বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
#আরব্য_বেদুঈন
#পর্ব_০৬
মরুভূমির বৃষ্টি উপরওয়ালার আশির্বাদ। আজ বৃষ্টি হচ্ছে। মেহের দৌড়ে এলো আমার কাছে। আমি বৃষ্টিতে ভিজতে পছন্দ করি না। তাঁবুর ভেতরেই বসে ছিলাম। মেয়েটাকে ও আয়েশার তাঁবুতে নিয়ে গেছে। আয়েশা, যে এখন আবদুল্লাহর সঙ্গী হয়েছে। আবদুল্লাহর সঙ্গেই থাকতে গেছে আয়েশা আবদুল্লাহর তাঁবুতে। তাই তাঁবুটা এখন খালি। মেহের বুদ্ধিমতি। জঙ্গবাজ মেয়েটাকে শান্ত করেছে ও। মেয়েটা প্রথমে খুদকুশি করতে গিয়েছিলো। মেহের করতে দেয়নি। দলে এতোগুলো মেয়ে দেখে মেয়েটা মনে সাহস পেয়েছে। বিশ্বাস করেছে মেহেরকে। নিজের নাম বলেছে, মোতিজান। মোতি বলেই ওকে ডাকবে বলেছে মেহের। তাঁবুটায় আরো তিন চারটে সুন্দরী বাঁদীর থাকার বন্দোবস্ত হয়েছে। ফলে, মোতি একা থাকবে না।
এতোক্ষণ এই সব কথা বকর বকর করছিলো মেহের। ও ভিজে গেছে। আমি ওর ভিজে রূপটা দেখছিলাম বসে বসে। বাবুর্চির ওদিকটা থেকে খুব সুন্দর গন্ধ আসছিলো, উমদা খানা বানাচ্ছে লোকটা। খুশি হয়েছে ইনাম পেয়ে। মেহেরের ভিজে চুল থেকে টুপ করে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো ওর ঘাড় বেয়ে। উঠে দাঁড়ালাম, ওর কানের ঝুমকোয় এক বুঁদ জল। আমি আমার শুকনো ঠোঁট ভিজিয়ে নিলাম। ওর ভিজে স্তন স্পর্শ করলো আমার জিভ।
- আমি কিন্তু কিছু বলছি! কথা গুলো কানে যাচ্ছে কি? ও এখন আগের থেকে অনেক সাহসী।
- শুনছি তো, বলো। ওর ঘাড়ের অবিন্যস্ত চুলগুলো আঙ্গুল দিয়ে সরিয়ে দিতে দিতে বল্লাম, আমার কান যে কাজ করে, ঠোঁট তো অন্য কাজ করে!
- তাহলে আগে ঠোঁটের ব্যবস্থাই করি! পরে না হয় সময় সুযোগ দেখে কথা বলা যাবে।
- কি বলছো, বলো না! শুনছি তো!
- মেয়েটা আবুবকর দস্যুর মেয়ে। আবুবকর মরে যেতে দল ভেঙে যায়। অল্প যে কজন ওয়াফাদার সঙ্গী ওকে ছাড়েনি, ওরাই ওকে দলপতি বানিয়ে এতোদিন দল চালাচ্ছিলো। ভালোই চলছিলো দলটা। ছোটখাটো শেখেদের ব্যবসার মাল লুঠ করে। কাল হলো তোমার সঙ্গে যুদ্ধ করে। দল তো তোমার সঙ্গে যুদ্ধ করে শেষ হয়ে গেল, ওও মরতে চেয়েছিলো। আমি ওকে মরতে দিইনি। কি ভালো করিনি? বলো?
- হুম! তারপর পিঠপিছে ছুরি মারবে আমার। আস্তিনের সাপ হয়ে বসে থাকবে আমার দলেই। সুযোগ বুঝে কোতল করবে আমাকেই।
- খুব বীর পুরুষ দেখছি।
- এর সঙ্গে বীরের কী আছে। ঘুমের মধ্যে ছুরি বসিয়ে দিলে, কি করতে পারবো আমি!
- তা ও করবে না!
- তুমি জিম্মাদারি নিচ্ছো?
- নিচ্ছি!- কতটুকু চেনো ওকে? দো ওয়াক্তের পরিচয়!
- আমি একটা মেয়ে! তুমি ওর ইজ্জত লোটো নি! ও তোমাকে ঘৃনা করতে পারে না!
- ইজ্জত দিইও নি! বে আব্রু করে দিয়েছি যুদ্ধের ময়দানে সকলের সামনে। সেটা কি কম বেইজ্জতি?
