বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
গল্প: "অপূর্ণতার বাসরঘর"
.
.
আমার পাশে একটি মেয়ে অশ্রুশিক্ত চোখে
বসে আছে। আরেকটি মেয়ে আমার সেবা
করছে। আমি হাসপাতালের বেডে। সৌভাগ্যবশত
আমরা তিনজনই ডাক্তার।
এই পর্যন্ত ছোট একটা গল্প আছে আমাদের।
.
আমি ফাহমি, যে মেয়েটা আমার পাশে বসে কাঁদছে
ওর নাম নীলা। গল্পটা নীলাকে নিয়েই শুরু।
.
সারা রাত জেগে আছি। কারন, যে দিনটা আসছে
সেটা হয়ত আমার সারা জীবন স্মৃতির পাতায় ফ্রেমে
বন্দি হয়ে থাকবে। শুরু হবে এক নতুন দিগন্তের।
কারন, আজকে নীলার সাথে আমার সম্পর্কের
নামের পরিবর্তন হবে।
সারারাত জেগে জেগে আমাদের পেছনে
ফেলে আসা দিন গূলোর কথা ভাবছি। কদিন আগেই
তো আমরা কত ছোট ছিলাম। মেডিকেল লাইফেও
আমরা বাচ্চাদের মত একে অপরের পেছনেই
লেগে থাকতাম।
ছোট থেকে জীবনের প্রতিটা ধাপ একসাথেই
ফেলেছি। সারাদিন ঝগড়া, খুনসুটি, মারামারি আর অসংখ্য
ভালোবাসায় ভর্তি ছিলো আমাদের বন্ধুত্ব। একজন
আরেকজনকে ছাড়া অপূর্ণ ছিলাম।
তবে যেদিন থেকে ভালোবাসা কি জিনিস বুঝতে
পেরেছি, সেদিন থেকে ওকেই জীবনসঙ্গী
বানানোর চিন্তা করে নিয়েছি। ওদিকে নীলা যে
আমাকে ভালোবাসে না, তা কিন্তু নয়। যেমন,
কোন মেয়ের সাথে যদি কথা বলি, অথবা কোন
মেয়ের দিকে তাকায়, তাহলে আমার ফোন নাম্বার,
ফেবু আইডি সহ আমিও ব্লাকলিস্টে।
কালকেই আমাদের মেডিকেল লাইফের ইতি
টেনেছি। এই খুশির দিনে আমার মনের কথাটাও
ওকে বলে দিয়েছি। ও বলেছিল আজকে
বিকেলে দেখা করতে। আমিও বাধ্য ছেলের মত
হ্যাঁ সুচক মাথা নাড়ি।
.
সকাল থেকেই রেডি হয়ে আছি। হুট করে কখন
ডেকে বসে কে জানে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল। নীলার কোন
ফোন পেলাম না। বাধ্য হয়ে আমিই ফোন দিলাম।
ওর ফোন বন্ধ। ওর পছন্দের সব জায়গায় ওকে
খুজছি, নাহ কোথাও নেই। সন্ধা ঘনিয়ে আসছে।
আমার অস্থিরতা বাড়তে থাকে। তাড়াতাড়ি করে ওর বাড়ি
যায়। ওর বাবা মা বসে আছে। সালাম দিয়ে ঢুকে
আন্টিকে বললাম, নীলা কই?
"নীলা বাসায় নাই" বলেই আন্টি উঠে চলে
গেলো।
ছোটবেলা থেকেই এই বাড়িতে আসা যাওয়া করি।
আন্টি কখনো এভাবে কথা বলেনি।
কেমন যেন ভিন্ন ভঙ্গিতে কথা বলছে।
নীলার রুমে গেলাম, ওর কাপড়- চোপড় কিছুই নাই।
তারমানে নীলা সত্যিই কোথাও চলে গেছে।
আন্টির কাছে জানতে চাইলাম, নীলা কোথায়
গেছে?
লম্বা একটা নিঃশ্বাস ফেলে উত্তর দিলো, নীলা ওর
চাচার বাসায়। ওখানে ওর চাচাতো ভাইয়ের সাথে ওর
বিয়ে ঠিক হয়েছে।
.
