বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
কাব্য-কথা(An Indistinct Love)_পর্ব ০২
Written By: Jahid Hasan
কাব্য পেছনে ফিরে তাকাতেই দেখে মেয়েটি তার পিছু পিছু আসছে। কাব্য থমকে দাঁড়ায়। সাথে সাথে মেয়েটিও থমকে দাঁড়ায়।এটা দেখে কাব্যের কুঞ্চিত ভ্রু জোড়া আরও কুঁচকে যায়। কাব্য আবার এগিয়ে যায় পার্কিং লটের দিকে।মেয়েটিও পিছু নেয় কাব্যের। কাব্য আবারও থমকে দাঁড়ায়। সাথে সাথে মেয়েটিও আবারও থমকে দাঁড়ায়।কাব্য ভাবে হয়তো মেয়েটির কাছে টাকা নাই, তাই তো সে খাবারের বিল দিতে পারে নি।তাই কাব্য বলে উঠে,—""তোমার কি টাকা লাগবে??""
মেয়েটি কিছু না বলে সেভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে। কাব্য ভাবে,মেয়েটি হয়তো লজ্জায় বলতে পারছে না যে, তার টাকার প্রয়োজন।তাই কাব্য মেয়েটির সামনে এগিয়ে এসে বেশকিছু টাকা তার হাতে দিল। মেয়েটি বেশ কিছুক্ষণ তার হাতের দিকে তাকিয়ে রইল। ততক্ষনে কাব্য পার্কিং লটে চলে গেছে। মেয়েটি আবারও কাব্যের পিছু পিছু পার্কিং লটে চলে যায়। কাব্য ততক্ষনে তার গাড়িতে উঠে বসেছে। মেয়েটি গিয়ে কাব্যের গাড়ির গ্লাসে ঠক ঠক করে বাড়ি দিচ্ছে। কাব্য বিরক্ত হয়ে তাকাতেই মেয়েটিকে দেখল সাথে সাথে তার বিরক্তি ভাব কেটে গেল। গাড়ির গ্লাস নামিয়ে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করল,—""Any problem?""
মেয়েটি আগের মতই চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। কিন্তু তার চোখ যেন কিছু বলতে চাইছে।
কাব্য আবার জিজ্ঞেস করল,—""তোমার কি আরও টাকা লাগবে??""
জবাবে মেয়েটি কোন প্রত্যুত্তর করলো না। কাব্য কি করবে ভেবে পেল না।ওকে এখনই অফিসে যেতে হবে।ওর আরো একটা মিটিং আছে। কিন্তু যখনই মেয়েটির মুখের দিকে তাকাচ্ছে সবকিছু ভুলে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে মেয়েটিকে পাশে বসিয়ে সবসময় দেখেই চলে। মেয়েটিকে পুরোই পুতুল পুতুল লাগে কাব্যের কাছে।ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে থাকে মেয়েটির দিকে। হঠাৎ তার ফোনে ফোন আসে আর তার ঘোর কেটে যায়।অফিস থেকে ফোন দেওয়া হয়েছে এখনই তাকে অফিসে যেতে হবে। কাব্য মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বিব্রত বোধ করলো। কখনো কোন মেয়েকে সে এইভাবে তাকিয়ে দেখেনি। অনেক মেয়েই তার আগে পিছে ঘুরে শুধুমাত্র তার একটু এ্যাটেনশন পেতে চাই। কিন্তু কাব্য তার বিজনেস নিয়ে ব্যস্ত। ওইসব মেয়েদের কাব্য একদমই পছন্দ করে না যারা তাকে নয় তার টাকাকে ভালবাসে। মুখে কৃত্রিমতার আবরণ দিয়ে রাখে তাতে তাদের আসল সৌন্দর্য বোঝায় যায় না। কিন্তু এই মেয়ের সবকিছুই আলাদা। মেয়েটির মুখে কোন কৃত্রিমতার আবরণ নেই।তার আসল সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে ওই বাচ্চা বাচ্চা ফেইস-এ।কাব্য নিজেকে সংযত করে নিল।এই মেয়ের সামনে বেশিক্ষণ থাকা যাবে না নাহলে সে নিজেকে হারিয়ে ফেলবে এই মেয়ের মাঝে,যা ওর স্বভাব বিরুদ্ধ। তাই সে ওর মানিব্যাগ থেকে কার্ডগুলো ছাড়া সব টাকা দিয়ে দিল মেয়েটিকে।তারপর গাড়ি টান দিয়ে চলে গেল অফিসে।আর মেয়েটি দাঁড়িয়ে রইল সেখানেই অভিমানী মন নিয়ে।
