বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

দ্য লস্টেড কোডেক্স গিগ্যাক্স

"ভৌতিক গল্প " বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান সারোওয়ারে জুলফিকার (০ পয়েন্ট)

X কমলাপুর রেল ষ্টেশন। ১৯৬৬ সালে ভার্জিনিয়ার কোম্পানির তত্ত্বাবধায়নে রবার্ট ড্যানহাম এই সুন্দর ষ্টেশনটির নকশা করেন। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ ষ্টেশনে প্রচন্ড ভিড়। কারন চার দিন পরেই ঈদ। লঞ্চ, বাস, ট্রেন যে যেখানে যেভাবে পারছে যাচ্ছে। উদ্দ্যেশ্য বাড়ি ফেরা। বশির, আদনান, রাশেদ সহ মোটে পাচ জন ঢাকার বিভিন জায়গা থেকে কমলাপুর রেলষ্টেশনে একখানে হয়েছে এক সাথে বাড়ি ফিরবে বলে। চারজনকেই পাওয়া গেল একজন ছাড়া। লেটম্যান হিসেবে আদনানের খ্যাতি আছে। সব কাজে দেরি করা ওর পুরনো অভ্যাস। সব শেষে এলো আদনান। তবে ততক্ষনে পাশের প্লাটফর্মে এক জেতিসকে হাত দেখাতে বসে গেছে ওরা। বন্ধুদের জোরাজুরিতে আদনানও হাত দেখাল। তবে জেতিসদের যাত্রা অমঙ্গল, কর্ম সফলের ভবিষ্যৎবানী ছেড়ে ব্যতিক্রমী এক ভবিষ্যৎবানী করে বসল। আপনার মৃত্যু হবে একটি শয়তানের কারনে। খুব ভয়াবহ ভাবে। আদনান জেতিসকে টাকা দিতে চাইলে উনি নিলেন না। নাম জিজ্ঞেস করতেই বলল আনেকেই আমাকে তারানাথ তান্ত্রিক নামেই চেনে। কিশোরী সেনকে তো চেনেন? বলতেই বশিরের ডাক শুনল। ‘ট্রেন ছাড়বে, তাড়াতাড়ি আয়’।বশিরকে ‘আসছি’ বলে পিছনে ফিরে তাকাতেই জেতিসকে আর দেখা গেলনা। নাহ তাকে আর খুজেই পাওয়া গেলনা। বলে রাখা ভাল তারনাথ তান্ত্রিক হল তারানাথ বন্দোপধ্যায়ের বিখ্যাত ভৌতিক গল্প গ্রন্থ আর কিশোরী সেন হল সে গল্পের একটি চরিত্র। এখনও গল্পগুলিকে অনেকেই সত্য বলে বিশ্বাস করেন। দুদিন আগের ঘটনা। আদনান কয়েকদিন যাবত একটা স্বপ্ন প্রতি রাতেই দেখে যাচ্ছে। পাহাড় থেকে নেমে আসা একটা নদীর ওপাশে গভীর বনের ধারে দাড়িয়ে আছে আদনান। বন থেকে একটি লাইন ভেসে আসছে ‘লুসিফার আদেশ, গিগাক্স তোমায় চায়’। এ রকম পাহাড়ি বনাঞ্চল ভুটানে বেশি দেখতে পাওয়া যায়। অনলাইনে অনেক ঘেটে ভুটানের এই জায়গাটার ঠিকানা বের করে ফেলেছে সে। জায়গাটার নাম ডুয়ারস, ভুটানের সবচেয়ে সুন্দর স্থান। গিগাক্স শব্দটা আসলে আদৌ কোন শব্দ কিনা তা নিয়েই সংশয়ে আদনান। বেশ কিছু মাস আগে আদনানের মায়ান সভ্যতার উপর একটা বই লিখে পাঠক মহলে বেশ সারা পায়। এ জন্যে তাকে দেশি বিদেশি বইও পড়তে হয়েছে প্রচুর। সে সবের কোন একটা বই থেকে জেনেছে লুসিফার শয়তানের আরেক নাম। পৃথিবীর নানা দেশে লুসিফার তথা শয়তানের উপসকদের কথা শোনা যায়। তারা লুসিফারের সন্তুষ্টি অর্জন করে পৃথিবীটা হাতের মুঠোয় নিতে চায়, হতে চায় অমর। লুসিফারের সন্তুষ্টির