বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
এক নজরে নবীজির সিরাত
লেখকঃ নাফিজ আহমেদ,,
কোন এক নিকষ কালো আধারে ঘেরা প্রহরে ইসলামের অতন্দ্র প্রহরী হয়ে আগমন ঘটিয়েছিলে এই আলোহীন ধরায়। যেখানে সভ্যতার কোন অবকাশ ছিল না। চারদিকে বিরাজমান ছিল অশ্লীল ও গর্হিত কাজের সমাহার। সমস্ত খারাপি কর্মকান্ডকে ভেঙ্গে নৎসৎ করে প্রতিষ্ঠিত করেছিল ভালো কাজের বিরাট সংগঠন। তখনো তাঁর নিকট ওহি অবতীর্ণ হয়নি,তবুও কেন জানি কোন প্রকার অশ্লীলতা তাঁর ভালো লাগেনা। মানবতার কল্যাণে স্থাপিত করলেন শান্তির সংঘ। যেখানে বিদ্যমান ছিল সর্বোত্তম কাজের এক বিরাট ভান্ডার। অসহায় মানুষেরা একটু মাথা গোঁজার জন্য ছুটে আসে তাঁর নিকট। হয়তোবা দেড় হাজার বছরের সেই সকল পুরাতন মানুষেরা জানত মুহাম্মদ এমন একজন ব্যাক্তি যার কাছে কোন আবদার নিয়ে গেলে খালি হাতে ফিরে আসতে হতো না। তিনি এমন একজন মহান মানব ছিল যার কাছে একটি পোশাক থাকা সত্বেও অন্য লোক চাইলে নিজ শরীর থেকে খুলে তাকে দিয়ে দিত। তাঁর চরিত্র ছিল মহান। তিনিই গোটা ভূবণের মানবসমাজের আদর্শ। এতিম মিসকিনদের জন্য নিজের সর্বোত্ত দেওয়ার প্রায়শ ছিল তাঁর। তাঁর বিশ্বস্ততা এত বেশি ছিল যে,মানুষেরা দলে দলে এসে তাঁর কাছে নিজেদের গচ্ছিত মান রেখে যেত বিনা চিন্তায়। মক্কার মানুষেরা এতটাই তাঁকে বিশ্বাস করত যে, তাদের অর্থ- সম্পদ মুহাম্মদ সঃ এর কাছে থাকা অবস্থায় কখনো চিন্তা করেনি। এভাবেই কাটতে থাকে অনেকটা প্রহর। তাঁর সততা দেখে নিজের দায়িত্বশীলাই তাঁর প্রতি মুগ্ধ হয়ে যায়। তাঁর আমানতদারিতা আর ব্যবসায়ে পারদর্শিতা দেখে তাঁর মালকিনই তাঁকে বিবাহের প্রস্তাব দিল। অবশেষে কোন এক হঠাৎ দুপুরে আবু তালিব নিজে খুৎবা পড়ার মাধ্যমে আপন ভাতিজার বিবাহানুষ্ঠান সম্পূর্ণ করল। দাম্পত্য জীবন ভালোই কাটতে থাকল তাদের। বৈবাহিক জীবনে নিজেদের ভিতর কখনো কোন রকম ঝগড়া বিবাদ হয়নি। এক মধুর সম্পর্কের মধ্যে নিমজ্জিত ছিল তাঁরা। এভাবে কাটতে থাকল অনেকটা বছর। মুহাম্মদ বিন আব্দুল্লাহ এখন আর খুব একটা আপন নীড়ে অবস্থান করেনা। তাঁর কাছে একাকিত্বই যেন অনেকটা বেশি ভালো লাগে। এইজন্য প্রায়ই নিজ বাসভবন ছেড়ে চলে যায় দূরের ঐ পর্বতের চূড়ায়। রাতদিনের সিংহভাগ সময় সেখানে অবস্থান করেন। প্রতি ওয়াক্তের খাবার নিজ স্ত্রী আপন হস্তে বহন করে নিয়ে আসে দরদী স্বামীর নিকট। নিজের দায়িত্ব ইতি করে ফিরে আসে আপন নীড়ে। এমনই ভাবে অতিবাহিত হয় অনেকটা মাস। হঠাৎই কোন এক নিকষ কালো আধারে ঘেরা রজনীতে আগমন করে এক বিরাট দেহের প্রাণী। যাকে দেখে ভীতু সন্ত্রস্ত হয়ে দন্ডায়মান থাকে এক জায়গায়। বিরাট দৈত্যের ন্যায় জীবটি তাঁকে আপন বক্ষদেশে অনেক জোরে চাপুনি দিয়ে ধরে রাখে। কিছুক্ষণ পরে সে যেন বাতাসের ন্যায় মিলিয়ে গেল। মুহাম্মদ সঃ ও ভয়ে ভয়ে দ্রুত চলে আসল নিজ বাড়িতে। স্ত্রীকে বলল আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। কিছুক্ষণ পরে তাঁর আপন গৃহিণী তাঁকে দরদ মাখা কন্ঠে বলে উঠল আপনি ভয় পাবেন না। আপনিতো মানুষকে সহযোগিতা করেন। এরপর থেকে তাঁর জীবনে ঘটতে থাকে হতভম্ব করা বিভিন্ন ঘটনা। মাস কয়েক পর তিনি অবগত হলো যে আল্লাহ তায়ালা তাকে নিজের পয়গম্বর করে এই ধরায় প্রেরণ করেছে। এভাবে কেটে যায় আরও অনেকটা প্রহর। হঠাৎ কোন এক পাতা ঝড়া
