বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
আমি তখন নিশ্চয়ই বিকট চিৎকার করে উঠেছিলাম কারণ দেখলাম সাথে সাথে শওকত আর তার বাসার লোকজন ছুটে এসেছে ওপরে। আমি কিছু বলার আগেই সে
আমাকে ধরে বলল, নিচে আয় তুই নিচে আয়— আমি বললাম, শওকত, আমি দেখলাম-
শওকত বলল, আমি জানি। আমি জানি। আসলে আমারই ভুল হয়েছে। তুই
নতুন মানুষ, তোকে একা ঘুমাতে দেয়া ঠিক হয় নাই। আমি থর থর করে কাপছিলাম, শওকত বলল, একাত্তর সালে মুহম্মদপুরের এই এলাকায় বাঙালিদের মেরে কেটে শেষ করে দেওয়া হয়েছিল। ছাব্বিশে মার্চ ভোৱে এই বাসাতে ছাব্বিশটা ডেডবডি পড়েছিল। সেই থেকে এই বাসায় এরকম, আমাদের কখনো কিছু হয় না, কিছু দেখি না। নতুন কেউ এলে ভয় পায়—
আমরা অনেকক্ষণ কোন কথা বললাম না। খালেদ খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, তুমি বানিয়ে খুব সুন্দর গল্প বলতে পার। একেবারে সত্যি গল্পের মতন। ছোট চাচা অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, আমি বানিয়ে বলি নাই খালেদ। বলেছিলাম ভয় পাব না, কিন্তু গল্প শুনে ভয়ে হাত পা আমাদের শরীরের ভিতরে ঢুকে যেতে চাইছে। আমরা কোন কথা না বলে চুপচাপ হাঁটতে থাকি। ঘুটঘুটে অন্ধকার
রাত, একটা ছোট স্রোতধারার পাশে দিয়ে হাঁটছি। দুপাশে ঘন জঙ্গলে ঢাকা পাহাড়।
রাত জাগা পাখির ডাক শুনছি। যাঝে মধ্যে পাতার ওপর দিয়ে শরশর করে কিছু একটা
চলে যাচ্ছে, কে জানে সাপ নাকি অন্য কিছু। সবার সামনে দিয়ে খোয়াংসা চাই হাঁটছে,
তার হাতে একটা মশাল। মশালের আলোতে সবকিছু কী আশ্চর্য, কী অবাস্তব মনে
হচ্ছে।
আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা হেঁটে গেলাম। মনে হয়, এই হাটার বুঝি আর কোন শেষ নেই। প্রথম প্রথম পা ব্যথা করছিল, কয়েক ঘণ্টা হাঁটার পর সেই ব্যথাও কেমন জানি কমে গেল। আমাদের ঘাড়ের বোঝাগুলি আস্তে আস্তে ভারী হতে শুরু করল কিন্তু আমরা জানি আমাদের থামার কোন সময় নেই, তাই সেই ভারী ঝোলা ঘাড়ে নিয়েই
আমরা হাঁটতে থাকি। হাঁটতে হাটতে যখন মনে হল আর পারি না তখন রাজু বলল, ছোট চাচা, আর তো পারি না।
খালেদ বলল, হ্যা ছোট চাচা, এখন একটু বিশ্রাম নেয়া দরকার। ছোট চাচা বললেন, ঠিক ঘড়ি ধরে পাঁচ মিনিট। বেশি বিশ্রাম নিলে আর নড়তে পারবি না।
আমরা একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার হাঁটিতে শুরু করি। মনে হয় এক অন্তহীন পথ— যার শুরু নেই, শেষ নেই। অন্ধকারের মাঝে এক অজানা জায়গায় যেন আমরা অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছি।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ...