বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

আরব্য_বেদুঈন ,,, পর্ব: ৪

"মজার গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান ফারিহা তাসনিম ঐশী (০ পয়েন্ট)

X #আরব্য_বেদুঈন #পর্ব_০৪ জয়নালের বিশাল দলটা বোগদাদের পথে রওনা হয়ে যাবার পরে আমার দলটা কেমন ছোট্ট হয়ে গেল। প্রচুর মোহর সোনা দানা মনি মানিক‍্য আমার জমেছে। আর বদলি হিসেবে জয়নালের কাছ থেকে কিনেছি ছত্রিশটা নধর দুম্বা। বাবুর্চিকে নির্দেশ দিলাম একটা দুম্বাকে কেটে বেশ কষিয়ে রান্না করো। ও বল্লে, জনাব, নাড়িভুঁড়ি দিয়ে একটা দারুণ লা জবাব পদ রেঁধে দেবো, মুখে লেগে থাকবে। বাজরার রোটি দিয়ে জমে যাবে আজ রাতের খানা পিনা। তোবা, তোবা! হুকুম দিলাম! বানাও দিল খোলকে। মন পসন্দ হলে, ইনাম পাবে। বাবুর্চি খুশি হয়ে ওর সাগরেদদের নিয়ে লেগে পড়লো কাজে। এক এক করে তাঁবুর বাইরে মশাল গুলো জ্বলে উঠতে লাগলো। দিনমনি অস্তাচলে চলে গেছেন খানিক আগেই। এ মরুদ‍্যানটা বেশ খানিকটা এলাকা জুড়ে রয়েছে। খেজুর গাছ ঘিরে রয়েছে, জলাশয়টাকে। সূর্য ডুবতেই ঠান্ডা একটা অনুভূতি লাগলো গায়ে। মরু অঞ্চলে দিনের বেলা যেমন গরম, রাত বাড়লেই ঠান্ডা বাড়ে। তাঁবুগুলোর ভেতরটা বেশ গরম।আরাম অনুভব করতে মেহের তার অনুচরীদের নিয়ে তাঁবুর ভেতর গিয়ে ঢুকেছে। বাইরে থেকে ওদের কথার ফাঁকে ফাঁকে হাসির আওয়াজ আসছে মাঝে মাঝে। কাফের বান্দারা দলে অনেক কম। বাঁদীও সেই তুলনায় নেই বললেই চলে। সব বেচে দিয়েছি জয়নালকে। আমার বেদুইন দল হালকা ফুলকা রাখাই ভালো। আজ এখানে কাল ওখানে সহজে সরে যাওয়া যায়। আর তার ওপর সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল খাদ‍্য। বড় দলের খাবার জোগান দেওয়া মোটেই সহজ ব‍্যাপার নয়। হাতে সোনা দানা টাকাকড়ি কমে গেলে, তখন বড় দল চালানো ভীষন মুশকিল হয়ে পড়ে। তার থেকে এই ভালো। সোলেমান আর আবদুল্লাহ এলো। একদিকে বড় খেজুর গাছের গায়ে মশাল বেঁধে তিনটে বড় পাথরের ওপর বসলাম আমরা। একটা বাঁদী এসে সুরুয়া পরিবেশন করে গেল। আমরা আজকের সওদা ফতে হবার উল্লাস পালন করতে শুরু করলাম। শেখের বড় বেগমের কালো বাঁদীটা, যেটাকে আমার মনে ধরেছিলো, ওটাকে খবর পাঠালাম। নাচ দেখাতে হবে। খানিক সময় পরেই মেয়েটা হুকুম তামিল করতে এগিয়ে এলো। বাজনার হাত তো ভালোই আবদুল্লাহর। তার সঙ্গে সঙ্গত করলো ওমর বলে আর একটা বান্দা। জমে উঠলো আসর। নাচ বেশ জমে উঠেছে। আমার মদিরার পাত্র খালি হতে পারছে না, বাঁদিরা এসে সঙ্গে সঙ্গে ভরে দিচ্ছে পেয়ালা। শেখের মেজো বিবি এসে বসেছে নাচ দেখতে, সোলেমানের নেশা ধরেছে। সে উঠে গিয়ে বসেছে মেয়েটার পাশে, জোর করছে ওর