বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
ছোট গল্পঃ #বিয়ে
লেখকঃ RJ Joy
আবিরের মাঃআবির এই আবির ওঠ বাবা ঘুম থেকে!
আবিরঃআজ তো ছুটির দিন মা,একটু দেরী করে উঠবো আজ।
আবিরের মাঃনা দেরী করা যাবে না,আজ তোর বিয়ে।
আবিরঃ কিসের আজ বিয়ে?
আবিরের মাঃকথা না বাড়িয়ে উঠে ডাইনিংয়ে আয়।
এই বলে মা চলে গেল,আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো,মা বাবা আমাকে না বলে কার সাথে আমার বিয়ে ঠিক করলো!মা তো জানতো আমি রিলেশনে আছি!তারপরেও কার সাথে বিয়ে ঠিক করলো।আমাকে জানতেই হবে,আগে নিচে যাই!!
নিচে নামতে নামতে তোমাদের পরিচয়টা দিয়ে নেই,,,,,
আমি আবির,সবে মাত্র ডাক্তারিতে জয়েন করেছি।৬ বছর ধরে একটা সাকচুন্নির সাথে প্রেম করছি,অনেক ভালোবাসি ওকে।আর ও আমাকে অনেক ভালোবাসে,পরিবারে সমস্যার কারণে ও কাউকে জানাতে পারেনি।আমিও মা ছাড়া কথাটা কাউকে জানাইনি,আসলে আমার বাবাও এসব পছন্দ করেনা।যাই হোক আমার সাকচুন্নিটার নাম রাজশ্রি।আমার থেকে তিন বছরের ছোট,তবে ছোট হলে কি হবে আমাকে সব সময় শাসনে রাখে আর অনেক কেয়ার করে।আমার কিছু হলে আমার থেকে ওরই বেশি টেনশন থাকে,সব সময় আমাকে নিয়েই ভাবে।ও সবে মাত্র ইন্টার শেষ করে অনার্সে ভর্তি হয়েছে।
আমি কীভাবে বিয়ে করবো অন্য কাউকে,আমার রাজশ্রির কী হবে!ও তো নিজের জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসে আমাকে,না আমি কিছুতেই ওর সাথে বেইমানি করতে পারিনা।
আবিরঃ মা এসব কি মা?তোমরা আমার বিয়ে ঠিক করেছো?
আবিরের মাঃ আমি ঠিক করিনি,তোর বাবা ঠিক করেছে!
আবিরঃ তুমি তো সব জানো মা,তারপরেও,,,,,,
আবিরের মাঃ তুই তো তোর বাবাকে চিনিস কেমন মানুষ!!আমি করে উঠতে পারিনি বাবা,ক্ষমা করিস আমাকে।
আবিরঃ বাবা কই?আমার বাবার সাথে কথা বলতেই হবে!
বাবার রুমের দিকে যাচ্ছি আর ভাবছি কীভাবে কী বলবো,বাবাই বা কী বলবে!
আবিরঃ বাবা!
আবিরের বাবাঃ কীরে আয়!কিছু বলবি?
আবিরঃ হ্যা বলতাম!
আবিরের বাবাঃ হ্যা বল।
আবিরঃ তোমরা নাকি আমার বিয়ে ঠিক করেছো!
আবিরের বাবাঃ হ্যা করেছি তো আমার বন্ধুর মেয়ের সাথে,মেয়েটা অনেক ভালো রে।ভদ্র,সুন্দর আর শিক্ষিত।আমিতো একেবারে কথা দিয়ে এসেছি ওকে পুত্রবধূ করে আনবো আমার ঘরে।
আবিরঃ কিন্তু বাবা,,
আবিরের বাবাঃ আর কোনো কিন্তু না,আমি তোমার বাবা,আমি তোমার খারাপ চাইবো না।যাও ঘরে যেয়ে প্রস্তুতি নাও গায়ে হলুদের।
আর কিছু ব্না বলে নিজের ঘরে চলে আসলাম,বুকটা ফেটে যাচ্ছে মনটা চাইছে চিল্লিয়ে কাঁদতে।না আমার রাজশ্রির সাথে কথা বলতে হবে এখনি।
আবিরঃ হ্যালো রাজো!
রাজশ্রিঃ হুম এতোক্ষনে মনে পড়লো আমার কথা?
আবিরঃ না অনেকক্ষণ পড়েছে।কী করো?