আন্টির মুখ থেকে নীলার বিয়ের কথা শুনে আমার
বিশ্বাস হয় নি।
না এটা হতে পারে না, এটা অসম্ভব। নীলা আমাকে
ছেড়ে অন্য কারো সাথে......।
আমার অবুঝ মনে বিভিন্ন ভাবনার উদয় হয়। নীলা কি এ
জন্যই কালকে কিছু না বলে, আজকে দেখা
করতে বলেছিলো?
না চাইলেও এই জঘন্য বাস্তবতাটা আমাকে মেনে
নিতে হয়। শুরু হয় একটা অসুস্থ হৃদয়ের।
নিকোটিনের ধোঁয়া আর একা নামক শব্দের
সঙ্গী হয়ে যায় আমি।
.
১০ দিন পর.........
আমাকে পাওয়া যায় একটা রাস্তার ধারে বেহুঁশ হয়ে
পড়ে থাকতে।
হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় আমাকে।
ডাক্তারেরা বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করে আমার জ্ঞান
ফেরাতে।
এই দশটা দিন আমার মধ্যে নিকোটিনের ধোঁয়া ছাড়া
আর কিছুই যায় নি।
.
আমার জ্ঞান ফেরে। বাসায় আনা হয়, কিন্তু আমি
স্বাভাবিক হতে পারিনা।
প্রতিটাক্ষন নীলা নামক চাওয়াটা অপূর্ণ। বিষন্নতার
বেড়াজালে বন্দি হয়ে আছি সারাক্ষন।
যতদিন যাচ্ছে, অবনতির দিকেই এগোচ্ছি।
খাওয়া দাওয়া নাই, কারো সাথে কথা বলি না,
হঠাত্ করে চিত্কার দিয়ে উঠি। অনেকেই পাগল
ভেবে বলছে, পাগলা গারদে পাঠিয়ে দিতে। আমার
বাবা-মা সেটা না করে, বড় ডাক্তার আছে এমন একটা
হাসপাতালে ভর্তি করে।
.
অনেক ডাক্তার চেষ্টা করে
কিন্তু কোন লাভ হয় না।
অনেক ইনজেকশন আর স্যালাইন দ্বারা আমার
শরীরটাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। কিন্তু ওরা
জানেনা যে ওদের ট্রিটমেন্ট টা ভূল। কারন, ওরা
জানেনা যে, আমার শরীরটা অসুস্থ নয়। অসুস্থ
আমার হৃদয়, আমার স্বপ্ন, আমার অনুভূতি। এগুলোর
ঔষধ তো একটাই। নীলা।
.
.
১ মাস পর......
নদীর ধারে হাঁটছি। পাশে একটা মেয়েও হাটছে।
মেয়েটা এফএম এর মত বকবক করেই চলেছে,
আর আমি শুনছি।
মেয়েটার নাম নেহা।
সরি, ডা. নেহা চৌধুরী।
এই হাসপাতালের নতুন ডাক্তার। গত ১ মাস যাবত্ ইনিই
আমার চিকিত্সা করছেন।
নেহা তার ডাক্তারি লাইফের শুরুতেই আমার মত একটা
রোগীর পাল্লায় পড়বে, এমনটা হয়ত সে
কোনদিনই ভাবেনি।
প্রথম যেদিন ও আমার ট্রিটমেন্ট করতে আসে,
সেদিনই ও আমি চমকে যায়। সবার মত নেহাও
আমাকে অনেক প্রশ্ন করেছিলো। আমি
বরাবরের মতই চুপ ছিলাম। আমার কোন সাড়া শব্দ না
পেয়ে চলে যায়।
কিছুক্ষন পর, এক প্লেট গোবর নিয়ে আমার
কাছে এসে বলে, এই গোবর গুলো খেতে।
এটাই নাকি আমার রোগের সর্বোচ্চ ঔষধ।
আমার মেজাজ গরম হয়ে যায়, বলে কি এই ডাক্তার?