পেয়ালা থেকে এক চুমুক মদিরা পান করতে। আমার দিকে ভয় মিশ্রিত চোখে মাঝে মাঝে তাকাচ্ছে। আমি দলপতি, শেখের মেজো বিবির ওপর সবার আগে আমার অধিকার বর্তায়। আমি প্রসাদ করে ইজাজৎ দিলে সোলেমান ভোগ করতে পারে মেয়েটাকে। তার আগে নয়। তবে আমি যদি হুকুম দিই, তবে ও ভোগ করতে পারে। মেয়েটার প্রতি সোলোমনের যে নজর পড়েছে আগেই তা বুঝেছিলাম। তাই জয়নালের কাছে বিক্রি করিনি মেয়েটাকে। হাত তুলে ইশারায় বললাম, নাও, তোমাকে দিলাম। আমি আর ওকে ভোগ করবো না। ও খুশী হয়ে কুর্নিশ করলো। আমি হাসলাম। আধো অন্ধকারে নাচছে মেয়েটা। জিপসি ছন্দ। বালি উড়ছে পায়ে পায়ে। মেয়েটার নাচের বিভঙ্গ বড়ো মধুর । আকর্ষণ করে মন। টলমল পায়ে উঠে দাঁড়ালাম। এগিয়ে গেলাম ওর দিকে। নাচ চলছে। লক্ষ করলাম, আবদুল্লাহ বিভোর হয়ে বাজাচ্ছে। ওর চোখ দুটো বন্ধ করে নিলো। নেশাতুর হলেও আমি জঙ্গবাজ। আমার ইন্দ্রিয় সর্বদা জেগে থাকে। তবে কি? আবদুল্লাহর এই মেয়েটাকে মনে ধরেছে? হুঁ হুঁ দেখা যাক। পরীক্ষা করতে হচ্ছে। এগিয়ে গিয়ে মেয়েটার হাত ধরলাম। বাজনার তালে তালে পা মেলালাম মেয়েটার কোমর জড়িয়ে ধরে। নাচতে নাচতে সরে গেলাম আবদুল্লাহর কাছে। ঘুঙুরের আওয়াজ যত কাছে আসতে লাগলো, ও তত চোখ টিপে বন্ধ রাখার চেষ্টা করতে লাগলো। মেয়েটা বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে, অবাক চোখে দেখছে আমাকে। আবদুল্লাহর সুর কেটে যাচ্ছে, তাল মিলছে না। আমি নাচ থামিয়ে হাত রাখলাম ওর কাঁধে। বাজনা থামলো। চোখ মেললো আবদুল্লাহ। ওর চোখে জল। আমার ঠোঁটের কোনে হাসি, মেহের এসে দাঁড়িয়েছে দূরে। হাতের এক ঝটকায় কালো মেয়েটাকে ফেললাম আবদুল্লাহর কোলের ওপর। চমকে উঠলো দুজনে। হাতের ইশারায় মেহেরকে কাছে ডাকলাম। মেহের ছুটে এলো। - কেমন লাগছে দুটিকে? - আমি বলবো ভাবছিলাম! - তুমি জানতে? বলোনি কেন আমাকে? প্রশ্ন করি মেহেরকে। - হুজুর যদি রাগ করেন। আবদুল্লাহ আর ওই কালো মেয়েটা কুর্ণিশ করলো আমাদের। না মেহেরকে আমি নিকাহ করিনি। এরাও কেউ কাউকে নিকাহ করবে না। তবে দিল কা চাহত। দো দিল কে মিলিয়ে দিচ্ছে। আমার মত বেদর্দীকেও শিখিয়ে দিচ্ছে ইষ্কের পাঠ। সোলেমান ব‍্যাপার দেখে টলোমলো পায়ে সামনে এসে নতজানু হয়ে বসে পড়েছে মেহেরের সামনে। - তোমার কাছ থেকেই এই বে রহম ইনসান প‍্যার শিখেছে। তোমার প্রেমে জাদু আছে। - কি করছেন ভাইজান? আমি কিছুই করিনি? উনি আছেন ওনার মতোই, আজ এক রকম, তো কাল আরেক রকম। সুস্বাদু দুম্বার মাংসের ঝোলটা ঘ্রান ছড়াচ্ছে, বিশাল তাওয়ায় বাজরার রুটি সেঁকছে বাবুর্চির নফরগুলো। আরবি সুরুয়া খিদেটা বাড়িয়ে দিয়েছে। মনটা কেন জানি না ভালো হয়ে