বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

দুই বন্ধুর পবিত্র ভালোবাসা

"শিক্ষণীয় গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান নাফিজ আহমেদ (০ পয়েন্ট)

X দুই বন্ধুর পবিত্র ভালোবাসা লেখক নাফিজ আহমেদ রাত প্রায় ১১ টা,,চোখে ঘুম নাই,, মনে হলো কিছু একটা লিখি,, কিছুক্ষণ চিন্তা করলাম কি লেখা যায়! তাৎক্ষণাৎ গল্পের কাহিনিটা মাথায় চলে আসল,, চলুন শুরু করা যাক আজকের লেখা--- এর আগে ভালোবাসা নিয়ে একাধিক লেখা আমার ঝুড়িতে আছে। তবে আজকে একটা অন্য রকম ভালোবাসার গল্প শেয়ার করব। এটা দুই বন্ধুর পবিত্র ভালোবাসা। রাজ এবং তাজ একই দিনে এই সুন্দর পৃথিবীর সৌন্দর্যকে অবলোকন করে। অর্থাৎ তারা একই দিনে এই ধরার মেহমান হিসাবে আগমন ঘটায়। ধীরে ধীরে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে তারা বড় হতে থাকে। বুদ্ধি জ্ঞান যখন হলো তখন তারা অবগত হলো যে দুইজনই একই দিনে এই ভূমন্ডলে নতুন অতিথি হয়ে আসে। তাদের পথচলা হয় একই সাথে। অধিকাংশ সময়ই তারা একই সাথে থাকত। রাজ ও তাজ একই ক্লাসে পড়ালেখা করত। তারা দুইজনই পড়ালেখায় অনেক ভালো ছিল। পড়ালেখা শেষ করে দীক্ষিত হয় কর্মজীবনে। রাজ এখন একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে এবং তাজ একটা কলেজের প্রভাষক। ভালোই কাটছিল তাদের দিনগুলি। নিজেদের কর্মব্যস্ততাকে উপেক্ষা করে তারা দিনশেষে একই বাসায় চলে আসে। তারা এখনও বিবাহ করেনি। তবে পরিকল্পনা আছে কয়েকমাসের মধ্যেই বিবাহ করবে। প্রতিটা দিন রুটিন মাফিক অতিবাহিত হচ্ছিল তাদের। তবে হঠাৎ একদিন রাজ অফিসে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে পরে। অফিসের অন্যান্য চাকুরীজীবিরা যতদ্রুত সম্ভব তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। ডাক্তার তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করে। শরীরের নানান অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরিক্ষা করে। ডাক্তার অবাক হয়ে এক অপলক দৃষ্টিতে রাজের দিকে চেয়ে আছে। তাজ তখন কলেজেই ছিল। সে তখনও জানত না তার কাছের বন্ধুর এত বড় একটা সমস্যা হয়েছে। রাজকে যারা হাসপাতালে নিয়ে এসেছে ডাক্তার তাদেরকে রাজের পরিবারের কাছে খবর দিতে বলে। তাজ ছাড়া এই শহরে রাজের কাছের কেউ নেই। এই জন্য তাজকে অবহিত করা হলো যে রাজ এখন হাসপাতালে আছে যতদ্রুত সম্ভব সে যেন হাসপাতালে চলে যায়। তাজ আর এক মূহুর্তও দেরি না করে চলে আসল হাসপাতালে এবং রাজের দিকে এক নজরে চেয়ে আছে। ডাক্তার তাজের কাছে আসল এবং তাজকে জানালো যে রাজের দুইটা কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে এবং তার অবস্থা খুব একটা ভালো না। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে তার শরীরে কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে নতুবা তাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। ডাক্তার তাজকে বললো রাজের ব্লাডগ্রুপ A+ সুতরাং তাড়াতাড়ি এই গ্রুপের ডোনার অন্বেষণ করেন। তাজের মুখে কেমন যেন হাসির কিরণ চমকাচ্ছে। সে ডাক্তারকে বলে-ডোনার প্রস্তুত আপনি যৎতাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশনের বন্দোবস্ত করুন। ডাক্তার বলল এটা রক্তের ডোনার না যে এত দ্রুত পাওয়া যাবে! কে দিবে? তাজ বলল আমার রক্তের গ্রুপ A+ সুতরাং আমি আমার কিডনি আমার বন্ধুকে দিব। সবকিছু প্রস্তুত হয়ে গেল তাজও কিডনি ডোনেট করার জন্য অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করেছে। কিছুক্ষণের মধ্যে অপারেশন সম্পূর্ণ হয়ে গেল। রাজের জ্ঞান ফিরল কিন্তু তাজের জ্ঞান ফিরল না। সে সবাইকে ছেড়ে চিরদিনের জন্য এই পৃথিবীর ত্যাগ করে চলে গেল। আসলে তাজেরও একটা কিডনির সমস্যা ছিল কিন্তু সে কখনো ডাক্তারসহ অন্যান্যদেরকে জানায়নি। কেননা তার প্রাণের রাজ তার সম্মুখে মারা যাবে এটা তাজ কখনোই সহ্য করতে পারবে না। এই জন্য নিজের জীবন দিয়ে হলেও বন্ধুকে বাঁচিয়ে এই ধরাকে পর করে হয়ে গেল পরকালের পথের পথিক। রাজ এই খবরটা অবগত হয়ে চিৎকার করে কেঁদে উঠল এবং সে কখনোই ভাবতে পারেনি তাজ এমনটা করবে। ডাক্তার রাজের কাছে একটা লেখা দিয়ে বলল তাজ এটা তোমাকে দিয়ে গেছে। তাজ জিজ্ঞাসা করছিল তোমার সাথে কথা বলা যাবে কিনা? কিন্তু তুমি তখন অজ্ঞান হয়ে ছিলে এইজন্য আমি বলেছিলাম না। পরে এই চিঠি সে তোমাকে দিতে বলেছে। প্রিয় রাজ,, আমি কখনো ভাবতেও পারিনি এমন একটা দিন আমার সম্মুখে আসবে। আজ ডাক্তার বলল চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে তোকে কিডনি দিতে না পারলে তুই বাঁচবি না। আমি জানি আমার একটা কিডনি দিলে আমি হয়তো আর বাঁচবো না। তবে আমি তোকে খুব ভালোবাসি। তোর লাশ আমি কখনো দেখতে পারব না। এইজন্য নিজের কথা না ভেবে চলে গেলাম সবাইকে ছেড়ে। যদি কোন ভুল করি মাপ করে দিস। ইতি, তোর তাজ চিঠিটা পড়ে তাজের চোখের কোনা দিয়ে কি যেন এক দুঃখের জলের ফোয়ারা বয়ে পরছে জমিনে বুকে। অবশেষে রাজ সুস্থ হয়ে গেল এবং সে ধীরে ধীরে তার স্বাভাবিক জীবনের দিকে পদার্পণ করছে। তবে তাজকে ছাড়া সে ভিষণ একা হয়ে গেল। প্রায়ই তাজের কবরের পাশে গিয়ে তার জন্য দোয়া করে। এভাবেই শেষ হয় দুই বন্ধুর বিচ্ছেদ। ইতি হয় দুই বন্ধুর পবিত্র ভালোবাসা।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২৩০ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now