আমাকে বলছে গোবর খেতে। আমি একরকম
রেগেই ওকে বলি,
-এই যে ম্যাডাম, ফাইযলামি করেন আমার সাথে? মনে
রাখবেন, আমিও একজন ডাক্তার।
নেহা একটু হেসে চলে যায়। আমি বুঝিনা, এখানে
হাসির কি আসলো?
মনে করেছিলাম, অন্য ডাক্তারের মত নেহাও হয়ত
আর আসবেনা। কিন্তু না। পরদিন এসে হাজির।
বিভিন্ন রকম প্রশ্ন করে, কিন্তু আমি কোন উত্তর
দেয় না। নাহ, এর মাঝে কোন বিরক্তি নাই। অসম্ভব
ধৈর্য্যের অধিকারী। পিছু ছাড়েনা আমার।
একটু পরপর আমার কাছে এসে বকবক শুরু করে
দিবে। মাঝে মাঝে আমার কান টানে, চুল টানে।
প্রথম প্রথম অসহ্য লাগলেও এখন আর অসহ্য
লাগে না। বুঝে গেছি, ওর এরকম পাগলামির পিছনের
মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আমি যেন ওর সাথে কথা বলি।
যাতে করে ও জানতে পারে, আমার অসুখটা কি?
কিন্তু আমি কারো সাথেই কোন কথা বলি না।
যার সাথে কথা বলার, সেই তো নাই। কথা গুলো
মুখে আসার আগেই অপূর্ণতার আগুনে পুড়ে ছাই
হয়ে যায়।
আমি কি করে বলি, আমার মাঝে অপূর্ণতার বাসরঘর
সাজানো আছে।
এরা তো পারবে না এটাকে সরিয়ে পূর্ণতার বাসরঘর
সাজিয়ে দিতে? এরা কোথায় পাবে সেই ঔষধ?
ঔষধ তো নিজেই
দূরে চলে গেছে। নীলা চায়নি আমি বেঁচে থাকি।
নাহলে ও কখনোই আমাকে ছেড়ে যেতো না।
.
রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছি। হঠাত্ দেখি নীলা
যাচ্ছে। আমি নীলা নীলা বলে ডাকি। নাহ পেছনে
ফিরে তাকায় না। তাহলে কি ও শুনতে পাচ্ছে না? আমি
ওর পিছন পিছন দৌড়াতে থাকি, আর চিত্কার দিয়ে
ডাকতে থাকি, নীলা! নীলা! নীলা দাড়া......।
হঠাত ধপ করে একটা শব্দ হয়। মাথায় একটু ব্যথা
অনুভূত হয়।
বুঝতে পারি, বিছানা থেকে পড়ে গেছি।
নেহা এসে আমাকে বিছানায় তুলে আমার মাথা মালিশ
করে দিচ্ছে।
আমি কেন যেন মনের অজান্তেই বলে দিলাম,
আসল ব্যথাটা তো বুকের বাম পাশ টায়। মাথায় মালিশ
করে কি লাভ?
নেহা আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে কি
যেন বুঝে, উঠে চলে যায়। আর আমি ভাবতে থাকি,
নীলা তাহলে আমার স্বপ্নেও দূরে চলে যেতে
চায়।
.
পরদিন নেহার হাতের ছোঁয়ায় আমার ঘুম ভাঙে।
দেখি ও আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
বলল তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিতে। আমাকে নিয়ে
কোথায় যেন যাবে।
-কোথায় যাবো।
-এক্সরে করব আপনার।
-কিসের এক্সরে?