রাজশ্রিঃ এইতো বসে আছি,তুমি?
আবিরঃ শুয়ে ছিলাম!
রাজশ্রিঃ এই তোমার গলাটা ভার ভার লাগছে কেন?কেঁদেছো নাকি?
আবিরঃ না কাঁদিনী।
রাজশ্রিঃ আবির তোমাকে আমি চিনি,কিছু হইছে?বলো আমাকে কী হইছে?
আবিরঃ (কিছু বলতে পারলাম না কেঁদে দিলাম)
রাজশ্রিঃ এই কাঁদছো কেন?কী হয়েছে?
আবিরঃ (চুপ)
রাজশ্রিঃ এই পাগল কি হইছে বলোনা!
আবিরঃ রাজো বাবা আমার,,,,
রাজশ্রিঃ হুম বলো কী,,,
আবিরঃ বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছে!!
রাজশ্রিঃ (চুপ)
আবিরঃ রাজো আমাকে না জানিয়েই বিয়ে ঠিক করেছে, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানতাম না,চেষ্টা করলাম বিয়েটা আটকানো যায় নাকি,তবে পারলাম না।চলো আমরা পালিয়ে যাই!
রাজশ্রিঃ কী বলছো আবির এসব?
আবিরঃ যা বলেছি,ভেবে চিন্তেই বলেছি,আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচতে পারবোনা।তার থেকে এটাই ভালো হবে আমরা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করি।
রাজশ্রিঃনা আবির,এটা ঠিক হবে না,আমি খারাপ হয়ে যাবো তোমার ফ্যামিলির কাছে,তারা যদি কখনো মেনেও নেয় তাও আমাকে কখনোই মন থেকে মেনে নিতে পারবেনা।আর আমি শুধু তোমার সাথে না তোমার পুরা ফ্যামিলির সাথে থাকতে চাই,সবার ভালোবাসা চাই।
আবিরঃ তাহলে আমি কী করবো বলো!
রাজশ্রিঃ কী করবে!বিয়ে করে নাও,তোমার বাবার ঠিক করা মেয়ের সাথে!!
বলে ফোনটা কেটে দিলো রাজশ্রি।।
জানি কতটা কষ্টে এই কথাগুলা বলল আমাকে,আমিও নিরুপায়।কি করবো কিছু ভেবে পাচ্ছি না।বালিশে মুখ গুজে কাঁদছি!!
কিছুক্ষণ বাদেই আমার গায়ে হলুদও হয়ে গেলো,আমি বাইরে আসলাম,গেলাম সেই জায়গাতে যেখানে আমি আর রাজশ্রি আসতাম হাঁটতে,কত স্মৃতিময় মূহুর্ত জড়িয়ে আছে এই জায়গাটাতে,মনে পড়তে থাকলো সেই আগের দিনের কথাগুলো,,,,,
সেইদিন আমার রাজশ্রির জন্মদিন ছিল,আগের দিন রাত বারোটায় ওর জন্মদিনের তারিখ শুরু হলেও ওকে উইশ করিনি তবে ইচ্ছা করেই,ওকে সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম,ওইদিন রাত ৩টা অবদি কথা বলি তারপরেও ওকে উইশ করিনি,শেষে দেখলাম আনার পাগলিটার কি মন খারাপ,অনেক ভাবে চেষ্টা করছিলো আমাকে যে আজকে ওর বার্থডে।তারপরেও আমি বুঝেও না বোঝার ভান করছিলাম,কী যে হাসি পাচ্ছি লো আমার!!!ওকে বললাম পরের দিন বিকাল ৪টায় নদীর ধারে এই জায়গাটাতে আসতে।এই বলে ওই দিনের মতো কথা শেষ করলাম।
পরেরদিন সকাল থেকে ওকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য সব রেডি করলাম,ওর বান্ধবী আর বন্ধুদের সহযোগিতায় অনেক তারাতাড়ি প্রস্তুত করে ফেললাম সব।সব কিছু হয়ে গেলে ওর বান্ধবীদের বললাম ওকে ফোন করে ডাকতে।
আমি চুপচাপ সরে গেলাম ওখান থেকে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজশ্রি চলে আসলো,ও এসে একটু অবাক হলো,,
রাজশ্রিঃ কীরে এখানে কিসের এতো ডেকোরেশন?