গেল। খাবারের গন্ধ পাশে মেহেরের সঙ্গ, আবদুল্লাহর সুর আর মেয়েটার নাচ, জীবনটা বদলে দিচ্ছে। গোল হয়ে বসলো সকলে। খাবার পরিবেশন করছে বাবুর্চির নফরগুলো। বেড়ে রেধেছে আজ লোকটা। ইনাম ওর আজ প্রাপ‍্য। খাওয়া শেষে ওকে একটা মুক্তামালা নিজের গলা থেকে খুলে ইনাম দিলাম। খুশি হয়ে নতজানু হয়ে কুর্ণিশ করে চলে গেল লোকটা। শেখের বড় বেগমের তাঁবুটা বেশ বড় করে খাটিয়েছিলো। এখন ওটা খালি। মাথায় বদ বুদ্ধি খেলে গেল। আবদুল্লাহ আর সোলেমানকে বল্লাম, তোমাদের সোহাগ রাত আজ এক সাথে হবে! ঐ বড় বেগমের তাঁবুতে। ওরা তো থ। বললাম কথা বাড়িও না। এটাই আজ আমার নজরানা। আমি দেখতে চাই। রাতের মরুভূমি বড়োই মায়াময়। নক্ষত্রেরা বড়ো স্পষ্ট এ মরু আকাশে। তাঁবুগুলোর বাইরে মশাল জ্বলছে ধিকিধিকি। তার আলো অল্প অল্প ঢুকছে তাঁবুর ভেতরে। মৃত শেখের তিনটে বেগম। ছোটটা আগেই বিদেয় হয়েছিলো, জয়নাল নিয়ে গেছিলো বড়োটাকে উপযুক্ত নজরানা দিয়ে। পড়ে ছিলো মেজোটা। এটা অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা প্রকৃতির। হাত বদলে এখন ওটা সোলেমানের সম্পত্তি। ওর সঙ্গে ওদের কালো বাঁদীটা আজ সমান মর্যাদা পাচ্ছে, আবদুল্লাহর সঙ্গে শুয়ে। পাশাপাশি দুটো বিছানা করা হয়েছে। চারটে শরীর। একটু পরেই শুরু হবে মানুষের আদিম খেলা। দর্শক আমি আর মেহের। মেহের বার দুই লজ্জায় উঠে যেতে চেয়েছিলো। ওকে যেতে দিইনি। জোড় করে বসিয়ে রেখেছি, বার বার ও উঠে যেতে চাইছে। দেখতে চাইছে না, আমার আদিম ইচ্ছের কাছে বার বার পরাজয় স্বীকার করছে। ওরাও ইতস্ততঃ করছে, শুরু করতে গিয়েও শুরু করতে পারছে না। দলপতির আদেশ ফেলতেও পারছে না। উন্মুক্ত হয়েও ফের আবৃত হচ্ছে আভরনে। অবশেষে আমি জড়িয়ে ধরলাম মেহেরকে। ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলাম। রূক্ষ চুম্বনে চুম্বনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠলো ও। আমার দুই প্রধান সহকারী আমাকে দেখে প্রথমে অবাক হলো, পরে ধীরে ধীরে সহজ হলো। সহজ হলো ওদের সঙ্গিনীরাও। শুরু হলো রূক্ষ মরুর মাঝে এক আদিম রতিক্রিড়া। প্রস্তর যুগে ফিরে গেলাম, বা আরও আগের কোনো এক সময়ে, সে খবর রাখার সময় নেই। নেশাতুর ছটি শরীর আদিম তৃষ্ণা মিটিয়ে চলেছে সেই রাতে। চলবে...


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ১১৮ জন


এ জাতীয় গল্প

→ আরব্য_বেদুঈন,,,,পর্ব_১০
→ #আরব্য_বেদুঈন ,,,,পর্ব_০৯
→ আরব্য_বেদুঈন ,,,পর্ব_০৭
→ আরব্য_বেদুঈন ,,,পর্ব_০৮
→ আরব্য_বেদুঈন ,,,,পর্ব_০৬
→ আরব্য_বেদুঈন ,,, পর্ব: ৩
→ আরব্য_বেদুঈন ,,, পর্ব:২

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now