-নাহ, ওসব কিছু না। আপনাকে নিয়ে শপিংয়ে যাবো।
ওর কথা শুনে আমি অবাক হলাম, গফ/বফ নিয়ে শপিং
ঠিক আছে, কিন্তু পেশেন্ট কে নিয়ে শপিং? আর,
আমার দাড়িয়ে থাকার ক্ষমতা নাই, আর এ বলে কিনা
শপিংয়ে যাবে।
যেতে পারব না বলে দিলাম।
কিন্তু এই মেয়ে নীলার মতই জেদি। অবশ্য
নীলার সাথে নেহার অনেক দিক দিয়ে মিল
রয়েছে। নেহার কথাবার্তা, চলাফেরা সবই নীলার
সাথে মিল আছে।
অনিচ্ছা সত্ত্বেও বেরিয়ে পড়লাম। ওর কাঁধে একটা
হাত ভর হেঁটে বেরিয়ে আসলাম। রিক্সা নিয়ে একটা
শপিংমলে। এখানে আমি আরেকটু অবাক হই। এখানে
আমার জন্য শার্ট প্যান্ট কিনলো। কিছু বুঝলাম না,
আমার জন্য কেনো এসব? জানতে চাইলে বলে,
এগুলো গায়ে দিয়ে প্রতিদিন বাইরে ঘুরতে
যেতে হবে। আমি না বললেও ও কিছু শুনে না। ওর
একটাই কথা, আমাকে সুস্থ করে তোলাটাই ওর
মেইন উদ্দেশ্য। আমি বুঝিনা এভাবে আমি ভালো
হব কি করে?
.
এরপর থেকে প্রতিদিন আমাকে নিয়ে বাইরে
ঘুরতে যায়। আর সবসময় আমার পাশে থেকে
বকবক করাটাই যেন এক মহা ঔষধ। আমি একটু আধটু
করে ওর সাথে কথা বলি। এখন নীলার কথা আর
তেমন একটা মনে পড়ে না। মনে পড়বে কি
করে? নেহার বকবক শুনতেই সময় শেষ। সত্যিই
ধীরে ধীরে আমি সুস্থ হতে থাকি।
আজকেও নদীর ধারে হাঁটছি, আর নেহা এফ এম
এর মত বকবক করেই যাচ্ছে, আর আমি শুনছি।
এই কয়দিনে আমি মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠি। আর
কয়েকদিন গেলেই হাসপাতাল থেকেরিলিজ
করবে।
.
নেহা আমাকে ঔষধ দিচ্ছে আর বলছে আজকে
কোথায় যাওয়া যায়? এমন সময় হঠাত্ নীলার
প্রবেশ। আমি নীলাকে দেখে যেন বিশ্বাস
করতে পারছি না। নীলা আমার পাশে এসে বসল।
ওকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে একগাদা প্রশ্ন
ছুড়ে দিলাম, কোথায় ছিলি এতদিন? কি করছিলি?
আমাকে ভালোবাসবি না বললেই পারতিস, সারাজীবন
বন্ধুর মতই থেকে যেতাম।
নীলা আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করে।
আমার চোখেও পানি।
নীলা আমার চোখের পানি মুছে দিতে দিতে
বলল, বিশ্বাস কর, আমি যদি জানতাম তুই এরকম হয়ে
যাবি, আমি কখনোই তোকে ছেড়ে যেতাম না।
আর সেদিন আমি পরিস্থিতির চাপে পড়ে তোকে
কিছু জানাতে পারিনি। আমাকে ক্ষমা করে দে।
.
.
আমার পাশে নীলা অশ্রুশিক্ত চোখে বসে
আছে। আর নেহা আমার সেবা করছে। আমি
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি। সৌভাগ্যবশত আমরা
তিনজনই ডাক্তার।
আর এই ছিলো আমাদের সেই ছোট গল্প টা।
.
গল্পটা এখানে শেষ হলেই পারত। কিন্তু না, সেটা
হয় নি।
.
নীলার সাথে আমি চলে আসি । নেহা থেকে যায়।
নেহা কিছু বলেনি। অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলো
আমার দিকে।
নীলার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হয়। এখনো
বেকার, বিয়ে করাটা ঠিক হবে না।
আমি একটা হাসপাতালে জব শুরু করি। আর কয়েকদিন
পর আমাদের বিয়ে।
কিন্তু নীলার মনটা আর আগের মত নাই। ওর মুখের
হাসিটাও যেন কিছু একটা ঢেকে রাখে।
দুইদিন থেকে হাসপাতাল যাওয়া হচ্ছে না। আজকে
সকাল থেকে ফোন আসছে, একটা রোগী
এসেছে অনেক সিরিয়াস। হাসপাতাল যাবো কি না
ভাবছি। নীলার সাথে একটু গল্প করব ভেবে
নীলার ঘরে বসে আছি, ও একটু বাইরে গেছে।
একটা ডায়েরি দেখতে পায়। ডায়েরিটা পড়তে শুরু
করি।
ডায়েরির অংশটা এরকম ছিলো...
নীলাকে আমি যেমন ভালোবাসতাম, নীলাও
আমাকে ভালোবাসতো। নীলার একটা চাচাতো ভাই
ছিলো, আবির। নীলাকে প্রচন্ড ভালোবাসতো।
নীলাকে প্রপোজও করেছে, কিন্তু নীলা না
করে দেয়। কিন্তু আবির পিছু ছাড়েনি। লেগেই
ছিলো।
নীলাও বিরক্ত হয়ে আবির কে বলে দেয় যে,
নীলা আমাকে ভালোবাসে। আবিরের সাথে
সম্পর্কে জড়ানো নীলার পক্ষে সম্ভব নয়।
আবির অনেক বড় একটা শকড খায়। ভেঙ্গে যায় তার
সকল স্বপ্ন। আবির ও আমার মত না পাওয়ার বেদনায়
ডিপ্রেশনে ভূগতে থাকে। ধীরে ধীরে
আবিরের অবস্থাও আমার মত হতে থাকে। যেদিন
আমি নীলাকে প্রপোজ করি, সেদিন আবিরের বাবা
মা নীলাদের বাসায় আসে। তারা বলে, আবিরের
অবস্থা গুরুতর। সারাদিন নীলা নীলা বলে চিত্কার
করে।
নীলার বাবা সেদিন রাতেই নীলাকে পাঠিয়ে দেয়
আবিরের বাসায়, আর বলে দেয় আবিরকেই বিয়ে
করতে হবে।
নীলা তার বাবার মুখের ওপর কিছু বলতে পারেনি।
নীলা ব্যস্ত হয়ে ওঠে আবিরকে সুস্থ করায়।
কিছুদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠে। নীলা আর
আবির নীলাদের বাড়িতে আসে। এখানে এসে
আবির জানতে পারে আমার সম্পর্কে। আবির
বুঝতে পারে, আমিও অপূর্ণতায় ভূগছি। আবির
নীলাকে আমার কাছে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু,
আবিরের সাথে থেকে নীলা আবিরকে
ভালোবেসে ফেলে।
আমাকে হাসপাতালে দেখে ও আর আমাকে কিছু
বলতে পারেনি।
.
ভাবছি, এখন কি করব? বেচারা আবির না জানি কেমন
আছে? আর নীলা কেমন আছে সেটা তো
দেখতেই পাচ্ছি। আর আমি? আমিও ভালো নাই।
সেদিন নীলাকে কাছে পেয়ে হয়ত জড়িয়ে
ধরেছিলাম ঠিকই, কিন্তু ততক্ষনে আমি নেহাকে
ভালোবেসে ফেলেছিলাম।
.
ফোনটা বেজে উঠল, হাসপাতাল থেকে ফোন
এসেছে। ফোনটা রিসিভ করলাম, একটা রোগী
এসেছে গুরুতর অবস্থা।
কি অসুখ জানতে চাইলাম, বলল কোন কথা বলে না,
খাওয়া দাওয়াও নাই। শুধু ফাহমি ফাহমি বলে চিত্কার
করছে।
এবার আমি কিছুটা হতবাক হলাম, জানতে চাইলাম
পেশেন্টের নাম কি? বলল, নেহা।
আমি একটু হাসলাম, বেচার নেহাও তাহলে অপূর্ণতার
বাসরঘরে ঢুকে পড়েছে!
.
একটা ছোট চিরকুট লিখলাম, নীলা! আবিরের
কাছে যা। আমি নেহার কাছে যাচ্ছি। চিরকুট টা
নীলার টেবিলে রেখে হাসপাতালের দিকে
চলতে শুরু করলাম...........।
.
.
writter: অগোছালো হৃদয় (Nafis Intehab
Fahmi)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now