বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
খুনের অপরাদে বিচারক কলিমের ফাসির আদেশ দিলেন। সেই সাথে কলিমের কাছেও জানতে চাইলেন তার কোন শেষ ইচ্ছা আছে কিনা। কলিম সহাস্যে বলিল আমার সামান্য একটা শেষ ইচ্ছা আছে, যদি আপনার দয়া হয়। বিচারক বলেলন কি সেই ইচ্ছা নির্ভয়ে বলুন। জর্জ সাহেব অনুমতি দিলে আমি কিছু সময়ের জন্য আমার বাবার কবরের পাশে যাব। জর্জ বলেলন সে তো ভাল কথা। আপনি নিজের বাবার কবর জিয়ারত করতে চাইছেন। না জর্জ সাহেব তা নয়। জর্জ চোখ কুন্ঠিত করে বলেলন, তবে? আমি আমার বাবার কবরে লাঠি দিয়ে তিনবার আঘাত করতে চাই। একটা আঘাত হল আমাকে অমানুষ বানানোর জন্য। আরেকটা আঘাত আমার মাকে তিলে তিলে খুন করার জন্য সেই ঘৃনায় আর শেষ আঘাতটা করতে চাই আজ আমার ফাসি হওয়ার জন্য। আমার এই ইচ্ছা পূরণ হলে গলায় ফাসির দড়ি পড়তে আমার আর কোন দুঃখ থাকবেনা,বরং আমার সকল কষ্ট ব্যথা সুখের হাসিতে পরিনত হবে। জর্জ অবাক হয়ে বলেলন আপনার মাথা ঠিক আছে তো? কলিম করজোরে বলল আমার মাথা ঠিক আছে মহাবতার। জর্জ বলেলন এমন অন্যায় আবদার আমি তো সায় দিতে পারিনা। উকিল বলেলন ইউর অনার শেষ ইচ্ছা বলে কথা। তাহার এমন ইচ্ছার কারন যাচাই পূর্বক বিবেচনা করা হোক। জর্জ বলেলন কেন আপনার এমন ইচ্ছা আর আপনার বাবার প্রতি কেন আপনার এত ঘৃনা তা সুবিস্তারে বর্ননা করুন।
কলিম শুরু করলেন। জর্জ সাহেব, আমার যখন দশ-বার বছর বয়স তখন আমাদের সংসারে এত অভাব যে আমি আর আমার মা প্রায়ই দুই তিন দিন েকটানা না খেয়ে থেকেছি। আমার বাবা জোয়া খেলে বেড়াতো। সারাদিন বাড়ি আসতো না।রাতে মা সংসার কিভাবে চলবে তাকে আয়রোজগারের কথা বললে মাকে মারধর করতেন। মা মুখ বুজে থাকতেন। যেদিন জোয়া খেলতে যেতেন না। বাবা বাড়িতে বসে মায়ের সাথে ঝগড়া করতো। আমাকে দিয়ে এর ক্ষেত থেকে সবজি, ওর কবুতরের খোপ থেকে কবুতর, মুরগির খোয়াড় থেকে মুরগির ডিম,চুরি করে আনতে জোর করতো। আমিও আস্তে আস্তে এ সবে অবস্থ হয়ে পড়লাম। একদিন রাতে বাবা বলল চল মোল্লাবাড়ির পুকুরে অনেক বড় বড় মাছ। দুজনে গিয়ে চুরি করে নিয়ে আসি।খাওয়াও যাবে, আবার বিক্রি করে চাওল কিনে আনা যাবে। এই কথা শুনে মা বাধা দিলেন। ভিষণ ঝগড়া আর কথা কাটাকাটির মধ্যে বাবা একসময় মাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে অনেক মারলেন।পরের দিন মায়ের জ্বর হল, তিন দিন পর মা মারা গেলেন। আমার পাকা চোর হয়ে উঠতে আর কোন বাধাঁ রইলো না। আমার চুরির মাএায় গ্রাম বাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠলো একদিন একটি ছাগল চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়লাম । গ্রামবাসী আমাকে অনেক মারধর করলো। হয়তো মরেই যেতাম। কিন্তুু সেখান থেকে স্কুলের এক মাস্টার মসায় আমাকে উদ্বার করে তার বাড়িতে নিয়ে গেলেন। তারপর আমাকে অনেক বুঝালেন। এবং স্কুলে ভতি করে দিলেন। আমিও লেখা পড়া আর মাস্টার মশায়ের ভাল আচরণের জন্য চুরি চামারি ভুলে যেতে লাগলাম। আমি মাস্টারের বাড়িতেই থাকতাম। একদিন আমার জন্য বাবার আয় বন্ধ হয়ে গেল। এবং তিনি ক্ষেপে গেলেন। গ্রামের মানুষকে উচকিয়ে দিলেন। গ্রামের সব মানুষ এসে মাস্টার কে আক্রমন করলেন। একজনের একটা লাঠির আঘাতে মাস্টার মশায় মারা গেলেন। আর আমাকে বাবার হাতে তুলে দিলেন।আমি আবার চুরি চামারি করতে শুরু করলাম। কিন্ত আমার মন টানছিল না। তাই একদিন পালিয়ে গেলাম।আর আমার মনেও তখন অনেক ঘৃণা জম্ম নিয়েছিল। যেখানে গেলাম এবং যার আশ্রয় পেলাম সেও একজন নাম করা চোর। সুতরাং আমার আর ভালো হয়ে উঠা হল না। তার পর আস্তে আস্তে বড় চোর, আর বড় চোর থেকে আজ ডাকাত দলের সদার। যদিও আমি এসব করেছি কিন্তু গোপনে রাতের আধারে আমি অর্থ আর খাবার নিয়ে আমার মত অসহায় সন্তান দের সহযোগিতা করেছি। শেষ ডাকাতি করার সময় চলে আসার পথে বাড়ির দরজায় একটি বুড়ো আমাকে বাধা দেয়, আমি তাকে দাক্কা দিলে তার হাতের ছোরাটা তার পেটে ডুকে যায়। অন্যান্য ডাকাতরা তখন চলে গেছে আর আসার সময় এই বুড়োর জন্য বিলম্ব হয়ে যায়। ফলে জনতা আমাকে ধরে ফেলে। এই জন্য আজ আমার ফাসি, এবার জজ সাহেব আপনিই বলুন আমার শেষ ইচ্ছা টা করা কি অন্যায়? আদালতে উপস্থিত সকলে নিরবে কলিমের কথা শুনছিল। এবার এক বাক্যে সবাই বলিয়া উঠির। না, অন্যায় নয়। জজ সাহেব বলিলেন তাহার ইচ্ছা পূরণ করা হোক।আর সুন্দর জীবনে ফিরে আসতে আদালত সব সময় দন্ডিতের সাথে সম ব্যথি। তাই তার ফাসির আদেশ রোধ করে তাকে সাত বছরের কারাদন্ডে দন্ডিত করা হলো।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now
পীযূষ কান্তি দাস
User ১ মাস, ১ সপ্তাহ পুর্বে