বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
কল্যাণ নগরে বাস করতো এক ব্যাধ।তার নাম ছিল ভৈরব।তা ভৈরবই বটে।যেমনি ভয়ঙ্কর ছিল তার চেহারা,তেমনি গায়েও ছিল হাতির মতো বল।
কালো কুচকুচে গায়ের রং,মাথায় ঝাঁকড়া চুল।ইয়াব্বড় পাকানো গোঁফ,কানে মকড়ি,আর জবা ফুলের মতো টকটকে লাল বড় বড় দুই চোক।
তেমনি লম্বা-চওড়া দশাসই চেহারা।যেন ছোটখাটো দৈত্য একটা।যখন সে কথা বলত,মনে হত,আকাছে মেঘ গর্জাচ্ছে।
হরিণ শুয়োর মিলিয়ে শিকার করা গোটা চার-পাঁচেক পশু বন থেকে একাই অক্লেশে কাঁধে চাপিয়ে বাড়ির উঠোনে এনে ফেলত।
এ হেন ভৈরব একদিন বনে শিকারে গেছে।সেদিন তার বরাত ছিল ভাল।অল্প ঘোরাঘুরির পরেই বেশ বড়সড় একটা হরিণ শিকার করে ফেলল।
একটা-দুটো শিকারে কোন দিনই মন ভরে না ভৈরবের।যতক্ষণ ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর না হয় বন চষে বেড়ায় শিকারের খোঁজে।
সেদিনও আরও দু-চারটে শিকার যদি পাওয়া যায় এই ভেবে সে হরিণটাকে কাঁধে ফেলে বনের ভেতরে এগিয়ে যায়।
যেতে যেতে হঠাৎ এক জায়গায় এসে দেখে কষ্টি পাথরের চুড়োর মতো প্রকান্ড এক দাঁতাল শুয়োর।অনবরত ঘোঁৎ ঘোঁৎ শব্দ করছে আর থুঁৎনিতে খুঁচিয়ে মাটি তছনচ করছে।
ভীষণাকৃতির ওই শুয়োর দেখে ভৈরবের খুব ফুর্তি হল মনে।অমন তেজিয়াল পশু মেরেও সুখ।
একটা ঝোপের আড়ালে নিয়ে দাঁড়িয়ে সে কাঁধের হরিণটাকে মাটিতে নামিয়ে রাখে।তারপর ধনুকে তীর জুড়ে ছুঁড়ল শুয়োরের দিকে।
তীর বুকে বিঁধে শুয়োরটা ছিটকে পড়ে গড়াগড়ি খেল মাটিতে।পরখণে গোঁ খেয়ে উঠে বন্দুকের গুলির বেগে লাফিয়ে এসে পড়ল ভৈরবের ওপর।
বুনো শুয়োরের আকস্মিক এমন আক্রমণ ঠেকাতে না পেরে ভৈরবের পেটটি চিরে দুফলা করে দিল।ছটফট করতে করতে সে তখুনি মারা যায়।
শুয়োরও বেশিক্ষণ বাঁচল না।যন্রণায় গোঙাতে গোঙাতে ভৈরবের পাশেই পড়ে স্থির হয়ে গেল।
এদিকে একটা সাপ ওই পথেই জঙ্গল পার হচ্ছিল।ব্যাধ আর শুয়োরের পায়ের আস্ফালনে সেটাও মারা পড়ল।
এখন ওই বনেই থাকত দীর্ঘরাব নামে এক শেয়াল।তার গলায় এমন জোর যে রাতের প্রথম প্রহর থেকেই হুক্কা-হুয়া রবে বেপরোয়া চেঁচিয়ে বন কাঁপিয়ে তুলত।রাত ভোর হওয়ার আগে তার চেঁচানো থামত না।
তা সেই দীর্ঘরাব সেদিন শিকারের খোজে ঘুরে ঘুরে হয়রান হয়েছে।কোথাও কোন শিকার জোটাতে পারেনি।খিদেয় তার পেট জলছে।তেষ্টায় গলা শুকিয়ে কাট।
ধুঁকতে ধুঁকতে হাঁপাতে হাঁপাতে ছায়ায় ছায়ায় হাঁটছিল।হঠাৎ দেখে,উরেব্বাস!এ যে মহা ভোজের আয়োজন।
হরিণ,ব্যাধ,সাপ ও শুয়োর-চারটি প্রাণী মরে পড়ে আছে সামনে।দেখে শেয়ালের তো আনন্দ আর ধরে না।ফুর্তির চোটে,আজ কার মুখ দেখে দেরিয়েছিলাম,বলতে বলতে,দুই চক্কর ঘুরপাক খেল মৃতদেহগুলাকে ঘিয়ে।
পেটে খিদের কামড় থাকলেও দীর্ঘরাব কিন্তু কোন খাবার মুখ দিল না।স্থির হইয়ে একপাশে বসে ভাবতে লাগল,এই পাহাড় প্রমাণ খাদ্যে তিন মাস আমার চলে যাবে।
মানুষটার মাংসে কম করেও এক মাস যাবে।হরিণ আর শুয়োরের মাংস ফেলে-ছড়িয়ে খেলেও হেসে খেলে দুমাস তো চলবে।
ওপাশে আবার সাপটা রয়েছে।সাপের মাংস ধরলাম একদিন।বাকি রইল পশুর স্নুয়ু দিয়ে তৈরি ধনুকের ছিলাটা।ওটা খেতে অবশ্য কোন স্নায়ু তো।
যা হোক,অগুলো আজ আর এঁটো করব না।আজকের দিনটা স্বাদহীন ধনুকের ছিলাটুকু খেয়েই কাটানো যাক।
এই ভেবে ক্ষুধার্ত দীর্ঘরাব তেড়েফুঁড়ে শুকনো ছিলায় কামড় বসাল।সঙ্গে সঙ্গে পটাং ছিলাটা ছিঁড়ে ধনুকের ছুঁচলো মাথা ছিটকে সটান বিঁধে গেল তার বুকে।হ্রদপিন্ড এফাঁড়-ওফোঁড় হয়ে তখুনি মারা গেল সেই অতি সঞ্চয়ী শেয়াল দীর্ঘরাব
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now