রাত অনেক হয়ে গেছে আজ। অফিসে অনেক চাপ ছিল আজ তাই অনেক টা দেরি হয়ে গেছে। কাব্য বাসায় ফেরার পথে মেয়েটিকে দেখতে পেল তাকে যেখানে রেখে গিয়েছিল সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েটিকে দেখে কাব্য বেশ অবাক হলো।এত রাতে মেয়েটি এখানে কি করছে?? ও কি বুঝে না এত রাতে বাইরে থাকলে ওর সাথে কি কি খারাপ হতে পারে?? নাকি কোন বিপদে পরেছে নাকি অন্যকিছু?? সাথে সাথে কাব্য নিজেকে সামলে নিল। একটা অচেনা অজানা মেয়েকে নিয়ে এত ভাবার কি আছে??এটা ভেবেই চলে যাচ্ছিলো সে। কিন্তু মনের কোথাও যেন খচখচ করে উঠলো।তাই গাড়ি ঘুরিয়ে মেয়েটির সামনে এসে গাড়ি ব্রেক কষলো। কাব্যকে গাড়ি থেকে নামতে দেখে মেয়েটির মুখে হাসি ফুটে উঠলো। কাব্য মেয়েটিকে বেশ কড়া করে কথা শুনাতে চেয়েছিল, কেন এত রাতে মেয়েটি বাইরে আছে?? কিন্তু মেয়েটির হাসি দেখে বিমোহিত হয়ে যায় কাব্য। মেয়েটির হাসি দেখে নিজের অজান্তেই বুকের বাম পাশে হাত রাখে। সাথে সাথে নিজেকে সামলে নিল কাব্য। তারপর মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করলো,—""এই মেয়ে, তোমার নাম কি??""
মেয়েটি কোন উত্তর দিচ্ছে না দেখে আবার জিজ্ঞেস করলো,—""কি হলো?? উত্তর দিচ্ছ না কেন??বাসা কোথায় তোমার??""
মেয়েটি এইবারও নিশ্চুপ রইল কিন্তু চোখে মুখে যেন ভয় ফুটে উঠল।
মেয়েটি উত্তর দিচ্ছে না দেখে কাব্য আবারও শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করল,—""তুমি আমার কথা শুনতে পাচ্ছ??""
মেয়েটি এবার মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে মাথা নাড়ল।সে কাব্যের কথা শুনতে পাচ্ছে দেখে কাব্য আবারও জিজ্ঞেস করল,—"" তাহলে উত্তর দিচ্ছ না কেন?? তুমি কি কথা বলতে পারো না??""
মেয়েটি মুখে সেই মিষ্টি হাসি রেখেই মাথা নাড়ল,সে কথা বলতে পারে না।
কাব্যের বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো।এত সুন্দর মিষ্টি একটা মেয়ে আর সে কিনা কথা বলতে পারে না। ওর এই অক্ষমতা ওর নিষ্পাপ চেহারা আর সৌন্দর্যের মধ্যে হারিয়ে গেছে,ওকে সম্পূর্ণ রুপে পরিপূর্ণ করে তুলেছে।
কাব্য কিছুক্ষণ ভাবলো তারপর বললো,—""তুমি লিখতে পার??""
মেয়েটি মাথা মুখে সেই মিষ্টি হাসি রেখেই মাথা ঝাকালো, সে লিখতে পারে।
কাব্য পাশের একটা স্টোর থেকে একটা নোটপ্যাড আর একটা কলম কিনে আনলো। নোটপ্যাড আর কলম দেখে মেয়েটির হাসি দিগুন হয়ে গেছে।এবার কাব্য বলল,—""তোমার নাম কি সেটা প্যাডে লিখ।"
—""কথা।কাবিয়া তাসনিম কথা""
[ভুলত্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন]
(To be continued...)
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...