- ওটা তো শিক্ষা দিয়েছো! বিশ্বাস না করার জন্য। বে আব্রু করেও একটাও মরদ ওর দিকে তাকায় নি। সেটা কি ও বোঝেনি ভাবছো?
- বুঝেছে?
- মেয়েরা সব বোঝে! তুমি ওর শরীর থেকে এক ফোঁটা রক্ত বের না করে, ওর জঙ্গবাজীর অহংকারকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছো। ও তোমার বশ্যতা মেনে নিয়েছে।
- হাঃ হাঃ হাঃ! তুমি বড়ো নাদান মেহের। এটা ওর ছলনা! সুযোগ পেলেই প্রতিশোধ নেবে তোমার ওই মোতি!
- সুযোগটা তুমি দেবে কেন?
- মতলব?
- কিছুই না! তুমি ওকে নিকাহ করো!
- পাগল নাকি? এক তাঁবুর নিচে ওর সঙ্গে ঘুমোতে হবে! এর থেকে তুমি আমার মাথাটা চেয়ে নিতে পারতে আমার কাছ থেকে!
- এতো ভয় তোমার? আমি তো জানতাম তুমি মারতেও যেমন ভয় পাও না! মরতেও তেমন ভয় পাও না!
- এ তো জেনে বুঝে মৃত্যুকে বুকে জড়িয়ে নেওয়া।
- হাটো বুদ্ধু...!
মরুভূমির বৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। থেমে গেছে বৃষ্টি, রোদ উঠেছে, ভিজে মাটিতে বৃষ্টি পড়লে যেমন একটা সোঁদা গন্ধ বের হয়, ঠিক তেমনি ভিজে বালিতে বৃষ্টি পড়লে একটা অদ্ভুত রকমের গন্ধ বের হয়। সেই গন্ধটা নাকে আসছিলো। দুরে যুদ্ধক্ষেত্রের আকাশটায় কালো করে উড়ছে চিল শকুনের দল। ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে এসেছে ওরা মানুষের তাজা মাংস খাবে বলে। আমি জানি শেয়াল গুলোকে শান্তিতে খেতে দিচ্ছেনা ওরা। কখনো লেজ ধরে টানছে, কখনো মাংস গুলো ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা করছে।
এ রকম যুদ্ধের শেষে ওদের ভুরিভোজ চলে বেশ কয়েকদিন। মরা মানুষ গুলোর ক খানা শক্ত হাড় ছাড়া সব কিছু চলে যায় ওদের পেটে।
আমাদের ভোজের সময় হয়ে গেল। থালা বাজিয়ে বাবুর্চি জানিয়ে দিলো খানা তৈয়ার। মেহের আর দাঁড়ালো না। আবার দৌড়োলো ওর নতুন সহেলীকে খাবার জায়গায় নিয়ে আসতে। একে একে দলের সব বান্দা বাঁদী এসে হাজির হচ্ছে। আমি গিয়ে বসলাম আমার নির্দিষ্ট উঁচু পাথরটায়। দলপতি আমি। আমার বসার জায়গা সবার উপরে।
সবাই এসে গেছে, আবদুল্লাহ এসে বসলো আমার পায়ের কাছে। কিন্তু ওরা কোথায়? আমার চোখ খুঁজে চলেছে মেহের কেন এতো দেরি করছে। আয়েশা, দিলরূবারাই বা কোথায়? বুড়ো শেখের মেজো বেগম? তাকেও তো দেখা যাচ্ছে না!
কি আশ্চর্য! আমার চোখকে আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছি না। ওরা সবাই আসছে। এক সাথে আসছে, মেহের হাত ধরে নিয়ে আসছে মোতিকে! যেন নিজের খুব পুরোনো সহেলী। যেন নিজের বোন! ও মেয়েটাকে পরিয়ে দিয়েছে বুড়ো বেগমের একটা সাদা নতুন পোশাক। অপূর্ব সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে। শয়তানের দিব্বি! মেহেরের কথা রাখলে যদি এক রাত আমার জীবন হয়! তবে তাই হোক! এ মেয়েকে আমার চাইই! জীন্দেগীর এই জুয়া আমি খেলবো! জন্নতের হুর আজ নেমে এসেছে আমার দলে।
মেয়ের দল ধীরে ধীরে এসে আমাদের সামনে বসলো। বাবুর্চির লোক খানা পরিবেশন করতে শুরু করলো। মেহের আমায় দেখছে, আমি দেখছি মোতিকে। দুম্বার সুরুয়ার মৌজভরি স্বাদ আজ আমার মুখে লাগছে না। একবারের জন্যেও মেয়েটা মুখ তোলেনি। যে আমার চোখে চোখ রেখে তরবারির আঘাত হেনেছে বজ্রপাতের মত, সেই এখন আমার দিকে আর তাকাচ্ছে না। লাল হয়ে যাচ্ছে লজ্জায়। হায় রে কিস্মত! কী খেল তুমি দেখাচ্ছো আজ আমাকে!
