবাই ভাবলো এই বুঝি কাজ শুরু করতে বললো। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই জায়গা ছেড়ে এখনি চলে যেতে বললো। এই কথা বলেই কোম্পানির মালিক রায়হান ছুটলো বাড়ির মালিক জগলু সাহেবের বাড়িতে। কি হলো হঠাৎ রায়হান সাহেবের? যে বাড়িতা হাতে পেয়ে রায়হান সাহেব আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছিল সেই বাড়ির কাজ আজ তিনি নিজ হাতে বন্ধ করে দিলেন। কিন্তু কেন? কিছুক্ষনের মধ্যেই রায়হান সাহেব জগলু সাহেবের বাড়ি পৌছে গেলেন। সোজা সিড়ি বেয়ে দোতলায় উঠে গেলেন। জগলু সাহেব তখন তার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। রায়হান সাহেবকে দেখেই বলে উঠলেন, জগলু: আরে রায়হান সাহেব কি খবর? বাড়ি কি ভাংগা শেষ। রায়হান: পরে বলবো। আগে বলুন এই বাড়িতে কোন রহস্য লুকিয়ে আছে? জগলু: রহ...স্য? কিসের রহস্য? রায়হান: বোকা বানানোর চেষ্টা করবেন না আমায়। আমি সব জেনে গিয়েছি। লুকানোর মত কিছুই নেই এখন আপনার। জগলু: আজেবাজে কথা বলবেন না। কি জানেন আপনি? রায়হান: কি জানি আমি? জানতে চান কি জানি? তাহলে শুনুন। আপনার কাছ থেকে বাড়ির কাগজ পত্র বুঝে পাওয়ার পর আমি তিনদিন আগে গিয়েছিলাম বাড়ির ভেতরে কিছু আছে কিনা দেখার জন্য। আপনার বাড়ির প্রতিটি রুম খুঁজে দেখলাম কিন্তু দুএকটা পুরোনো খবরের কাগজের পাতা ছাড়া আর কিছুই খুঁজে পেলাম না। তারপর আমি বাড়ি থেকে বের হচ্ছি হঠাৎ দেখলাম একটা রুমের দরজায় তালা লাগানো। আমি ভাবলাম এটার ভিতর আর কি থাকতে পারে? দরজা তালা মারা ছিল। কিন্তু একটু জোরে টান দিতেই ছিটকিনি সহ তালা আমার হাতে চলে আসলো। বুঝলাম ঘরটা অনেকদিন ধরে বন্ধ পড়ে আছে। আমি ঘরের ভিতরে ঢুকলাম। এটা নিশ্চই স্টোর রুম। অনেক জঞ্জাল পড়ে আছে ঘরে। ভাংগা টেবিল, ছাতা,সাইকেল আরো অনেক কিছু। কি মনে করে আমি টেবিলের ড্রয়ারটা খুললাম। দেখলাম একটা ডায়রি জাতীয় কিছু আছে তার ভিতরে। একেবারে ধুলোয় ভরা। হাত দিয়ে পরিষ্কার করে দেখলাম মলাটের উপর লেখা 'আমার পৃথিবী"। লেখা দেখে বোঝা যায় মেয়ের হাতের লেখা। আমি ঘর থেকে বের হলাম। শরীর পুরো ধুলোয় মাখামাখি। ডায়রিটা আরেকবার দেখলাম। পড়তে ইচ্ছে করলো। তাড়াতাড়ি বাসায় এসে গোসল করে ডাইরিটা খুলে বসলাম। এইযে ডাইরিটা সাথে নিয়ে এসেছি। আপনাকে পড়ে শোনাচ্ছি। জগলু: হুম শোনান। দেখি কি লেখা আছে তাতে? রায়হান: শুনুন তাহলে, তারিখ ১/০২/২০১৪ আমরা আমাদের নতুন বাড়িতে এসেছি। বাড়ির ভাড়া খুব কম। কিন্তু বিশাল বাড়ি। তাই বাবা বাড়িটা বাড়া নিলেন। বাড়িওয়ালা এখানে থাকেননা। এর আগে নাকি এখানে আরেক পরিবার থাকতো। তারা যাওয়ার পর বাড়ি খালি ছিল। আমরা এসে বাড়ি পরিস্কার করলাম। আমার নিজের জন্য