বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

অন্ধকার গলির সেই বাড়িটি ১

"গোয়েন্দা কাহিনি" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান মো রাকিবুল হাসিব (০ পয়েন্ট)

X পুরো দুটো দিন অপেক্ষা করার পরে সুযোগটা হঠাৎই পাওয়া গেল। রাত তখন দশটার মতো। এমন বেশি নয়। কিন্তু এর মধ্যেই ছোট রালডিং শহর প্রায় নিঝুম। সদর রাস্তার বাতিগুলো টিমটিম করে জ্বললেও ছোট এই গলি একেবারেই অন্ধকার। কালো প্যান্ট আর আঁটো জামা গায়ে একটা মূর্তি পা টিপে এগিয়ে চলেছে গলির ৯ নম্বর বাড়িটার দিকে। অন্ধকারে এত সন্তর্পণে যে‚ নজরে পড়ার কথা নয়। কিন্তু আমার চোখকে ফাঁকি দেওয়া সহজ নয়। একে তো ৯ নম্বরের লাগোয়া বাড়িতেই আমার আস্তানা। পাশের একটা জানলা তো প্রায় মুখোমুখি। পর্দার ফাঁক দিয়ে ঘরের ভিতরেও নজর করা যায়। তা ছাড়া গলির দিকের জানলা দিয়ে দেখা যায় সদর দরজাও। তার উপর গত দুটো দিন এমন একটা সুযোগের জন্যই তো অপেক্ষা করে রয়েছি। অল্প দিন আগেও বাড়িটা ফাঁকাই ছিল। সারাদিন ঝিম হয়ে পড়ে থাকত। সদর দরজার হাতলে ধুলো–ময়লার আস্তর। তারপরে হঠাৎই এক দুপুরে লোকজনের সাড়া। এসব ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহ নেই আমার। তবু প্রতিবেশী বলেই নিতান্ত কৌতূহলে জানলা দিয়ে তাকিয়েছিলাম। সদর দরজা খোলা। জনাকয়েক কুলি–মজুর ধরাধরি করে নানা মাপের আসবাবপত্র ঢোকাচ্ছে। চেয়ার‚ টেবিল‚ মস্ত আরাম কেদারা‚ খাট। প্রতিটিই বেশ দামি। এছাড়া গোটা দশেক বড় আকারের মজবুত স্টিলের ট্রাঙ্ক। ডালা বন্ধ থাকলেও কুলিগুলো যেভাবে সেগুলো নিয়ে আসছিল‚ বোঝা যায় একেবারেই খালি। মালপত্র নেই। এতগুলো খালি ট্রাঙ্কের কী দরকার বুঝে উঠতে পারলাম না। ইতিমধ্যে হইহই করে সারা বাড়িতে শুরু হয়ে গেছে ঝাড়পোঁছ। সেও জনা কয়েক মিস্ত্রি–মজুর। কৌতূহল হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তত্ত্বতালাশ করেও খুব বেশি হদিশ পাইনি। কাজের তদারক যিনি করছিলেন‚ তিনি ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির লোক। বিশেষ কিছু জানেন না। কলকাতা থেকে এক মহিলা নাকি আসছেন। কিছুদিন থাকবেন। তার আগে মালপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। সব যথাস্থানে সাজিয়ে ঘরদোর ঝাড়পোঁছ করে দিতে হবে। সেই রকমই নির্দেশ। দিন কয়েক থাকবেন। অথচ এত মালপত্র! পেল্লায় আকারের এতগুলো খালি ট্রাঙ্ক! সন্দেহ হওয়াটাই স্বাভাবিক। আসলে দেশের পূর্বপ্রান্তে ছোট এই শহরটার বিশেষ সুনাম নেই। স্মাগলিং‚ উগ্রপন্থীদের উৎপাত লেগেই আছে। খুন–জখম প্রায় নিত্যনৈমিত্তিক। বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের ঢালাও কারবার। এর উপর কিছুদিন হল শুরু হয়েছে অন্য