বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
শেষটা সুন্দর
লেখকঃ নাফিজ আহমেদ,,
মা বাবার আদরের মেয়ে স্মৃতি। কে জানত এই অল্প বয়সে তার জীবনে এমন কঠিন সময় আসবে! বাবা-মা যাচাই-বাছাই করে নিজেদের মেয়েকে বিবাহ দিল বকুলের সাথে৷ সুখেই অতিবাহিত হচ্ছিল তাদের দাম্পত্য জীবন। বিয়ের বছর খানিক পর আপন ঘর আলো করে আগমন ঘটালো এক মেয়ে সন্তান। বাবা আদর করে নাম রাখলেন ওড়ান। প্রতিটা প্রহর তারা ওড়ানকে নিয়েই ব্যস্ত থাকত৷ সবসময় মেয়ের সুখের কথাই চিন্তা করত। এইভাবেই কাটছিলো প্রতিটা দিন। কিছুদিন পর বকুল আবারো ওয়াকিবহাল হলো যে তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। সেতো খুবই খুশি। নিজেরা আবারো তাদের স্বপ্নের দেশে নতুন মেহমানকে সাদরে গ্রহণ করার জন্য অপেক্ষায় আছে। নতুন মেহমানকে নিয়ে তারা এক বৃহৎ পরিকল্পনা করে রেখেছে। কিন্তু সবাই কি আর সব পাই! হঠাৎ নিকোষ কালো আধারে ঘেরা কোন এক রজনীতে বকুলের বুকে ব্যাথা উঠল। প্রতিবেশিরা তাকে হাসপাতালে নিতে নিতে ততক্ষণে সে চলে গেছে এই পৃথিবীর সমস্ত মায়া ত্যাগ করে। হ্যাঁ, বকুল পারি জমিয়েছে এক অজানা অচেনা জগতে। যেখানে সে শুধু একা। তার সাথে আর কেউ থাকবেনা ঐ অন্ধকার ঘরে। খবরটা স্মৃতির কর্ণকহরে পৌছানো মাত্রই যেন তার পৃথিবীর সবকিছু সংকোচিত হয়ে তার থেকে চলে গেল। স্বপ্নগুলো নিমিষেই ধুলিসৎ হয়ে গেলো। সে হারিয়ে গেল এক গভীর ভাবনার অতল গহব্বরে। নতুন মেহমানকে নিয়ে কত কিছু ভেবে রেখেছে তারা,কিন্তু মেহমান আসার আগেই বকুল চলে গেল। স্মৃতি এখন সম্পূর্ণ একা হয়ে গেলো। সংসারে উপার্জন করার মতো কেউ নেই। সে কি আর করবে! পরিবারকে সম্মুখে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিজেই হাল ধরে এই সংসারের। সেলাই মেশিনের কাজ করে কোন রকম অতিবাহিত করে নিজেদের দিনগুলি। আজ দুই বছর হয়ে গেলো এই ভাবেই কাটছে স্মৃতির প্রহরগুলো। উড়ান এখন অনেকটাই বড় হয়ে গেছে। তার সাথে নতুন মেহমান তারও এখন প্রায় দুইবছর বয়স। স্বামী অচেনা শহরে পদচারণ করেছে বিধায় ছেলের নাম রেখেছে অচিন। ধীরে ধীরে সংসারও বড় হয়ে গেছে। দুই সন্তানের চাহিদা মেটাতে স্মৃতি একা অপারগ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু উপরে তো একজন আছেন, উনি সবকিছু সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। স্বামীর মৃত্যুর পর সে সেলাই মেশিনের কাজ করে নিজেদের জীবিকাহ নির্বাহ
করত এবং পাশাপাশি কম্পিউটার শিখত। স্মৃতি একজন শিক্ষিতা মেয়ে ছিল এইজন্য সে কয়েক জায়গায় চাকরির আবেদন করে রেখেছিল। কোন এক পড়ন্ত বিকালে সে অবহিত হয় যে তার আবেদন মঞ্জুর হয়েছে অর্থাৎ তার চাকরি নিশ্চিত হয়েছে। সে তো খুশিতে আত্মহারা। কিছুদিনের মধ্যে সে তার চাকরিতে যোগদান করে,এবং যথারীতি কাজও করতে থাকে। তার কাজের জন্য ভালো একটা বেতন পাচ্ছিল, এবং নিজের সংসার আবারো নতুন করে গোছাতে শুরু করল। আবারও নিজের সন্তানদেরকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে আরম্ভ করল। এইভাবেই একজন স্বামী হারা মেয়ে জীবনের সমস্ত বাঁধাকে উপেক্ষা করে সম্মুখে অগ্রসর হতে থাকে।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now