খাওয়া শেষ করে উঠে গেলাম তাঁবুতে। খানিক পরেই মেহের এলো,
- ইরাদা বদল করেছো মনে হচ্ছে?
- হুহ্! কিসের বদল?
- আচ্ছা! আমি পুরুষের চোখের নজর চিনি! অমন করে কি দেখছিলে? মোতিকে?
- ওকে কেন দেখতে যাবো? তোমার কি হয়েছে বলো তো?
- এই মোতিকে নিয়ে তোরা ভেতরে আয় তো! মেহেরের ডাকে দলের মেয়েরা তাঁবুতে এসে ঢোকে! সঙ্গে মোতিজান।
- আজ রাতে একটা মেহেফিল হলে কেমন হয়?
- খুব ভালো হয়! সমস্বরে বলে ওঠে মেয়েরা। খুশ খবরির আন্দাজ পেয়ে দলের ছেলেরাও আমার তাঁবুর দরজায় ভীড় জমাচ্ছে।
- মোতি দলপতির ছোটি বেগম হলে কেমন হয়?
- খুব ভালো হয়!
এবার মেয়েদের সঙ্গে গলা মেলায় ছেলেরাও। কয়েকটা বন্দুকবাজ বান্দা আকাশে গুলি ছুঁড়ে আনন্দের বহিঃপ্রকাশ শুরু করে দিলো।
রাতের রান্নায় দিল খুশ করে দিলো বাবুর্চি। অসাধারণ রান্নার হাত লোকটার। খাওয়া দাওয়া শেষে আমাকে মুবারকবাদ জানিয়ে সকলে যার যার তাঁবুতে ফিরে গেল। আমার তাঁবুর ভেতরে যে সামান্য আলো পড়ছিলো, বাইরের মশালটার। ওটার আলোয় তাঁবুর ভেতর দেখলাম দুজন পরী বসে। মেহের আমার হাতে একটা জড়োয়ার গয়না তুলে দিলো। বললো, পরিয়ে দাও তোমার মোতিজানের গলায়। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মত ওর হুকুম তামিল করলাম। মোতি কুর্নিশ করলো। এই প্রথম আমার সামনে নত হলো মেয়েটা।
সাদা বিছানায় সাদা চাদরে ঢাকা দুজন পরী আমার সামনে। আজ সত্যিই আমার মাথা কাজ করছে না। বেঁচে আছি, না মরে বেহেশতে চলে গেছি জানি না। দুজনেই তাকিয়ে আছে আমার দিকে। হঠাৎ সাদা চাদরটা সরে গেল, এক ঝটকা টানে আমার মত বলশালী পুরুষের স্থান হলো দুই নারীর মাঝখানে। ওদের মত আমাকেও নগ্ন করে খিলখিল করে হেসে উঠলো মোতিজান। হাসছে মেহেরও। দুজনে একসাথে উপভোগ করতে শুরু করলো পুরুষোত্তম সুখ।
- আমাকে বিবস্ত্র করে ছেড়ে দিয়েছিলে বলে কি আমি তোমাকে ছেড়ে দেবো?
বলে উঠলো মোতিজান। মেহের হাসছে, কেন হাসছে, বুঝতে পারছি না। তবে এটুকু বুঝতে পারছি রতিক্রিড়ায় মত্ত হয়ে উঠছে ওরা দুজনেই।
পরিতৃপ্ত হয়ে শান্ত হলো ওরা! অমিত শক্তিধর আমি। দুই নারীকে সুখ দিয়েছি সমানে। আমার বিশাল বুকটা দুজনে ভাগাভাগি করে মাথা রেখে শুয়ে, একে অপরকে আলিঙ্গন করলো। বড় বড় নিঃশ্বাস পড়ছে ওদের, আমারও। হঠাৎ নিস্তব্ধতা ভেঙে মোতিজান বলে উঠলো, সোনার শহর লুঠ করবার হিম্মত আছে?
আমি বললাম, কোথায়?
ও বললো, উত্তরে! দশ ক্রোশ পথ পার করলে সাগর। সাগরের মধ্যে আছে একটা দ্বীপ, তার ভেতর শহর। এক হাজার তিরান্দাজ মেয়ে রক্ষা করছে সে শহর। ওদের তীরে বিষের ফলা। আছে হিম্মত? ওখানে যাবার?
মেহের ভয়ে আমার বুকে মুখ লুকোলো!
চলবে....
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now