এক আপদ। গোদের উপর বিষফোঁড়া বলা যায়। প্রায় নিয়ম করে সপ্তাহে দুদিন‚ শনি আর মঙ্গলবার রাতে রহস্যজনক ভাবে একের পর এক খুন। নিহত মানুষটির দেহে আঘাতের চিহ্ন বলতে গলায় তীক্ষ্ণ কিছু বেঁধার দাগ। এছাড়া শরীর শুকিয়ে প্রায় কাঠ হয়ে রয়েছে। সমস্ত রক্ত চুষে বের করে নেওয়া হয়েছে। কেউ বলছে ভ্যাম্পায়ার। শহরে ভ্যাম্পায়ার হানা দিয়েছে। এ তারই কাজ। তবে যুক্তিবাদীরা মানতে রাজি নয়। তাদের সন্দেহ‚ এ কাজ রক্তের চোরাকারবারিদের। রাতের অন্ধকারে শিকার পেলেই তারা কাবু করে গলায় সূচ ফুটিয়ে শরীরের সমস্ত রক্ত বের করে নিচ্ছে। সে রক্ত চলে যাচ্ছে সীমান্ত পার হয়ে। অন্য কোথাও এমন ঘটলে এতদিনে তোলপাড় হয়ে যেত। কিন্তু রালডিং নিতান্তই এক উপদ্রুত সীমান্ত শহর। পুলিশ আছে বটে। কিন্তু তাদের যে কী কাজ‚ তারা নিজেরাই হয়তো জানে না। শহরে আধা সামরিক তথা প্যারামিলিটারি ফোর্সেরই রমরমা। তবে তাদের কাজ উগ্রপন্থী আর সীমান্ত সামলানো। এসব নিয়ে ভাবার সময় কম। রহস্য তাই রহস্যই রয়ে গেছে। পুলিশ কোনও কিনারা করতে পারেনি। অগত্যা রাত নামলেই এখন শহর জুড়ে আতঙ্ক। খুব দরকার ছাড়া কেউ তেমন বের হয় না। এমন এক জায়গায় কলকাতা থেকে কেউ মাস কয়েকের জন্য বেড়াতে আসছেন‚ ব্যাপারটা সন্দেহজনক বইকী। বিশেষ করে এত আসবাবপত্র নিয়ে। অন্য কোনও ব্যাপার নয়তো? কিন্তু এসব দেখার কাজ পুলিশের। আমার নয়। তাই সেই প্রথম দিনের পর ব্যাপারটা নিয়ে আর মাথা ঘামাইনি। কিন্তু দিন কয়েকের মধ্যেই মত বদলাল। এরমধ্যে নতুন প্রতিবেশীর ব্যাপারে আর খোঁজ নিইনি। কোনও সাড়াশব্দও পাইনি বাড়িটা থেকে। ভেবেছিলাম‚ মহিলা বোধ হয় এখনও আসেননি। সেদিন গলির দিকের জানলা খোলাই ছিল। হঠাৎ ৯ নং বাড়ির সদর দরজা খোলার শব্দে বুঝলাম নতুন বাসিন্দা ইতিমধ্যে এসে গেছেন। নিতান্ত কৌতূহলে জানলা দিয়ে চোখ বাড়িয়েছিলাম। মধ্য চল্লিশ মহিলার পোশাক এমন কিছু আহামরি নয়। পরনে ফেডেড জিনস আর কটনের টপ। পায়ে স্নিকার। নিতান্তই সাদামাটা। তবু চোখ ফেরাতে পারিনি। শুধু সুন্দরী বললে কমই বলা হয়। এমন হ্যান্ডসাম ফিগার অনেক দিন চোখে পড়েনি। যেন মুম্বাইয়ের কোনও ছবির পর্দা থেকে উঠে আসা হিরোইন। এমন একজন মহিলা প্রতিবেশী হলে আগ্রহ হওয়াটাই স্বাভাবিক। ব্যতিক্রম ছিলাম না আমিও। এরপর খোঁজ নিতে আগ্রহ কিছু বাড়ল আরও। মহিলা একাই থাকেন। এমন কী একটা কাজের মানুষও নেই। সারাদিন কোনও সাড়াও পাওয়া যায় না। খালি বাড়িটা আগে যেমন নিঝুম হয়ে থাকত‚ এখনও প্রায় তেমন। ব্যতিক্রম বলতে গভীর রাতে কখনও চাপা একটা ঘড়ঘড় আওয়াজ। এক রাতে ওই শব্দ শুনে জানলায় কান পেতেছিলাম। বুঝতে অসুবিধা হয়নি‚ মহিলা যথেষ্ট ভারি কিছু মেঝের উপর দিয়ে টেনে আনছেন। ট্রাঙ্কের ঢাকনা