বাংলা গল্প পড়ার অন্যতম ওয়েবসাইট - গল্প পড়ুন এবং গল্প বলুন

বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা

আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ

আমি একজন বোহেমিয়ান(ভবুঘুরে)

"জীবনের গল্প" বিভাগে গল্পটি দিয়েছেন গল্পের ঝুরিয়ান সাফায়েত হোসেন (০ পয়েন্ট)

X ১. ছোটবেলায় গ্রীষ্মকালে ঝড় উঠলেই চলে যেতাম বাড়ির পাশের আম বাগানে।আশেপাশে অনেক মানুষ জড় হয়ে যেত আম কুরাতে।ঝড় হাওয়া সাথে কখনো তুমুল বৃষ্টি আমি তো তার মাঝেই আম কুড়াতে লেগে যেতাম। কখনো নদীর ওপারে পাশের গ্রামে চলে যেতাম আম কুড়াতে অনেক কষ্ট করে দুই একটা আম পাইতাম কখনো আবার গ্রামের বিলের মধ্যে একটা বড়ো আমবাগান ছিলো সেখানেও চলে যেতাম। বাতাস বইতো আমি আম গাছের দিকে চেয়ে থাকতাম এই বুঝি আম পড়লো আর দৌড়ে গিয়ে আমার মতো আম কুড়াতে আসা বাকিদের হারিয়ে দিয়ে সবার আগে গিয়ে আমটি ধরে ফেলবো।একবার তো বাড়ির পাশের আমবাগানে আম কুড়াতে গিয়ে ঝড় থেমে গেলো কিন্তু সেই বৃষ্টি সবাই যে যার বাসায় গেলো কেউ অন্যর বাসায় গিয়ে আশ্রয় নিলো। আর আমি একা আমবাগানে আম গাছের নিচে বসে রইলাম।হঠাৎ করে চারিদিকে আলো করে বিদ্যুৎ চমকিয়ে সেই জোরে ডাক দিলো।তারপর যেন ভুমিকম্প শুরু হয়ে গেলো চারিদিকে এবং কিছুক্ষণ পরে জানলাম ডাকটা পড়েছে আম বাগানের পাশেই একটা বাড়িতে।এই ঘটনার পর বাসায় বকা খেয়েছি তারপর ও ঝড়বৃষ্টির মধ্যে আম কুড়াতে ভুলি নি।গ্রীষ্মকালের ছোটবেলার সেই সময়টাতে একটু বাতাস শুরু হলেই ছুটে যেতাম আমবাগানে।নিজেকে বাড়িতে স্থির রাখতে পারতাম না।বড্ড মনে পরে আজকাল সেই দিনগুলোর কথা।ইশ যদি সেই সময়টাতে আবার ফিরে যেতে পারতাম। ২. জীবনে ভবুঘুরে আমি তেমন একটা ছিলাম না যা একটু ছিলাম তাও সেই ছোটবেলায়।আহ ছোটবেলা মনে পড়লেই একটা অফুরন্ত ভালো লাগা কাজ করে।আবার সাথে সাথেই মনটা খারাপ হয়ে যায়।আহা সেই সোনালী সময় আবার আমি গ্রামের ছেলে।ইন্টারবিহীণ সোনালী সেই সময়টাতে গ্রামের মেঠো পথে সারাদিন টায়ার চালিয়েছি,বিলে ঘুরে বেরিয়েছি,ঘুড়ি উরিয়েছি,ফড়িং ধরেছি,বেয়ারিং এর গাড়ি চালিয়েছি,ক্রিকেট খেলেছি,টিয়া পাখির পিছনে দৌড়েছি মিঠু মিঠু বলে ডেকেছি সেও প্রতুত্তরে মিঠু মিঠু বলেছে,কোথায় পাখির বাসা তার খোজ করেছি আরো কত কি করেছি সেই সময়টাতে।এখন সেভাবে মনেও পড়ে না অনেক কিছু।সময় গড়িয়েছে মাঝে কত পরিবর্তন স্মৃতির পাতা থেকে অনেক কিছু মুছে গিয়েছে।আচ্ছা স্মৃতির পাতাটা কি অতীত এর সবকিছু ধারণ করতে কি পারতো না?তাইলে আমি সেই সময়ের সবকিছু মনে করতে পারতাম কল্পনাতে আবার সেই সময়টাতে ফিরে যেতে পারতাম আবার ফড়িং ধরতাম,টায়ার চালাইতাম কিন্তু এই এক বাধা সেটা হলো আমি বড় হয়ে গেছি।আমি আর জোড়ে কাদি না।কষ্টগুলো চেপে রাখতে পারি। আমি ভবুঘুরে থেকে এখন একঘরে হয়ে গেছি।আমি চাইলেও আর ফিরতে পারি না আমার ভবুঘুরে জীবনে।একসময় তো বলতাম কবে যে বড় হবো আর এখন বলি ছোট হয়ে ভবুঘুরেই রয়ে গেলাম না কেনো।ছোটবেলার খেলনা গুলো দেখে ভাবি একটু এগুলা নিয়ে খেলবো না কি হঠাৎ তখনি বিবেক যেন বলে ওঠে এই তুই বড় হয়ে গেছিস এখনো এইসব খেলনা নিয়ে খেলবি ফলে আর কি আবার দমে যাই হয়ে ওঠে না আমার ভবুঘুরে হওয়া।