ওর বান্ধবীঃ তোর আজ জন্মদিন না,তাই এই ছোট্ট আয়োজন।
রাজশ্রিঃ কই ছোট আয়োজন,তোদের তো মনে আছে আর কারো তো মনেই নাই আজ আমার জন্মদিন।(মন খারাপ)
আমি ঠিক সেই মূহুর্তে গিটার বাজিয়ে গাইতে লাগলাম,,
Sun meri shehzaadi
Main hoon tera shehzada
Sun meri shehzaadi
Main hoon tera shehzada
Baahon mein leke tujhe
Main karta hoon vaada
Aye jan-e-tamanna meri
Main khake kasam teri
Yeh karta hoon ikaraar
Marr bhi gaya toh main tujhe
Karta rahunga pyar
Sapana samajhke bhul na jana
O dilwale saath nibhana
Saath nibhana dildaar
Saaton janam mein tere
Main saath rahunga yaar
Marr bhi gaya toh main tujhe
Karta rahunga pyar
Ehsaas nahi tujhko
Main pyar karu kitna
Ehsaas nahi tujhko
Main pyar karu kitna
Kar dungi tujhe paagal
Chahungi sanam itana
Daaman na kabhi chhute
Tode na kabhi tuute
Jo rishta jude ek baar
Marr bhi gaya toh main
Tujhe karta rahunga pyar
Sapana samajhke bhul na jana
O dilwale saath nibhana
Saath nibhana dildaar
Saaton janam mein tere
Main saath rahunga yaar
Marr bhi gaya toh main tujhe
Karta rahunga pyar.....
গান বলা শেষ করে ওর কাছে গেলাম,ওর হাতে গোলাপ দিয়ে বললাম,Happy birth day My lifeline..I love you a lot Rajo........
আমি দাড়ানো মাত্র রাজশ্রি আমাকে জড়িয়ে ধরলো,আমিও জড়িয়ে ধরলাম আমার রাজো কে।
রাজশ্রিঃ আই লাভ ইউ টুুু আবির!!
ওর বান্ধবীঃ জিজুই তো এসব আয়োজন করেছে তোর জন্য,তুই খুব লাকিরে এমন একটা বয়ফ্রেন্ড পাইছিস।
রাজশ্রিঃ উমহু বয়ফ্রেন্ড না আমার বর!!
আমি মৃদু হাসলাম৷,,,,
ওইদিনের কথা মনে পড়তেই বুকের ভিতরে কেমন জানি করে উঠলো।রাজশ্রির কথা খুব মনে পড়ছে,,
বাসায় ফিরে আসলাম,চুপচাপ ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।কিছু ভালো লাগছে না কিছু না!!
সময়ের গতি ধারায় বিয়ের সময়ও চলে আসলো,আমি রেডি হয়ে নিলাম কোনোরকম।
কার সাথে বিয়ে হচ্ছে আনার,যাকে আজ পর্যন্ত দেখিনি,চিনিনা।আমি কখনোই তাকে মেনে নিতে পারবো না,আমার মনটা জুড়ে শুধু রাজশ্রি আছে।গাড়িতে আমি কারো সাথে কথা বললাম না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের গাড়িটা একটা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এসে দাঁড়ালো,আমাদের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হলো।আৃি কাঠের পুতুলের মতো যেয়ে বসলাম বরের আসনে।
কিছুক্ষন পর মেয়েকে আনলো আমি তাকালাম না,কোনো ইচ্ছাও ছিলো না তাকিয়ে দেখার।সময় হলো শুভদৃষ্টির।আমাকে বলল কণের দিকে তাকাতে,আমি তাকাচ্ছিলাম না হঠাৎ মনে হলো কেউ খুব জোরে চিমটি কাটলো আমি সামনে তাকাতেই দেখি কণে বেসে আমার সামনে আামার রাজশ্রি।আমি নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারছিলাম না।দেখলাম রাজশ্রি আমাকে চোখটিপি মারলো,তারমানে সবাই আমার সাথে এতো বড় গেম খেললো!!যেমনটা রাগ হচ্ছিলো তেমন খুশিও লাগছিলো।অবশেষে আমি আমার রাজশ্রিকে পেলালম আমার জীবনসঙ্গি হিসাবে।
----------------------------------সমাপ্ত---------------------------------
ছোট হলেও গল্পটা কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলো না।
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now