বিশেষ নোটিশঃ সুপ্রিয় গল্পেরঝুরিয়ান - আপনারা যে গল্প সাবমিট করবেন সেই গল্পের প্রথম লাইনে অবশ্যাই গল্পের আসল লেখকের নাম লেখা থাকতে হবে যেমন ~ লেখকের নামঃ আরিফ আজাদ , প্রথম লাইনে রাইটারের নাম না থাকলে গল্প পাবলিশ করা হবেনা
আপনাদের মতামত জানাতে আমাদের সাপোর্টে মেসেজ দিতে পারেন অথবা ফেসবুক পেজে মেসেজ দিতে পারেন , ধন্যবাদ
X
বান্দরবনে যে বাসটা যায়, সেটি আসলে বাস নয়, একসময় সেটি ছিল একটা দ্বীপ। এখন তার ওপরে নিচে মানুষের বসার জায়গা করায় সেটি একটি বিদ্যুটে জিনিসে পরিণত হয়েছে। আমরা বসেছি তার ছাদে। আমাদের এক পাশে একটা বস্তা বোঝাই তামাক, অন্য পাশে ঝাঁকা বোঝাই মুরগি। এক পাশ থেকে আলকাতরার দুটি টিন ঝুলছে। যে বস্তাটায় হেলান দিয়ে বসেছি, গন্ধ থেকে বোঝা যাচ্ছে সেটা আসলে শুঁটকির বস্তা। দেখে মনে হয়েছিল খুব বেশি হলে এখানে সাত আটজন মানুষ বসতে পারবে কিন্তু ওপরে নিচে মিলে প্রায় তিরিশজন মানুষ, তার মাঝে বেশ কয়েকজন চাকমা না হয় মগ। এতটুকু জায়গায় এতজন মানুষ কেমন করে বসেছে সেটা একটা অবিশ্বাস্য ব্যাপার।
আমি, রাজু আর খালেদ এই গাড়িটার ছাদে। ছোট চাচা ভেতরে বসে রাগে ফুলছেন। প্রথমে বলেছিলেন তিনি কক্সবাজার যাচ্ছেন, আমাদের যেখানে ইচ্ছে সেখানে যেতে পারি, জাহান্নামে গেলেও তার কোন আপত্তি নাই বরং তিনি সেটা পছন্দই করবেন। যখন দেখলেন আমরা সত্যি সত্যি বান্দরবনের দিকে রওনা দিচ্ছি তখন আমাদের সঙ্গে এসেছেন। যখন বাসায় ফিরে যাব তখন আমাদের কি অবস্থা হবে সেটা নিয়ে আমাদের খুব বেশি দুশ্চিন্তা নেই। বাসার বড় মানুষেরা ছোট চাচার কি অবস্থা করবে সেটা চিন্তা করে বরং ছোট চাচার জন্য একটু দঃখই লাগছে।
বান্দরবনের রাস্তাটা অপূর্ব সুন্দর। আমি এর আগে কখনো এত সুন্দর রাস্তা দেখিনি। দুই পাশে পাহাড়, গাছগাছালি ঢাকা, মনে হয় কোথাও কোন মানুষ নেই, হঠাৎ করে দেখা যায় কিন্তু পাহাড়ি মেয়ে হেঁটে বাচ্ছে। রাস্তা এঁকেবেঁকে একবার ওপরে উঠে যায় একবার নিচে নেমে যায়। মাঝেমাঝেই পাহাড় এতটা খাড়া হয়ে যায় তখন গাড়ি আর নড়তে চায় না। সবাইকে নেমে তখন গাড়িটা ঠেলতে হয়। খালেদের তখন কী উৎসাহ ! মাঝখানে হঠাৎ এক জায়গায় গাড়ি দাড়া করিয়ে হেলপার একটা বালতি নিয়ে ছুটে গেল। তারপর হুড খুলে রেডিয়েটরে পানি ঢেলে দেয়, টগবগ করে সেখানে পানি ফুটতে থাকে। খালেদের চোখেমুখে একটা অবিশ্বাস্য দৃষ্টি। আমাকে ফিসফিস করে বলল, মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি!
স্বপ্ন? হ্যাঁ। কোনদিন কল্পনাও করি নাই এরকম একটা নির্জন পাহাড়ের ভিতর দিয়ে গাড়ির ছাদে বসে বসে যাব। এইরকম দৃশ্য, এইরকম অ্যাডভেঞ্চার। গল্পের বইয়েও তো এ রকম হয় না। হয়? আমি কিছু না বলে চুপ করে রইলাম, খালেদ আবার বলল, কী আশ্চর্য। আসলেই
এটা হচ্ছে। আমার নিজের জীবনে! বিশ্বাস হয়? রাজু ফিসফিস করে বলল, যখন বাসায় যাব যা একটা মার দেবে—
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করুন
গল্পটির বিষয়ে মন্তব্য করতে আপনার একাউন্টে প্রবেশ করুন ... ধন্যবাদ... Login Now