তাই তখন মনের কষ্টটাকে মনেই জমা রেখে অতীত এর যেই স্মৃতিটুকু স্মৃতির পাতায় এখনো জমা আছে তাই উল্টেপাল্টে দেখি আর কল্পনাতে আবারো ভবুঘুরে হয়ে যাই। ৩. কোনো এক গভির রাতে ঘুমানোর আগে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছি যে টাইম মেশিনের কথা শুনেছি বই তে পড়েছি টিভিতে কার্টনে দেখেছি।আচ্ছা এমন কিছু যদি সত্যি থাকতো অনেক ভালো হতো তাই না। আমি টাইম মেশিনের সুইচ টিপে প্রথমে দূর অতীতে চলে যেতাম।মিশরীয় সভ্যতা ঘুরে দেখতাম।প্রাচীনকালের নীল নদ কেমন ছিল কিভাবে তাকে কেন্দ্র করে মিশরীয় সভ্যতা গড়ে উঠেছে। আর আমি নীল নদের পাশে বসে একটা সুন্দর বিকেল কাটাতাম।তারপর মন চাইলো যাই তো তাজমহল দেখে আসি।টাইম মেশিনের সুইচে টিপ দিলাম মূহুর্তের মধ্যে চলে গেলাম আগ্রার তাজমহল দেখতে।শাহাজাহান স্ত্রী মমতাজের প্রতি ভালোবাসার নজির বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের একটি তাজমহল মুগ্ধ নয়নে দেখতে থাকলাম।কতক্ষণ ধরে তাজমহলের দিকে তাকিয়ে থাকলাম জানি না হঠাৎ করে মনে পড়ে গেলো ভবিষ্যৎ কেমন হবে সেটা দেখে আসি তো।আবারো টাইম মেশিনের সুইচ টিপ দিলাম চলে গেলাম ৩০০০ সালে।সেখানে গিয়ে আমি হতবাক এহ আমি কি দেখছি এত আধুনিক পৃথিবী।কারখানায়,হোটেলে সব জায়গায় রোবট কাজ করছে মানুষ শুধু তাদের রিমোট দিয়ে কন্ট্রোল করছে আর নিজেরা আরাম করছে।আর চারিদিকে শুধু আধুনিকতার ছোয়া দেখে আমার দু চোঁখ তো ছানাবড়া।আবার গ্রাম কই গেলো।গ্রামের ধুলো মাখা পথে গড়াগড়ি খেয়ে বড় হলাম আর আজ দেখি গ্রামের চিহ্ন বলতে কিছু নাই।চারিদিকে শুধু বড়বড় অট্টালিকা।একটু মনক্ষুণ্ণ হয়ে তখন আবার টাইম মেশিনের বোতামে চেপে আমার ভবুঘুরে জীবন থেকে আপাততো নিজ ঘরের দিকে ফিরে চললাম।তারপর............. সকালের মিষ্টি আলো চোঁখে পড়লো কিন্তু আজ আর আরাম করে ঘুমটা ভাঙ্গলো না।আজ ধরফর করে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম আর এদিক ওদিক আমার টাইম মেশিন খুজতে লাগলাম কিন্তু না পেলাম না কোথাও।হঠাৎ মনে পড়ে গেলো ওহ আমি তাইলে গত রাতে ঘুমানোর আগে টাইম মেশিন নিয়ে ভাবছিলাম তারপর হঠাৎ করে ঘুমিয়ে যাই তারপর এতক্ষণ ধরে সব স্বপ্ন দেখছিলাম তাইলে।আমি যে মিশরীয় সভ্যতা,তাজমহল তারপর আবার ভবিষ্যৎ এ গেলাম সেটা কি তাইলে আমার স্বপ্ন ছিলো।একটু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম।আর আফসোস করে ভাবতে লাগলাম আচ্ছা টাইম মেশিন যদি সত্যি থাকতে শুধু সুইচ টিপতাম আর মূহুর্তের মধ্যে চলে যাইতাম অতীত,ভবিষ্যৎ বা যেকোনো জায়গায় আর আমি ভবুঘুরের মতো শুধু ঘুরে বেরাতাম অনেক মজা হতো। আমরা সবাই ভবুঘুরে কেউ প্রকাশ করতে পারি।তা বাস্তবে উপভোগ করতে পারি।আবার কারো হয়তো ছোটবেলাতেই ভবুঘুরে জীবনের ইতি হয়ে যায়।শুধু নিজের মন আর কল্পনার মিশেলেই ভবুঘুরে জীবন উপভোগ করে।


এডিট ডিলিট প্রিন্ট করুন  অভিযোগ করুন     

গল্পটি পড়েছেন ৪৩১ জন


এ জাতীয় গল্প

গল্পটির রেটিং দিনঃ-

গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন

  • গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now