বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
সময়টা তখন ছিলো ইংরেজি সনের ১৮২৭।মাসটি ছিল ইংরেজি সনের দশম মাস।বাংলায় আশ্বিনের মাঝামাঝি হতে কার্তিকের মাঝামাঝি পর্যন্ত।এই সময়টা এমন ছিল,না শীত ছিল না গরম ছিল।বলতে গেলে নাতিশীতোষ্ণ।সময়টা বিয়ে করার জন্য উপযুক্ত সময় ছিল।তখন মাস্টার সাহেব ঠিক করলেন বিয়ে করবেন।ওহ মাস্টার সাহেব এর পরিচয় দেয়া হলনা।তিনি শিবপুর গ্রামের মাস্টার সাহেব ছিলেন।গণিতের উপর পাণ্ডিত্য ছিল তার অসামান্য।
,
দীর্ঘদিন গ্রামে পণ্ডিতারর কাজ করার জন্য চারদিকে তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।তিনি মনস্থির করলেন এইবার বিয়ে করবেন।তার বন্ধুমহলে তার একটি বিশেষ বন্ধু ছিল।সেই বন্ধুটি ই তার বিয়ের আয়োজন করে।বিয়ে ঠিক হয় পাশের গ্রামের পরের গ্রামে।গ্রামটির নাম ছিল ভাগীরথী।সেখানে এক ব্রাক্ষ্মন মথির মেয়ের সাথে তার বিয়ে ঠিক হয়।তখনকার সমাজ ব্যবস্থায় যৌতুকের প্রচলন ছিল।কিন্তু সিস্টেম টা ছিল সম্পূর্ণ উল্টো।বিষয়টা হচ্ছে গতানুগতিক নিয়মানুসারে যৌতুকের বিষয়টা হচ্ছে মেয়ের বাবার পক্ষথেকে বরের বাবার হাতে কিছু সহায়সম্পত্তি হস্তগত করা।মানে কণে পক্ষ বর পক্ষকে যৌতুক দিয়ে থাকে।কিন্তু সে সময় নিয়মটা ছিল,"কোন পুরুষ কোন মেয়েকে বিবাহ করতে হলে কণে পক্ষের পিতাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দিয়ে মেয়েকে কিনে নিয়ে বিবাহ করতে হবে।বিষয়টা একটু পরিষ্কার করে দিচ্ছি।
,
সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই বার তারও কিছুকাল পর থেকে মেয়েদের সামাজিক মর্যাদা ছিলনা।তখনকার সমাজব্যবস্থায় কোন পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করাকে ঘৃনার চোখে দেখতো।বা কোন পরিবারে কন্যাসন্তান জন্মগ্রহন করলে তাকে জীবিত দাফন করা হত।তার বহুকালব্যাপী সময় অতিবাহত হওয়ার পর মেয়েদের আর জীবিত দাফন করা হতোনা।তখন তাদের বাজারের দ্রব্যাদির মত বিক্রয় করা হোত।তারপর একশ্রেণী তাদের তাদের মেয়ের বিবাহ দেয়ার সময় বর পক্ষ থেকে কিছু অর্থ নিয়ে তারপর বিয়েত পিড়িতে বসাতো।সেই থেকে তখনকার সময়ে মেয়ে ববাহ করতে হলে পিতার সাথে মেয়ের দামাদামি করে নিয়ে তারপর বিয়ে দেয়া হোত।
,
মাস্টার সাহেব এর সাথে তখন কণের পিতার সাথে ১৫ টাকা ধার্য করা হয়।রীতিমতো বিয়ের সানাই বাজছে।বাদ্যযন্ত্র'র ব্যবস্থা করা হয়েছে।পাল্কী নিয়ে মাস্টার সাহেব গেলেন বিয়ে করতে।ঠিক সুন্দর ভাবেই বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে।যখন সিঁদূর দান হবে ঠিক তখনি মেয়ের পিতা বলে উঠলো।
___থামুন পুরোহিত মশাই।
___কেন পিতা কি হয়েছে?(মাস্টার)
___তুমি বলেছ তোমার আর্থিক অবস্থা খারাপ সেই জন্য আমি টাকার পরিমাণ কম বলেছি।এখনতো দেখতেছি ভালই মালকড়ি আছে তোমার।তুমি যদি আরো ৭টাকা না দাও তাহলে আমি মেয়ের বিয়ে দেবোনা।
___মাস্টার বলে উঠলেন,আমার কাছে তো এখন ৭টাকা নেই।আপনি না হয় পরে নিয়ে যাবেন।এখন বিয়েটা হতে দিন।
__নাহ!আগে টাকা তারপর বিয়ে।
__তারপর মাস্টার নিজের পকেটে টাকা না থাকায় বন্ধুর কাছ থেকে সাড়ে ছয় টাকা দিয়ে কোনমতে বিয়ে করে বাড়ি ফিরলো।
,