প্রহরে এই ধরাকে সরা করে ভালোবাসার স্বামীকে একলা করে খাদিজা রাঃ পারি জমায় এক অজানা অচেনা গন্তব্যে। আকাশ বাতাস চারপাশের মনোমুগ্ধকর পরিবেশকে অঝোরে কাঁদিয়ে তিনি চলে যান পরলোকগমনে। নবীজি সঃ নিজের বুকের ভেতর পাহাড় সমান কষ্ট চাপা দিয়ে তাঁর ভালোবাসার স্ত্রীকে শেষ বিদায় দেওয়ার জন্য সবকিছু প্রস্ততি করছেন। কয়েকদিন পর আবারো কঠিন শোকের ভিতর ডুবে গেলেন নবীজি সঃ। তাঁর কাছের চাচা আবু তালেব সকলকে কাঁদিয়ে পরকালের উদ্দেশ্য পারি দিলেন অনেকটা পথ। একই বছর দুইজন কাছের মানুষকে হারিয়ে বাকরূদ্ধ হয়ে নির্জনে নিশাচর প্রহরে একাকী উপবিষ্ট আছে কাবার হাতীমে পাশে। এমনত অবস্থায় আগমন ঘটালো হযরত জিবরাইল আঃ, তিনি নবীজিকে নিয়ে রওনা দিলেন গোটা জাতিকে হতবাক করার জন্য এমন এক সফরে যেই ভ্রমণটা করার জন্য শয়ন নবীজিও প্রস্তুত ছিলেন না তখন। হ্যাঁ তিনি চলে গেলেন আল্লাহ তায়ালা নিকট মিরাজের মাধ্যমে। মিরাজের ঘটনা মানুষদেরকে জানালে তেমন কেউ বিশ্বাস করতে চাই না। তবে তাঁর কাছের বন্ধু হযরত আবু বকর রাযিঃ অকপটে বিশ্বাস করল তাঁর এই অবিশ্বাস্য সফরের কথা। এভাবে তারা ধীরে ধীরে গোটা মানব জাতির নিকট ইসলামের বার্তা পৌঁছাতে থাকে। আল্লাহর সুমহান বার্তা বিলিয়ে দিতে থাকে সমাজের প্রতিটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও থেমে থাকেনি নবীজি। বিদায় হজ্জের ভাষনের মধ্যে দিয়ে সমস্ত মুসলিম মিল্লাতের কাছ থেকে ইহকালিন বিদায় কৌশলে নিয়ে নেন। সেদিন অনেক সাহাবী তাঁর এই বক্তব্য শ্রবণ করা মাত্রই অঝোরে ক্রন্দন করছিলেন। কেননা তাঁরা অনুভব করছিলেন নবীজি হয়তো আর বেশিদিন তাদের ভিতর থাকবেন না। নবীজি সঃ সাহাবিদের অবলোকন করে এক উৎফুল্লতা অনুভব করত। আপন মনেই আনন্দ উপলব্ধি করত। অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকা এক মূর্খতায় ভরে থাকা যুগকে রুপায়িত করল এক সোনালী যুগে। যেই যুগের মানুষগুলো ছিল সোনার থেকেও মূল্যবান। এইজন্য নবীজি সঃ সকলের সম্মুখে গর্বের সাথে ব্যক্ত করল আমার যুগ সেরা যুগ। আর এই সোনালী সময়েই পড়ন্ত বিকালে ডুবন্ত সূর্যের ন্যায় রসুল সঃ মা আয়েশা রাঃ এর গৃহে নিজের জীবনের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পৃথিবী থেকে হারিয়ে গেলেন এই ইহজগৎ এর রহমাতুল্লিল আলামীন। যার বিয়োগ বেদনায় ক্রন্দন করেছিল আকাশ, বাতাস, জমিন,পাহাড় পর্বত, বৃক্ষরাজি আরও সবকিছু। হযরত উমর রাঃ কেন জানি বিশ্বাসই করতে চাচ্ছিল না যে নবীজি সকলের থেকে পারি জমিয়েছেন এক অজানা অচেনা জগতে। পৃথিবী হারিয়ে ফেলল এক মহামানবকে। যিনি আর কখনো ফিরে আসবে না এই সুন্দর ধরায়। হয়তো বা আজও ঐছোট ঘরটাতে উম্মাতের জন্য দোয়া করতেছে। এক নিষ্ঠুর প্রহরে আপনি চলে গেলেন আমাদের সকলকে রেখে। আমরাও ঐ একই পথের পথিক। হে আল্লাহর রসুল সঃ।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now