বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
গত বছর ঢাকা এয়ারপোর্টে নেমেছি! লাগেজ বেল্ট থেকে লাগেজ নিয়ে বের হচ্ছি। পদে পদে লোকজন খালি সালাম দেয়। সিভিল এভিয়েশনের স্টাফ, আনসার ইত্যাদি!
আমি তো ভিআইপি অথবা তারকা কেউ না, আমজনতা! এই সালামের মানে কী?
বিদেশ থেকে আসছেন, কিছু বখশিশ দিয়া যান!
টার্মিনালে বের হয়ে গাড়ি আসার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। ট্রলি যাতে কেউ টার্মিনালের বাইরে নিয়ে যেতে না পারে সেজন্য এক বিচিত্র ব্যবস্থা করেছেন মহামান্যরা, রেলিং দিয়ে দিয়েছেন।
ফলে লাগেজ ট্রলি থেকে তুলে উঁচু করে ধরে সেই রেলিং পার হয়ে গাড়িতে তুলতে হয়!
সেটা করছি, আমাদের ড্রাইভারও সাহায্য করছে।
দ্রুতগতিতে একজন উৎসাহী লোক এসে পড়লেন। লাগেজ গাড়িতে তুলতে লাগলেন কিছু বলবার সুযোগ না দিয়েই!
তার স্বপ্রণোদিত স্বেচ্ছা সেবায় শেষমেশ পকেট থেকে একশো টাকা দিলাম। ভদ্রলোক খুশি হইলেন না!
এইটা কী দিলেন? দশটা ডলার তো দিবেন!
আমি পাত্তা না দিয়ে চলে এলাম। উনি মনে মনে বোধহয় গালি দিলেন!
দেশ থেকে ফেরার ফ্লাইটের দিন, গেইটের কাছে ওয়াশরুমে গেছি। ক্লিনার ঠাঁয় দাঁড়িয়ে বেসিনের পাশে সব টিস্যু হাতে নিয়ে! প্রয়োজনীয় কর্ম সেরে হাত ধুয়ে শেষ করতেই সালাম!
তার হাত থেকে টিস্যু না নিয়ে নিজের পকেটের টিস্যু বের করলাম! চলে এলাম!
সর্বত্র হাত পেতে 'কিছু দেন কিছু দেন' ফকিন্নিপনা আমাদের জাতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য!
এই বৈশিষ্ট্যের কথা ভ্লগে দেখানোয় Luke Damant নামে এক বিদেশি ভদ্রলোকের উপর চেতেছেন অনেকে!
তবে একজন সমাজ পর্যবেক্ষক হিসেবে আমি কালু মিয়ার ঘটনায় কিছু সমাজ বাস্তবতার প্রতিবিম্ব খেয়াল করলাম, যার সামারি এখানে নোট করে রাখছিঃ
১। এদেশে যারা টুকটাক ইংরেজি বলতে পারেন, সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই তারা নানা কৌশলে যারা ইংরেজি বলতে/ বুঝতে পারেন না তাদের প্রাপ্য মেরে খাওয়ার কাজে সেই ভাষাজ্ঞান ব্যবহার করে আসছেন (কালু মিয়া যেমন ডিমকেইক ওয়ালার ৫০০ টাকা মেরে দিতে চাচ্ছিল, পরে ২৫০ ভাগ নিয়ে থেমেছে)।
২। মুখে দাড়ি, মাথায় টুপি, স্বভাবে বাটপারি- এই বাংগালি মুসলমানের চিত্র!
৩। বাংলার পুলিশ খুচরা ঘটনায় তোড়জোড় করে অসাধারণ গতিতে, কালু মিয়াকে হাতকড়া পরানোতে আবারও সেই দায়িত্ববোধের পরিচয় পাওয়া গেলো!
৪। বাংলার দেশপ্রেমিকদের দাবি- বিদেশি ট্রাভেলার হয়ে ঘুরতে এসে শুধু সুন্দর সুন্দর জিনিস দেখাবেন। খারাপ ব্যাপার দেখাবেন কেন!
একই সূত্র প্রযোজ্য দেশি বিদেশি সংবাদ মাধ্যমের কাছে দেশপ্রেমিক সরকারি দলের আশাবাদের, তা যেই যখন সরকারে থাকুক না কেন!
৫। পরিশেষে, বাংলার বিপ্লবীরা, যারা ফকিন্নিপনাকে, ছ্যাচড়ামিকে অর্থনৈতিক গরিবি থেকে আলাদা করতে পারেন না!
দুনিয়ায় বহু গরিব মানুষ আছে যাদের তেমন কোন ফকিন্নিপনা নাই, আবার বহু ফক্কিন্নি আছে, যাদের বিশেষ গরিবি নাই, তাও ছ্যাচড়ামি করে।
প্রলেতারিয়েত/ সাবঅল্টার্ন স্টাডিজের ঢাকাই কর্ণধারদের এই দুইয়ের মধ্যে তফাত করতে শেখা দরকার!
দরিদ্রের প্রতি সহানুভূতি থাকলেই ফকিন্নিপনার প্রতি সহানুভূতিশীল হইতে হবে, ব্যাপারটা এমন নহে!
- গালিব বিন মোহাম্মদ
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now