বিয়ের পর মাস্টার সাহেব একটু বেশি রসিক হয়ে পড়ে।এখন আগের মত পাঠশালায় বেশিক্ষণ থাকেনা।তখন তিনি মনস্থির করলেন পাণ্ডিত্য'র চাকুরী ছেড়ে দিয়ে বাসায় পড়াবেন।তারপর থেকে তিনি বাসার একটা রুমে গ্রামের সবাইকে গণিতের উপর শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
,
বিয়ের ১৮ বছর পর(১৮৪৫)।
আজ মাস্টার সাহেব এর ঘরে ৪টা মেয়ে ২টা ছেলে।বড়দের মধ্যে ছিলো প্রথম মেয়ে শাপলা।শাপলার বয়স ১৬।উঠতি যৌবন।গ্রাম্যের আঁকাপাঁকা পথে সারাক্ষণ তার পায়চারি।এর মধ্যে শাপলার জন্য সমন্ধ আসে এক ব্যবসায়ীর ছেলের সাথে।বাবার ব্যবসা থাকার ফলে ছেলে একটা অকর্মা হয়েছে।তখন ছেলে পক্ষরা বলেছে মেয়ের পিতাকে ৫০টাকা দিবে।তখন মাস্টার সাহেব রাজি হয়ে গেলেন।বিয়ে ঠিক হয়েছে ১২দিন পর।বিয়ের জন্য সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে।
,
ঠিক ২দিন পর গ্রামের চেয়ারম্যান মাস্টার এর বাড়িতে এসে মাস্টার কে তার বড় মেয়ে শাপলার বিয়ে জন্য প্রস্তাব দলেন।মাস্টার বয়স হবে ৫০এর কাছাকাছি।তখন এই প্রস্তাব শুনে মাস্টার নিষেধ করে দিলেন।চেয়ারম্যান বলে উঠলেন আমি তোমাকে দুই হাজার একশত টাকা দিবো।তখন টাকার অংকটা বড় থাকার কারনে মাস্টার কথা দিলেন যে আমার শাপলার সাথে তোমার বিয়ে দিবোই।
,
তিনি একটা পত্র লিখে প্রথম সমন্ধ ভেঙে দিলেন।৭দিন পর বিয়ের তারিখ ঠিক করলেন।মাস্টার এর এই সিদ্বান্তে কেউ সম্মত ছিলোনা।কিন্তু বাড়ির কর্তামশাই হলে যা হয় আর কি!!সবাই তার সিদ্বান্তে রাজি হলেন।
,
বিয়ের আগের দিন।
__বাবা আমি ঐ এমন একটা বুড়ো কে বিবাব করতে পারবোনা।এর চেয়ে গলায় দড়ি দেয়া ঢের ভাল।
__আমার সিদ্বান্ত বড় সিদ্বান্ত।আমি ওনাকে কথা দিয়ে ফেলছি,এবং ১৭০০টাকা নিয়ে নিছি।আর বাকিটাকা বিয়ের দিন দিবে বলছে।যাও বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নাও।
,
শাপলা বাবার মুখের উপর কথা বলতে পারলোনা।ঘরে একেলা চোখের জল গড়িয়ে পড়ছে।নিজেকে ঐ লালসীত বুড়োর হাতে সমার্পিত করার চেয়ে মরে যাওয়া খিব শ্রেয়।সেই দিন রাতেই শাপলা গলায় দড়ি দিয়ে তার দেহ থেকে প্রাণ ত্যাগ করলো।
,
পরের দিন চেয়ারম্যান বাড়িতে এসে শুনলো মেয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে।চেয়ারম্যান যে টাকা দিয়েছিলো তিনি সেই টাকা ফিরত দিতে বললেন।কিন্তু মাস্টার আর সেই টাকা ফিরত দিতে পারলেননা।কারন সেই টাকা তিনি দূর্ভাগ্যবসত হারিয়ে ফেলে।যার ফলে চেয়ারম্যান মাস্টার এর বাড়ি দখল করে নেয় এবং বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
,
সেই সময় থেকে মেয়েদের বিবাহের সময় মেয়েদের টাকা দিয়ে খরিদ করে বিয়ে করতে হোত।কারন এক্টাই ছিলো যে,হয়তো সেই ছোট কাল থেকে বিবাহিত সময় পর্যন্ত মেয়েদের বেড়ে ওঠার পিছনে যে অর্থ ব্যয় হয় বিয়ের সময় পিতা সেই টাকা পুষিয়ে নেয়।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
Sakib
User ৪ বছর, ৩ মাস পুর্বেrj jewel
Guest ৭ বছর, ২ মাস পুর্বেrj jewel
Guest ৭ বছর, ২ মাস পুর্বে