খোলার চাপা একটা শব্দ এরপর শুনতে পেয়েছিলাম শুধু। ব্যস‚ তারপর সব আবার নিস্তব্ধ। ব্যতিক্রম বলতে শুধু ওই বিকেলের দিকে। তাও নিয়মিত নয়। হঠাৎ কখনও। আচমকাই সেদিন খুলে যায় ভারি কাঠের সদর দরজা। বেরিয়ে পড়েন মহিলা। সেই একই পোশাক। ফেডেড জিনস আর কটনের টপ। এছাড়া রোদচশমা। দরজায় তালা লাগিয়ে স্নিকারের হালকা শব্দে দ্রুত গলি পার হয়ে যান। এ শহরে এখনো ঘোড়ায় টানা টমটম রয়েছে। রিক্সা‚ এমন কী অটো চালু হলেও সাধারণ মানুষ টমটমই ব্যবহার করে বেশি। গলির মুখে তাদের একটা ঠেক। সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত দু’একটা থাকেই। গলির মোড়ে পৌঁছে মহিলা অন্য গাড়ির জন্য দেরি করেন না। তারই একটায় উঠে পড়েন। তবে গাড়িতে বেশি দূর যান না। শহরেই কোনও নিরিবিলি স্থানে পৌঁছে ছেড়ে দেন। বাকিটা হেঁটেই চলে যান তারপর। কখন ফেরেন‚ সেই হদিস পেতে অবশ্য সময় লাগেনি। সেদিনই রাত তখন আটটার মতো। বড় রাস্তায় টিমটিমে বাতি জ্বললেও সরু গলিটা একেবারেই অন্ধকার। শুধু দু’দিকের বাড়ির জানলা দিয়ে পড়া সামান্য আলো। তা বর্তমানে শহরের যা অবস্থা‚ সন্ধের পর কেউ আর দরজা–জানলা বিশেষ খোলা রাখে না। তাই ঘন অন্ধকার। সেই অন্ধকারেই দেখতে পেলাম‚ স্নিকারের হালকা শব্দে মহিলা ঘরে ফিরছেন। সঙ্গে একজন পুরুষ। লম্বাচওড়া চেহারা দেখেই বোঝা যায় স্থানীয় নয়। সম্ভবত প্যারামিলিটারিদের কেউ। লোকটা এক হাতে মহিলার গলা জড়িয়ে যেভাবে পা ফেলছিল‚ বোঝা যায় অতিরিক্ত নেশার প্রভাবে যথেষ্টই বেসামাল। সঙ্গীকে নিয়ে মহিলা এরপর সন্তর্পণে দরজার তালা খুলে ঢুকে পড়েছিল ভিতরে। রহস্যময় মহিলাটি কী চরিত্রের মানুষ‚ এরপর বুঝতে বাকি থাকেনি। সেই প্রথম দিন থেকে ভিতরে যে ইচ্ছেটা ক্রমাগত পাক খেয়ে চলেছে‚ তা যে পূর্ণ হতে পারে‚ বুঝে ফেলেছিলাম। দিন কয়েকের মধ্যেই মিলে গেল সুযোগটা। সেদিন বিকেলে দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে আর দেরি করিনি। যখন বের হলাম‚ মহিলা ততক্ষণে গলির শেষ মাথায় পৌঁছে গেছেন। সেজন্য অবশ্য ব্যস্ত হইনি। মহিলা এবার কী করবে জানা আছে। ধীরেসুস্থে যখন গলির মোড়ে পৌঁছলাম মহিলা ততক্ষণে টমটমে চেপে রওনা হয়ে পড়েছে। স্ট্যান্ডে দ্বিতীয় কোনও টমটম নেই দেখে যখন হাত–পা কামড়াচ্ছি‚ হঠাৎই একটা চলতি রিক্সা পেয়ে গেলাম। বেশিদূর যেতে হল না। ছোট শহর। একপ্রান্তে বাগান ঘেরা ছোট এক লেক। পাশেই পাহাড় থেকে গোটা কয়েক ঝরনা নেমেছে। একটায় প্রায় সারা বছর জল থাকে। উঁচু বাঁধ দিয়ে সেই জল ধরেই লেকটা তৈরি। চারপাশে নানা জাতের ফুল আর ফলের বাগান। শুনেছি‚ আগে বিকেল হলে এখানে বহু মানুষের সমাগম হত। এখন প্রায় ফাঁকা। যারা এসেছিলেন‚ বিকেল পড়তেই বেরিয়ে আসতে শুরু করেছেন। গেটের