জন্যে এমন কোন জঘন্য কাজ নেই যা তারা করে না। তাহলে কি আদনান শতানের পাল্লায় পড়ল! মাঝে মাঝে পো ঝিক ঝিক শব্দ করে ট্রেন চলছে। দুটো করে সিটের বিপরীতে দুটো সিট মাঝখানে টেবিল। চার জন বন্ধু আগেই এসে বসে গেছে। আদনান একা পড়ে গেল। বন্ধুদের মুখে অবশ্য তার জন্যে একটুও মায়া দেখা গেল না। পরের একটা সিট তার জন্যে বরাদ্দ ছিল, সেখানেই বসতে হল তাকে। আদনান এখন ভীষণ ক্লান্ত। ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে মুখে দিয়ে ঘুমতে যাবে এমন সময় একটা মেয়ে এসে তার বিপরীত পাশে এসে বসল। মেয়েটা কাধে একটা ব্যাগ, হাতে একটা বই। সে দিকে খেয়াল না করেই রুমালখানা চোখে মুখে মেলে দিয়ে আদনান ঘুমিয়ে গেল। সম্ভবত বিসয়টা যদি ওর বন্ধুরা দেখে থাকে এবার তারা আপসোস করবে। তবে এ নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথা নেই। কারন লেখক হিসেবে নিজের ব্যক্তিত্ব আর ভাবসাব বেশ গম্ভীর পর্যায়ে নিয়ে গেছে সে। ঘুমের ভেতর আদনান আবার স্বপ্ন দেখে। এবার একটা জেলের কক্ষে বন্দি সে। তার সামনে বিশাল সাইজের একটা বই যেটা সে সপ্নে দেখেছিল। সামনে রাজকীয় পোশাক আরমীন কোট পরিহিত একজন বীভৎস মানুষ। চিৎকার করে বললেন, ‘স্বাগত নরকের রাজপুত্র লুসিফারের জগতে। গিগাক্সকে জীবন্ত করে তোল, লুসিফার আবার পৃথিবীতে ইতিহাস হবে’। বিশাল সাইজের বইটা কাপতে কাপতে আদনানের দিকে ধেয়ে আসে খাড়া হয়ে। প্রচন্ড জোড়ে হাসতে থাকে নরকের রাজপুত্র লুসিফার। আদনান বাচাও বলে চিৎকার দিয়ে ওঠে। এক ঝটকায় ঘুম ভেঙ্গে যায়। সামনে বই পড়া মেয়েটা ব্যাগ থেকে একটা পানির বোতল বের করে দেয়। ঢক ঢক করে পুরোটা শেষ করে। একটা ধন্যবাদ দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে একটু হাটাহাটি করে সে। হাটতে হাটতে কেবিনের শেষ মাথায় চলে আসে। দরজায় একজনকে বাহিরের দিকে তাকানো দেখে। গেরুয়া রঙের ধুতি আর গায়ে শাল জড়ানো। লোকটার পিছনে দাড়াতেই লোকটা বলে ওঠে, লুসিফার আপনাকে ছাড়বে না। আদনান প্রশ্ন করে গিগাক্স আসলে কি? ‘বেন্ডিক্ট আশ্রমে বসিয়া মেনাকো লুসিফারে জপে, লুসিফারে সে জীবনখানা শপে। ভাগ্যসঙ্খ্যা ৭ তম কালে, লুসিফারের ক্ষমতা প্রাগ রাজ্যে জ্বলে’। ছড়া কেটেই সন্নাসি হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। আদনান কেবিনের দরজায় দাড়িয়ে ভাবতে থাকে, নতুন করে আবার যুক্ত হল ‘বেন্ডিক্ট আশ্রম আর মেনাকো’! কোথায় বেন্ডিক্ট আশ্রম? কেই বা এই মেনাকো? বিঃদ্রঃ কোডেক্স গিগাক্সকে কিছু জায়গায় জিগাক্স হিসেবে উচ্চারন করা হয়েছে।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১৪৭ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now