একটা বড় ঘর দিয়েছে বাবা। ঘরটা খুব পছন্দ হয়েছে আমার। আমি আগে কখনো আমি ডাইরি লিখিনি। কিন্তু আজ থেকে লিখবো। ০২/০২/১৪ আজ সারাদিন অনেক কাজ করলাম। স্কুলে গিয়েছি। সেখান থেকে প্রাইভেটে তারপর বাসায় এসে আম্মুর কাজে সহযোগিতা করলাম। নতুন বাড়িতে আজকের দিনটা ভালই কেটেছে। তব গত রাতে একটা জিনিস খেয়াল করলাম। এই বাড়িতে অনেক ইদুর। মাঝ রাতে ঘু ভেংগে গেলে শুনলাম পাশের রুম থেকে খসখস শব্দ হচ্ছে। ইদুরের কান্ড নিশ্চই। তাছাড়া পাশের রুমটা বন্ধ। বাড়িওয়ালা ঔ রুম খুলতে বারন করেছে। তাই আমরা খুলিনি। ওখানে মনেহয় অনেক ইদুরের বাসা। আব্বুকে বললাম আজ বিষয়টা। আব্বু বলেছে কালকেই রুমটা খুলে পরিষ্কার করবে। তাহলে সব ইদুর পালাবে। ০৩/০২/১৪ উফ আজ বোরিং সময় পারলাম। স্কুল বন্ধ ছিল। আমার রুমের পাশের রুমটা আব্বু আজ খুললো। আশ্চর্য! রুমে কোন ময়লা নেই। একেবার পরিষ্কার ছিল। বাড়িওয়ালা কেন যে এই রুমটা খুলতে নিষেধ করেছে বুঝলাম না। ০৫/০২/১৪ একদিন পর ডাইরি লিখছি। গত পরশু অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে আমার সাথে। রাতে ঘুমিয়েছিলাম। হঠাৎ প্রচন্ড শব্দে ঘুম ভেংগে গেল আমার। কেমন যেন এক ধস্তাধস্তির মত শব্দ আসছে পাশের রুম থেকে। আমি একটু ভয় পেয়ে গেলাম। পাশের রুম থেকে শব্দ আসছে কেন? তাও এত জোরে? আমি আস্তে আস্তে আমার রুম থেকে বের হয়ে পাশের রুমের দরজায় কান পাতলাম। একটা মেয়ে আর একটা ছেলের কন্ঠ শোনা যাচ্ছে। মনে হয় জগড়া করছে। ভেবেই পেলাম না বাইরে থেকে আটকানো এই রুমে কে কথা বলছে। দেখার জন্য আস্তে করে দরজা খুলে ভিতরে তাকালাম। একটা ছেলে দড়ি বেঁধে ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে। আর নিচে একটা মেয়ে পড়ে আচ্ছে। রক্তে ভেজা সারা শরীর। রত্ত দেখে চিৎকার দিয়ে অচেতন হয়ে গেলাম মনে হয়। চোখ খুলে দেখি আমার বিছানায় শুয়ে আছি। মা পাশে বসে আছে। গত রাতের ঘটনা বললাম। মা বললো, ধূর পাগলি নিশ্চই স্বপ্ন দেখেছিস। তুই নিশ্চই মেঝেতে পিছলে পড়ে মাথায় আঘাত পেয়ে অচেতন হয়েছিলি। আমরা সকালে দেখি তুই মেঝেতে পড়ে আছিস। মার কথা শুনে অবাক হলাম। খুবই অবাক হলাম। আমি গিয়েছিলাম পাশের রুমে। তাহলে আমার রুমে কিভাবে এলাম? নাহ কিছুই বুঝলাম না। ০৭/০২/১৪ গত দুইদিন ঘুমাতে পারিনি। সারারাত শুধু পাশের রুমের সেই ধস্তাধস্তির শব্দ শুনেছি। এখনো ভয়ে আমার লোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। বাবা, মাকে বললাম এ কথা। তারা হেসেই উড়িয়ে দিল আমার কথা। আমি আর এই ঘরে থাকবো না। আব্বু বলেছে তারা এই রুমে থাকবে আর আমি অন্য আরেকটা রুমে। ১৭/০২/১৪ আমার বাবা মা মারা গেছে। তারা ৯ দিন আগে আমি যে রুমে থাকতাম সেখানে ঘুমাতে গেল। কারন