বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

রিক্সাচালক

"ছোট গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান রিদা ‎ (০ পয়েন্ট)



X প্রখর রোদে দাড়িয়ে আছে আয়মান। আজকে সে তার সাইকেল আনেনি, তাই আজকে তাকে রিক্সা বা অটো করেই বাসায় ফিরতে হবে।কিন্তু কোনো রিক্সা বা অটো সে পাচ্ছে না, অনেক দেরী হয়ে গেল। মা দুশ্চিন্তা করবে ভেবে আয়মান নিজেই চিন্তায় পড়ছে। অনেক্ক্ষণ ধরে দাড়িয়ে আছে সে, অবশেষে সে তার চশমার ফাঁক দিয়ে দেখতে পেল দূর থেকে একটা খালি রিক্সা আসছে, আয়মান তার চশমা ঠিক করে ভালো করে তাকাল, হ্যাঁ একটা খালি রিক্সা আসছে। আয়মান দৌড় দিয়ে রিক্সার কাছে গিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, 'আঙ্কেল, তিন মাথা মোড় রোড এ যাবেন?' রিক্সাচালক বয়স্ক করে, তিনি রিক্সা থামিয়ে রিক্সা থেকে নেমে দাঁড়ালেন । আয়মান আবার বলল,'আঙ্কেল যাবেন?' রিক্সাচালক ইশারায় বললেন যে তিনি যাবেন। আয়মানকে হাত দেখিয়ে রিক্সায় উঠতে বললেন।আয়মান রিক্সায় উঠে পড়ল।আয়মানকে হাঁপাতে দেখে রিক্সাচালক তাকে একটা পানির বোতল বের করে দিলেন।আয়মান বোতলটা হাতে নিলো, দেখল পানির বোতলটা নতুন, খোলা হয়নি। সে বুড়ো রিক্সাচালককে জিজ্ঞেস করলো যে এটি তিনি দোকান থেকে কিনেছেন নাকি, তিনি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁবোধক ইশারা করলেন। আয়মান বোতল খুলে পানি পান করে ওনাকে ধন্যবাদ জানাল।বুড়ো রিক্সাচালক কিছু বলল না, হালকা করে হাসল। কিছুক্ষণ পর আয়মান বুঝতে পারল, সে যে রিক্সায় চড়েছে সেটি আসলে বর্তমানের আধুনিক অটো রিক্সা না, সাধারন প্যাটেল চালিত রিক্সা। সে বুঝতে পারল বুড়ো মানুষটার এই রোদে রিক্সা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে , গরিব মানুষ ওনার পরনে ছেঁড়া একটা পুরানো শার্ট, লুঙ্গি আর মাথায় নামাজের টুপি। আয়মান নিজেকে কেমন জানি অপরাধী অপরাধী লাগতে লাগল, সে কিভাবে একজন গরিব বয়স্ক মানুষকে এভাবে কষ্ট দিতে পারে। সে তার কাছে থাকা বিস্কুটের প্যাকেটটি ওনার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন, ' দাদু এটা আপনি রাখেন' কিন্তু তিনি ঘুরে তাকালেন না। আয়মান হাত দিয়ে আবারও ওনাকে ডাকলেন, এবার তিনি পিছনে ঘুরে তাকালেন। আয়মান বলল, ' দাদু এটা আপনি রাখেন ' বয়স্ক মানুষটি হাসল কিছু বলল না, তারপর হাত নাড়িয়ে বিস্কুটের প্যাকেটটি আয়মানকে ফিরত দিল। আয়মান একটু অবাক হলো। আয়মানের গন্তব্য চলে এসেছে, আয়মান হাত নাড়িয়ে রিক্সা থামাতে বলল।আয়মান রিক্সা থেকে নেমে তার মানিব্যাগ বের দেখল তার কাছে খুচরা নেই, ভাড়া ৩০টাকা কিন্তু তার কাছে শুধু একশ টাকার একটা নোট। আশেপাশে কোনো দোকানপাটও নেই যে সে খুচরা করবে। আয়মান ভাবল ওনাকে একশ টাকার নোটটাই সে দিয়ে দিবে।আয়মান একশ টাকার নোটটি রিক্সাচালকের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, ' আমার কাছে খুচরা নেই, শুধু এই একশ টাকার নোটটাই আছে।' রিক্সাচালক হাত নাড়িয়ে ইশারায় বুঝালেন যে তার কাছেও খুচরা নেই, আয়মান বলল, 'আরে না না, আপনি পুরোটাই নেন।'রিক্সাচালক মুচকি হাসলেন, ইশারায় বুঝালেন যে, তার ভাড়া লাগবে না। তারপর তিনি তার রিক্সা নিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন। আয়মান অবাক হয়ে সেখানে দাড়িয়ে থেকে ওনার চলে যাওয়া দেখতে থাকল। নিজের অজান্তেই আয়মানের চোখের কিনারায় পানি চলে এসেছে। সমাজে আজও এমন মানুষ আছে! ( রিক্সাচালক মূক ও বধির ছিলেন)


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৩৪৪ জন


এ জাতীয় গল্প

→ একজন রিক্সাচালক বাবার গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now