বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

ফুলের রক্ত

"ছোট গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান Khirul Hasan(guest) (০ পয়েন্ট)

X ফুলের রক্ত মোঃ খাইরুল হাসান রিয়াদ দুপর থেকে মৃদু হাওয়া বইতেছে, দক্ষিণ দিকের কৃষ্ণচূড়া গাছটায় লাল ফুলগুলো দখিনা বাতাসে দুলছে, বড় এই গাছটার পাশে ছিলে সিকদার আলীর মুদি দোকান। হরিপুর গ্রামের অত্যন্ত বুদ্ধিমান ও নিষ্ঠাবান ছেলে হিসেবে সুপরিচিত আবির। আবির পড়াশোনায় যেমন ভালো, আবার যেকোনো অন্যায় এ প্রতিবাদ করার বেলায় ও সে ওস্তাদ। আবির আজকে কিছু পন্য কিনার জন্য সিকদার আলীর দোকানে যাচ্ছে, যাওয়ার সময় সে কৃশ্নচুড়া গাছটির দিকে তাকালো দেখলো গাছের ফুলগুলো ফ্যাকেশে দেখাচ্ছে,তাই প্রথমে তার মন টা বিষণ্ন হয়ে গেলো। -"সিকদার চাচা", -"ও সিকদার চাচা! দোকানে কি আছেন?" অপর দিক থেকে শব্দ আসলো, "এহেম এহেম।" -"চাচা আমার ১ কেজি গমের গুড়া, ১ টা কাঁচা মাটির বর্তন লাগতো।" শিকদার আলী বলে উঠলো আছে, -"সব ই আছে। কিন্তু গমের দাম কিন্তু কেজি ৬ টাকা পড়বে বাপু।" এইসময় বাজখাঁই গলায় আবিরের ঘাড়ের পিছন থেকে আওয়াজ আসলো, -"১ কিলো গেহুন কিতনা পায়সা হে?" -"সাব!! ৪ রুপিয়া!" -"ঠিক হে। ১ কিলো প্যাক কার দো।" আবির এই নব্য উদয় হওয়া উর্দু জবানের অধিকারীর চলে যাওয়ার ধূলিধূসরিত পথের দিকে হতাশাভরা দৃষ্টি নিয়ে চেয়ে রইল। তারপর তার মনের ভিতরে উদয় হওয়া প্রশ্নটা সে দোকানদার চাচা কে করেই ফেলল। -"বাংলার বেলায় ৬ টাকা কেজি, উর্দুর বেলায় ৪ টাকা কেন? " সিকদার আলী ভাবলেশহীন মুখে বলল, -" সকাল সকাল এতো ঝামেলা ভালো লাগে না বাপু, বড় বাবুর আদেশ আমি তো মান্য করতে হবে ই।" বলে রাখা ভালো বড় বাবুর ছিলো পঞ্চায়েত কমিটির প্রধান ও পশ্চিম পাকিস্তান ব্যবসাহি সমিতির সভাপতি। তিনি নিয়ম করে দিয়েছেন, বাঙ্গাল দের জন্য সব পন্যে ২ টাকা করে বেশি। আবির মুখ বুঝে পন্য নিয়ে চলে গেলো। বাড়িতে গিয়ে মা কে জিজ্ঞেস করলো মা, আমরা বাংলায় কথা বলাটা কি আমাদের জন্য অভিশাপ? আমি আমার মা এর ভাষায় কথা বলতে গেলে লুকিয়ে কেন কথা বলতে হয়? ও মা আমরা স্বাধীন ভাবে কি কথা বলতে পারবো না? মা চুপ করে রইলেন। আবির চুপ করে না থেকে তার স্কুল এর আন্দোলন কমিটি গঠন করে। তারা সিদ্ধান্ত নেয় তারা লড়বে, তারা তাদের মায়ের ভাষার জন্য লড়বে, পরের দিন সকাল বেলা রাজপথে স্লোগানে মুখরিত হয় "রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই"। খানিক বাদে বিকট গোলার শব্দ, ঠাসসসসস!!!! সব নিশ্চুপ। শালিক পাখির দল পাখা ঝাপটে উড়ে গেল। আজকে আর কৃষ্ণচূড়া গাছটি ফ্যাকাশে নেই, কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলা টগবগে রক্তের এর মতো রঞ্জিত হয়ে উঠেছে, এ যেন আবিরে প্রতিবাদী দেহের রক্ত।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ২৯৪ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now