আমি ভয় পেতাম সেখানে ঘুমাতে। পরদিন সকালে বাবা মার লাশ বের হয় সেই রুম থেকে। বাবা ফ্যানের সাথে ফাঁসি দিয়েছে আর মা সারা শরীরে রক্ত নিয়ে মেঝেতে পড়েছিল। ঠিক আমার দেখা পাশের রুমের সেই দৃশ্যের মত। আমায় এখন প্রতিদিন বাবা মা এসে ডাকে। তাদের সাথে যেতে বলে। আমিও আজ তাদের সাথে যাবো। রায়হান: শুনলেন জগলু সাহেব? ডাইরিতে যা লেখা আছে সব কি সত্য? জগলুgj বিষন্ন মনে) হ্যা সত্য। রায়হান: আসল ঘটনা বলুন। জগলু: আমার ওই বাড়িতে তিন বছর আগে এক নতুন দম্পতি ভাড়া নিয়েছিল। লাভ ম্যারেজ করেছিল তারা। কিছুদিন পর থেকেই তাদের মধ্যে কি নিয়ে যেন ঝগড়া হতো। আমি ভাড়া আনতে গেলেই প্রতিবেশিরা আমাকে বলতো এসব। আমি বলতাম স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতেই পারে। এ আর এমন কি? তার প্রায় তিন মাস পর একটা ফোন আসে আমার কাছে। ওই দম্পতি চারদিন হলো ঘর থেকে বের হয়না। আমি গেলাম সেখানে। দরজা ভাংগার পর এক বিদঘুটে দৃশ্য দেখলাম। ছেলেটা ফ্যানের সাথে ঝুলে আছে আর মেয়েটা মাটিতে পড়ে আছে। চারদিকে রক্ত লেগে আছে। পুলিশ এসে লাশ নিয়ে গেল। পরে জানলাম তাদের মধ্যে মেয়েটাকে খুন করে ছেলেটা। পরে নিজেও আত্মহত্যা করে। তারপর আরেক ভাড়াটিয়া আসে আসার তিনদিন পর তারা বাসা ছেড়ে চলে যায়। কারন তারা নাকি এখানে রাতে অনেক শব্দ শুনতে পায়। তার ছোট ছেলেটা নাকি একদিন দেখেছে দুইটা লাশ পড়ে আছে তাদের কিচেনের পাশের রুমে। যে রুমে ওই দম্পতি মারা গিয়েছিল। বুঝতে পারলাম নিশ্চই অস্বাভাবিক কিছু হচ্ছে। তাই হুজুর এনে বাড়িতা বন্ধ করলাম। তারপর অনেকদিন কেউ আসেনি। গত বছর আজিজ সাহেব তার পরিবার নিয়ে এই বাড়িতে উঠে। তাদের একটা মেয়ে ছিল যে এই ডায়রি টা লিখেছিল। বাকি কাহিনি তো আপনি নিজেই পড়লেন। রায়হান: মেয়েটাও কি.....? জগলু: হ্যা সেও মারা গেছে। আত্মহত্যা করেছিল মেয়েটা।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩৫৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ মায়ের ডায়রি
→ তোমার_ডায়রির_ভাঁজের_ধুলা #পর্ব_৩(Last part)
→ তোমার_ডায়রির_ভাঁজের_ধুলা পর্ব_০২
→ #তোমার ডায়রির ভাঁজের ধুলা
→ ডায়রির ছেঁড়া পাতা
→ হারানো সেই ডায়রি
→ আমার ডায়রিটি তেপান্তরের বালুকায়
→ ডায়রির ছেঁড়া পাতা
→ নীল ডায়রির গল্পগুলো ভাঁজ করা ছিলো !!!
→ শঙ্কু সিরিজের প্রথম গল্প *ব্যোমযাত্রীর ডায়রি*-পর্ব ১— সত্যজিত রায়

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
  • M.A.FUAD
    User ৬ বছর, ২ মাস পুর্বে
    ????????????????????

  • কোষ্টে ভেজা জীবন
    User ৬ বছর, ৮ মাস পুর্বে
    joooose

  • Md Tuhin
    Golpobuzz ৬ বছর, ৯ মাস পুর্বে
    Ooo………!!