সামনে তাদের হালকা জটলা। দূর থেকেই দেখলাম‚ মহিলা সেই লেকের সদর ফটকের কাছে এসে টমটম ছেড়ে দিলেন। অগত্যা খানিক আগেই নেমে পড়তে হল। বাকি পথটুকু হেঁটে আসতে সময় লাগল। তবে সেজন্য উদ্বিগ্ন হইনি। পার্কের সদর ফটকের গায়েই চারদিক খোলা ছোট এক রেস্তরাঁ। সুদৃশ্য গোটা কয়েক চেয়ার–টেবিল। ভিতরে ঢোকার আগে অথবা বের হবার পর অনেকেই এখানে চা–কফি পান করতে আসেন। ইতিমধ্যে দেখে নিয়েছি‚ মহিলা প্রায় ফাঁকা সেই রেস্তরাঁয় একটা টেবিলের সামনে বসে পড়েছেন। কাছে গিয়ে শ্রাগ করে বললাম‚ ‘ওহ্‌ ম্যাম! ইউ!’ মহিলা নীরবে কিছু ভাবছিলেন বোধ হয়। ইতিমধ্যে টেবিলে ধূমায়িত চা এসে গেছে। হাত দেওয়া হয়নি। আমার কথায় মুখ তুলে তাকালেন। ভুরু সামান্য কুঁচকে উঠল। তারপর ইংরেজিতেই বললেন‚ ‘আপনাকে তো ঠিক চিনতে পারলাম না!’ ‘আপনি নতুন মানুষ ম্যাম। তাই চেনার কথা নয়। আমি আপনার প্রতিবেশী। গলিতে দু’একবার দেখেছি। আলাপ হয়নি। আজ এই দিকেই কাজে এসেছিলাম। আপনার দেখা পাব ভাবিনি। হাজার হোক প্রতিবেশী মানুষ।’ আমার কথায় মহিলা খুশি হলেন কিনা বোঝা গেল না। তবে বসতে ইঙ্গিত করে বললেন‚ ‘চা চলে তো? নাকি কফি?’ ‘এক যাত্রায় আলাদা রকম ঠিক নয়।’ টেবিলের উলটো দিকের চেয়ারে বসে ফের কাঁধ ঝাঁকিয়ে হাসলাম। তারপর বয় ছেলেটাকে আর একটা চায়ের কথা জানিয়ে বললাম‚ ‘দামটা কিন্তু আজ আমিই দেব।’ ভেবেছিলাম মহিলা আপত্তি করবেন। কিন্তু কোনও কথাই বললেন না। আগের মতোই থম হয়ে রইলেন। কীভাবে শুরু করা যায় ভাবছি‚ মহিলা ফস করে বললেন‚ ‘আপনি তো দেখছি আমার মতোই বাইরের মানুষ। চাকরির খাতিরে এসেছেন? একাই থাকেন?’ মহিলার কাছ থেকে এমন প্রশ্নের জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না। একটু থতমত খেয়ে গেলেও মুহূর্তে সামলে নিয়ে বললাম‚ ‘ঠিকই ধরেছেন ম্যাম। তবে চাকরিবাকরির জন্য নয়। আসলে…।’ ‘আমিও তাই।’ আমার কথা শেষ হবার আগেই মুক্তোর মতো দাঁতে উনি মিষ্টি হাসলেন‚ ‘আমি মিসেস নিশা রাও। বিবাহিতা হলেও আপাতত সেপারেশন চলছে। হাতে টাকাপয়সা আছে। উড়ে বেড়াচ্ছি। আপনি?’ ‘আমি মি. রমাকান্ত বাসু।’ মহিলার হাসিতে কিছু সাহস পেয়ে বললাম‚ ‘কলকাতার মানুষ। মাস ছয়েক হল এসেছি। ভেবেছিলাম এই মাসেই ফিরে যাব। কিন্তু আজ আপনার সঙ্গে পরিচয়ের পরে মনে হচ্ছে দিন কয়েক থাকা যায় আরও। লাগোয়া বাড়ি। যদি অনুমতি করেন‚ একদিন যেতেও পারি। খানিক গল্প করে আসব। অথবা যদি একদিন সময় করে গরিবের বাসায় আসেন।’


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৭৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ অন্ধকার গলির সেই বাড়িটি
→ অন্ধকার গলির সেই বাড়িটি ২

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now