বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ছোট বেলার ঈদ
লেখকঃ নাফিজ আহমেদ,,
ঈদ মানেই আনন্দ। ঈদ মানেই খুশি। মনে পড়ে যাই ছেলে বেলার ঈদের আনন্দ করার সেই সমস্ত কর্ম কান্ড গুলোর কথা। বয়স এখন ভালোই হয়েছে। এখন আর ঈদে তেমন আনন্দ উপভোগ করতে পারিনা। তবে ছোট বেলায় ঈদে এক অন্য রকম উপলব্ধি ছিল। তখন ঈদের আগের দিন রাত্রি বেলায় সমবয়সী সকলে মিলে নানান রকমের বাজি ফাটানোই ব্যাস্ত থাকতাম। সকলে একত্রিত হয়ে এক সাথে নানান রকমের খেলা করতাম। তার মধ্যে অন্য রকম আনন্দদায়ক খেলা ছিল লুকোচুরি খেলা। যাকে আমরা গ্রাম্য ভাষায় পলাপলি বলে আখ্যায়িত করি। সকলে লুকিয়ে যেত আর একজন সকলকে খুঁজত। লুকানোদের মধ্যে থেকে যদি কেউ খোঁজা ব্যাক্তির মাথা স্পর্শ করতে পারত তাহলে সে আবারো সকলকে খুঁজতে শুরু করত। আহ,,কতই না সুন্দর ছিল সেই সমস্ত ঈদের আগের রাতগুলো। অনেক রাত পর্যন্ত এই খেলাগুলো করে, সমবয়সী সকলে একত্রিত হয়ে শয়তানি করে মানুষের ঘরের চালে ঢেলা নিক্ষেপ করতাম। ঘরের মালিক নানান রকমের গালি এবং লাঠি নিয়ে তাড়া করত। তবে ঐসময়ের তাড়াটা অনেক মজার
ছিল। সকলে একসাথে নানান ধরনের স্লোগান দিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঝটিকা মিছিল করতাম। কি যে আনন্দের ছিল সেই সমস্ত দিনগুলো সেটা লেখার মাধ্যমে প্রকাশ করা কখনো সম্ভব নয়। সকলে মিলে গোল মিটিং করতাম যে কালকে কার কাছ থেকে কত টাকা ঈদ বোনাস নেওয়া যায়। রীতিমতো ঈদ বোনাস তোলার জন্য একে অপরের মধ্যে প্রতিযোগীতা করতাম। কেউ দিতো দুই টাকা আবার কেউ দিতো পাঁচ টাকা। কিন্তু ছোট বেলার দুই,পাঁচ টাকার ভিতরে যেই আনন্দ লুকিয়ে ছিল। সেটা এখন হাজার টাকা দিলেও ঐ উপলব্ধি টা আসেনা। টাকাগুলোর মান একই আছে কিন্তু বয়সটা আর এক নেই। এই জন্য সেই আনন্দও আর অন্বেষণ করে পাইনা। টাকাগুলো মাটির তৈরি ব্যাংকে জমিয়ে রাখতাম। কোন এক পড়ন্ত বিকালে নিজের আঁকা ছোট স্বপ্ন পূরণ করার জন্য মাটির তৈরি ব্যাংকে জমিয়ে রাখা টাকাগুলো ভেঙে বাহির করতাম। নিজের আকাঙ্ক্ষা কে ঐ কয়েক টাকা দিয়ে হাসিল করতাম। ব্যাংক ভেঙে হয়তো পাঁচশত বা তার একটু বেশি টাকা হতো তবুও ঐ পাঁচশত টাকার ভিতর যে মজা লুকিয়ে থাকত এখন লাখ টাকা দিলেও হয়তো সেই আনন্দটা ফিরে পাওয়া যাবেনা। সমস্ত খেলাধুলা, শয়তানি কর্মকান্ড শেষ করে একটা মেহেদীর প্যাকেট নিয়ে হাজির হতাম পাড়ার আপুর কাছে। একের অধিক মানুষ আসত তার কাছে নিজের হাতকে মেহেদীর সাজে সাজানোর জন্য। অপেক্ষায় অপেক্ষমাণ হয়ে কাটিয়ে দিতাম ডজন ডজন মূহুর্ত। আজ আর এক মূহুর্তও ঐ সময়ের জন্য কেউ ব্যয় করেনা। মেহেদী দেওয়ার পর প্রায় সারা রাত বসে থাকতাম, পরের দিনটার জন্য। কখন সেই দিনটা আসবে। নিজের মায়ের হাতে রাধা সেমাই খেয়ে চলে আসতাম ঈদের মাঠে। আম্মু আগের দিন মার্কেট থেকে নতুন প্যান্ট শার্ট কিনে দিত। সেটা পরেই ঈদের মাঠে আসতাম। কি যে আনন্দের ছিল সেই মূহুর্তগুলো তা লিখে বোঝাবার নয়। দিন শেষে টাকাগুলো গুনতে শুরু করতাম কার কত টাকা হয়েছে। ব্যাপক আনন্দের ছিল ছোট বেলার ঈদ।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now